সাংসদপুত্রই তাঁর পিস্তল দিয়ে গুলি ছুড়েছিলেন by নজরুল ইসলাম
বখতিয়ার আলম রনি |
সাংসদপুত্র
বখতিয়ার আলম রনির লাইসেন্স করা পিস্তল থেকেই গুলি বেরিয়েছিল।
অটোরিকশাচালক ইয়াকুবের শরীর থেকে উদ্ধার হওয়া গুলিটির ধরন পয়েন্ট ৩২
বোরের, যা সাংসদপুত্র কিনেছিলেন।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ব্যালাস্টিক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। তবে এই গুলিতেই ইয়াকুব নিহত হয়েছিলেন কি না, সেটি ওই প্রতিবেদনে বলা হয়নি।
সিআইডি গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই ব্যালাস্টিক প্রতিবেদন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে পাঠিয়েছে। জব্দ করা অস্ত্র থেকে গুলি বের হয়েছে কি না, সেই গুলিতেই কেউ মারা গেছে কি না, সেগুলো নিশ্চিত হওয়ার পরীক্ষাকে ব্যালাস্টিক প্রতিবেদন বলে।
প্রতিবেদন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নিহত অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলীর শরীর থেকে উদ্ধার করার সময় গুলিটি ভেঙে যায়। তাই ব্যালাস্টিক প্রতিবেদনে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে ভাঙা গুলিটি পয়েন্ট ৩২ বোরের। বখতিয়ার আলমের কেনা গুলিও একই বোরের। আর রিকশাচালক হাকিমের পেট দিয়ে গুলি ঢুকে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে গেছে। তাঁর শরীরে কোনো গুলি পাওয়া যায়নি।
গত ১৩ এপ্রিল রাজধানীর ইস্কাটনে রিকশাচালক আবদুল হাকিম ও অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলী গুলিবিদ্ধ হন। ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ডিবি পুলিশ বখতিয়ার আলম ও গাড়িচালক ইমরান ফকিরকে ৩১ মে গ্রেপ্তার করা হয়। ইমরান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, ১৩ এপ্রিল রাতে যানজটে আটকা পড়ে বখতিয়ার এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়েন। ৪ জুন বখতিয়ারের লাইসেন্স করা পিস্তল ও ২১টি গুলি জব্দ করা হয়। এরপর পিস্তলের ব্যালাস্টিক প্রতিবেদনের জন্য পিস্তলটি সিআইডিতে পাঠানো হয়। বখতিয়ারের মা সাংসদ ও মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পিনু খান। ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে বখতিয়ার বলেন, তাঁর ছোড়া গুলিতে দুই শ্রমজীবী হাকিম ও ইয়াকুব মারা যান।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বখতিয়ার তুরস্কের কেনা লাইসেন্স করা পিস্তল (৭.৬৫) দিয়ে গুলি ছুড়লেও নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেননি। ১৩ এপ্রিল রাতে বখতিয়ার তাঁর মায়ের প্রাডো গাড়ির ভেতর থেকে গুলি ছোড়ার সময় দুই বন্ধু কামাল মাহমুদ ও মো. কামাল ওরফে টাইগার কামাল গাড়িতে ছিলেন। তাঁরা সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আরেক বন্ধু জাহাঙ্গীর আলমও এ ঘটনায় সাক্ষ্য দিয়েছে।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, সাংসদপুত্রকে রিমান্ডে নিতে আবারও আবেদন করা হবে। পরে তাঁকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতে পাঠানো হবে।
দুই বন্ধুর জবানবন্দি: নিউ ইস্কাটনে ১৩ এপ্রিল রাতে যানজটে পড়ে বিরক্ত হয়ে বখতিয়ার পিস্তল দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে দুজন মানুষ মারা যান। গতকাল বখতিয়ারের দুই বন্ধু মো. কামাল ওরফে টাইগার কামাল এবং জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
