বিদেশে নারী কর্মীর নিরাপত্তা by মোহসিনা হোসাইন
বাংলাদেশের অনেক নারী পোশাককর্মী, গৃহপরিচারিকা, নার্স, কেয়ার গিভার, বেবি সিটার, ডে কেয়ার কর্মী, ক্লিনার, ড্রাইভার, মালি, গার্ড, বিউটিশিয়ানসহ নানা পেশায় কাজ করতে বিদেশে যাচ্ছেন। অনেক দেশে তাঁরা কাজ করছেন। কিছুদিন আগে জর্দানে বিনা খরচে বাংলাদেশ থেকে নারী কর্মী নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সরকার এর আগে স্বল্প খরচে হংকংয়ে নারী কর্মী পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। কাতার ও সিঙ্গাপুরে সরকারিভাবে কম খরচে লোক পাঠানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর খুলে গেছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরব। দেশটি বছরে ১ লাখ ২০ হাজার নারী গৃহকর্মী নিতে চায়। আগামী রমজানের আগে ২০ হাজার নারী কর্মী পাঠাবে বাংলাদেশ।
২১ মার্চ সৌদি গণমাধ্যম আরব নিউজ-এ প্রকাশ, সৌদি ও বাংলাদেশ সরকারের দ্বিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশি গৃহকর্মীদের নূ্যনতম বেতন হবে ৮০০ রিয়াল। বাংলাদেশি টাকায় দাঁড়ায় প্রায় ১৬ হাজার টাকা। এ বেতন যথেষ্ট বলে মনে হয় না। সৌদি গণমাধ্যমও স্বীকার করেছে, বাংলাদেশ থেকে অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম বেতনে গৃহকর্মী পেতে যাচ্ছে দেশটির সরকার। উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে নারীর নিরাপত্তার প্রসঙ্গটিও। দেশটিতে নিয়োগকর্তাদের দ্বারা প্রায়শই নির্যাতনের শিকার হন বিদেশি নারী কর্মীরা। কর্মস্থলে নির্যাতনের কারণে ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কা নারীদের সৌদি আরবে পাঠানো বন্ধ করে দেয়।
নারীরা বিদেশে কাজ করতে গিয়ে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন এমন উদাহরণ অনেক। নির্যাতনের ঘটনা বেশি ঘটছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে। সবচেয়ে বেশি শিকার গৃহকর্মীরা। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, সংযুক্ত আরব আমিরাতে এক নারী কর্মীকে নির্যাতনের পর চাকরিদাতা হুমকি দিয়েছেন, ‘তোমাকে আমরা কিনেছি, অভিযোগ করবে না।’ এ থেকেই স্পষ্ট, প্রবাসে নারী কর্মীদের সঙ্গে কী নির্মম আচরণ করা হয়। দেশে ফিরে অনেক নারী কর্মী যে বর্ণনা দিয়েছেন, তার কাছে মধ্যযুগীয় দাসপ্রথার বর্বরতাও হার মানে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থার (আইওএম) ২০১৩ সালের এক জরিপে দেখা যায়, ভাগ্যান্বেষণে দূরদেশে গিয়ে প্রতি তিনজনে দুজন নারী কর্মী নিয়োগকর্তা দ্বারা কোনো না কোনোভাবে নির্যাতনের শিকার হন। অভিবাসী নারীদের বিপদগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা পুরুষদের তুলনায় বেশি। অনেক নারী দালালদের দ্বারা আর্থিক প্রতারণার শিকার হন বা পাচারকারীর হাতে পড়েন। যৌনকর্ম ও মাদক ব্যবসায়ও জড়াতে বাধ্য হন কেউ কেউ।
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার এক নারীকে ভালো বেতনে চাকরি দেওয়ার কথা বলে কাতারে পাচার ও যৌনকর্মে বাধ্য করার একটি খবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয় গত ১৯ মে। কৌশলে পালিয়ে পরে দেশে ফিরে ওই নারী অভিযোগ করেন, তাঁর মতো অনেক নারীকে চাকরি দেওয়ার নাম করে কাতারে নিয়ে বিক্রি করে দেওয়া হয়। তারপর বাধ্য করা হয় যৌন কাজে। তিনি কৌশলে পালিয়ে বের হয়ে পরে দেশে ফিরতে পারলেও বেশির ভাগ নারীই তা পারেন না। দেশে এই অপরাধ চক্রের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত না করা গেলে এটা চলতেই থাকবে।
