ভারতের অভিযান পাল্টাপাল্টি হুঁশিয়ারি
মিয়ানমারে
ভারতের সামরিক অভিযান নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বাকযুদ্ধ চলছে।
উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ে জড়িয়ে পড়েছেন দুই দেশের রাজনীতিক ও সামরিক কর্তারা।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ, সেনাপ্রধান রাহিল শরীফ,
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলী খান, সাবেক সেনাপ্রধান পারভেজ মোশাররফ
কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ভারতের বিরুদ্ধে। জবাবে ভারতের
প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর বলেছেন, যারা ভয় পেয়েছে, তারাই প্রতিক্রিয়া
দেখাচ্ছে। অভিযানের পরপর ভারতের কেন্দ্রীয় তথ্য ও সমপ্রচার প্রতিমন্ত্রী
রাজ্যবর্ধন রাথোড় মিয়ানমারে তার দেশের অভিযানকে প্রতিবেশী দেশসমূহের মধ্যে
যারা সন্ত্রাসবাদকে মদদ দেয়, তাদের জন্য ‘বার্তা’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি
আরও বলেন, প্রয়োজনে যেকোন স্থানে যেকোন সময় ভারত অভিযান চালাবে। রাথোড়সহ
ভারতীয় নেতাদের সাম্প্রতিক ‘উসকানিমূলক’ মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে
পাকিস্তানের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেট। গতকাল এ নিন্দা প্রস্তাব পাস
হয়েছে। এর আগে তারা জানিয়ে দিয়েছে, পাকিস্তানকে মিয়ানমার ভেবে ভারতের ভুল
করা উচিত হবে না। পাকিস্তান নিজেদের মাটিতে ভারতের এ ধরনের যেকোন রোমাঞ্চকর
আকাঙক্ষাকে সমুচিত জবাব দিয়ে স্তব্ধ করে দিতে সক্ষম। সাবেক সামরিক শাসক
পারভেজ মোশাররফ একপ্রকার ইঙ্গিত দিয়ে বলেই ফেলেছেন, আমরা শবেবরাতে ফুটানোর
জন্য পারমাণবিক বোমা তৈরি করিনি। পাকিস্তানের এ ধরনের তীব্র প্রতিক্রিয়ার
দিকে ইঙ্গিত করেই ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর বলেছেন, যারা
মিয়ানমারে ভারতের অভিযানে ভয় পেয়েছে, তারাই প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। ভারতের
সাবেক কর্নেল ও বর্তমানে প্রতিমন্ত্রী রাজ্যবর্ধন রাথোড় বলেছেন, পাকিস্তান
হামলা করলে, আমরা পাল্টা হামলা চালাবো। আবার ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেস
মিয়ানমারে ওই অভিযান নিয়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীর মন্তব্যের সমালোচনা
করেছে। একটি গোপন অভিযানের বিষয়বস্তু এমন প্রকাশ্যে প্রচার করে বিজেপি
রাজনৈতিক ফায়দা নিচ্ছে বলে অভিযোগ দলটির। এছাড়া ভারতের অনেক নিরাপত্তা
বিশেষজ্ঞও বিষয়টি নিয়ে এমন প্রকাশ্য প্রচারণায় অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন।
অপর দিকে যে দেশে অভিযান নিয়ে চারদিকে এত হৈ চৈ, সেই মিয়ানমার নিজেদের
মাটিতে কোনো ধরনের ভারতীয় অভিযানের কথা বেমালুম অস্বীকার করেছে। দেশটির
দাবি, ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের পাশে ভারতীয় অংশে ওই অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
এসব খবর দিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া, পিটিআই, এএফপি, সিএনএন-আইবিএন,
এনডিটিভি, ডন ও ডিএনএ।
গত ৪ঠা জুন ভারতের মনিপুরে বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিদের হামলায় ১৮ ভারতীয় সেনা নিহত ও ১৫ জন আহত হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার রাত ৩টায় ভারত মিয়ানমারের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে দুটি নাগা জঙ্গি শিবিরে হামলা চালায়। ভারতীয় সেনা ও বিমান বাহিনীর সমন্বয়ে ৪৫ মিনিটব্যাপী ওই অভিযানে কমপক্ষে ৫০ জঙ্গি নিহত হয় ও দুটি শিবিরই ধ্বংস হয়। পরের দিন দুপুরেই বিষয়টি ফলাও করে আলোচনায় আনে ভারতীয় গণমাধ্যম। ওই অভিযানকে প্রতিবেশী যেসব দেশ সন্ত্রাসবাদ লালন করে, তাদের প্রতি স্পষ্ট বার্তা বলে উল্লেখ করেন ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী। এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলি খান বলেন, যেকোন ধরনের বিদেশী আগ্রাসন মোকাবিলায় আমাদের সামরিক বাহিনী সম্পূর্ণ সক্ষম। তাই ভারতীয় নেতাদের উচিত দিবাস্বপ্ন দেখা বন্ধ করা। