ডিএসইর মালিকানা বিক্রি: চীনের প্রস্তাবও অনিশ্চয়তায়
ঢাকা
স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কৌশলগত বিনিয়োগকারী পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ
কমিশন (বিএসইসি) বলেছে, কৌশলগত বিনিয়োগকারী হওয়ার জন্য চীনের কনসোর্টিয়াম
বা জোটের প্রস্তাবটি অসম্পূর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ। তারা প্রস্তাবটি বিশ্লেষণ
করে নানা অসংগতি খুঁজে পেয়েছে। ডিএসইও এখন তা মেনে নিয়েছে। যদিও গত মাসে
অনুমোদনের জন্য চীনের প্রস্তাবটি বিএসইসিতে পাঠিয়েছিল ডিএসই। ফলে বিষয়টি
নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বলে আভাস পাওয়া গেছে। ডিএসইতে ত্রুটিপূর্ণ
প্রস্তাব জমা দেয় ভারতের জোটও। ডিএসই বিক্রি করতে চেয়েছে ২৫ শতাংশ শেয়ার,
আর ভারতের জোট কিনতে চেয়েছে ২৫ দশমিক ১০ শতাংশ। ভারতের প্রস্তাব ডিএসই
বিবেচনায় না নেওয়ায় বিএসইসি এ নিয়ে এখন মাথা ঘামাচ্ছে না। তবে সংস্থাটি
চীনের প্রস্তাব অনুমোদন দিতেও দ্বিধায়। বিএসইসির শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের
আশঙ্কা, চীনেরটি অনুমোদন করলে আইনগত জটিলতা তৈরি হতে পারে। কারণ,
আন্তর্জাতিক চর্চা অনুযায়ী নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে জমা দেওয়ার পর শর্ত
প্রত্যাহারের সুযোগ নেই। অথচ তেমনটাই করা হয়েছে। একটি ত্রুটিপূর্ণ প্রস্তাব
ডিএসই কীভাবে পাঠাল, তা নিয়ে বিস্মিত বিএসইসি।
সংস্থাটির সূত্রে জানা
গেছে, চীনা জোটের প্রস্তাব তৈরিতে ডিএসই ভেতর থেকে সহযোগিতা করেছে এবং
ডিএসই পর্ষদের সদস্যরা কয়েক দফা চীন ঘুরেও এসেছেন। চীনের জোটটির নাম
‘কনসোর্টিয়াম অব সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ অ্যান্ড সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ’। আর
ভারতের নাম ‘কনসোর্টিয়াম অব ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ (এনএসই) অব ইন্ডিয়া,
ফ্রন্টিয়ার বাংলাদেশ এবং নাসডাক টেকনোলজি’। ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারীর
প্রস্তাব পরীক্ষা-নিরীক্ষা, বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনার জন্য বিএসইসি গত ২২
ফেব্রুয়ারি সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ আহমেদকে প্রধান করে চার সদস্যের
একটি কমিটি গঠন করে। কমিটি গতকাল বৃহস্পতিবার কমিশনের কাছে প্রতিবেদন জমা
দিয়েছে। বিএসইসির চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বক্তব্য
দিতে রাজি হননি তিনি। তবে বিএসইসির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক এম সাইফুর
রহমান বলেন, ‘কমিটির প্রতিবেদন মাত্র পাওয়া গেল। চুলচেরা বিশ্লেষণ শেষে
জাতীয় স্বার্থে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।’ তবে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক
সরকারের উপদেষ্টা এবং বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল
ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডিএসই বা চীনা জোটের প্রস্তাবে সমস্যা থাকতে
পারে। বিএসইসির উচিত হবে ডিএসইকে ডেকে সমাধানের পথ বাতলে দেওয়া। কোনো কারণে
এটি বাতিল হলে ভাবমূর্তির সংকটে পড়তে পারে ডিএসই।’ ডিএসইর এমডি কে এম
মাজেদুর রহমান বলেন, ‘চীনা জোটকে পেতে বিএসইসির অনুমোদন চেয়েছি।
সার্বিকভাবে পুঁজিবাজারের স্বার্থে যে সিদ্ধান্ত আসবে, সেটাই চূড়ান্ত।’
চীনা জোটের অনেক শর্ত
