আদমজীর ৬৫ বছরের পুরনো পুকুর ভরাটের পাঁয়তারা ক্ষোভ by বিল্লাল হোসেন রবিন
বন্ধ
হয়ে যাওয়া এশিয়ার বৃহত্তম পাটকল আদমজী জুট মিল এখন শুধুই স্মৃতি। সেখানে
গড়ে উঠেছে আদমজী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড)। তবে দু’একটি
স্মৃতিচিহ্ন এখনও আদমজী জুট মিলের অস্তিত্বকে জানান দিচ্ছে। এরমধ্যে অন্যতম
তিনটি সুবিশাল পুকুর। তবে একটি পুকুরের পঞ্চাশ ভাগ ভরাট হয়ে গেছে। আরেকটি
পুকুর তেমন একটা গুরুত্ব বহন না করলেও ইপিজেডের প্রধান ফটকের পাশের পুকুরটি
ইপিজেডের সৌন্দর্যের অন্যতম প্রকাশ। পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষারও
উপাদান। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বেপজা কর্তৃপক্ষ সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক
পরিবেশের জন্য সহায়ক ৬৫ বছরের পুরনো এই বিশাল আয়তনের পুকুরটি ভরাট করার
আগ্রাসী পরিকল্পনা নিয়ে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছেন। ইতিমধ্যে পুকুরটির কিছু অংশ
ভরাট করে ফেলা হয়েছে। পুরো পুকুরটি ভরাটের পাঁয়তারা চলমান। এতে এলাকাবাসীর
মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সূত্রমতে, ১৯৫১ সালে আদমজী জুট মিল প্রতিষ্ঠার সময় মিলের সৌন্দর্যবর্ধন ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে মিল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে। পুরো মিল এলাকাকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যসমৃদ্ধ এক মনোরম পরিবেশের আবহ দিতে বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার গাছ লাগানো হয়। এর সঙ্গে যুক্ত করা হয় অসংখ্য ফুলের বাগান। মিল অভ্যন্তরে বিশাল আয়তনের ৯টি পুকুর মিলের সৌন্দর্য আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। এই পুকুরগুলো শ্রমিক-কর্মচারীদের বিনোদনের একটি মাধ্যমে পরিণত হয়। পুকুরের স্বচ্ছ পানিতে গোসল, সাঁতার, নৌ ভ্রমণ সবই হতো। আবার প্রচণ্ড গরমে একটু স্বস্তির জন্য শত শত শ্রমিক পুকুর পাড়ে বসে বিশ্রাম নিতো। যে সুবিধাটা পেতে পারতো ইপিজেডের শ্রমিকরা। কিন্তু বেপজা কর্তৃপক্ষ মিল অভ্যন্তরের সুবিশাল ৯টি পুকুরের মধ্যে ৬টিই ভরাট করে ফেলেছে। বাকি তিনটির মধ্যে ২ নং পুকুর পঞ্চাশ ভাগ ভরাট হয়ে গেছে। ৩ নং পুকুরটি পরিত্যক্ত হয়ে আছে। অবাঙালিদের আবাসনের জন্য বরাদ্দকৃত ১১ একর জায়গার মধ্যে পড়েছে ওই পুকুরটি। ফলে এই পুকুরটি ভরাট হলেও কারো কোন মাথাব্যথা নেই। কিন্তু পরিষ্কার স্বচ্ছ পানির সুবিশাল ৪ নং পুকুরটি ইপিজেডের সৌন্দর্যের অন্যতম প্রকাশ। পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষারও উপাদান। কিন্তু বেপজা কর্তৃপক্ষ সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য সহায়ক এই বিশাল আয়তনের পুকুরটি ভরাট করার আগ্রাসী পরিকল্পনা নিয়ে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছেন। ইতিমধ্যে মেইন রোড থেকে পুকুরটি প্রায় ১৬০ ফুট ভরাট করে ফেলেছে। পুরো পুকুরটি হয়তো এসময় ভরাট করে ফেলবে। বাপা নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক শরীফুদ্দিন সবুজ বলেন, আদমজী বন্ধ হওয়ার পর নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন নামে একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা দাবি জানিয়েছিলাম, যাতে গাছগুলো কাটা না হয় এবং পুকুরগুলো ভরাট করা না হয়। তখন সরকার বলেছিল এই দাবি বাস্তবায়ন হবে। কিন্তু বাস্তবে তা করা হয়নি। তিনি বলেন, পরিবেশ ধ্বংস হলে কী ক্ষতি হয় তা আমরা টের পেতে শুরু করেছি। হাজার হাজার গাছ কর্তন ও পুকুর ভরাটের কারণে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দেবে। এর খেসারত আদমজীতে যারা শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন সেই মালিক ও শ্রমিকদের দু’দিন আগে আর পরে দিতে হবে। চালু থাকা অবস্থায় আদমজী জুট মিলস এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমএ মাসউদ বাদল (৬৪) বলেন, বিশাল আকারের পুকুরগুলো মিলের পরিবেশ রক্ষায় ও সৌন্দর্যবর্ধনে ভূমিকা রেখেছিল। শ্রমিকরা পুকুরগুলোকে বিনোদনের মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহার করেছে। এগুলো বর্তমান ইপিজেডের কল্যাণেরও কাজে আসতো। এগুলো রক্ষা করে ইপিজেড নির্মিত হলে এর সৌন্দর্য আরও কয়েকগুণ বেড়ে যেত। পরিবেশও ভালো থাকতো। কিন্তু ৬টি পুকুর ভরাট করে ফেলা হয়েছে। বাকিগুলোও ভরাটের পাঁয়তারা করা হচ্ছে। যদিও মানুষের মাঝে ক্ষোভ আছে এই পুকুর ভরাট নিয়ে। কিন্তু কে শোনে কার কথা। তবে আমি পুকুর ভরাটের এই প্রক্রিয়ার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। বিশেষ করে ইপিজেডের প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকতে হাতের বাম পাশের বিশাল পুকুরটি পুরো ইপিজেডের সৌন্দর্য বর্ধন করে আছে। এটা ভরাট হলে আমার মতো হাজারো মানুষ কষ্ট পাবে। এলাকাবাসী বলছেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পুকুর ও জলাশয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ঐতিহ্যবাহী পুরনো পুকুর ভরাট না করার জন্য এর আগেও আমরা দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু বেপজা কর্তৃপক্ষ কোন কর্ণপাত করেনি। বিশালাকার শত শত গাছ কেটে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিনষ্টের পাশাপাশি ৬টি পুকুর ভরাট করে ফেলেছে। এখন বাকিগুলোও ভরাট করার উদ্যোগ নিয়েছে। এটা দুঃখজনক। অথচ এই পুকুরগুলো পরিবেশের ভারসাম্যের পাশাপাশি ইপিজেডের সৌন্দর্যবর্ধনেও ভূমিকা রেখে আসছে। বিশেষ করে ইপিজেডের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করার সময় হাতের বামপাশে কয়েক একর জায়গা জুড়ে স্বচ্ছ পানির পুকুরটি ইপিজেডের শ্রমিক, কর্মচারী-কর্মকর্তা ও আগন্তুকদের দৃষ্টি কাড়ছে। তাই আমরা মনে করি, পরিবেশের মৌলিক বিষয়গুলো বিবেচনা করে বেপজা কর্তৃপক্ষ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী এই বিশাল পুকুরটি ভরাট করার উদ্যোগ থেকে বিরত থাকবেন।
