চার পেসারের বাংলাদেশ!
শুরুতে তামিম-সৌম্যর ঝড়ই বাংলাদেশকে এনে দিয়েছিল স্বপ্নের শুরু। ভারতের বিপক্ষে ১০২ রানের জুটি গড়ার পথে বাংলাদেশ দলের দুই ওপেনার। কাল মিরপুরে l প্রথম আলো |
মাশরাফির সঙ্গে তাসকিনের উইকেটপ্রাপ্তির উদ্যাপন যেন নতুন মাত্রাই পেয়ে গেছে। কাল বিরাট কোহলিকে আউট করার পর বাংলাদেশ অধিনায়কের সঙ্গে তাসকিনের উদ্যাপন। কাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে l প্রথম আলো |
টেস্ট
ক্রিকেটে রীতিমতো পত্রিকায় ‘পেস বোলার চাই’ বিজ্ঞাপন দেওয়ার পরিস্থিতি
হয়। চোটের কারণে কারও দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেট খেলা বারণ, কেউ এখনো টেস্ট
ম্যাচের চাপ নেওয়ার জন্য তৈরি নন। অথচ ওয়ানডেতে দেখুন! ১৪ জনের দলে চার
পেসার এবং কাল চারজনই কিনা খেললেন ভারতের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে!
এমন নয় যে, বাংলাদেশ দল এর আগে কখনো চার পেসার খেলায়নি। ১৯৮৬ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক ওয়ানডে থেকে শুরু করে প্রথম দিকের অনেক ম্যাচেই জোরে বোলারদের তালিকাটা লম্বা থাকত। ২০০৪ সালে ভারতের বিপক্ষে প্রথম জয় পাওয়ার ম্যাচটার কথাই ধরুন—চার পেসার ছিল সেই ম্যাচের দলেও। অবশ্য মাশরাফি বিন মুর্তজা, তাপস বৈশ্য আর নাজমুল হাসানের সঙ্গে খালেদ মাহমুদ ছিলেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে। দলে বিশেষজ্ঞ পেস বোলার তাই ছিলেন তিনজন।
এবারের চার পেসারের দলের সঙ্গে আগেরগুলোর এখানেই পার্থক্য। মাশরাফি, রুবেল হোসেন, তাসকিন আহমেদ ও নবাগত মুস্তাফিজুর রহমান—চারজনই বিশেষজ্ঞ পেস বোলার। বাংলাদেশ দলের চরিত্রে এটা একেবারেই নতুন সংযোজন, কারণ এর আগে যতবারই চার পেসার নিয়ে খেলা হয়েছে, প্রত্যেকবারই ‘কোটা’ পূরণ হয়েছে দুই বা তিনজন বিশেষজ্ঞ পেস বোলারের সঙ্গে এক-দুজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার নিয়ে। সে রকম একজন অলরাউন্ডার অবশ্য এবারও দলে আছেন, সৌম্য সরকার। তাঁকে ধরলে তো প্রথম ওয়ানডের দলে পেস বোলার হয়ে যায় পাঁচজন!