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, সরকার দেশকে যেকোন মূল্যে রক্ষা করবে। যদি ভারত পাকিস্তানকে শিক্ষা দেয়ার কথা বলে থাকে, তাহলে তাদের জানা উচিত, ভারতকেও উপযুক্ত শিক্ষা দিতে সক্ষম পাকিস্তান। অপরদিকে শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের এক সম্মেলনে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরিফ বলেছেন, পাকিস্তানের দিকে অশুভ দৃষ্টিতে তাকানোর সাহস করা কারও উচিত হবে না। পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী সংযোগ অধিদপ্তর (আইএসপিআর) এক টুইট বার্তায় জানিয়েছে, ভারতের রাজনীতিবিদরা কেবল জাতিসংঘ সনদ লঙ্ঘন করে এমন কর্মকাণ্ডকে আনুকূল্যই দেখাচ্ছে না, তারা অন্য দেশের অভ্যন্তরে হস্তক্ষেপ করাকে গর্বের সঙ্গে প্রচার করছে। বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক। অপরদিকে পাকিস্তানের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক সামরিক শাসক ও সেনাপ্রধান পারভেজ মোশাররফ ভারতকে ইঙ্গিত করে বলেন, আমাদের আক্রমণ করো না। আমাদের আঞ্চলিক অখণ্ডতার দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ো না। কারণ, আমরা ছোটখাটো কোন শক্তি নই, আমরা একটি বৃহৎ ও পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন রাষ্ট্র।
অপরদিকে মিয়ানমার অভিযান নিয়ে পাকিস্তানের তীব্র প্রতিক্রিয়ার দিকে ইঙ্গিত করে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, যারা ভারতের নতুন রুপে ভয় পেয়েছে, তারাই বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেছে। গতকাল সকালে তিনি বলেন, মিয়ানমারে দুটি জঙ্গি শিবির ধ্বংসে ভারতের অভিযান অনেকের ‘মনোজগতে’ পরিবর্তন এনেছে। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ অভিযানেই দেশের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে আমূল পরিবর্তন এসেছে। তবে মিয়ানমারে ভারতের অভিযান সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে রাজি হননি তিনি। এদিকে ওই অভিযানকে অনেকে চীন ও পাকিস্তানের প্রতি ভারতের বার্তা ভাবলেও, ভারতের অন্যতম শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল সুব্রত সাহা বলছেন ভিন্ন কথা। বুধবারের ওই অভিযানের সঙ্গে কাশ্মীর সীমান্ত পরিস্থিতির সম্পর্ক খোঁজা সঠিক হবে না বলে তার মন্তব্য। তার মতে, কাশ্মীর সীমান্তে ওই ধরনের অভিযান চালানো সম্ভব নয়। তবে ভারতের সাবেক অনেক উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা অভিযানের প্রশংসা করেছেন। দেশটির সাবেক সেনা উপ-প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) এমএল নাইড়ু বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের চুক্তি আছে। তাই সে দেশে ঢুকে খুনিদের হত্যা করার মধ্যে দোষের কিছু দেখি না। অভিযান নিয়ে বিজেপি সরকারের মন্ত্রীদের বিভিন্ন খোলামেলা মন্তব্য নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিরোধী দল কংগ্রেস। কংগ্রেসের মুখপাত্র আনন্দ শর্মা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উচিত তার দলের মন্ত্রীদের ভাল করে জ্ঞান দেয়া। সাবেক কংগ্রেসদলীয় এ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিজেপির প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকরের মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, মন্ত্রীদের মধ্যে সংযত ভাব ও পরিপক্বতা থাকা উচিত। উগ্র দেশপ্রেম ও দাম্ভিকতার প্রদর্শন ভারতের বিশেষ বাহিনীর অভিযানে কোন সাহায্য করবে না। তিনি বলেন, মনোহর পারিকরের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করার অভ্যাস রয়েছে। আনন্দ শর্মা ও কংগ্রেসদলীয় সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বিজেপির রাজ্যবর্ধন রাথোড়েরও সমালোচনা করেন।
ওদিকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ভারতীয় ওই অভিযানের কথা সোজা অস্বীকার করেছে মিয়ানমার। দেশটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের পরিচালক জা তায় এক ফেসবুক বার্তায় লিখেছেন, মাঠে থাকা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ব্যাটালিয়নের পাঠানো তথ্য মতে, আমরা জেনেছি যে, অভিযান মিয়ানমার-ভারত সীমান্তের ভারতীয় অংশে সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের মাটি ব্যবহার করে যে বিদেশীরা প্রতিবেশী দেশে হামলা করে ও সমস্যা সৃষ্টি করে, তাদের সহ্য করা হবে না।
মিয়ানমারের ওই বক্তব্যের পর দেশটির অভ্যন্তরে অভিযান চালানো হয়েছে কি না তা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। ভারতে কেউ কেউ ওই অভিযানকে লাদেন হত্যায় পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে মার্কিন নেভি সিলের অভিযানের সঙ্গে তুলনা করছেন। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, মার্কিন ওই অভিযানের কথা মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন। কিন্তু মোদি প্রশাসন এখনও বিষয়টি সরাসরি বলেনি যে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরেই হামলা চালানো হয়েছে। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের টুইটার অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সীমান্তের পাশে’ হামলা হয়েছে। অনেক গণমাধ্যমে অভিযানের আগে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে না জানানোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু সেনাবাহিনীর ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই হামলা হয়েছে। বিষয়টিকে অনেকেই পেশিশক্তি প্রদর্শন বলে উল্লেখ করছেন। যদিও বিভিন্ন রাজনীতিক ও নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যম নিশ্চিত করেছে, অভিযান মিয়ানমারের ভেতরেই হয়েছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে মিয়ানমারের এক সরকারি কর্মকর্তা তার দেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সঙ্গে তিনি এ-ও জানালেন, ভারতীয় সেনা ও মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা ছিল। তবে মিয়ানমারের কোন সেনা সরাসরি ওই অভিযানে অংশ নেয়নি। বিবিসি জানিয়েছে, ভারতের অনেকে মনে করছেন, বিষয়টিকে ফলাওভাবে প্রচার করে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চায় বিজেপি। তাদের এমন খোলাখুলি মন্তব্যে বিব্রত হচ্ছে মিয়ানমারও। ভারতের সাবেক কূটনীতিক পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, এ ধরনের অভিযানের বিষয়ে যত কম কথা বলা যায়, ততই ভাল। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযানে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় কমান্ডোদের একটি ছবি প্রকাশ হওয়া নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেছেন অনেকে।
ভারতে এখন যে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক চলছে, সেটি হচ্ছে, মিয়ানমারের মতো অভিযান কি পাকিস্তানের অভ্যন্তরেও পরিচালনা করা সম্ভব? কিন্তু অনেক নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও কৌশল-বিশেষজ্ঞরা ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান চালানোর আকাঙক্ষা ও সম্ভাব্যতা নিয়ে সতর্কতা উচ্চারণ করেছেন। ভারতের সাবেক শীর্ষ এক সেনা কর্মকর্তা বলেন, পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ঢুকে এ ধরনের অভিযান চালানোর সামর্থ্য আমাদের