চীনা জোটের প্রস্তাব বিশ্লেষণে দেখা যায়, এতে ১৫টি শর্ত রয়েছে। অন্যতম শর্ত হচ্ছে চুক্তি হবে যুক্তরাজ্যের আইনে এবং বিবাদের সমাধানও করতে হবে যুক্তরাজ্যের আদালতে। জোটটি ২৫ শতাংশ শেয়ারের দাম ধরেছে ৯৯২ কোটি টাকা, প্রতি শেয়ারের দাম ২২ টাকা। এ ছাড়া কারিগরি সহায়তা বাবদ ৩০০ কোটি টাকাও দিতে পারে। ডিএসইর পর্ষদে পদ চায় তারা একটি। নতুন শেয়ার ছাড়া, পরিচালকের সংখ্যা পরিবর্তন, ২৫ শতাংশ শেয়ার ধারণ করা অবস্থায় নতুন কৌশলগত বিনিয়োগকারী নেওয়া, ডিএসইর সংঘ স্মারক ও সংঘবিধি পরিবর্তন, মেধাস্বত্ব অর্জন এবং ডিএসইর প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) বিষয়ে যেকোনো বিষয়, অর্থাৎ শেয়ারের মূল্য, অবলেখক নিয়োগ ও প্রসপেক্টাস অনুমোদনের কাজ চীনা জোটের সম্মতি ছাড়া করা যাবে না-এসব শর্তের কথাও রয়েছে প্রস্তাবে।
ব্যাখ্যা চাওয়ায় শর্ত প্রত্যাহার
বিশ্লেষকেরা বলছেন, চীনা জোটের শর্তগুলো ত্রুটিপূর্ণ ও অসংগতিপূর্ণ। এমনকি শর্তগুলো উল্লেখ করা হয় সংযুক্তিতে, মূল প্রস্তাবে নয়। ডিএসই এগুলো নিয়ে চীনা জোটের সঙ্গে দর-কষাকষি করেনি। বিএসইসি গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শর্তগুলোর বিষয়ে ডিএসইর কাছে ব্যাখ্যা চায়। ৪ মার্চ ডিএসই জানায়, দুটি ছাড়া সব শর্ত প্রত্যাহার করে নিয়েছে চীনা জোট। চুক্তি হবে বাংলাদেশি আইনে, তবে বিবাদের সমাধান হবে যুক্তরাজ্যের আদালতেই। একক বা যৌথভাবে ঋণ, চুক্তি ও বিনিয়োগের টাকার পরিমাণ ১০ কোটির বদলে হবে ১০০ কোটি টাকা। ব্যাখ্যা চাওয়ার পরে কেন শর্ত প্রত্যাহার, জানতে চাইলে ডিএসই পর্ষদের শেয়ারধারী পরিচালক শাকিল রিজভী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সব যে আমাদের মাথায় আসবে, তা নয়। আর আমরা জানি যে বিএসইসি যাচাই-বাছাই করেই অনুমোদন দেবে।’ পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক বাকী খলীলী মনে করেন, বিষয়টি নিয়ে ডিএসই খুবই কাঁচা কাজ করেছে। বলেন, ‘দুঃখজনক যে এটা নিয়ে শেয়ারবাজারে অনাকাঙ্ক্ষিত খেলা হয়েছে।’
পাঠানো হয়নি ভারতের প্রস্তাব
ভারতের জোট পাঁচ বছরের জন্য ডিএসইতে বিনিয়োগ করার প্রস্তাব পাঠায়। প্রতি শেয়ারের দর ১৫ টাকা, টাকার অঙ্কে ৬৭৬ কোটি টাকা। তবে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (সেবি) এবং রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার কাছ থেকে তারা অনুমোদন নেয়নি। ডিএসইর পর্ষদে জোটটির দাবি দুটি পরিচালকের পদ। আর ২২ শতাংশ শেয়ার থাকবে এনএসইর কোনো সহযোগী প্রতিষ্ঠানের নামে এবং ৩ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ার জোটের সহযোগী ফ্রন্টিয়ার বাংলাদেশের নামে। নাসডাকের নামে শেয়ার থাকবে না। ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ‘ভারতের জোটের প্রস্তাবটি কারিগরি বিবেচনাতেই বাদ পড়েছে।’ উল্লেখ্য, স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা পৃথক করা-সংক্রান্ত ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইন অনুযায়ী ডিএসইর মোট শেয়ার ২৫০ সদস্যের মধ্যে সমানভাবে বণ্টন করা আছে। এসব শেয়ারের মধ্যে ৪০ শতাংশ ডিএসইর সদস্যদের জন্য রাখা আছে। বাকি ৬০ শতাংশ শেয়ার আলাদা করা আছে সদস্যদের বাইরে দেশি বা বিদেশি বিনিয়োগকারীর কাছে বিক্রির জন্য। তার মধ্য থেকে ২৫ শতাংশ বা ৪৫ কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ১২৫টি শেয়ার বিক্রির উদ্যোগ নেয় ডিএসই।
চীনা জোটের অনেক শর্ত