টেস্ট আর ওয়ানডের বাংলাদেশ দলের চেহারায় তাই পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে পেসারদের তালিকাটাই। ওয়ানডের দল গড়তে গিয়ে কোন পেসারকে বাদ দিয়ে কোন পেসার নেবেন, সেটা ঠিক করতে মধুর সমস্যায়ই পড়তে হয় কোচ-অধিনায়ক-নির্বাচকদের। মাশরাফি, তাসকিন, রুবেল, আল আমিন (যদিও বিশ্বকাপের পর থেকে অস্পষ্ট কারণে বিবেচনায় নেই), মুস্তাফিজদের সঙ্গে চাইলে শফিউল ইসলাম, আবুল হাসান, মোহাম্মদ শহীদদের নামও জুড়ে দেওয়া যায় সম্ভাব্যদের তালিকায়। অথচ টেস্টে রীতিমতো পেস বোলারের আকাল! হাঁটুর সমস্যার কারণে মাশরাফি, তাসকিন বিবেচনাতেই আসেন না। বাকিদের মধ্যেও নেই ভরসা দেওয়ার মতো কেউ। এক রবিউল ইসলাম ছিলেন। ফিটনেসের অভাবে তাঁকেও আপাতত বিবেচনার বাইরে রাখছেন নির্বাচকেরা।
পেসনির্ভর বোলিং আক্রমণের চিন্তাটা মূলত কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে আর অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার। তবে নির্বাচক কমিটিরও সায় ছিল তাতে। চার পেসার খেলানোর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ বললেন, ‘উইকেটে সামান্য ঘাস ছিল। তা ছাড়া বৃষ্টির সময় বলে উইকেটে পেসারদের জন্য বাড়তি সাহায্যও থাকার কথা। সে কারণেই টিম ম্যানেজমেন্ট চেয়েছে চার পেসার নিয়ে খেলতে। আমাদেরও মনে হয়েছে, সিদ্ধান্তটা সঠিক।’ কাল রাতে শেষ পর্যন্ত প্রমাণিত হয়েছে সেটাই। ভারতের ১০ উইকেটের মধ্যে পেসাররাই নিয়েছেন আটটা।
ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের স্পিন বলপ্রীতিও পেস বোলার বেশি খেলানোর একটা কারণ। প্রথম ওয়ানডের দলে বিশেষজ্ঞ স্পিনার বলতে তাই শুধু এক সাকিব আল হাসান। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে দেখতে প্রধান নির্বাচকও বলছিলেন, ‘ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা স্পিন ভালো খেলে। আমাদের মনে হয়েছে, স্পিনারদের তুলনায় পেসাররাই ওদের বেশি সমস্যায় ফেলতে পারবে। তা ছাড়া বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজ থাকায় বোলিং আক্রমণে বৈচিত্র্যও থাকবে, এ রকমই চিন্তা ছিল।’
চার পেসারের দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা আছে বতর্মান নির্বাচক কমিটিতে ফারুকের ‘সতীর্থ’ হাবিবুল বাশারের। ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ভারতকে হারানো ওই ম্যাচে যে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনিই! ১১ বছরের পুরোনো স্মৃতি হাতড়ে হাবিবুল বলছিলেন, ‘ওই সময়ের সম্ভাব্য সেরা খেলোয়াড়দের নিয়েই গড়া হয়েছিল দলটা। এখন অনেক সময় আমাদের পেস বোলিং অপশন কম থাকে, চাইলেও বেশি পেসার নেওয়া যায় না। তখন অপশন বেশি ছিল। পেস বোলিং অলরাউন্ডার থাকায় চার পেসার নেওয়ার সুবিধাও ছিল।’ তবে দ্বিতীয় চিন্তাটা এখনকার মতোই, ‘ওরা বরাবরই স্পিন ভালো খেলে। ভারতের বিপক্ষে দল গড়ার সময় সব সময়ই আমরা স্পিনার কম খেলানোর চিন্তা করি।’
কালও সেই চিন্তাটাই কাজে লেগেছে। ভারতকে কাঁপিয়ে দিল চার পেসারের বাংলাদেশ।
এমন নয় যে, বাংলাদেশ দল এর আগে কখনো চার পেসার খেলায়নি। ১৯৮৬ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক ওয়ানডে থেকে শুরু করে প্রথম দিকের অনেক ম্যাচেই জোরে বোলারদের তালিকাটা লম্বা থাকত। ২০০৪ সালে ভারতের বিপক্ষে প্রথম জয় পাওয়ার ম্যাচটার কথাই ধরুন—চার পেসার ছিল সেই ম্যাচের দলেও। অবশ্য মাশরাফি বিন মুর্তজা, তাপস বৈশ্য আর নাজমুল হাসানের সঙ্গে খালেদ মাহমুদ ছিলেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে। দলে বিশেষজ্ঞ পেস বোলার তাই ছিলেন তিনজন।
এবারের চার পেসারের দলের সঙ্গে আগেরগুলোর এখানেই পার্থক্য। মাশরাফি, রুবেল হোসেন, তাসকিন আহমেদ ও নবাগত মুস্তাফিজুর রহমান—চারজনই বিশেষজ্ঞ পেস বোলার। বাংলাদেশ দলের চরিত্রে এটা একেবারেই নতুন সংযোজন, কারণ এর আগে যতবারই চার পেসার নিয়ে খেলা হয়েছে, প্রত্যেকবারই ‘কোটা’ পূরণ হয়েছে দুই বা তিনজন বিশেষজ্ঞ পেস বোলারের সঙ্গে এক-দুজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার নিয়ে। সে রকম একজন অলরাউন্ডার অবশ্য এবারও দলে আছেন, সৌম্য সরকার। তাঁকে ধরলে তো প্রথম ওয়ানডের দলে পেস বোলার হয়ে যায় পাঁচজন!
