জামায়াতের সঙ্গে জোট কৌশলগত
(ভয়েস অব আমেরিকাকে খালেদা)
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, জামায়াতের সঙ্গে তাদের জোট
কৌশলগত। জামায়াতের সঙ্গে জোট, ঐক্য কিংবা আঁতাত আওয়ামী লীগই আগে করেছে।
আওয়ামী লীগ এখনও জামায়াতের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। বৃহস্পতিবার
রাতে ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন। নির্বাচন
প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে।
সুতরাং একাদশ সংসদ নিয়ে আলোচনা পরের বিষয়। ভয়েস অব আমেরিকার ওয়াশিংটন
স্টুডিও থেকে তার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন সরকার কবির উদ্দীন। এ
সাক্ষাৎকারে বিএনপির দলীয় অবস্থান ও আঠারো দলের পরবর্তী ভাবনা তুলে ধরেন
খালেদা জিয়া। নির্বাচন হয়ে গেল, এখন কী কর্মসূচি নিয়ে এগোবেন_ এ প্রশ্নের
জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, 'প্রথম কথা আমি বলব যে, দেশে কোনো নির্বাচন হয়নি।
যেটা হয়েছে তা কারও কাছেই গ্রহণযোগ্য নয়। দেশের মানুষ সরকারকে সম্পূর্ণভাবে
প্রত্যাখ্যান করেছে। ১৫৩টি সিটে কেউ কনটেস্ট করেননি।
কেউ আগ্রহীই নন নির্বাচন করতে। সেখানে শুধু একদলীয় নির্বাচন ১৫৩টি সিটে হয়েছে। কোনো প্রতিযোগিতা, প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। যে ১৪৭টি সিটে ৫ জানুয়ারি ভোট হলো সেখানেও দেশের ও বিদেশের মিডিয়া কর্মীরা দেখেছেন, ভোটকেন্দ্রে মানুষই নেই। প্রিসাইডিং অফিসার কোনো কোনো জায়গায় ঘুমাচ্ছেন। কোনো কোনো জায়গায় নিজেরাই ভোট দিচ্ছেন। ৪৭/৪৮টি কেন্দ্রে কোনো ভোটার ভোট দেননি। এছাড়া অনেক কেন্দ্র ছিল বন্ধ। তারপরও যেটি হলো তাতে ৫ শতাংশও ভোট পড়েনি। জনগণের মতামতের কোনো প্রতিফলন এখানে হয়নি। কাজেই এটিকে কোনো নির্বাচন বলব না। এটি ভাগাভাগির নির্বাচন বলতে পারেন। তারা নিজেরা সিট ভাগাভাগি এবং ক্ষমতার ভাগাভাগি করেছে।
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের জনগণ সত্যিকারের একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়। যেখানে সকল দলের অংশগ্রহণ থাকবে। সে নির্বাচন হতে হবে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। ৫ জানুয়ারির পরে মানুষ আরও পরিষ্কার আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না। নির্বাচন কমিশন যে একটি মেরুদ হীন বা দলীয় সরকারের মতো কাজ করেছে, এটাও একদম পরিষ্কার। যেখানে ৫ শতাংশও ভোট পড়েনি। সেখানে কেমন করে ৪০ শতাংশ ভোট বলে? এটিও একটি নির্লজ্জ মিথ্যা কথা বলছে। এজন্য দু'দিন সময় লেগেছে। সব ঠিকঠাক করে, গুছিয়ে কীভাবে বলবে তা ঠিকঠাক করে বলা হয়েছে। জাতি এটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।'
একাদশ সংসদ নিয়ে আলোচনার আহ্বান প্রশ্নে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'দশম নির্বাচনই তো মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। একাদশের কথা পরে হবে। বিএনপি গণতান্ত্রিক দল। আমি অনেক আগে থেকেই গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছি। আমরা সত্যিকার গণতন্ত্র চাই। জনগণের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, মানবাধিকার রক্ষা করতে চাই। শান্তি চাই, উন্নয়ন চাই, দারিদ্র্য বিমোচন চাই, লেখাপাড়া চাই। তরুণরা এ সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে।'
জামায়াতের সঙ্গে যোগাযোগ, জোট বা ঐক্য বা আঁতাত কৌশলগত কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপিপ্রধান বলেন, 'জামায়াতের সঙ্গে আঁতাত বলেন, জোট বলেন বা ঐক্য বলেন তা আওয়ামী লীগই আগে করেছে। এইচএম এরশাদের আমলে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম কেউ নির্বাচনে যাব না। তারপর মাঝরাতে এরশাদের সঙ্গে আঁতাত করে নির্বাচনে গেল আওয়ামী লীগ। জামায়াতের সঙ্গে কথা বলে তাদের নিয়ে গেল। নিরপেক্ষ সরকারের দাবিটা আওয়ামী লীগ এবং জামায়াতের। সে জন্য তখন আওয়ামী লীগ অনেক নাশকতা করেছে। আওয়ামী লীগ এখনও জামায়াতের সঙ্গে সেই যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে। বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের এ জোট সম্পূর্ণভাবে কৌশলগত।'
