জিজ্ঞাসাবাদের প্রতিবেদনে সই করলেন না তারিক রামাদান
ব্রিটিশ
সরকারের উপদেষ্টা ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তারিক রামাদান তার
বিরুদ্ধে আনা যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ফরাসি
ম্যাজিস্ট্রেটের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হওয়ার পর তাকে একটি
প্রতিবেদনে সই করতে বলা হলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। গত বছরের অক্টোবরে
হিন্দা আয়ারি ও নাম প্রকাশ না করা আরেক নারী রামাদানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের
অভিযোগ তুলে পৃথক দুটি মামলা করেন। ২০০৯ ও ২০১২ সালে তারা ধর্ষণের শিকার হন
বলে দাবি করেছেন। খবর বিবিসি, আল-জাজিরা ও ওয়াশিংটন পোস্টের ফরাসি পুলিশ
জানিয়েছে, সুইস নাগরিক রামাদানের বিরুদ্ধে মাস তিনেক ধরে তদন্ত চলছে।
আয়ারির বিরুদ্ধেও পাল্টা মানহানির মামলা করেছেন রামাদান। তিনি বলেন,
দীর্ঘদিনের শত্রুরা তার বিরুদ্ধে অপ্রপ্রচারে নেমেছে। প্রাথমিক তদন্তের অংশ
হিসেবে গত বুধবার ফরাসি পুলিশের হাতে তিনি আটক হয়েছেন।রামাদানকে বিচারের
কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে কিনা, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তদন্তের দায়িত্বে নিয়োজিত
ম্যাজিস্ট্রেট সেই সিদ্ধান্ত নিবেন। রামাদানের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগটি
তোলেন হিন্দা আয়ারি। যিনি এক সময় ইসলামের কট্টর অনুসারী ছিলেন। পরবর্তীতে
তিনি ধর্মনিরপেক্ষ ও নারীবাদী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন।
মিসরীয় ইমাম ও মুসলিম
ব্রাদারহুড আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা হাসান আল-বান্নার নাতি তারিক রামাদান
মুসলমানদের কট্টরপন্থার বিরুদ্ধে কথা বলে আসছেন। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন,
তিনি এমন এক ইসলামের কথা প্রচার করছেন, যেটা ফরাসি ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধের
সঙ্গে সঙ্গতিহীন। ৯/১১ হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র তার ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা
আরোপ করেছিল। পরবর্তীতে ২০১০ সালে তা উঠিয়ে নেয়। ২০১৬ সালে আয়ারি একটি বই
লিখেন, যাতে চার বছর আগে প্যারিসের একটি হোটেল কক্ষে নিজের ধর্ষণের শিকার
হওয়ার বিবরণ দেন। তবে সেখানে তিনি কোন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেননি। এক
সময়ের কট্টর ইসলামপন্থী বলে পরিচিত আয়ারি ২০১৫ সালে ফ্রান্সে শার্লি হেবদো
হামলার পর নিজেকে একজন উদারপন্থী বলে ঘোষণা করেন। একই বছর তিন সন্তান সঙ্গে
নিয়ে স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। ইসলামিক মৌলবাদ থেকে নারীদের
সুরক্ষা করতে বর্তমানে তিনি লিবেরাট্রিকস নামে একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান
পরিচালন করেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক কেন্দ্রের
পরিচালক অধ্যাপক ইউজেন রোগান বলেন, রামাদান একজন বিখ্যাত মুসলিম হওয়ায় তাকে
হয়রানি করা হচ্ছে। ইউরোপীয়ানদের একটি গোষ্ঠী সংঘবদ্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে
অপপ্রচারে নেমেছে।
No comments