নিম্নমানের গম নিতে খাদ্য বিভাগের চাপ! by শাহ আলম
বাজারের দেশি গম |
ব্রাজিল
থেকে আমদানি করা নিম্নমানের গম দেওয়া হচ্ছে চুয়াডাঙ্গার ডিলার, আটাকলের
মালিক ও টেস্ট রিলিফ প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের। তাঁদের অভিযোগ, ওই গম
নিতে খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা চাপ দিচ্ছেন। তবে কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁরা
‘ওপরমহলের’ নির্দেশ পালন করছেন মাত্র।
খোলাবাজারে বিক্রি (ওএমএস) ও টেস্ট রিলিফ (টিআর) প্রকল্পের জন্য এসব গম কয়েক দিন ধরে খুলনার সিএসডি খাদ্যগুদাম থেকে চুয়াডাঙ্গায় পাঠানো হচ্ছে।
খুলনার মহেশ্বরপাশা সিএসডি খাদ্যগুদামের মহাব্যবস্থাপক রেজাউল ইসলাম প্রাথমিক পর্যায়ে চুয়াডাঙ্গায় ১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন গম পাঠানোর উদ্যোগের বিষয়টি জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রককে নিশ্চিত করেছেন। এর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি গম ইতিমধ্যে চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছেছে।
গত সোমবার দুপুরে দর্শনা এলএসডি গুদামে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন শ্রমিক একটি ট্রাক থেকে গমের বস্তা নামিয়ে গুদামে তুলছেন। পাশেই আরও এক ট্রাক গম খালাসের অপেক্ষায়। এই প্রতিবেদক বস্তা থেকে গমের নমুনা সংগ্রহ করে দেখেন, দানাগুলো খুবই সরু ও লাল, পোকায় খাওয়া। গমে কালো দানা ও ময়লাও আছে।
একই গুদাম থেকে এর আগে গমের নমুনা সংগ্রহ করেন দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফরিদুর রহমান। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘আগে কখনো এত নিম্নমানের গম সরকারি গুদামে দেখিনি। এগুলো মানুষের খাওয়ার উপযোগী কি না, সন্দেহ।’
খোলাবাজারে বিক্রি (ওএমএস) ও টেস্ট রিলিফ (টিআর) প্রকল্পের জন্য এসব গম কয়েক দিন ধরে খুলনার সিএসডি খাদ্যগুদাম থেকে চুয়াডাঙ্গায় পাঠানো হচ্ছে।
খুলনার মহেশ্বরপাশা সিএসডি খাদ্যগুদামের মহাব্যবস্থাপক রেজাউল ইসলাম প্রাথমিক পর্যায়ে চুয়াডাঙ্গায় ১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন গম পাঠানোর উদ্যোগের বিষয়টি জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রককে নিশ্চিত করেছেন। এর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি গম ইতিমধ্যে চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছেছে।
গত সোমবার দুপুরে দর্শনা এলএসডি গুদামে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন শ্রমিক একটি ট্রাক থেকে গমের বস্তা নামিয়ে গুদামে তুলছেন। পাশেই আরও এক ট্রাক গম খালাসের অপেক্ষায়। এই প্রতিবেদক বস্তা থেকে গমের নমুনা সংগ্রহ করে দেখেন, দানাগুলো খুবই সরু ও লাল, পোকায় খাওয়া। গমে কালো দানা ও ময়লাও আছে।
একই গুদাম থেকে এর আগে গমের নমুনা সংগ্রহ করেন দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফরিদুর রহমান। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘আগে কখনো এত নিম্নমানের গম সরকারি গুদামে দেখিনি। এগুলো মানুষের খাওয়ার উপযোগী কি না, সন্দেহ।’
গুদামে আমদানি করা গম |
গতকাল
চুয়াডাঙ্গা সদর এলএসডি গুদাম পরিদর্শন করেও আমদানি করা নিম্নমানের গম দেখা
যায়। ইউএনও ফরিদুর রহমান জানান, দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নে
নির্মাণাধীন ডিসি ইকো পার্কের উন্নয়নে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. আব্দুস
সামাদ আট মেট্রিক টন ও জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইন পাঁচ মেট্রিক টন গম
বরাদ্দ দিয়েছেন। দর্শনা এলএসডি গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি এলএসডি)
রমজান আলী বলেন, ওই গম নিম্নমানের বলে কাঙ্ক্ষিত বিক্রয়মূল্য পাওয়া যাবে
না। এতে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যাহত হবে।
চুয়াডাঙ্গা
পৌর এলাকার নয়জন ডিলারের মাধ্যমে খোলাবাজারে আটা বিক্রি হয়ে থাকে।
নিবন্ধিত স্থানীয় চারটি আটাকলের মালিক খাদ্য বিভাগ থেকে গম নিয়ে ভাঙিয়ে
ওএমএস ডিলারদের সরবরাহ করে থাকেন। তাঁদের একজন নীলকমল অয়েল অ্যান্ড
ফ্লাওয়ার মিলের মালিক মো. আলাউদ্দিন রতন জানান, আমদানি করা নিম্নমানের গমের
সরকারি মূল্য ১৯ টাকা কেজি। অথচ বাজারে ১৮ টাকা কেজি দরে ভালো গম পাওয়া
যাচ্ছে। কর্মকর্তারা চাপাচাপি করলেও এখন পর্যন্ত তিনি কোনো গম নেননি।
জ্যোতি অটো ফ্লাওয়ার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অর্জুন প্রসাদ আগরওয়াল বলেন, ‘বাধ্য হয়েই গম তুলেছি। গম চিকন হওয়ায় দেশি গমের তুলনায় আটার পরিমাণ কম হচ্ছে। এ ছাড়া রং লাল। লোকসান হলেও লাইসেন্স টিকিয়ে রাখতে গম তুলতে হচ্ছে।’
