নির্বাচন বর্জন করুন
নিজেকে
গৃহবন্দি দাবি করে আগামীকাল রোববারের ভোট বর্জনে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান
জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ৫
জানুয়ারি 'জঘন্য কলঙ্কময়' তারিখ হিসেবে চিত্রিত হয়ে থাকবে মন্তব্য করে
দেশবাসীর প্রতি এ আহ্বান জানান তিনি। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে
খালেদা জিয়া এ আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার তাকে ঘোষণা ছাড়াই কার্যত গৃহবন্দি
করে রেখেছে। মানুষের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও মুক্তির জন্য যে কোনো ত্যাগ
স্বীকারে তিনি প্রস্তুত বলে জানান। তিনি বলেন, "আমি দেশবাসীকে নির্বাচনের
নামে ৫ জানুয়ারির কলঙ্কময় প্রহসন পুরোপুরি বর্জনের আহ্বান জানাচ্ছি। এ
প্রহসনকে দেশে-বিদেশে কোথাও কেউ 'নির্বাচন' হিসেবে 'বৈধতা' দেবে না। এর
মাধ্যমে বৈধতার খোলস ছেড়ে অবৈধ মূর্তিতে আবির্ভূত হবে আওয়ামী লীগ সরকার।"
আজ থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি ঘোষণার পর এ আহ্বান জানালেন বিএনপি প্রধান। তিনি দেশবাসীকে 'গণতান্ত্রিক' আন্দোলন চালিয়ে যেতে 'উদাত্ত' আহ্বান জানান। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন. "আমরা বলেছিলাম, বাংলাদেশের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ 'একতরফা' নির্বাচন হতে দেবে না। আমাদের কথা সত্য হয়েছে। অর্ধেকের বেশি আসনে নির্বাচনী প্রহসনের ঝুঁকি নিতেও সাহস পায়নি আওয়ামী লীগ। আসনগুলো ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়ে সিলেকশন করতে হয়েছে তাদেরকে। বাকি আসনগুলোতে বন্দুকঘেরা ভোটারবিহীন জাল-জালিয়াতির প্রহসনের আয়োজন চলছে।" নির্বাচন কমিশনকে আবারও আজ্ঞাবহ আখ্যা দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, এই কমিশনের সহযোগিতায় রাষ্ট্রীয় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে ভয়ঙ্করভাবে অপব্যবহার করে গণতন্ত্রনাশের 'কদর্য' অধ্যায় রচনা করা হচ্ছে। তাই ৫ জানুয়ারি চিত্রিত হয়ে থাকবে 'জঘন্য কলঙ্কময়' এক 'কালো' তারিখ হিসেবে।
তিনি বলেন, "আমরা অনেক কষ্টে যে গণতন্ত্র অর্জন করেছিলাম সেই গণতন্ত্র আজ আওয়ামী লীগের হাতে আবারও 'নিহত' হলো। ১৯৭৫ সালে 'দ্বিতীয় বিপ্লব' নাম দিয়ে একদলীয় বাকশাল পদ্ধতির মাধ্যমে তারা গণতন্ত্র হত্যা করেছিল। আজও তারা গণতন্ত্র হত্যার আয়োজন করে বলছে যে, গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকারের চেয়ে বেশি জরুরি তাদের কর্মসূচির বাস্তবায়ন করা। এই কণ্ঠ ফ্যাসিবাদের। এই স্বৈরাচারকে রুখতে হবে।" 'প্রতিটি' জনপদ, গ্রাম ও মহল্লাকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের 'দুর্ভেদ্য দুর্গ' হিসেবে গড়ে তুলে আন্দোলন চালিয়ে যেতে তিনি নেতাকর্মী ও জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
'মার্চ ফর ডেমোক্রেসি' কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকেই সরকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দাদের দিয়ে তার বাসভবন ঘিরে রেখেছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি প্রধান। তিনি বলেন, "আমাকে বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। কোনো ঘোষণা ছাড়াই সরকার কার্যত আমাকে 'গৃহবন্দি' করে রেখেছে।"
বিএনপি চেয়ারপারসনের অফিস ও দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ রাখা হয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
