গাছ লাগাচ্ছে না কেউ কর্মসূচি আছে, বরাদ্দ আছে by মামুনুর রশীদ
ঢাকা
মহানগরের সৌন্দর্য বাড়াতে ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে গাছ লাগানোর
কথা। এ জন্য ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কর্মসূচি আছে। সেই কর্মসূচিতে অর্থ
বরাদ্দও করা হয়েছে। কিন্তু গাছ লাগানোর আসল কাজটি কেউ করছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত চার অর্থবছরে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বৃক্ষরোপণের জন্য প্রায় দুই কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছিল। গত বর্ষা মৌসুমে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এই খাতে ১৪ লাখ টাকা খরচ করেছে বলে দাবি করলেও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) কোনো অর্থই খরচ করেনি।
এ নিয়ে দুই সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা প্রথম আলোর কাছে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, কোথায়, কী ধরনের গাছ লাগানো হবে, তার সঠিক পরিকল্পনা নেই। আবার গাছ লাগানোর পর তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য লোকবল নেই। এসব কারণে এ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি।
তবে পরিবেশবাদীরা বলছেন, জায়গার অভাবটা বড় কথা নয়। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের সমন্বয়হীনতা এবং এ বিষয়ে চিন্তার অভাবেই বৃক্ষরোপণের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবহেলিত থেকে গেছে।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের পরিবেশ সার্কেল থেকে জানানো হয়, অবিভক্ত সিটি করপোরেশনে ২০১১-১২ অর্থবছরে বৃক্ষরোপণ বাবদ ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। বিভক্তির পর কোন সিটি করপোরেশন কত টাকা পাবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত না হওয়ায় টাকাটা অব্যবহৃত থেকে যায়। পরবর্তী তিন অর্থবছরে ডিএনসিসি প্রতিবছর ৫০ লাখ করে মোট দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ রাখে গাছ লাগানোর জন্য। আর এই সময়ে ডিএসসিসির বরাদ্দ ছিল ২০ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএনসিসির পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তারিক বিন ইউসুফ প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকার মতো একটি জনবহুল শহরে গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা জায়গার অভাব। মাটির গুণাগুণ বিচারে শহরের কোন জায়গায় কী ধরনের গাছ লাগালে ভালো হবে, সে বিষয়ে সঠিক কোনো কর্মপরিকল্পনা নেই। অন্যদিকে গাছ লাগানোর পর তা সংরক্ষণ ও পরিচর্যার জন্য লোকবল নেই।
তারপরও ডিএনসিসি দাবি করছে, গত বর্ষা মৌসুমে মিরপুর ১৪ থেকে ভাষানটেক বাজার, মাটিকাটা থেকে বাউনিয়া বাঁধ এবং বালুঘাট বাজার থেকে বাউনিয়া কালীবাড়ি পর্যন্ত কয়েকটি কাঠবাদাম, কৃষ্ণচূড়া, কদম, রাধাচূড়া, নিম, সোনালু ও অর্জুনগাছ লাগানো হয়েছিল। এতে খরচ হয়েছিল নয় লাখ টাকার কিছু বেশি। একই সময়ে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে থেকে বিকল্প সড়ক ধরে কিছুদূর পর্যন্ত ফুল ও অর্কিড-জাতীয় গাছ লাগানো হয়।
এই সপ্তাহে মহানগর ঘুরে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনের ফুল ও অর্কিড-জাতীয় গাছগুলো বেশ সতেজ আছে। তবে মিরপুর ১৪ থেকে ভাষানটেক পর্যন্ত সড়কদ্বীপের ওপর লাগানো গাছগুলোর প্রায় অর্ধেকই মৃত। কোনো গাছের বেড়া নেই, কিন্তু গাছ আছে, আবার কোনোটির বেড়া আছে, তবে ভেতরে গাছ নেই। এসব বেড়ার ওপর স্থানীয় লোকজন কাঁথা-কাপড় শুকাতে দিয়েছেন। মাটিকাটা বাজার থেকে বাউনিয়া বাঁধ এলাকার গাছগুলোর অবস্থা মোটামুটি ভালো অবস্থায় থাকলেও বালুঘাট বাজার থেকে বাউনিয়া কালীবাড়ি পর্যন্ত গত বছর লাগানো একটি গাছও চোখে পড়েনি।
এদিকে গত চার বছরে নিজেদের অর্থ খরচ করে একটি গাছও লাগায়নি ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ। ডিএসসিসির পরিবেশ সার্কেলের একজন প্রকৌশলীর অভিযোগ, ‘দক্ষিণের পরিবেশ সার্কেলটি নামসর্বস্ব। পরিকল্পনা দূরে থাক, এর কোনো কার্যক্রম আদতে নেই।’ অর্থ থাকা সত্ত্বেও গাছ না লাগানোর বিষয়ে তাঁর ব্যাখ্যা, ‘গাছ লাগানোর পর তার হিসাব রাখা কঠিন হয়ে যায়। দেখা যায়, দুই হাজার গাছ লাগানো হলে এক হাজার টিকে থাকে। এ ক্ষেত্রে অডিটের ঝামেলা এড়ানোর জন্য কেউ এতে আগ্রহী হন না।’
তবে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনছার আলী খান বলেছেন ভিন্ন কথা। গত বর্ষা মৌসুমে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সহায়তায় দক্ষিণের কিছু জায়গায় ২০০ গাছের চারা লাগান তাঁরা। ২০০ চারা লাগানোকেই তিনি যথেষ্ট ভেবেছেন। এ জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ খরচের প্রয়োজন নেই বলে মনে করেছিলেন তিনি।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির এহেন অবস্থা নিয়ে কথা হয় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সচিব ইকবাল হাবিবের সঙ্গে। বরাদ্দকৃত অর্থ অব্যবহৃত রাখা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা নিতান্তই অদূরদর্শিতা এবং কর্মকর্তাদের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ।’ জায়গার স্বল্পতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করলে জায়গা বের করাটা কোনো সমস্যা না।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত চার অর্থবছরে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বৃক্ষরোপণের জন্য প্রায় দুই কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছিল। গত বর্ষা মৌসুমে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এই খাতে ১৪ লাখ টাকা খরচ করেছে বলে দাবি করলেও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) কোনো অর্থই খরচ করেনি।
