বাড়ল মিনিকেট চালের দাম
নতুন
করে সব ধরনের মিনিকেট চাল কেজিতে ১ টাকা করে বেড়েছে। এরই মধ্যে এর প্রভাব
খুচরা বাজারে পড়েছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ধানের মৌসুম শেষ হওয়া
এবং হাওরে বন্যায় ধানের উৎপাদন কম হওয়ায় বাজারে ধান সংকট রয়েছে। তাই
মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে। এদিকে সবজির দামও কমেনি। বাজারে বেশিরভাগ সবজিই
বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে মাছ, মাংসে বিরাজ করছে স্বস্তি। কমেছে
পেঁয়াজের দাম। ডাল, তেল, চিনিসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্য আগের দামেই বিক্রি
হচ্ছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, শেওড়াপাড়া
বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। বাজারে অন্য কোনো চালের
দাম নতুন করে বাড়েনি। তবে মিনিকেট বিক্রি হয়েছে ৬১-৭১ টাকার মধ্যে। গত
সপ্তাহে এ চালের দাম ছিল ৬০-৭০ টাকার মধ্যে। এছাড়া বিআর-২৮ বিক্রি হয় ৫১-৫৪
টাকায়, পারিজাত বিক্রি হয় ৪৬-৪৮ টাকা কেজি, নাজিরশাইল ৬৫-৭৮ টাকা কেজি এবং
জিরাশাইল ৫৮-৫৯ টাকা কেজি দরে। কারওয়ান বাজারের খুচরা চাল ব্যবসায়ী বাচ্চু
মিয়া বলেন, পাইকারি বাজারে সব ধরনের মিনিকেট চাল কেজিতে ১ টাকা বেড়েছে। আর
খুচরা বাজারেও এক টাকাই বেড়েছে। বেশি বাড়েনি। তবে চালের বিক্রি কমে যাওয়ার
কথা জানান তিনি। বলেন, যারা আগে মিনিকেট খেতেন, তাদের অনেকেই এখন অন্য চাল
কিনছেন। মিনিকেট চালের দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর কৃষি
মার্কেটের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী কবীর হাসান লিটন যুগান্তরকে বলেন, ‘মিনিকেট
চাল যে ধান দিয়ে তৈরি হয়, সেটি আসলে উৎপাদন হয় বৈশাখ মাসে। এখন মৌসুম শেষ
হওয়ায় ধানের সংকট রয়েছে।
তাছাড়া দু’বার বন্যায় হাওর অঞ্চলে যে ধানের উৎপাদন
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা-ও মিনিকেট তৈরির ধান। ধান সংকটের কারণেই দাম
বেড়েছে।’ শেওড়াপাড়া বাজারের ক্রেতা হোমিও চিকিৎসক ডা. মো. আবু তাহের বলেন,
‘মিনিকেটের দাম বাড়ায় বেশ সমস্যা হচ্ছে। অন্য চালের ভাতও খেতে পারি না।
আবার পরিবারের লোক সংখ্যা বেশি থাকায় কেজিতে এক টাকা বেড়ে যাওয়ায় বেকায়দায়
পড়েছি।’ কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজার ভেদে আলু বিক্রি হয়েছে পুরনো ১৫
টাকা কেজি এবং নতুন ২০-৩০ টাকা কেজি দরে । চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, মুলা ২০ টাকা,
বেগুন মান ও জাত ভেদে ৪৫-৬০ টাকা, টমেটো বিক্রি হয়েছে ২০-৩০ টাকা, ব্রকলি
৩০ টাকা পিস, বরবটি ৮০-১০০ টাকা, করলা ৬০-৮০ টাকা, শিম ৫৫-৬০ টাকা, ফুলকপি
৩০-৩৫ টাকা পিস, বাঁধাকপি ২৫-৩০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, গাজর ৪০-৪৫ টাকা, পেঁপে
২০ টাকা, ছোট আকারের চাল কুমড়া (জালি) ৭০ টাকা, লাউ ছোট আকারের ৫০-৬০
টাকা, ধনে পাতা ৭০ টাকা কেজি এবং কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৫৫-৬০ টাকা কেজি।
বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২-৪ টাকা কমে শুক্রবার আমদানি পেঁয়াজ বিক্রি
হয়েছে ৫৮ টাকা কেজি আর দেশি পেঁয়াজ ৫৬ টাকা কেজি দরে। রসুন আমদানি ও দেশি
উভয়ই ৯০ টাকা কেজি এবং আদা বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা কেজি দরে। কারওয়ান বাজারের
সবজি বিক্রেতা মো. রুবেল জানান, কয়েকদিনের মধ্যে সবজির দাম কমে আসবে। শুধু
জালি কুমড়া, লেবু আর বরবটির দাম বেশি থাকবে। মাছের বাজারে বিরাজ করছে
স্বস্তি। ইলিশের দাম কিছুটা বেশি হলেও সাধারণ মানুষের পছন্দের অন্যান্য
মাছের দাম রয়েছে নাগালের মধ্যেই। এক কেজি ওজনের এক জোড়া ইলিশ বিক্রি হয়েছে
২৮শ’ টাকা, ৮০০ গ্রাম ওজনের এক জোড়া ইলিশ ১৪শ’ টাকা, ৭০০ গ্রাম ওজনের এক
জোড়া ইলিশ ১২শ’ টাকা। ৬০০ গ্রাম ওজনের এক জোড়া ৯০০ টাকা আর ৫০০ গ্রাম ওজনের
ইলিশ জোড়া ৬০০ টাকা। রূপচাঁদা ৪টি এক কেজি ওজনের ৯০০ টাকা এবং ৫টিতে
এককেজি ওজনের বিক্রি হয়েছে ৭৫০ টাকা। রুই ও কাতলা বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি
২০০-২৮০ টাকা, চিংড়ি বিক্রি হয়েছে বড় আকারের প্রতি কেজি ৬৫০ টাকা, মাঝারি
আকারের ৬০০ টাকা এবং ছোট আকারের ৪০০ টাকা। তেলাপিয়া প্রতি কেজি ১০০-১২০
টাকা, সিলভার কাপ ৮০-১০০ টাকা, পাবদা ৩০০-৪৫০ টাকা, পাঙ্গাস ৮০-৯০, নলা ১০০
টাকা, সরপুঁটি ১০০ টাকা, গ্রাসকাপ ১২০ টাকা কেজি এবং কই ১২০ টাকা কেজি দরে
বিক্রি হয়েছে। মাছ ব্যবসায়ী মনির বলেন, ‘ভাই এখন মানুষ মাছ খাচ্ছে না। তাই
দামও কম।’ শুক্রবার বাজার ভেদে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয় ১৩০ টাকা কেজি।
লাল লেয়ার ১৬০ টাকা এবং সাদা লেয়ার ১৪০ টাকা। খাসির মাংস বিক্রি হয় ৮০০
টাকা কেজি এবং বকরির মাংস ৭০০ টাকা। গরুর মাংস ৪৮০-৫০০ টাকা কেজি দরে
বিক্রি হয়। ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয় এক ডজন ৭৫ টাকা, দেশি মুরগির ডিম
১৫০ টাকা ডজন, হাঁসের ডিম ১৩৫ টাকা ডজন।
No comments