এব্যাপারে ইপিজেডের জিএম মেহবুব আলম বলেন, পুকুরগুলো মাস্টার প্ল্যানে রেকর্ড করা। আর মাস্টার প্ল্যান তো সরকারই অনুমোদন দেন। মাস্টার প্ল্যানে পুকুরগুলো প্লট আকারে নির্ধারণ করা আছে। এখন বিনিয়োগকারীদের প্লট বুঝিয়ে দিতে হলে তো এগুলো ভরাট করতেই হবে।
অব্যাহত লোকসানের অভিযোগে ২০০২ সালের ৩০শে জুন সরকার আদমজী জুট মিল বন্ধ ঘোষণা করেন। ২০০৬ সালে বেপজার কাছে হস্তান্তর করা হয় মিলের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি। ওই সময় মিল অভ্যন্তরে বিভিন্ন প্রজাতির কয়েক হাজার গাছ ও সুবিশাল ৯টি পুকুর ছিল। বেপজা কর্তৃপক্ষ মিলের জমিতে গড়ে তুলেছে আদমজী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড)।
সূত্রমতে, ১৯৫১ সালে আদমজী জুট মিল প্রতিষ্ঠার সময় মিলের সৌন্দর্যবর্ধন ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে মিল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে। পুরো মিল এলাকাকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যসমৃদ্ধ এক মনোরম পরিবেশের আবহ দিতে বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার গাছ লাগানো হয়। এর সঙ্গে যুক্ত করা হয় অসংখ্য ফুলের বাগান। মিল অভ্যন্তরে বিশাল আয়তনের ৯টি পুকুর মিলের সৌন্দর্য আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। এই পুকুরগুলো শ্রমিক-কর্মচারীদের বিনোদনের একটি মাধ্যমে পরিণত হয়। পুকুরের স্বচ্ছ পানিতে গোসল, সাঁতার, নৌ ভ্রমণ সবই হতো। আবার প্রচণ্ড গরমে একটু স্বস্তির জন্য শত শত শ্রমিক পুকুর পাড়ে বসে বিশ্রাম নিতো। যে সুবিধাটা পেতে পারতো ইপিজেডের শ্রমিকরা। কিন্তু বেপজা কর্তৃপক্ষ মিল অভ্যন্তরের সুবিশাল ৯টি পুকুরের মধ্যে ৬টিই ভরাট করে ফেলেছে। বাকি তিনটির মধ্যে ২ নং পুকুর পঞ্চাশ ভাগ ভরাট হয়ে গেছে। ৩ নং পুকুরটি পরিত্যক্ত হয়ে আছে। অবাঙালিদের আবাসনের জন্য বরাদ্দকৃত ১১ একর জায়গার মধ্যে পড়েছে ওই পুকুরটি। ফলে এই পুকুরটি ভরাট হলেও কারো কোন মাথাব্যথা নেই। কিন্তু পরিষ্কার স্বচ্ছ পানির সুবিশাল ৪ নং পুকুরটি ইপিজেডের সৌন্দর্যের অন্যতম প্রকাশ। পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষারও উপাদান। কিন্তু বেপজা কর্তৃপক্ষ সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য সহায়ক এই বিশাল আয়তনের পুকুরটি ভরাট করার আগ্রাসী পরিকল্পনা নিয়ে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছেন। ইতিমধ্যে মেইন রোড থেকে পুকুরটি প্রায় ১৬০ ফুট ভরাট করে ফেলেছে। পুরো পুকুরটি হয়তো এসময় ভরাট করে ফেলবে। বাপা নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক শরীফুদ্দিন সবুজ বলেন, আদমজী বন্ধ হওয়ার পর নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন নামে একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা দাবি জানিয়েছিলাম, যাতে গাছগুলো কাটা না হয় এবং পুকুরগুলো ভরাট করা না হয়। তখন সরকার বলেছিল এই দাবি বাস্তবায়ন হবে। কিন্তু বাস্তবে তা করা হয়নি। তিনি বলেন, পরিবেশ ধ্বংস হলে কী ক্ষতি হয় তা আমরা টের পেতে শুরু করেছি। হাজার হাজার গাছ কর্তন ও পুকুর ভরাটের কারণে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দেবে। এর