আছে। কিন্তু সে জন্য এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান যা করবে, তার জন্য আমাদের প্রস্তুতি থাকতে হবে। একজন জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, আমরা পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সংঘাত এড়িয়ে দেশটির এমনকি আধা কিলোমিটার ভেতরেও যেতে পারবো না। আপনি এটি করতে পারেন, যদি আপনি একটি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকেন। তাছাড়া মিয়ানমার ও পাকিস্তান আসলেই এক নয়। মিয়ানমার ভারতের শত্রু রাষ্ট্র নয়, কিন্তু পাকিস্তান শত্রু রাষ্ট্র। তাই আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে মিয়ানমারে অভিযান চালানো গেলেও, পাকিস্তানে পরিস্থিতি হবে ভিন্ন। মিয়ানমারের সমস্যাটি হলো, চীন দেশটির ভেতরে বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে ভারতের বিরুদ্ধে হামলা চালাতে সহায়তা দিচ্ছে। তবে সাবেক র’ কর্মকর্তা জয়ন্ত উমরানিকর বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, দুটি সাম্প্রতিক বিবৃতি পাকিস্তানের ভালভাবে নেয়া উচিত। সম্প্রতি প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর বলেছেন, সন্ত্রাসীদের বিনাশ করা উচিত সন্ত্রাসী দিয়ে। অপরদিকে এক প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, যে কোন সময় যে কোন স্থানে আমাদের ইচ্ছানুযায়ী হামলা চালাবো। মিয়ানমার অভিযান পাকিস্তানের জন্য সতর্কবার্তা। আমাদের সঙ্গে লাগতে এলে, আমরা চুপচাপ বসে থাকবো না। আমাদের অভিযান যদিও গোপনে হবে। কিন্তু তা হয়তো কেবল সীমান্ত এলাকা বা বিশেষ কোন সন্ত্রাসী শিবিরে চালানো হবে না। ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্টের নির্বাহী পরিচালক আজাই সাহনি বলেন, অভিযানটি ভাল, গোছানো ও সফল ছিল। কিন্তু অন্য দেশের অভ্যন্তরে আমাদের অভিযান চালানোটা এবারই প্রথম নয়। নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, এমনকি পাকিস্তানে অভিযান চালানোর ঘটনা আমাদের জানা অল্প কিছু অভিযানের অন্যতম। কিন্তু এটি সামগ্রিক কোন কৌশল নয়। এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে, শত্রুর কৌশলগত সামর্থ্যকে দুর্বল করা। তিনি আশ্চর্য হয়েছেন যে, অভিযানের খুঁটিনাটি প্রকাশ্যে প্রচার করা হয়েছে। তার ভাষায়, পৌরুষ প্রদর্শন আকাঙ্ক্ষিত নয়।
ওদিকে অভিযানের ব্যাপারে ভারতীয় সেনাদের দাবিকে সঠিক নয় বলে দাবি করেছে নাগা বিচ্ছিন্নতবাদী সংগঠন এনএসসিএন। সংগঠনটির দাবি, সেনাবাহিনী নিজেদের ভাবমূর্তি রক্ষায় এ ধরনের কল্পকাহিনী ছড়াচ্ছে। এনএসসিএন (কে)-এর কোন ঘাঁটি আক্রান্ত হয়নি, এর কোন সদস্য হতাহতও হয়নি। কিন্তু কিছু প্রতিবেদন বলছে, এনএসসিএন (কে)-এর জঙ্গিরা ভারতে প্রতিশোধমূলক হামলা চালাতে প্রবেশ করেছে। তাই উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে ভারত সরকার। এর আগে মণিপুরে ভারতীয় সেনাদের ওপর হামলার ঘটনায় এ সংগঠনটিকেই দায়ী করা হয়। সংগঠনটির বিভিন্ন স্তরের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলাও করেছে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসএ)। ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা উপদেষ্টা ও সাবেক গোয়েন্দা প্রধান অজিত দোভাল শিগগিরই বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ‘যৌথ পদক্ষেপ’ নেয়ার জন্য মিয়ানমার সফর করবেন। মিয়ানমারে ভারতীয় অভিযানের পরিকল্পনাও অজিত দোভাল করেছিলেন।
