মুসলিম মেয়েদের এই স্কুল ইংল্যান্ডের সেরা
ইংল্যান্ডের
সেরা সেকেন্ডারি স্কুলটির অবস্থান উত্তরাঞ্চলীয় শহর ব্ল্যাকবার্নে। আর
সেরা স্কুলের তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে থাকা স্কুলটিও একই শহরে। আর দুটি
স্কুলই পরিচালনা করে তৌহিদুল ইসলাম নামে একটি শিক্ষা ট্রাস্ট। তৌহিদুল
ইসলাম গার্লস হাই স্কুলের প্রায় সব ছাত্রী মুসলমান। এদের বেশিরভাগই হিজাব
পরিধান করেন। কিন্তু হিজাব সম্পর্কে ব্রিটেনের মানুষের যেসব ভুল ধারণা
রয়েছে সেটা ভেঙে দেয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে এই স্কুলের ছাত্রীরা মনে করে।
তৌহিদুল ইসলাম গার্লস হাই স্কুলের জিসিএসি (ও-লেভেল) এবং এ-লেভেল পরীক্ষার
ফলাফল চমকে দেয়ার মতো। ভর্তির জন্য কোনো পরীক্ষা নেয়া হয় না, এবং
দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ভর্তির ব্যাপারে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। এই স্কুলের
একজন ছাত্রী আলিয়া। সে বলছে, তার বাবা কোনদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌকাঠ
পেরুতে পারেননি। কিন্তু তিনি এখন খুবই গর্বিত যে আলিয়ার বড় বোন এখন
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাক্তারি পড়ছেন। এই স্কুলের হেডমাস্টারের নাম
লুকমান হোসেন।
তিনি বলছেন, তাদের স্কুলের লক্ষ্য হচ্ছে দরিদ্র ছাত্রীদের
জন্য সবচেয়ে ভাল সুযোগ তৈরি করে দেয়া। "আমাদের সমাজে অনেক বৈষম্য রয়েছে।
অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, এই বৈষম্য জয় করে কেউ কি এগিয়ে যেতে পারেন?" বলছেন
তিনি, "এটা দূর করার সবচেয়ে ভাল পন্থা হচ্ছে মানসম্পন্ন শিক্ষা।"
ব্ল্যাকবার্ন শহরের একটা অখ্যাতি রয়েছে যে এই শহরে বিভিন্ন জনগোষ্ঠী একে
অপরের থেকে দূরে সরে থাকে। "সবার ধারণা যে কমিউনিটিগুলো মধ্যে যোগাযোগ
নেই," বলছে আরেক ছাত্রী উমাইরা, "কিন্তু তারা স্কুলে এসে অবাক হয়ে যান।"
সে বলছে, তার স্কুল বিভিন্ন ধর্মীয় সংস্থা, সামাজিক সংগঠন এবং নানা ধরনের
সমাজসেবামূলক প্রকল্পের সাথে গভীরভাবে জড়িত। ধর্ম-ভিত্তিক শিক্ষার জন্য
তাদের মন ছোট এবং দৃষ্টিভঙ্গি উদার নয় বলে যে অভিযোগ রয়েছে, উমাইরা সেটি
উড়িয়ে দেয়। সে বলে, তার ধর্মের সাথে অন্য কোন কিছুর সংঘাত নেই। "আমি
মুসলিম, আমি নারী, এবং আমি উত্তর ইংল্যান্ডের মানুষ -- এই তিন পরিচয় একে
অপরের পরিপূরক।" এই স্কুল থেকে প্রায় এক মাইল দূরে তৌহিদুল ইসলাম বয়েজ
হাই স্কুল। ইংল্যান্ডের সেরা সেকেন্ডারি স্কুলের তালিকায় এর অবস্থান
তৃতীয়। পড়াশুনায় ভালো করার পাশাপাশি এখানকার ছাত্ররা নানা ধরনের সামাজিক
কর্মকাণ্ডের সাথেও জড়িত। ব্রিটেনের সরকার এখন এমন কিছু নীতিমালা হাতে
নিয়েছে যার ফলে ধর্ম-ভিত্তিক 'ফেইথ স্কুলের' সংখ্যা ভবিষ্যতে বাড়বে বলে
মনে করা হচ্ছে। গত বছর পাওয়া এক সরকারি তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, ব্রিটেনে
মোট ৬,৮০০টি সরকার অনুমোদিত 'ফেইথ স্কুল' রয়েছে। কিন্তু তার মধ্যে মাত্র
২৭টি স্কুল মুসলমানদের।
No comments