বিদেশের কর্মক্ষেত্র নারীর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে সেটা বন্ধ করা ঠিক হয় না, আবার নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে তাদের বিদেশে পাঠানোও উচিত নয়। সংশ্লিষ্ট দেশ, নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করার সময় নারীদের নিরাপত্তা, অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। বৈধ তালিকাভুক্ত রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে সঠিক নিয়মে ও নিরাপদ উপায়ে বিদেশ গমন নিশ্চিত করতে হবে। বিদেশি নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে খোঁজ নিতে হবে।
অনেক ক্ষেত্রে দেশে ফেরার পরও সমাজ ও পরিবার তাঁদের সহজভাবে গ্রহণ করে না। বিদেশে উপার্জনকারী একজন পুরুষ কর্মী যেভাবে নন্দিত হন, একজন নারী কর্মী ততটাই নিন্দিত হন। এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্য দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন জরুরি।
অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে বিদেশে গিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করেন অনেক নারী। উদয়াস্ত খেটেও ন্যায্য বেতন পান না, ঠিকমতো খাবারও জোটে না অনেকের। নিশ্চিত হয় না নিরাপদ বাসস্থান, চিকিৎসা ও অন্যান্য সুবিধা। সরকারকে এগুলো নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য এজেন্সি, লেবার উইংস ও দূতাবাসগুলোকে আরও আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। নিয়োগদাতা দেশের বাংলাদেশি দূতাবাসে রাখতে হবে শেল্টার হোমের ব্যবস্থা। সৌদি আরবে কাজে যেতে ইচ্ছুক নারীদের জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দেওয়া, নিজেদের সঙ্গে পাসপোর্ট রাখা এবং ব্যাংকের মাধ্যমে বেতন–সুবিধার কথা বলছে সরকার। এসব বিষয় নিশ্চিত করতে হবে।
আশাব্যঞ্জক খবর, বিদেশে যেতে ইচ্ছুক নারী কর্মীদের ঋণ গ্রহণের প্রক্রিয়া সহজ করতে বিশেষ ডেস্ক চালুর উদ্যোগ নিয়েছে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক। কোনো নারী কর্মী তিন মাসের মধ্যে বিরূপ পরিস্থিতির কারণে বিদেশ থেকে ফেরত এলে প্রবাসীকল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের মাধ্যমে তাঁর ব্যয়ের একটি অংশ বহন করে ব্যাংকটি। এ ছাড়া বিদেশে যেতে ইচ্ছুক নারীদের ভাষা ও গৃহস্থালি কাজের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো ৩৮টি প্রশিক্ষণকেন্দ্রের মাধ্যমে বিদেশে যেতে আগ্রহীদের বিভিন্ন কারিগরি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। অবশ্য নারীদের সুযোগ আছে শুধু ১৪টি কেন্দ্রে। প্রশিক্ষণ নেওয়া থাকলে যেমন সম্মানজনক ও বেশি বেতনের কাজ পাওয়া যায়, তেমনি নিরাপত্তার বিষয়টিও জোরদার হয়। বিদেশি ভাষা জানা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে হয়রানি এড়ানো যায়। তাই বিদেশে যাওয়ার আগে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও ভাষা শিক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি। নারী কর্মীদের সচেতনতাও কমিয়ে আনতে পারে নির্যাতন, নিপীড়নের হার।
দুঃখজনক হলেও সত্য, নারী কর্মীরা কেবল প্রবাসেই বৈরী পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন তা নয়, অনেক ক্ষেত্রে দেশে ফেরার পরও সমাজ ও পরিবার তাঁদের সহজভাবে গ্রহণ করে না। বিদেশে উপার্জনকারী একজন পুরুষ কর্মী যেভাবে নন্দিত হন, একজন নারী কর্মী ততটাই নিন্দিত হন। এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্য দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন জরুরি। প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও যাঁরা পরিবার ও দেশের জন্য রেমিট্যান্স পাঠিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন, তাঁদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষার দায় আমাদের সবার।
