তাঁরা না কংগ্রেস না বিজেপি
দেশের
পরিস্থিতি বুঝে এবং আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন ফ্রন্ট
গঠনের লক্ষ্যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও
তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও বৈঠক করেছেন। বিজেপি ও
কংগ্রেসের বাইরে নতুন ফ্রন্ট গড়তে চান দুই মুখ্যমন্ত্রী। গতকাল সোমবার
পশ্চিমবঙ্গের সচিবালয় নবান্নে দুই মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক করেন। পরে সংবাদ
সম্মেলনে আলাদা ফ্রন্ট গড়ার কথা জানান কে চন্দ্রশেখর রাও। ২০১৪ সালের ২ জুন
ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ ভেঙে গড়ে ওঠে নতুন রাজ্য তেলেঙ্গানা। এতে অন্ধ্র
প্রদেশ আলাদা আর তেলেঙ্গানা আলাদা রাজ্য হিসেবে থেকে যায়। দুই রাজ্যেরই
অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদির সরকার তাদের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করছে। রাজ্যের
উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে না। রাজ্য সরকারের সঙ্গে এই দ্বন্দ্বে অন্ধ্র
প্রদেশের তেলেগু দেশম পার্টি বা টিডিপির নেতা ও অন্ধ্র প্রদেশের
মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) জোট ছেড়েছেন।
আবার তেলেঙ্গানার তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি বা টিআরএসের নেতা ও রাজ্যের
মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও বিজেপি ও কংগ্রেসের বাইরে থেকে কাউকে সরকার
গঠন করার জন্য আহ্বান জানান। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়ও মোদিকে সরিয়ে জনগণের সরকার গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এই দাবি
নিয়ে এখন তিনি পুরো দেশে সোচ্চার। সভা-সমাবেশে মমতার অভিযোগ, দেশের
অসাম্প্রদায়িকতার চরিত্রে কালি লেপন করছে বিজেপি। সাম্প্রদায়িকতার উসকানি
দিচ্ছে। নোট বাতিল ও জিএসটি চালু করে দেশের অর্থনীতির ওপর আঘাত করছে।
বাড়িয়ে দিয়েছে বেকার সমস্যা আর দ্রব্যমূল্য। তাই বিজেপি সরকারের আর দরকার
নেই। আলোচনা শেষে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও নবান্নে
আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দেশে এখন রাজনৈতিক পরিবর্তন জরুরি। বিজেপি ও
কংগ্রেসবিরোধী ফ্রন্টের প্রয়োজন। তাই তিনি মমতার সঙ্গে বিজেপি ও
কংগ্রেসবিরোধী ফ্রন্ট গড়তে চান। প্রতিটি রাজ্যের আঞ্চলিক দলগুলোকে নিয়ে এই
ফেডারেল ফ্রন্ট গঠন করতে চান তাঁরা। বক্তব্য দেওয়ার সময় চন্দ্রশেখর রাওয়ের
পাশে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতাও বলেছেন,
রাজনৈতিক মঞ্চ গড়ার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে অনেক দলের
সুসম্পর্ক রয়েছে। সেসব দলের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁরা নতুন একটি রাজনৈতিক
মঞ্চ তৈরি করতে চান। মমতা বলেন, ‘আমরা ফেডারেল ফ্রন্ট চাই। রাজ্যগুলো মজবুত
হলে দেশও মজবুত হবে। এই লক্ষ্য নিয়ে আমাদের এগোতে হবে। তাড়াহুড়ো নেই যে
আজই করতে হবে। রাজনীতিতে সময় লাগে। তাই তো পরিস্থিতি এমনও হয়ে যায়, যখন
একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ আসে। এর থেকে ভালো আর কী হয়?’ বিজেপিবিরোধী এই দুই
মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠককে ‘গুরুত্বহীন চমক’ বলছেন দলের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি
দিলীপ ঘোষ। এই বৈঠককে উড়িয়ে দিয়ে তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, ‘কেন্দ্রে
স্থিতিশীল সরকার রয়েছে বলে এবার আঞ্চলিক দলগুলো বাজার গরম করতে চাইছে।’
No comments