খালেদা জিয়া বলেন, 'এই পরিস্থিতিতে আমি দেশবাসীকে গণতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।'
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের মানুষ আমাকে বিপুল সমর্থন দিয়ে সেবা করার সুযোগ বারবার দিয়েছেন। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। ক্ষমতা আমার কাছে বড় নয়। ক্ষমতায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে নয়, মানুষের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও মুক্তির জন্য আমি জীবনের এই প্রান্তে এসেও যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আছি।'
খালেদা জিয়া বলেন, বিএনপি ও ১৮ দলসহ দেশের কোনো গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল এই প্রহসনে শরিক হয়নি। দেশের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকদের মধ্যে এ নিয়ে সামান্যতম উৎসাহ নেই।
ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ায় মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এই প্রহসনের আয়োজকদের তারা (জনগণ) ধিক্কার দিচ্ছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় হতবাক হয়েছে গণতন্ত্র ধ্বংসের এই স্বেচ্ছাচারী তাণ্ডব ও কারসাজিতে।'
সমঝোতার মাধ্যমে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের পন্থা ও সব পক্ষের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করার উপায় বের করার জন্য বিএনপি বারবার আহ্বান জানালেও ক্ষমতাসীনদের 'একগুঁয়েমি'র কারণে তা সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ করেন খালেদা জিয়া।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে যে, অল্প কিছু দলীয় লোককে সারাদিন ভোটকেন্দ্রে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে জাল ভোট দিয়ে ভোটার উপস্থিতির সংখ্যা বাড়িয়ে দেখানোর জন্য আওয়ামী লীগ নির্দেশ দিয়েছে। সেই নির্দেশের প্রমাণ হিসেবে 'অডিও ক্লিপ'ও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে।
গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে বেগবান করতে ঘোষিত রাজধানী অভিমুখে 'মার্চ ফর ডেমোক্রেসি' কর্মসূচি পালনে 'জঘন্য নাৎসি কায়দায়' সরকার বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি প্রধান। তিনি বলেন, সরকারের লেলিয়ে দেওয়া সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সুপ্রিম কোর্ট ও প্রেস ক্লাবের মতো প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পিটিয়ে আহত করেছে।
খালেদা জিয়া বলেন, 'ওরা (আওয়ামী লীগ কর্মীরা) সশস্ত্র মিছিল নিয়ে প্রকাশ্যে মহড়া দিয়েছে। সবকিছুই হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ছত্রছায়ায়। অথচ নিরস্ত্র জনগণকে শান্তিপূর্ণ অভিযাত্রা ও সমাবেশে যোগ দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে। সারাদেশে সব যানবাহন বন্ধ রেখেছে সরকার। এর মাধ্যমে ক্ষমতাসীনরা পরাজয় মেনে নিয়েছে। তাদের জনভীতি দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে গেছে।'
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, এমন নিশ্ছিদ্র বাধার মধ্যেও সারাদেশ থেকে সর্বস্তরের লাখ লাখ মানুষ 'মার্চ ফর ডেমোক্রেসি'তে অংশ নিতে অনেক দুর্ভোগ সয়ে ঢাকায় এসেছিলেন। সরকারি সন্ত্রাসকবলিত রাজপথে এই শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের নামতে দেওয়া হয়নি। যেতে দেওয়া হয়নি সমাবেশস্থলে। তারা গভীর বেদনা নিয়ে ক্ষমতাসীনদের ধিক্কার জানিয়ে ফিরে গেছেন। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