মোহসিনা হোসাইন: শিক্ষক, বাংলা বিভাগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।
mohsina.hossaindu@gmail.com
২১ মার্চ সৌদি গণমাধ্যম আরব নিউজ-এ প্রকাশ, সৌদি ও বাংলাদেশ সরকারের দ্বিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশি গৃহকর্মীদের নূ্যনতম বেতন হবে ৮০০ রিয়াল। বাংলাদেশি টাকায় দাঁড়ায় প্রায় ১৬ হাজার টাকা। এ বেতন যথেষ্ট বলে মনে হয় না। সৌদি গণমাধ্যমও স্বীকার করেছে, বাংলাদেশ থেকে অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম বেতনে গৃহকর্মী পেতে যাচ্ছে দেশটির সরকার। উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে নারীর নিরাপত্তার প্রসঙ্গটিও। দেশটিতে নিয়োগকর্তাদের দ্বারা প্রায়শই নির্যাতনের শিকার হন বিদেশি নারী কর্মীরা। কর্মস্থলে নির্যাতনের কারণে ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কা নারীদের সৌদি আরবে পাঠানো বন্ধ করে দেয়।
নারীরা বিদেশে কাজ করতে গিয়ে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন এমন উদাহরণ অনেক। নির্যাতনের ঘটনা বেশি ঘটছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে। সবচেয়ে বেশি শিকার গৃহকর্মীরা। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, সংযুক্ত আরব আমিরাতে এক নারী কর্মীকে নির্যাতনের পর চাকরিদাতা হুমকি দিয়েছেন, ‘তোমাকে আমরা কিনেছি, অভিযোগ করবে না।’ এ থেকেই স্পষ্ট, প্রবাসে নারী কর্মীদের সঙ্গে কী নির্মম আচরণ করা হয়। দেশে ফিরে অনেক নারী কর্মী যে বর্ণনা দিয়েছেন, তার কাছে মধ্যযুগীয় দাসপ্রথার বর্বরতাও হার মানে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থার (আইওএম) ২০১৩ সালের এক জরিপে দেখা যায়, ভাগ্যান্বেষণে দূরদেশে গিয়ে প্রতি তিনজনে দুজন নারী কর্মী নিয়োগকর্তা দ্বারা কোনো না কোনোভাবে নির্যাতনের শিকার হন। অভিবাসী নারীদের বিপদগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা পুরুষদের তুলনায় বেশি। অনেক নারী দালালদের দ্বারা আর্থিক প্রতারণার শিকার হন বা পাচারকারীর হাতে পড়েন। যৌনকর্ম ও মাদক ব্যবসায়ও জড়াতে বাধ্য হন কেউ কেউ।
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার এক নারীকে ভালো বেতনে চাকরি দেওয়ার কথা বলে কাতারে পাচার ও যৌনকর্মে বাধ্য করার একটি খবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয় গত ১৯ মে। কৌশলে পালিয়ে পরে দেশে ফিরে ওই নারী অভিযোগ করেন, তাঁর মতো অনেক নারীকে চাকরি দেওয়ার নাম করে কাতারে নিয়ে বিক্রি করে দেওয়া হয়। তারপর বাধ্য করা হয় যৌন কাজে। তিনি কৌশলে পালিয়ে বের হয়ে পরে দেশে ফিরতে পারলেও বেশির ভাগ নারীই তা পারেন না। দেশে এই অপরাধ চক্রের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত না করা গেলে এটা চলতেই থাকবে।
বিদেশের কর্মক্ষেত্র নারীর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে সেটা বন্ধ করা ঠিক হয় না, আবার নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে তাদের বিদেশে পাঠানোও উচিত নয়। সংশ্লিষ্ট দেশ, নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করার সময় নারীদের নিরাপত্তা, অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। বৈধ তালিকাভুক্ত রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে সঠিক নিয়মে ও নিরাপদ উপায়ে বিদেশ গমন নিশ্চিত করতে হবে। বিদেশি নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে খোঁজ নিতে হবে।