গুলি ছোড়ার সময় বখতিয়ারের গাড়িতে তাঁর বন্ধু মো. কামাল ও জাহাঙ্গীর আলম ছিলেন। এর আগের দিন গত বুধবার বখতিয়ার আলমের আরেক বন্ধু আবাসন ব্যবসায়ী কামাল মাহমুদ সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দেন।
আদালত সূত্র জানায়, জাহাঙ্গীর ও কামালকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির এসআই দীপক কুমার দাস তাঁদের ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে নিয়ে যান। জবানবন্দি দিয়ে পরে তাঁরা বাসায় ফিরে যান।
মামলার তদন্ত ও আদালত-সংলিষ্ট সূত্র জানায়, সাক্ষী জাহাঙ্গীর ও কামাল জবানবন্দিতে বলেন, কল্যাণপুরে একটি জমির বেচাকেনা নিয়ে কথা বলতে তাঁদের বাংলামোটরে শ্যালে বারে ডেকে পাঠান সাংসদপুত্র বখতিয়ার। সেখানে তাঁরা মদপান করেন। তখন বখতিয়ারের সঙ্গে তাঁদের আরেক বন্ধু কামাল মাহমুদ ছিলেন। রাত ১১টায় শ্যালে বার বন্ধ হয়ে যায়। তখন বখতিয়ার তাঁকে সোনারগাঁও হোটেলে মদ খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে বন্ধু জাহাঙ্গীরকে বলেন। এতে জাহাঙ্গীর রাজি হলে তাঁরা চারজন (কামাল মাহমুদসহ) বখতিয়ারের প্রাডো গাড়িতে করে সোনারগাঁও হোটেলে আসেন। সেখানে বখতিয়ারের সঙ্গে আবার মদপান করেন।
জবানবন্দিতে তাঁরা বলেন, রাত দেড়টার দিকে তাঁরা সোনারগাঁও হোটেল থেকে বেরিয়ে গাড়িতে ওঠেন। চালক ইমরান গাড়ি চালাচ্ছিলেন। বখতিয়ার বসেন চালকের পাশের আসনে। কামাল মাহমুদসহ তিন বন্ধু পেছনে। প্রথমে জাহাঙ্গীরকে মগবাজার ডাক্তার গলির সামনে নামিয়ে দেওয়া হয়।
কামাল আদালতকে বলেন, রাত পৌনে দুইটার দিকে নিউ ইস্কাটনে এলএমজি টাওয়ারের সামনে পৌঁছালে গাড়ি যানজটে আটকে যায়। এতে অসহ্য হয়ে বখতিয়ার পিস্তল দিয়ে চার-পাঁচটি গুলি ছোড়েন। গুলি করতে দেখে তাঁরা বখতিয়ারকে বলেন, এটা কী করলা? জবাবে বখতিয়ার বলেন, কিছু হবে না, চুপ থাক।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ব্যালাস্টিক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। তবে এই গুলিতেই ইয়াকুব নিহত হয়েছিলেন কি না, সেটি ওই প্রতিবেদনে বলা হয়নি।
সিআইডি গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই ব্যালাস্টিক প্রতিবেদন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে পাঠিয়েছে। জব্দ করা অস্ত্র থেকে গুলি বের হয়েছে কি না, সেই গুলিতেই কেউ মারা গেছে কি না, সেগুলো নিশ্চিত হওয়ার পরীক্ষাকে ব্যালাস্টিক প্রতিবেদন বলে।
প্রতিবেদন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নিহত অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলীর শরীর থেকে উদ্ধার করার সময় গুলিটি ভেঙে যায়। তাই ব্যালাস্টিক প্রতিবেদনে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে ভাঙা গুলিটি পয়েন্ট ৩২ বোরের। বখতিয়ার আলমের কেনা গুলিও একই বোরের। আর রিকশাচালক হাকিমের পেট দিয়ে গুলি ঢুকে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে গেছে। তাঁর শরীরে কোনো গুলি পাওয়া যায়নি।