'মার্চ ফর ডেমোক্রেসি'কে ঘিরে নানামুখী উস্কানি সত্ত্বেও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতাকর্মী ও জনগণ কোনো সহিংসতায় না জড়িয়ে ধৈর্য ও শান্তি বজায় রেখেছেন বলে উল্লেখ করেন বিরোধীদলীয় নেতা। তিনি বলেন, ১৮ দলের নেতাকর্মীরা প্রমাণ করেছেন যে, আমাদের কর্মসূচি ছিল শান্তিপূর্ণ এবং সরকারি প্রচারণা ছিল সম্পূর্ণ অসত্য।
'গৃহবন্দিত্ব কিংবা জেল-জুলুমকে আমি ভয় করি না' উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, স্বৈরাচারী সরকার দেশের জনগণ ও বিশ্বসমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কেবল সন্ত্রাস ও রাষ্ট্রীয় শক্তির ওপর ভর করে টিকে থাকতে পারবে না।
তিনি অভিযোগ করেন, 'বিরোধী দলকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে ৫ জানুয়ারির পর সমূলে উৎখাতের হুমকি দিচ্ছে আওয়ামী শাসকেরা।' বিএনপি নেত্রী অভিযোগ করে বলেন, তাদের (আওয়ামী লীগের) নেতাকর্মীরা যানবাহনে, বিচারপতির বাড়িতে ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের ঘরবাড়িতে বোমা হামলা ও অগি্নসংযোগ করতে গিয়ে ধরা পড়েছে, বিচার হচ্ছে না। তারা নিজেরাই অস্ত্র হাতে রাজপথে মহড়া দিচ্ছে ও হামলা চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, 'আমি বলতে চাই, এক ব্যক্তির ক্ষমতার লালসা ও স্বেচ্ছাচারিতার কাছে জাতির সম্মিলিত ইচ্ছাশক্তি পরাজিত হবে না। যে আন্দোলনে বহু মানুষ রক্ত দিয়েছে সেই আন্দোলন সফল হবেই ইনশাআল্লাহ। ক্ষমতার দম্ভের শোচনীয় পরাজয় অত্যাসন্ন।'
আওয়ামী লীগ হত্যা, নাশকতা, গুম, নির্যাতন, অপপ্রচার ও অপসারণের এক মহা নীলনকশা তৈরি করেছে বলেও অভিযোগ করেন বিরোধীদলীয় নেতা।
তিনি বলেন, শুধু সরকার কিংবা সংসদ নয়, সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, প্রশাসন ও সংস্থাকে একদলীয়করণের এ অপপ্রয়াস ব্যর্থ করতে যে যেখানে আছেন, সবাইকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। দেশ ও জনগণকে মুক্ত করতে হবে, বাঁচাতে হবে সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে।
আজ থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি ঘোষণার পর এ আহ্বান জানালেন বিএনপি প্রধান। তিনি দেশবাসীকে 'গণতান্ত্রিক' আন্দোলন চালিয়ে যেতে 'উদাত্ত' আহ্বান জানান। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন. "আমরা বলেছিলাম, বাংলাদেশের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ 'একতরফা' নির্বাচন হতে দেবে না। আমাদের কথা সত্য হয়েছে। অর্ধেকের বেশি আসনে নির্বাচনী প্রহসনের ঝুঁকি নিতেও সাহস পায়নি আওয়ামী লীগ। আসনগুলো ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়ে সিলেকশন করতে হয়েছে তাদেরকে। বাকি আসনগুলোতে বন্দুকঘেরা ভোটারবিহীন জাল-জালিয়াতির প্রহসনের আয়োজন চলছে।" নির্বাচন কমিশনকে আবারও আজ্ঞাবহ আখ্যা দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, এই কমিশনের সহযোগিতায় রাষ্ট্রীয় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে ভয়ঙ্করভাবে অপব্যবহার করে গণতন্ত্রনাশের 'কদর্য' অধ্যায় রচনা করা হচ্ছে। তাই ৫ জানুয়ারি চিত্রিত হয়ে থাকবে 'জঘন্য কলঙ্কময়' এক 'কালো' তারিখ হিসেবে।