অনেক ক্ষেত্রে দেশে ফেরার পরও সমাজ ও পরিবার তাঁদের সহজভাবে গ্রহণ করে না। বিদেশে উপার্জনকারী একজন পুরুষ কর্মী যেভাবে নন্দিত হন, একজন নারী কর্মী ততটাই নিন্দিত হন। এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্য দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন জরুরি।
অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে বিদেশে গিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করেন অনেক নারী। উদয়াস্ত খেটেও ন্যায্য বেতন পান না, ঠিকমতো খাবারও জোটে না অনেকের। নিশ্চিত হয় না নিরাপদ বাসস্থান, চিকিৎসা ও অন্যান্য সুবিধা। সরকারকে এগুলো নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য এজেন্সি, লেবার উইংস ও দূতাবাসগুলোকে আরও আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। নিয়োগদাতা দেশের বাংলাদেশি দূতাবাসে রাখতে হবে শেল্টার হোমের ব্যবস্থা। সৌদি আরবে কাজে যেতে ইচ্ছুক নারীদের জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দেওয়া, নিজেদের সঙ্গে পাসপোর্ট রাখা এবং ব্যাংকের মাধ্যমে বেতন–সুবিধার কথা বলছে সরকার। এসব বিষয় নিশ্চিত করতে হবে।
আশাব্যঞ্জক খবর, বিদেশে যেতে ইচ্ছুক নারী কর্মীদের ঋণ গ্রহণের প্রক্রিয়া সহজ করতে বিশেষ ডেস্ক চালুর উদ্যোগ নিয়েছে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক। কোনো নারী কর্মী তিন মাসের মধ্যে বিরূপ পরিস্থিতির কারণে বিদেশ থেকে ফেরত এলে প্রবাসীকল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের মাধ্যমে তাঁর ব্যয়ের একটি অংশ বহন করে ব্যাংকটি। এ ছাড়া বিদেশে যেতে ইচ্ছুক নারীদের ভাষা ও গৃহস্থালি কাজের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো ৩৮টি প্রশিক্ষণকেন্দ্রের মাধ্যমে বিদেশে যেতে আগ্রহীদের বিভিন্ন কারিগরি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। অবশ্য নারীদের সুযোগ আছে শুধু ১৪টি কেন্দ্রে। প্রশিক্ষণ নেওয়া থাকলে যেমন সম্মানজনক ও বেশি বেতনের কাজ পাওয়া যায়, তেমনি নিরাপত্তার বিষয়টিও জোরদার হয়। বিদেশি ভাষা জানা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে হয়রানি এড়ানো যায়। তাই বিদেশে যাওয়ার আগে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও ভাষা শিক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি। নারী কর্মীদের সচেতনতাও কমিয়ে আনতে পারে নির্যাতন, নিপীড়নের হার।
দুঃখজনক হলেও সত্য, নারী কর্মীরা কেবল প্রবাসেই বৈরী পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন তা নয়, অনেক ক্ষেত্রে দেশে ফেরার পরও সমাজ ও পরিবার তাঁদের সহজভাবে গ্রহণ করে না। বিদেশে উপার্জনকারী একজন পুরুষ কর্মী যেভাবে নন্দিত হন, একজন নারী কর্মী ততটাই নিন্দিত হন। এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্য দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন জরুরি। প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও যাঁরা পরিবার ও দেশের জন্য রেমিট্যান্স পাঠিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন, তাঁদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষার দায় আমাদের সবার।
মোহসিনা হোসাইন: শিক্ষক, বাংলা বিভাগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।
mohsina.hossaindu@gmail.com
No comments