পেনশনভোগীদের জন্য সুসংবাদ
অনেক
দুঃসংবাদের মধ্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত একটি সুখবর দিলেন।
অবসরে যাওয়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবসর ভাতা পেতে যাতে হয়রানির
শিকার না হন, সেই উদ্দশ্যে ১ ফেব্রুয়ারি তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ইলেকট্রনিক
ফান্ড ট্রান্সফার বা ইএফটি চালু করেছেন। এর ফলে অবসরভোগীরা ব্যাংকে নিজ
হিসাব থেকে পেনশনের টাকা তুলতে পারবেন। স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাঁর ব্যাংক হিসাবে
ভাতার অর্থ জমা হবে। ব্যাংক হিসাবে কত টাকা জমা হলো, মোবাইল ফোনের খুদে
বার্তার মাধ্যমে তাও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জানানো হবে। এত দিন সব সামরিক ও
বেসামরিক অবসর সুবিধাভোগীকে তাঁদের পেনশনের টাকার বিল জমা দিয়ে টাকা তুলতে
হতো। এ জন্য প্রতি মাসে সংশ্লিষ্ট হিসাবরক্ষণ অফিসে অথবা ব্যাংকে যেতে হতো।
যে বয়সে তাঁদের আরামে থাকার কথা, সেই বয়সে দ্বারে দ্বারে ধরনা দিতে হতো।
বর্তমানে দেশে ৬ লাখ ৫৭ হাজার ২১২ জন অবসরভোগী রয়েছেন। পরীক্ষামূলকভাবে
প্রকল্পটি চালু করায় এই মুহূর্তে সব অবসরভোগী এই সুবিধা পাচ্ছেন না। যত
দ্রুত সব সরকারি বিভাগ ও দপ্তরে এটি চালু করা যাবে, তত দ্রুত অবসরভোগীদের
মুশকিল আসান হবে। এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল,
অর্থ
বিভাগের ‘সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ: অগ্রাধিকার
কার্যক্রমসমূহের ধারাবাহিকতা রক্ষা’ শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় বাজেট ও
হিসাবরক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহার করে ইএফটি বাস্তবায়ন করা হবে। ইএফটির উদ্বোধনী
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী নতুন যে স্বপ্নের কথা জানালেন তা হলো দেশের সব
নাগরিককে পেনশনের আওতায় আনার লক্ষ্যে আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে
রূপরেখা প্রণয়ন করা। যে দেশে আনুষ্ঠানিক খাতের চেয়ে অনানুষ্ঠানিক খাতে
কর্মসংস্থান বেশি এবং নারীর গৃহকর্মকে অর্থকরী কাজ হিসেবে স্বীকার করা হয়
না, সে দেশে প্রতিটি নাগরিককে অবসরসুবিধার আওতায় আনা খুবই দুরূহ বলে মনে
করি। এ প্রসঙ্গে সরকারের আরেকটি বহুল আলোচিত কর্মসূচির কথা উল্লেখ করা যায় ।
জাতীয় কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় সরকার তরুণদের প্রশিক্ষণ ও কাজ দেওয়ার
উদ্যোগ নিয়েছিল। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে কুড়িগ্রাম, বরগুনাসহ বেশ কিছু
জেলায় তরুণদের ১০০ দিনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করা হয়েছিল; যদিও তা ছিল
সমুদ্রে গোষ্পদের মতো। তাই জাতীয় পেনশন কর্মসূচির আগে জাতীয় কর্মসংস্থান
কর্মসূচির রূপরেখা জরুরি। মানুষকে যদি কাজের নিশ্চয়তা দেওয়া না যায়, তাহলে
অবসরসুবিধা দেওয়া অলীক স্বপ্ন হিসেবেই থাকবে।
No comments