বড়বাজারের ওএমএস ডিলার বদর মুনি বলেন, ‘বাজারে সাদা দেশি আটা যেখানে ২০ টাকা, সেখানে ওএমএসের লাল নিম্নমানের আটার দর ২২ টাকা। এতে লোকে ওএমএসের আটা কিনছে না। গুদামে আটার মজুত বেড়ে গিয়ে ডিলারদের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।’
টেস্ট রিলিফ (টিআর) প্রকল্পের একাধিক সভাপতি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সরকারি হিসাবে প্রতি মেট্রিক টন গম ২৮ হাজার টাকা দরে প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দ ধরা হয়। এত দিন স্থানীয় জাতের গম দেওয়ায় তা প্রতি টন ১৯ থেকে ২০ হাজার টাকা দরে বিক্রি হতো। আমদানি করা গম নিম্নমানের হওয়ায় তা ১৫-১৬ হাজার টাকা দরেও বিক্রি হচ্ছে না।
আমদানি করা গমে পোকার উপস্থিতির সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক আব্দুল ওয়াহেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘গমে যে সামান্য পরিমাণ পোকা দেখা যাচ্ছে, তা প্রাথমিক পর্যায়েই আছে। কীটনাশক প্রয়োগ করে তা দমন করা সম্ভব।’ তিনি দাবি করেন, গমের মান নিয়ে তাঁর কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।
জেলা খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, আমদানি করা ওই গম জেলার পাঁচটি গুদামে মজুত থাকা পর্যন্ত স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত গম ছাড় না করতে ‘ওপরমহলের নির্দেশ’ রয়েছে। ডিলার, আটাকলের মালিক ও টেস্ট রিলিফ প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চাপ দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা বলেন, তাঁরা খাদ্য অধিদপ্তরের নির্দেশ পালন করছেন। এ বিষয়ে তাঁদের কিছুই করার নেই।
জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইন জানান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব (বৈদেশিক সংগ্রহ) মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান ৮ জুন এক পত্রে আমদানি করা গমের নমুনা প্রথম শ্রেণির হাকিমের মাধ্যমে সংগ্রহ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলেছেন। ১৫ ও ১৬ জুন নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। শিগগিরই তা ঢাকায় পাঠানো হবে।
জ্যোতি অটো ফ্লাওয়ার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অর্জুন প্রসাদ আগরওয়াল বলেন, ‘বাধ্য হয়েই গম তুলেছি। গম চিকন হওয়ায় দেশি গমের তুলনায় আটার পরিমাণ কম হচ্ছে। এ ছাড়া রং লাল। লোকসান হলেও লাইসেন্স টিকিয়ে রাখতে গম তুলতে হচ্ছে।’
বড়বাজারের ওএমএস ডিলার বদর মুনি বলেন, ‘বাজারে সাদা দেশি আটা যেখানে ২০ টাকা, সেখানে ওএমএসের লাল নিম্নমানের আটার দর ২২ টাকা। এতে লোকে ওএমএসের আটা কিনছে না। গুদামে আটার মজুত বেড়ে গিয়ে ডিলারদের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।’
টেস্ট রিলিফ (টিআর) প্রকল্পের একাধিক সভাপতি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সরকারি হিসাবে প্রতি মেট্রিক টন গম ২৮ হাজার টাকা দরে প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দ ধরা হয়। এত দিন স্থানীয় জাতের গম দেওয়ায় তা প্রতি টন ১৯ থেকে ২০ হাজার টাকা দরে বিক্রি হতো। আমদানি করা গম নিম্নমানের হওয়ায় তা ১৫-১৬ হাজার টাকা দরেও বিক্রি হচ্ছে না।
আমদানি করা গমে পোকার উপস্থিতির সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক আব্দুল ওয়াহেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘গমে যে সামান্য পরিমাণ পোকা দেখা যাচ্ছে, তা প্রাথমিক পর্যায়েই আছে। কীটনাশক প্রয়োগ করে তা দমন করা সম্ভব।’ তিনি দাবি করেন, গমের মান নিয়ে তাঁর কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।
জেলা খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, আমদানি করা ওই গম জেলার পাঁচটি গুদামে মজুত থাকা পর্যন্ত স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত গম ছাড় না করতে ‘ওপরমহলের নির্দেশ’ রয়েছে। ডিলার, আটাকলের মালিক ও টেস্ট রিলিফ প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চাপ দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা বলেন, তাঁরা খাদ্য অধিদপ্তরের নির্দেশ পালন করছেন। এ বিষয়ে তাঁদের কিছুই করার নেই।
জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইন জানান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব (বৈদেশিক সংগ্রহ) মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান ৮ জুন এক পত্রে আমদানি করা গমের নমুনা প্রথম শ্রেণির হাকিমের মাধ্যমে সংগ্রহ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলেছেন। ১৫ ও ১৬ জুন নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। শিগগিরই তা ঢাকায় পাঠানো হবে।
No comments