খেসারত আদমজীতে যারা শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন সেই মালিক ও শ্রমিকদের দু’দিন আগে আর পরে দিতে হবে। চালু থাকা অবস্থায় আদমজী জুট মিলস এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমএ মাসউদ বাদল (৬৪) বলেন, বিশাল আকারের পুকুরগুলো মিলের পরিবেশ রক্ষায় ও সৌন্দর্যবর্ধনে ভূমিকা রেখেছিল। শ্রমিকরা পুকুরগুলোকে বিনোদনের মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহার করেছে। এগুলো বর্তমান ইপিজেডের কল্যাণেরও কাজে আসতো। এগুলো রক্ষা করে ইপিজেড নির্মিত হলে এর সৌন্দর্য আরও কয়েকগুণ বেড়ে যেত। পরিবেশও ভালো থাকতো। কিন্তু ৬টি পুকুর ভরাট করে ফেলা হয়েছে। বাকিগুলোও ভরাটের পাঁয়তারা করা হচ্ছে। যদিও মানুষের মাঝে ক্ষোভ আছে এই পুকুর ভরাট নিয়ে। কিন্তু কে শোনে কার কথা। তবে আমি পুকুর ভরাটের এই প্রক্রিয়ার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। বিশেষ করে ইপিজেডের প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকতে হাতের বাম পাশের বিশাল পুকুরটি পুরো ইপিজেডের সৌন্দর্য বর্ধন করে আছে। এটা ভরাট হলে আমার মতো হাজারো মানুষ কষ্ট পাবে। এলাকাবাসী বলছেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পুকুর ও জলাশয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ঐতিহ্যবাহী পুরনো পুকুর ভরাট না করার জন্য এর আগেও আমরা দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু বেপজা কর্তৃপক্ষ কোন কর্ণপাত করেনি। বিশালাকার শত শত গাছ কেটে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিনষ্টের পাশাপাশি ৬টি পুকুর ভরাট করে ফেলেছে। এখন বাকিগুলোও ভরাট করার উদ্যোগ নিয়েছে। এটা দুঃখজনক। অথচ এই পুকুরগুলো পরিবেশের ভারসাম্যের পাশাপাশি ইপিজেডের সৌন্দর্যবর্ধনেও ভূমিকা রেখে আসছে। বিশেষ করে ইপিজেডের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করার সময় হাতের বামপাশে কয়েক একর জায়গা জুড়ে স্বচ্ছ পানির পুকুরটি ইপিজেডের শ্রমিক, কর্মচারী-কর্মকর্তা ও আগন্তুকদের দৃষ্টি কাড়ছে। তাই আমরা মনে করি, পরিবেশের মৌলিক বিষয়গুলো বিবেচনা করে বেপজা কর্তৃপক্ষ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী এই বিশাল পুকুরটি ভরাট করার উদ্যোগ থেকে বিরত থাকবেন।
এব্যাপারে ইপিজেডের জিএম মেহবুব আলম বলেন, পুকুরগুলো মাস্টার প্ল্যানে রেকর্ড করা। আর মাস্টার প্ল্যান তো সরকারই অনুমোদন দেন। মাস্টার প্ল্যানে পুকুরগুলো প্লট আকারে নির্ধারণ করা আছে। এখন বিনিয়োগকারীদের প্লট বুঝিয়ে দিতে হলে তো এগুলো ভরাট করতেই হবে।
অব্যাহত লোকসানের অভিযোগে ২০০২ সালের ৩০শে জুন সরকার আদমজী জুট মিল বন্ধ ঘোষণা করেন। ২০০৬ সালে বেপজার কাছে হস্তান্তর করা হয় মিলের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি। ওই সময় মিল অভ্যন্তরে বিভিন্ন প্রজাতির কয়েক হাজার গাছ ও সুবিশাল ৯টি পুকুর ছিল। বেপজা কর্তৃপক্ষ মিলের জমিতে গড়ে তুলেছে আদমজী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড)।
No comments