তিনি বলেন, "আমরা অনেক কষ্টে যে গণতন্ত্র অর্জন করেছিলাম সেই গণতন্ত্র আজ আওয়ামী লীগের হাতে আবারও 'নিহত' হলো। ১৯৭৫ সালে 'দ্বিতীয় বিপ্লব' নাম দিয়ে একদলীয় বাকশাল পদ্ধতির মাধ্যমে তারা গণতন্ত্র হত্যা করেছিল। আজও তারা গণতন্ত্র হত্যার আয়োজন করে বলছে যে, গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকারের চেয়ে বেশি জরুরি তাদের কর্মসূচির বাস্তবায়ন করা। এই কণ্ঠ ফ্যাসিবাদের। এই স্বৈরাচারকে রুখতে হবে।" 'প্রতিটি' জনপদ, গ্রাম ও মহল্লাকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের 'দুর্ভেদ্য দুর্গ' হিসেবে গড়ে তুলে আন্দোলন চালিয়ে যেতে তিনি নেতাকর্মী ও জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
'মার্চ ফর ডেমোক্রেসি' কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকেই সরকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দাদের দিয়ে তার বাসভবন ঘিরে রেখেছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি প্রধান। তিনি বলেন, "আমাকে বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। কোনো ঘোষণা ছাড়াই সরকার কার্যত আমাকে 'গৃহবন্দি' করে রেখেছে।"
বিএনপি চেয়ারপারসনের অফিস ও দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ রাখা হয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
খালেদা জিয়া বলেন, 'এই পরিস্থিতিতে আমি দেশবাসীকে গণতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।'
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের মানুষ আমাকে বিপুল সমর্থন দিয়ে সেবা করার সুযোগ বারবার দিয়েছেন। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। ক্ষমতা আমার কাছে বড় নয়। ক্ষমতায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে নয়, মানুষের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও মুক্তির জন্য আমি জীবনের এই প্রান্তে এসেও যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আছি।'
খালেদা জিয়া বলেন, বিএনপি ও ১৮ দলসহ দেশের কোনো গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল এই প্রহসনে শরিক হয়নি। দেশের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকদের মধ্যে এ নিয়ে সামান্যতম উৎসাহ নেই।
ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ায় মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এই প্রহসনের আয়োজকদের তারা (জনগণ) ধিক্কার দিচ্ছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় হতবাক হয়েছে গণতন্ত্র ধ্বংসের এই স্বেচ্ছাচারী তাণ্ডব ও কারসাজিতে।'
সমঝোতার মাধ্যমে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের পন্থা ও সব পক্ষের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করার উপায় বের করার জন্য বিএনপি বারবার আহ্বান জানালেও ক্ষমতাসীনদের 'একগুঁয়েমি'র কারণে তা সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ করেন খালেদা জিয়া।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে যে, অল্প কিছু দলীয় লোককে সারাদিন ভোটকেন্দ্রে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে জাল ভোট দিয়ে ভোটার উপস্থিতির সংখ্যা বাড়িয়ে দেখানোর জন্য আওয়ামী লীগ নির্দেশ দিয়েছে। সেই নির্দেশের প্রমাণ হিসেবে 'অডিও ক্লিপ'ও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে।
গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে বেগবান করতে ঘোষিত রাজধানী অভিমুখে 'মার্চ ফর ডেমোক্রেসি' কর্মসূচি পালনে 'জঘন্য নাৎসি কায়দায়' সরকার বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি প্রধান। তিনি বলেন, সরকারের লেলিয়ে দেওয়া সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সুপ্রিম কোর্ট ও প্রেস ক্লাবের মতো প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পিটিয়ে আহত করেছে।
খালেদা জিয়া বলেন, 'ওরা (আওয়ামী লীগ কর্মীরা) সশস্ত্র মিছিল নিয়ে প্রকাশ্যে মহড়া দিয়েছে। সবকিছুই হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ছত্রছায়ায়। অথচ নিরস্ত্র জনগণকে শান্তিপূর্ণ অভিযাত্রা ও সমাবেশে যোগ দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে। সারাদেশে সব যানবাহন বন্ধ রেখেছে সরকার। এর মাধ্যমে ক্ষমতাসীনরা পরাজয় মেনে নিয়েছে। তাদের জনভীতি দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে গেছে।'
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, এমন নিশ্ছিদ্র বাধার মধ্যেও সারাদেশ থেকে সর্বস্তরের লাখ লাখ মানুষ 'মার্চ ফর ডেমোক্রেসি'তে অংশ নিতে অনেক দুর্ভোগ সয়ে ঢাকায় এসেছিলেন। সরকারি সন্ত্রাসকবলিত রাজপথে এই শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের নামতে দেওয়া হয়নি। যেতে দেওয়া হয়নি সমাবেশস্থলে। তারা গভীর বেদনা নিয়ে ক্ষমতাসীনদের ধিক্কার জানিয়ে ফিরে গেছেন। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
'মার্চ ফর ডেমোক্রেসি'কে ঘিরে নানামুখী উস্কানি সত্ত্বেও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতাকর্মী ও জনগণ কোনো সহিংসতায় না জড়িয়ে ধৈর্য ও শান্তি বজায় রেখেছেন বলে উল্লেখ করেন বিরোধীদলীয় নেতা। তিনি বলেন, ১৮ দলের নেতাকর্মীরা প্রমাণ করেছেন যে, আমাদের কর্মসূচি ছিল শান্তিপূর্ণ এবং সরকারি প্রচারণা ছিল সম্পূর্ণ অসত্য।
'গৃহবন্দিত্ব কিংবা জেল-জুলুমকে আমি ভয় করি না' উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, স্বৈরাচারী সরকার দেশের জনগণ ও বিশ্বসমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কেবল সন্ত্রাস ও রাষ্ট্রীয় শক্তির ওপর ভর করে টিকে থাকতে পারবে না।
তিনি অভিযোগ করেন, 'বিরোধী দলকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে ৫ জানুয়ারির পর সমূলে উৎখাতের হুমকি দিচ্ছে আওয়ামী শাসকেরা।' বিএনপি নেত্রী অভিযোগ করে বলেন, তাদের (আওয়ামী লীগের) নেতাকর্মীরা যানবাহনে, বিচারপতির বাড়িতে ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের ঘরবাড়িতে বোমা হামলা ও অগি্নসংযোগ করতে গিয়ে ধরা পড়েছে, বিচার হচ্ছে না। তারা নিজেরাই অস্ত্র হাতে রাজপথে মহড়া দিচ্ছে ও হামলা চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, 'আমি বলতে চাই, এক ব্যক্তির ক্ষমতার লালসা ও স্বেচ্ছাচারিতার কাছে জাতির সম্মিলিত ইচ্ছাশক্তি পরাজিত হবে না। যে আন্দোলনে বহু মানুষ রক্ত দিয়েছে সেই আন্দোলন সফল হবেই ইনশাআল্লাহ। ক্ষমতার দম্ভের শোচনীয় পরাজয় অত্যাসন্ন।'
আওয়ামী লীগ হত্যা, নাশকতা, গুম, নির্যাতন, অপপ্রচার ও অপসারণের এক মহা নীলনকশা তৈরি করেছে বলেও অভিযোগ করেন বিরোধীদলীয় নেতা।
তিনি বলেন, শুধু সরকার কিংবা সংসদ নয়, সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, প্রশাসন ও সংস্থাকে একদলীয়করণের এ অপপ্রয়াস ব্যর্থ করতে যে যেখানে আছেন, সবাইকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। দেশ ও জনগণকে মুক্ত করতে হবে, বাঁচাতে হবে সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে।
No comments