গত ১৩ এপ্রিল রাজধানীর ইস্কাটনে রিকশাচালক আবদুল হাকিম ও অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলী গুলিবিদ্ধ হন। ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ডিবি পুলিশ বখতিয়ার আলম ও গাড়িচালক ইমরান ফকিরকে ৩১ মে গ্রেপ্তার করা হয়। ইমরান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, ১৩ এপ্রিল রাতে যানজটে আটকা পড়ে বখতিয়ার এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়েন। ৪ জুন বখতিয়ারের লাইসেন্স করা পিস্তল ও ২১টি গুলি জব্দ করা হয়। এরপর পিস্তলের ব্যালাস্টিক প্রতিবেদনের জন্য পিস্তলটি সিআইডিতে পাঠানো হয়। বখতিয়ারের মা সাংসদ ও মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পিনু খান। ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে বখতিয়ার বলেন, তাঁর ছোড়া গুলিতে দুই শ্রমজীবী হাকিম ও ইয়াকুব মারা যান।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বখতিয়ার তুরস্কের কেনা লাইসেন্স করা পিস্তল (৭.৬৫) দিয়ে গুলি ছুড়লেও নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেননি। ১৩ এপ্রিল রাতে বখতিয়ার তাঁর মায়ের প্রাডো গাড়ির ভেতর থেকে গুলি ছোড়ার সময় দুই বন্ধু কামাল মাহমুদ ও মো. কামাল ওরফে টাইগার কামাল গাড়িতে ছিলেন। তাঁরা সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আরেক বন্ধু জাহাঙ্গীর আলমও এ ঘটনায় সাক্ষ্য দিয়েছে।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, সাংসদপুত্রকে রিমান্ডে নিতে আবারও আবেদন করা হবে। পরে তাঁকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতে পাঠানো হবে।
দুই বন্ধুর জবানবন্দি: নিউ ইস্কাটনে ১৩ এপ্রিল রাতে যানজটে পড়ে বিরক্ত হয়ে বখতিয়ার পিস্তল দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে দুজন মানুষ মারা যান। গতকাল বখতিয়ারের দুই বন্ধু মো. কামাল ওরফে টাইগার কামাল এবং জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
গুলি ছোড়ার সময় বখতিয়ারের গাড়িতে তাঁর বন্ধু মো. কামাল ও জাহাঙ্গীর আলম ছিলেন। এর আগের দিন গত বুধবার বখতিয়ার আলমের আরেক বন্ধু আবাসন ব্যবসায়ী কামাল মাহমুদ সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দেন।
আদালত সূত্র জানায়, জাহাঙ্গীর ও কামালকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির এসআই দীপক কুমার দাস তাঁদের ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে নিয়ে যান। জবানবন্দি দিয়ে পরে তাঁরা বাসায় ফিরে যান।
মামলার তদন্ত ও আদালত-সংলিষ্ট সূত্র জানায়, সাক্ষী জাহাঙ্গীর ও কামাল জবানবন্দিতে বলেন, কল্যাণপুরে একটি জমির বেচাকেনা নিয়ে কথা বলতে তাঁদের বাংলামোটরে শ্যালে বারে ডেকে পাঠান সাংসদপুত্র বখতিয়ার। সেখানে তাঁরা মদপান করেন। তখন বখতিয়ারের সঙ্গে তাঁদের আরেক বন্ধু কামাল মাহমুদ ছিলেন। রাত ১১টায় শ্যালে বার বন্ধ হয়ে যায়। তখন বখতিয়ার তাঁকে সোনারগাঁও হোটেলে মদ খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে বন্ধু জাহাঙ্গীরকে বলেন। এতে জাহাঙ্গীর রাজি হলে তাঁরা চারজন (কামাল মাহমুদসহ) বখতিয়ারের প্রাডো গাড়িতে করে সোনারগাঁও হোটেলে আসেন। সেখানে বখতিয়ারের সঙ্গে আবার মদপান করেন।
জবানবন্দিতে তাঁরা বলেন, রাত দেড়টার দিকে তাঁরা সোনারগাঁও হোটেল থেকে বেরিয়ে গাড়িতে ওঠেন। চালক ইমরান গাড়ি চালাচ্ছিলেন। বখতিয়ার বসেন চালকের পাশের আসনে। কামাল মাহমুদসহ তিন বন্ধু পেছনে। প্রথমে জাহাঙ্গীরকে মগবাজার ডাক্তার গলির সামনে নামিয়ে দেওয়া হয়।
কামাল আদালতকে বলেন, রাত পৌনে দুইটার দিকে নিউ ইস্কাটনে এলএমজি টাওয়ারের সামনে পৌঁছালে গাড়ি যানজটে আটকে যায়। এতে অসহ্য হয়ে বখতিয়ার পিস্তল দিয়ে চার-পাঁচটি গুলি ছোড়েন। গুলি করতে দেখে তাঁরা বখতিয়ারকে বলেন, এটা কী করলা? জবাবে বখতিয়ার বলেন, কিছু হবে না, চুপ থাক।
No comments