টেস্ট আর ওয়ানডের বাংলাদেশ দলের চেহারায় তাই পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে পেসারদের তালিকাটাই। ওয়ানডের দল গড়তে গিয়ে কোন পেসারকে বাদ দিয়ে কোন পেসার নেবেন, সেটা ঠিক করতে মধুর সমস্যায়ই পড়তে হয় কোচ-অধিনায়ক-নির্বাচকদের। মাশরাফি, তাসকিন, রুবেল, আল আমিন (যদিও বিশ্বকাপের পর থেকে অস্পষ্ট কারণে বিবেচনায় নেই), মুস্তাফিজদের সঙ্গে চাইলে শফিউল ইসলাম, আবুল হাসান, মোহাম্মদ শহীদদের নামও জুড়ে দেওয়া যায় সম্ভাব্যদের তালিকায়। অথচ টেস্টে রীতিমতো পেস বোলারের আকাল! হাঁটুর সমস্যার কারণে মাশরাফি, তাসকিন বিবেচনাতেই আসেন না। বাকিদের মধ্যেও নেই ভরসা দেওয়ার মতো কেউ। এক রবিউল ইসলাম ছিলেন। ফিটনেসের অভাবে তাঁকেও আপাতত বিবেচনার বাইরে রাখছেন নির্বাচকেরা।
পেসনির্ভর বোলিং আক্রমণের চিন্তাটা মূলত কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে আর অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার। তবে নির্বাচক কমিটিরও সায় ছিল তাতে। চার পেসার খেলানোর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ বললেন, ‘উইকেটে সামান্য ঘাস ছিল। তা ছাড়া বৃষ্টির সময় বলে উইকেটে পেসারদের জন্য বাড়তি সাহায্যও থাকার কথা। সে কারণেই টিম ম্যানেজমেন্ট চেয়েছে চার পেসার নিয়ে খেলতে। আমাদেরও মনে হয়েছে, সিদ্ধান্তটা সঠিক।’ কাল রাতে শেষ পর্যন্ত প্রমাণিত হয়েছে সেটাই। ভারতের ১০ উইকেটের মধ্যে পেসাররাই নিয়েছেন আটটা।
ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের স্পিন বলপ্রীতিও পেস বোলার বেশি খেলানোর একটা কারণ। প্রথম ওয়ানডের দলে বিশেষজ্ঞ স্পিনার বলতে তাই শুধু এক সাকিব আল হাসান। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে দেখতে প্রধান নির্বাচকও বলছিলেন, ‘ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা স্পিন ভালো খেলে। আমাদের মনে হয়েছে, স্পিনারদের তুলনায় পেসাররাই ওদের বেশি সমস্যায় ফেলতে পারবে। তা ছাড়া বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজ থাকায় বোলিং আক্রমণে বৈচিত্র্যও থাকবে, এ রকমই চিন্তা ছিল।’
চার পেসারের দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা আছে বতর্মান নির্বাচক কমিটিতে ফারুকের ‘সতীর্থ’ হাবিবুল বাশারের। ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ভারতকে হারানো ওই ম্যাচে যে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনিই! ১১ বছরের পুরোনো স্মৃতি হাতড়ে হাবিবুল বলছিলেন, ‘ওই সময়ের সম্ভাব্য সেরা খেলোয়াড়দের নিয়েই গড়া হয়েছিল দলটা। এখন অনেক সময় আমাদের পেস বোলিং অপশন কম থাকে, চাইলেও বেশি পেসার নেওয়া যায় না। তখন অপশন বেশি ছিল। পেস বোলিং অলরাউন্ডার থাকায় চার পেসার নেওয়ার সুবিধাও ছিল।’ তবে দ্বিতীয় চিন্তাটা এখনকার মতোই, ‘ওরা বরাবরই স্পিন ভালো খেলে। ভারতের বিপক্ষে দল গড়ার সময় সব সময়ই আমরা স্পিনার কম খেলানোর চিন্তা করি।’
কালও সেই চিন্তাটাই কাজে লেগেছে। ভারতকে কাঁপিয়ে দিল চার পেসারের বাংলাদেশ।
No comments