চীনা জোটের প্রস্তাব বিশ্লেষণে দেখা যায়, এতে ১৫টি শর্ত রয়েছে। অন্যতম শর্ত হচ্ছে চুক্তি হবে যুক্তরাজ্যের আইনে এবং বিবাদের সমাধানও করতে হবে যুক্তরাজ্যের আদালতে। জোটটি ২৫ শতাংশ শেয়ারের দাম ধরেছে ৯৯২ কোটি টাকা, প্রতি শেয়ারের দাম ২২ টাকা। এ ছাড়া কারিগরি সহায়তা বাবদ ৩০০ কোটি টাকাও দিতে পারে। ডিএসইর পর্ষদে পদ চায় তারা একটি। নতুন শেয়ার ছাড়া, পরিচালকের সংখ্যা পরিবর্তন, ২৫ শতাংশ শেয়ার ধারণ করা অবস্থায় নতুন কৌশলগত বিনিয়োগকারী নেওয়া, ডিএসইর সংঘ স্মারক ও সংঘবিধি পরিবর্তন, মেধাস্বত্ব অর্জন এবং ডিএসইর প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) বিষয়ে যেকোনো বিষয়, অর্থাৎ শেয়ারের মূল্য, অবলেখক নিয়োগ ও প্রসপেক্টাস অনুমোদনের কাজ চীনা জোটের সম্মতি ছাড়া করা যাবে না-এসব শর্তের কথাও রয়েছে প্রস্তাবে।
ব্যাখ্যা চাওয়ায় শর্ত প্রত্যাহার
বিশ্লেষকেরা বলছেন, চীনা জোটের শর্তগুলো ত্রুটিপূর্ণ ও অসংগতিপূর্ণ। এমনকি শর্তগুলো উল্লেখ করা হয় সংযুক্তিতে, মূল প্রস্তাবে নয়। ডিএসই এগুলো নিয়ে চীনা জোটের সঙ্গে দর-কষাকষি করেনি। বিএসইসি গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শর্তগুলোর বিষয়ে ডিএসইর কাছে ব্যাখ্যা চায়। ৪ মার্চ ডিএসই জানায়, দুটি ছাড়া সব শর্ত প্রত্যাহার করে নিয়েছে চীনা জোট। চুক্তি হবে বাংলাদেশি আইনে, তবে বিবাদের সমাধান হবে যুক্তরাজ্যের আদালতেই। একক বা যৌথভাবে ঋণ, চুক্তি ও বিনিয়োগের টাকার পরিমাণ ১০ কোটির বদলে হবে ১০০ কোটি টাকা। ব্যাখ্যা চাওয়ার পরে কেন শর্ত প্রত্যাহার, জানতে চাইলে ডিএসই পর্ষদের শেয়ারধারী পরিচালক শাকিল রিজভী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সব যে আমাদের মাথায় আসবে, তা নয়। আর আমরা জানি যে বিএসইসি যাচাই-বাছাই করেই অনুমোদন দেবে।’ পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক বাকী খলীলী মনে করেন, বিষয়টি নিয়ে ডিএসই খুবই কাঁচা কাজ করেছে। বলেন, ‘দুঃখজনক যে এটা নিয়ে শেয়ারবাজারে অনাকাঙ্ক্ষিত খেলা হয়েছে।’
পাঠানো হয়নি ভারতের প্রস্তাব
ভারতের জোট পাঁচ বছরের জন্য ডিএসইতে বিনিয়োগ করার প্রস্তাব পাঠায়। প্রতি শেয়ারের দর ১৫ টাকা, টাকার অঙ্কে ৬৭৬ কোটি টাকা। তবে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (সেবি) এবং রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার কাছ থেকে তারা অনুমোদন নেয়নি। ডিএসইর পর্ষদে জোটটির দাবি দুটি পরিচালকের পদ। আর ২২ শতাংশ শেয়ার থাকবে এনএসইর কোনো সহযোগী প্রতিষ্ঠানের নামে এবং ৩ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ার জোটের সহযোগী ফ্রন্টিয়ার বাংলাদেশের নামে। নাসডাকের নামে শেয়ার থাকবে না। ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ‘ভারতের জোটের প্রস্তাবটি কারিগরি বিবেচনাতেই বাদ পড়েছে।’ উল্লেখ্য, স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা পৃথক করা-সংক্রান্ত ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইন অনুযায়ী ডিএসইর মোট শেয়ার ২৫০ সদস্যের মধ্যে সমানভাবে বণ্টন করা আছে। এসব শেয়ারের মধ্যে ৪০ শতাংশ ডিএসইর সদস্যদের জন্য রাখা আছে। বাকি ৬০ শতাংশ শেয়ার আলাদা করা আছে সদস্যদের বাইরে দেশি বা বিদেশি বিনিয়োগকারীর কাছে বিক্রির জন্য। তার মধ্য থেকে ২৫ শতাংশ বা ৪৫ কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ১২৫টি শেয়ার বিক্রির উদ্যোগ নেয় ডিএসই।
No comments