টেকনাফে ডিবি পুলিশের উপর হামলা : আহত ৫
টেকনাফের ইয়াবার ঘাঁটি খ্যাত নাজিরপাড়ায় সাংবাদিকের পর এবার হামলার শিকার হয়েছেন কক্সবাজার ডিবি পুলিশ। এতে ডিবির ৫ পুলিশ আহত এবং তাঁদের ব্যবহৃত গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। টেকনাফের নাজিরপাড়া এক ইউপি সদস্যকে আটক করতে গিয়ে স্থানীয় জনতার হাতে অবরুদ্ধ হয়ে হামলায় গোয়েন্দা পুলিশের ২ জন এএসআই, ২ জন পুলিশ সদস্য ও গাড়ী চালক আহত এবং তাদের ব্যবহৃত মাইক্রো ভাংচুর করা হয়। ১৯ মে রাত সাড়ে ১০টার দিকে টেকনাফের সদর ইউনিয়নের নাজিরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। ১৯ মে এ ঘটনায় ১ জনকে আটক করে টেকনাফ থানায় সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এতে ১ জন মেম্বারসহ ৯ জনকে এজাহারভুক্ত এবং ১০০-১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা যায় বৃহস্পতিবার ১৮ মে রাতে কক্সবাজার গোয়েন্দা পুলিশের এসআই সুমনের নেতৃত্বে একটি টিম ইয়াবা পাচারের সংবাদে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজিরপাড়া এলাকার ইউপি সদস্য এনামুল হকের বাড়ী ঘেড়াও করে। এসময় এনামুল হককে আটক করে নিয়ে যাওয়ার খবরে স্থানীয় কয়েক শত নারী পুরুষ এগিয়ে এসে ঘেরাও করে ডিবির প্রাইভেট নোয়া মাইক্রো (চট্ট মেট্্েরা-চ-১১-১৬৮৬) গাড়ীতে হামলা চালায়। এতে ডিবি পুলিশের এএসআই আসাদুজ্জামান, ফিরোজ মিয়া, কনেস্টবল আল আমিন, সুমাইয়া সুলতানা ও গাড়ী চালক বাপ্পি আহত হন। পরে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) মাইন উদ্দীন খানের নেতৃত্বে পুলিশের কয়েকটি টিম উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনে ভাংচুরকৃত গাড়ীসহ ডিবি সদস্যদের উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়। এসময় নাজিরপাড়া এলাকার আব্দুল হাকিমের ছেলে শামসুল আলমকে আটক করা হয়েছে। এদিকে এ ঘটনায় কক্সবাজার ডিবি পুলিশের এসআই সুমন মিয়া বাদী হয়ে শামসুল আলমকে প্রধান আসামী করে ৯ জনকে এজাহারভুক্ত এবং ১০০-১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে টেকনাফ মডেল থানায় সংশি¬ষ্ট ধারায় একটি মামলা (নং-৫১) দায়ের করেন।
এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন নাজিরপাড়া এলাকার আব্দুল হাকিমের ছেলে শামসুল আলম, মৃত মোজাহের মিয়ার ছেলে এনামুল হক প্রকাশ এনাম মেম্বার, সাহাব উদ্দিন প্রকাশ সাবু, চান মিয়া, এজাহার মিয়ার ছেলে নুরুল হক ভূট্টো, হোসেন আহমদের ছেলে মোঃ ইউনুচ, মোঃ ইউনুচের ছেলে নুরুল আমিন, মৃত নজু মিয়ার ছেলে গুরা মিয়া ও আব্দুল গফুর। গোয়েন্দা পুলিশের এসআই সুমন মিয়া বলেন রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ইউপি সদস্য এনামুল হকের বাড়ী ঘেরাও করলে তাঁকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হচেছ এমন সংবাদে শত শত উশৃংখল নারী পুরুষ ইট পাটকেল ও লাঠি নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায় এবং গাড়ী ভাংচুর করে। এতে গাড়ী চালক ও ডিবি পুলিশসহ ৫ জন আহত হয়। এঘটনায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে শুক্রবার ১৯ মে দুপুরে ডিবি পুলিশের ঘটনায় আটক টেকনাফ সদর নাজিরপাড়া এলাকার আব্দুল হাকিমের ছেলে শামসুল আলমকে আদালতে সোর্পদ করা হয় বলে জানান টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোঃ মাঈন উদ্দিন খান। তিনি আরও জানান এঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার আসামীদের আটকে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রত্যেক্ষদর্শীরা জানান সাদা পোশাকদারি কক্সবাজার জেলা ডিবি পুলিশ পরিচয়ে একটি দল বৃহস্পতিবার রাতে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য এনামুল হকের বাড়িতে অভিযান চালান। চলে আসার সময় ইউপি সদস্য এনামুল হকের হাতে হাতকড়া পরানো অবস্থায় দেখে স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। ইউপি সদস্য এনামকে ছেড়ে দিতে ডিবি পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখে জনতা। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা এক পর্যায়ে ডিবি পুলিশের ওপর চড়াও হলে চাপের মুখে পড়ে এনামকে ছেড়ে দেন। ডিবি পুলিশের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি ভাংচুর করা হয়। ঘটনার খবর পেয়ে টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আহমদ ও টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাইন উদ্দিন খানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি বিশেষ টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরুদ্ধ অবস্থায় ডিবি পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। উল্লেখ্য, গত বছর ১৩ মে কক্সবাজারের ৬ সাংবাদিকের উপর নাজিরপাড়ায় হামলার ঘটনা ঘটেছিল।
No comments