এ নিয়ে দুই সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা প্রথম আলোর কাছে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, কোথায়, কী ধরনের গাছ লাগানো হবে, তার সঠিক পরিকল্পনা নেই। আবার গাছ লাগানোর পর তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য লোকবল নেই। এসব কারণে এ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি।
তবে পরিবেশবাদীরা বলছেন, জায়গার অভাবটা বড় কথা নয়। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের সমন্বয়হীনতা এবং এ বিষয়ে চিন্তার অভাবেই বৃক্ষরোপণের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবহেলিত থেকে গেছে।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের পরিবেশ সার্কেল থেকে জানানো হয়, অবিভক্ত সিটি করপোরেশনে ২০১১-১২ অর্থবছরে বৃক্ষরোপণ বাবদ ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। বিভক্তির পর কোন সিটি করপোরেশন কত টাকা পাবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত না হওয়ায় টাকাটা অব্যবহৃত থেকে যায়। পরবর্তী তিন অর্থবছরে ডিএনসিসি প্রতিবছর ৫০ লাখ করে মোট দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ রাখে গাছ লাগানোর জন্য। আর এই সময়ে ডিএসসিসির বরাদ্দ ছিল ২০ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএনসিসির পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তারিক বিন ইউসুফ প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকার মতো একটি জনবহুল শহরে গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা জায়গার অভাব। মাটির গুণাগুণ বিচারে শহরের কোন জায়গায় কী ধরনের গাছ লাগালে ভালো হবে, সে বিষয়ে সঠিক কোনো কর্মপরিকল্পনা নেই। অন্যদিকে গাছ লাগানোর পর তা সংরক্ষণ ও পরিচর্যার জন্য লোকবল নেই।
তারপরও ডিএনসিসি দাবি করছে, গত বর্ষা মৌসুমে মিরপুর ১৪ থেকে ভাষানটেক বাজার, মাটিকাটা থেকে বাউনিয়া বাঁধ এবং বালুঘাট বাজার থেকে বাউনিয়া কালীবাড়ি পর্যন্ত কয়েকটি কাঠবাদাম, কৃষ্ণচূড়া, কদম, রাধাচূড়া, নিম, সোনালু ও অর্জুনগাছ লাগানো হয়েছিল। এতে খরচ হয়েছিল নয় লাখ টাকার কিছু বেশি। একই সময়ে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে থেকে বিকল্প সড়ক ধরে কিছুদূর পর্যন্ত ফুল ও অর্কিড-জাতীয় গাছ লাগানো হয়।
এই সপ্তাহে মহানগর ঘুরে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনের ফুল ও অর্কিড-জাতীয় গাছগুলো বেশ সতেজ আছে। তবে মিরপুর ১৪ থেকে ভাষানটেক পর্যন্ত সড়কদ্বীপের ওপর লাগানো গাছগুলোর প্রায় অর্ধেকই মৃত। কোনো গাছের বেড়া নেই, কিন্তু গাছ আছে, আবার কোনোটির বেড়া আছে, তবে ভেতরে গাছ নেই। এসব বেড়ার ওপর স্থানীয় লোকজন কাঁথা-কাপড় শুকাতে দিয়েছেন। মাটিকাটা বাজার থেকে বাউনিয়া বাঁধ এলাকার গাছগুলোর অবস্থা মোটামুটি ভালো অবস্থায় থাকলেও বালুঘাট বাজার থেকে বাউনিয়া কালীবাড়ি পর্যন্ত গত বছর লাগানো একটি গাছও চোখে পড়েনি।
এদিকে গত চার বছরে নিজেদের অর্থ খরচ করে একটি গাছও লাগায়নি ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ। ডিএসসিসির পরিবেশ সার্কেলের একজন প্রকৌশলীর অভিযোগ, ‘দক্ষিণের পরিবেশ সার্কেলটি নামসর্বস্ব। পরিকল্পনা দূরে থাক, এর কোনো কার্যক্রম আদতে নেই।’ অর্থ থাকা সত্ত্বেও গাছ না লাগানোর বিষয়ে তাঁর ব্যাখ্যা, ‘গাছ লাগানোর পর তার হিসাব রাখা কঠিন হয়ে যায়। দেখা যায়, দুই হাজার গাছ লাগানো হলে এক হাজার টিকে থাকে। এ ক্ষেত্রে অডিটের ঝামেলা এড়ানোর জন্য কেউ এতে আগ্রহী হন না।’
তবে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনছার আলী খান বলেছেন ভিন্ন কথা। গত বর্ষা মৌসুমে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সহায়তায় দক্ষিণের কিছু জায়গায় ২০০ গাছের চারা লাগান তাঁরা। ২০০ চারা লাগানোকেই তিনি যথেষ্ট ভেবেছেন। এ জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ খরচের প্রয়োজন নেই বলে মনে করেছিলেন তিনি।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির এহেন অবস্থা নিয়ে কথা হয় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সচিব ইকবাল হাবিবের সঙ্গে। বরাদ্দকৃত অর্থ অব্যবহৃত রাখা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা নিতান্তই অদূরদর্শিতা এবং কর্মকর্তাদের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ।’ জায়গার স্বল্পতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করলে জায়গা বের করাটা কোনো সমস্যা না।’
No comments