গত ৪ঠা জুন ভারতের মনিপুরে বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিদের হামলায় ১৮ ভারতীয় সেনা নিহত ও ১৫ জন আহত হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার রাত ৩টায় ভারত মিয়ানমারের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে দুটি নাগা জঙ্গি শিবিরে হামলা চালায়। ভারতীয় সেনা ও বিমান বাহিনীর সমন্বয়ে ৪৫ মিনিটব্যাপী ওই অভিযানে কমপক্ষে ৫০ জঙ্গি নিহত হয় ও দুটি শিবিরই ধ্বংস হয়। পরের দিন দুপুরেই বিষয়টি ফলাও করে আলোচনায় আনে ভারতীয় গণমাধ্যম। ওই অভিযানকে প্রতিবেশী যেসব দেশ সন্ত্রাসবাদ লালন করে, তাদের প্রতি স্পষ্ট বার্তা বলে উল্লেখ করেন ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী। এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলি খান বলেন, যেকোন ধরনের বিদেশী আগ্রাসন মোকাবিলায় আমাদের সামরিক বাহিনী সম্পূর্ণ সক্ষম। তাই ভারতীয় নেতাদের উচিত দিবাস্বপ্ন দেখা বন্ধ করা। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, সরকার দেশকে যেকোন মূল্যে রক্ষা করবে। যদি ভারত পাকিস্তানকে শিক্ষা দেয়ার কথা বলে থাকে, তাহলে তাদের জানা উচিত, ভারতকেও উপযুক্ত শিক্ষা দিতে সক্ষম পাকিস্তান। অপরদিকে শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের এক সম্মেলনে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরিফ বলেছেন, পাকিস্তানের দিকে অশুভ দৃষ্টিতে তাকানোর সাহস করা কারও উচিত হবে না। পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী সংযোগ অধিদপ্তর (আইএসপিআর) এক টুইট বার্তায় জানিয়েছে, ভারতের রাজনীতিবিদরা কেবল জাতিসংঘ সনদ লঙ্ঘন করে এমন কর্মকাণ্ডকে আনুকূল্যই দেখাচ্ছে না, তারা অন্য দেশের অভ্যন্তরে হস্তক্ষেপ করাকে গর্বের সঙ্গে প্রচার করছে। বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক। অপরদিকে পাকিস্তানের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক সামরিক শাসক ও সেনাপ্রধান পারভেজ মোশাররফ ভারতকে ইঙ্গিত করে বলেন, আমাদের আক্রমণ করো না। আমাদের আঞ্চলিক অখণ্ডতার দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ো না। কারণ, আমরা ছোটখাটো কোন শক্তি নই, আমরা একটি বৃহৎ ও পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন রাষ্ট্র।
অপরদিকে মিয়ানমার অভিযান নিয়ে পাকিস্তানের তীব্র প্রতিক্রিয়ার দিকে ইঙ্গিত করে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, যারা ভারতের নতুন রুপে ভয় পেয়েছে, তারাই বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেছে। গতকাল সকালে তিনি বলেন, মিয়ানমারে দুটি জঙ্গি শিবির ধ্বংসে ভারতের অভিযান অনেকের ‘মনোজগতে’ পরিবর্তন এনেছে। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ অভিযানেই দেশের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে আমূল পরিবর্তন এসেছে। তবে মিয়ানমারে ভারতের অভিযান সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে রাজি হননি তিনি। এদিকে ওই অভিযানকে অনেকে চীন ও পাকিস্তানের প্রতি ভারতের বার্তা ভাবলেও, ভারতের অন্যতম শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল সুব্রত সাহা বলছেন ভিন্ন কথা। বুধবারের ওই অভিযানের সঙ্গে কাশ্মীর সীমান্ত পরিস্থিতির সম্পর্ক খোঁজা সঠিক হবে না বলে তার মন্তব্য। তার মতে, কাশ্মীর সীমান্তে ওই ধরনের অভিযান চালানো সম্ভব নয়। তবে ভারতের সাবেক অনেক উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা অভিযানের প্রশংসা করেছেন। দেশটির সাবেক সেনা উপ-প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) এমএল নাইড়ু বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের চুক্তি আছে। তাই সে দেশে ঢুকে খুনিদের হত্যা করার মধ্যে দোষের কিছু দেখি না। অভিযান নিয়ে বিজেপি সরকারের মন্ত্রীদের বিভিন্ন খোলামেলা মন্তব্য নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিরোধী দল কংগ্রেস। কংগ্রেসের মুখপাত্র আনন্দ শর্মা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উচিত তার দলের মন্ত্রীদের ভাল করে জ্ঞান দেয়া। সাবেক