‘সবাই কেবলামুখী তাই আমিও হয়েছি’- কাজী ফিরোজ রশীদ by নিয়াজ মাহমুদ
এক সময়ে সরকারের কঠোর সমালোচক ছিলেন জাতীয় পার্টির নেতা কাজী ফিরোজ রশীদ। অবস্থান এখন ঠিক উল্টো।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও তিনি আছেন নির্বাচনে। প্রচারণাও চালাচ্ছেন। তার মতে দলের সবাই কেবলামুখী। তাই তিনি নিজেও কেবলামুখী হয়েছেন। বলেছেন- তার এই অবস্থানই সঠিক। সময়ের সিদ্ধান্ত। তবে ভুলের জন্য ভবিষ্যতে দল শাস্তি দিলে তা-ও মেনে নিতে রাজি জাতীয় পার্টির এ প্রেসিডিয়াম সদস্য। ধানমন্ডির বাসায় মানবজমিন-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকালে এসব কথা বলেন জাপার এই সময়ের আলোচিত নেতা। তিনি বলেন, আমার কোন দোষ নেই। আমার সারা জীবনের রাজনীতি ঘাঁটলেও কোথাও দোষ খুঁজে পাবেন না। পাকিস্তান আমলে বার বার জেলে গিয়েছি। ১৯৬২, ১৯৬৪ ও ১৯৬৬ সালে জেলে ছিলাম। কেন শেখ মুজিব জেলে গেলেন? এই জন্য ১৯৬৮ সালে আন্দোলন করেছি। এক বছর জেল হলো আমার। যা করেছি নেতা এরশাদের জন্য। তবে দুঃখের রাজনীতি করি আমরা। আর কি বলবো? জাপার ঢাকা উত্তরের নেতারা গম, চাল, তেলসহ সব ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য করেছেন। আমরা দক্ষিণের নেতারা কিছুই পাইনি। চেয়ারম্যান স্যার সভা ডেকে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর থেকে আমি বদলে গেছি। তার ঘোষণা ও কথাবার্তা শুনে মনে হয়েছিল আমার রাজনীতিতে ভুল ছিল। আমি শপথ নিলাম নির্বাচনে যাবো। যারা মন্ত্রী হয়েছেন তাদের সহযোগিতা করবো। গত নির্বাচনে আমরা মন্ত্রী পেয়েছি একজন। আর এখন ৬ জন। আমার রাজনীতি ছিল ভুল। ওই দিনই প্রতিজ্ঞা করলাম। নির্বাচনেও দাঁড়িয়ে গেলাম। অন্য কোথাও থেকে দাঁড়ালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি হতে পারতাম। স্যার বললেন- ঢাকা-৬ আসন থেকে নির্বাচন করতে। আমি তা-ই করলাম। চেয়ারম্যান স্যার নির্বাচন বর্জন করলেন। এরপর কি হয়েছে না হয়েছে, তা জানি না। আমি ঠিক পথেই আছি। আমরা রাজনীতি করি। একবার শপথ করলে আর বেরোতে পারি না। মুখের কথা বা বন্দুকের গুলি একবার বের হয়ে গেলে তা ফিরিয়ে নেয়া যায় না। ফিরোজ রশীদ বলেন, সময়-বয়স বা যৌবন একবার চলে গেলে তা আর ফিরে পাওয়া যায় না। আমি সঠিক পথে আছি। তিনি বলেন, এরশাদ স্যার এ জীবনে যত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- সবচেয়ে বড় এবং ভাল সিদ্ধান্ত হয়েছে নির্বাচনে যাওয়া ও মন্ত্রিত্ব দেয়া। এটা তার জীবনে শেষ এবং বড় সিদ্ধান্ত। একজনকে উপদেষ্টা করার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ৩ বার ফোন দিয়েছেন। পাশাপাশি চিঠিও দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন- তাকে মন্ত্রী না করলে কেবিনেটে স্যারের সমস্যা হবে। পার্টির চেয়ারম্যান সিএমএইচ থেকে জিএম কাদের ও রুহুল আমীন হাওলাদারের মাধ্যমে বলেছেন- দলের প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিতে। এ প্রশ্নে কাজী ফিরোজ বলেন, কার কাছে বলেছেন, কিভাবে বলেছেন- আমার জানা নেই। তবে এরশাদ সাহেবের অন্তরের লোক যারা (আনিস-বাবলু) তারা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে শুকুর আলহামদুলিল্লাহ বলে আমিও মিলাদ পড়াবো।
No comments