কংগ্রেসদলীয় এ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিজেপির প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকরের মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, মন্ত্রীদের মধ্যে সংযত ভাব ও পরিপক্বতা থাকা উচিত। উগ্র দেশপ্রেম ও দাম্ভিকতার প্রদর্শন ভারতের বিশেষ বাহিনীর অভিযানে কোন সাহায্য করবে না। তিনি বলেন, মনোহর পারিকরের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করার অভ্যাস রয়েছে। আনন্দ শর্মা ও কংগ্রেসদলীয় সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বিজেপির রাজ্যবর্ধন রাথোড়েরও সমালোচনা করেন।
ওদিকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ভারতীয় ওই অভিযানের কথা সোজা অস্বীকার করেছে মিয়ানমার। দেশটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের পরিচালক জা তায় এক ফেসবুক বার্তায় লিখেছেন, মাঠে থাকা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ব্যাটালিয়নের পাঠানো তথ্য মতে, আমরা জেনেছি যে, অভিযান মিয়ানমার-ভারত সীমান্তের ভারতীয় অংশে সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের মাটি ব্যবহার করে যে বিদেশীরা প্রতিবেশী দেশে হামলা করে ও সমস্যা সৃষ্টি করে, তাদের সহ্য করা হবে না।
মিয়ানমারের ওই বক্তব্যের পর দেশটির অভ্যন্তরে অভিযান চালানো হয়েছে কি না তা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। ভারতে কেউ কেউ ওই অভিযানকে লাদেন হত্যায় পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে মার্কিন নেভি সিলের অভিযানের সঙ্গে তুলনা করছেন। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, মার্কিন ওই অভিযানের কথা মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন। কিন্তু মোদি প্রশাসন এখনও বিষয়টি সরাসরি বলেনি যে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরেই হামলা চালানো হয়েছে। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের টুইটার অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সীমান্তের পাশে’ হামলা হয়েছে। অনেক গণমাধ্যমে অভিযানের আগে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে না জানানোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু সেনাবাহিনীর ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই হামলা হয়েছে। বিষয়টিকে অনেকেই পেশিশক্তি প্রদর্শন বলে উল্লেখ করছেন। যদিও বিভিন্ন রাজনীতিক ও নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যম নিশ্চিত করেছে, অভিযান মিয়ানমারের ভেতরেই হয়েছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে মিয়ানমারের এক সরকারি কর্মকর্তা তার দেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সঙ্গে তিনি এ-ও জানালেন, ভারতীয় সেনা ও মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা ছিল। তবে মিয়ানমারের কোন সেনা সরাসরি ওই অভিযানে অংশ নেয়নি। বিবিসি জানিয়েছে, ভারতের অনেকে মনে করছেন, বিষয়টিকে ফলাওভাবে প্রচার করে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চায় বিজেপি। তাদের এমন খোলাখুলি মন্তব্যে বিব্রত হচ্ছে মিয়ানমারও। ভারতের সাবেক কূটনীতিক পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, এ ধরনের অভিযানের বিষয়ে যত কম কথা বলা যায়, ততই ভাল। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযানে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় কমান্ডোদের একটি ছবি প্রকাশ হওয়া নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেছেন অনেকে।
ভারতে এখন যে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক চলছে, সেটি হচ্ছে, মিয়ানমারের মতো অভিযান কি পাকিস্তানের অভ্যন্তরেও পরিচালনা করা সম্ভব? কিন্তু অনেক নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও কৌশল-বিশেষজ্ঞরা ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান চালানোর আকাঙক্ষা ও সম্ভাব্যতা নিয়ে সতর্কতা উচ্চারণ করেছেন। ভারতের সাবেক শীর্ষ এক সেনা কর্মকর্তা বলেন, পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ঢুকে এ ধরনের অভিযান চালানোর সামর্থ্য আমাদের আছে। কিন্তু সে জন্য এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান যা করবে, তার জন্য আমাদের প্রস্তুতি থাকতে হবে। একজন জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, আমরা পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সংঘাত এড়িয়ে দেশটির এমনকি আধা কিলোমিটার ভেতরেও যেতে পারবো না। আপনি এটি করতে পারেন, যদি আপনি একটি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকেন। তাছাড়া মিয়ানমার ও পাকিস্তান আসলেই এক নয়। মিয়ানমার ভারতের শত্রু রাষ্ট্র নয়, কিন্তু পাকিস্তান শত্রু রাষ্ট্র। তাই আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে মিয়ানমারে অভিযান চালানো গেলেও, পাকিস্তানে পরিস্থিতি হবে ভিন্ন। মিয়ানমারের সমস্যাটি হলো, চীন দেশটির ভেতরে বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে ভারতের বিরুদ্ধে হামলা চালাতে সহায়তা দিচ্ছে। তবে সাবেক র’ কর্মকর্তা জয়ন্ত উমরানিকর বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, দুটি সাম্প্রতিক বিবৃতি পাকিস্তানের ভালভাবে নেয়া উচিত। সম্প্রতি প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর বলেছেন, সন্ত্রাসীদের বিনাশ করা উচিত সন্ত্রাসী দিয়ে। অপরদিকে এক প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, যে কোন সময় যে কোন স্থানে আমাদের ইচ্ছানুযায়ী হামলা চালাবো। মিয়ানমার অভিযান পাকিস্তানের জন্য সতর্কবার্তা। আমাদের সঙ্গে লাগতে এলে, আমরা চুপচাপ বসে থাকবো না। আমাদের অভিযান যদিও গোপনে হবে। কিন্তু তা হয়তো কেবল সীমান্ত এলাকা বা বিশেষ কোন সন্ত্রাসী শিবিরে চালানো হবে না। ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্টের নির্বাহী পরিচালক আজাই সাহনি বলেন, অভিযানটি ভাল, গোছানো ও সফল ছিল। কিন্তু অন্য দেশের অভ্যন্তরে আমাদের অভিযান চালানোটা এবারই প্রথম নয়। নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, এমনকি পাকিস্তানে অভিযান চালানোর ঘটনা আমাদের জানা অল্প কিছু অভিযানের অন্যতম। কিন্তু এটি সামগ্রিক কোন কৌশল নয়। এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে, শত্রুর কৌশলগত সামর্থ্যকে দুর্বল করা। তিনি আশ্চর্য হয়েছেন যে, অভিযানের খুঁটিনাটি প্রকাশ্যে প্রচার করা হয়েছে। তার ভাষায়, পৌরুষ প্রদর্শন আকাঙ্ক্ষিত নয়।
ওদিকে অভিযানের ব্যাপারে ভারতীয় সেনাদের দাবিকে সঠিক নয় বলে দাবি করেছে নাগা বিচ্ছিন্নতবাদী সংগঠন এনএসসিএন। সংগঠনটির দাবি, সেনাবাহিনী নিজেদের ভাবমূর্তি রক্ষায় এ ধরনের কল্পকাহিনী ছড়াচ্ছে। এনএসসিএন (কে)-এর কোন ঘাঁটি আক্রান্ত হয়নি, এর কোন সদস্য হতাহতও হয়নি। কিন্তু কিছু প্রতিবেদন বলছে, এনএসসিএন (কে)-এর জঙ্গিরা ভারতে প্রতিশোধমূলক হামলা চালাতে প্রবেশ করেছে। তাই উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে ভারত সরকার। এর আগে মণিপুরে ভারতীয় সেনাদের ওপর হামলার ঘটনায় এ সংগঠনটিকেই দায়ী করা হয়। সংগঠনটির বিভিন্ন স্তরের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলাও করেছে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসএ)। ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা উপদেষ্টা ও সাবেক গোয়েন্দা প্রধান অজিত দোভাল শিগগিরই বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ‘যৌথ পদক্ষেপ’ নেয়ার জন্য মিয়ানমার সফর করবেন। মিয়ানমারে ভারতীয় অভিযানের পরিকল্পনাও অজিত দোভাল করেছিলেন।
No comments