বিদেশিদের হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া বলেন, 'বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ। এ দেশের মানুষই সিদ্ধান্ত নেবে। বিদেশিরা আমাদের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে সহযোগিতা করে। তারা বিভিন্ন বিষয়ে কথাবার্তা বলতে পারে। কিন্তু তারা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপ করলে মানুষ তা সহ্য করবে না।'
সাম্প্রতিক সময়ে অচলাবস্থা, হত্যা, নাশকতা, ভাংচুর, অগি্নসংযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, 'এ সবকিছুর দায় বর্তায় সরকারের ওপর। এজন্য সরকার দায়ী। সরকার দলীয় লোকজনই এসব ঘটনা ঘটিয়েছে। সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর তারা পোড়াচ্ছে। অতীতেও তারা হিন্দুদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করেছে। সংখ্যালঘুদের সঙ্গে সব সময় তারা খারাপ আচরণ করেছে। তিনি বলেন, পুলিশের চোখের সামনে এগুলো ঘটলেও তারা কিছু বলছে না। কারণ তাদের নির্দেশনা দেওয়া আছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিষয়ে তিনি বলেন, গণতন্ত্র, জনগণের অধিকার, মানবাধিকার, স্বাধীন দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কারও হস্তক্ষেপ নয় এটাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। এগুলো আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিএনপি চেয়াপারসন অভিযোগ করেন, 'দেশের পরিস্থিতি এখন অত্যন্ত ভয়াবহ। সারা জীবন ক্ষমতায় থাকার জন্য হত্যা, গুম করছে আওয়ামী লীগ। যারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে তাদের বিরুদ্ধেই নির্যাতন চালানো হচ্ছে।' জেলখানাগুলো বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কর্মীদের দিয়ে ভরে ফেলা হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
কেউ আগ্রহীই নন নির্বাচন করতে। সেখানে শুধু একদলীয় নির্বাচন ১৫৩টি সিটে হয়েছে। কোনো প্রতিযোগিতা, প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। যে ১৪৭টি সিটে ৫ জানুয়ারি ভোট হলো সেখানেও দেশের ও বিদেশের মিডিয়া কর্মীরা দেখেছেন, ভোটকেন্দ্রে মানুষই নেই। প্রিসাইডিং অফিসার কোনো কোনো জায়গায় ঘুমাচ্ছেন। কোনো কোনো জায়গায় নিজেরাই ভোট দিচ্ছেন। ৪৭/৪৮টি কেন্দ্রে কোনো ভোটার ভোট দেননি। এছাড়া অনেক কেন্দ্র ছিল বন্ধ। তারপরও যেটি হলো তাতে ৫ শতাংশও ভোট পড়েনি। জনগণের মতামতের কোনো প্রতিফলন এখানে হয়নি। কাজেই এটিকে কোনো নির্বাচন বলব না। এটি ভাগাভাগির নির্বাচন বলতে পারেন। তারা নিজেরা সিট ভাগাভাগি এবং ক্ষমতার ভাগাভাগি করেছে।
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের জনগণ সত্যিকারের একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়। যেখানে সকল দলের অংশগ্রহণ থাকবে। সে নির্বাচন হতে হবে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। ৫ জানুয়ারির পরে মানুষ আরও পরিষ্কার আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না। নির্বাচন কমিশন যে একটি মেরুদ হীন বা দলীয় সরকারের মতো কাজ করেছে, এটাও একদম পরিষ্কার। যেখানে ৫ শতাংশও ভোট পড়েনি। সেখানে কেমন করে ৪০ শতাংশ ভোট বলে? এটিও একটি নির্লজ্জ মিথ্যা কথা বলছে। এজন্য দু'দিন সময় লেগেছে। সব ঠিকঠাক করে, গুছিয়ে কীভাবে বলবে তা ঠিকঠাক করে বলা হয়েছে। জাতি এটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।'
একাদশ সংসদ নিয়ে আলোচনার আহ্বান প্রশ্নে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'দশম নির্বাচনই তো মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। একাদশের কথা পরে হবে। বিএনপি গণতান্ত্রিক দল। আমি অনেক আগে থেকেই গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছি। আমরা সত্যিকার গণতন্ত্র চাই। জনগণের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, মানবাধিকার রক্ষা করতে চাই। শান্তি চাই, উন্নয়ন চাই, দারিদ্র্য বিমোচন চাই, লেখাপাড়া চাই। তরুণরা এ সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে।'
জামায়াতের সঙ্গে যোগাযোগ, জোট বা ঐক্য বা আঁতাত কৌশলগত কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপিপ্রধান বলেন, 'জামায়াতের সঙ্গে আঁতাত বলেন, জোট বলেন বা ঐক্য বলেন তা আওয়ামী লীগই আগে করেছে। এইচএম এরশাদের আমলে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম কেউ নির্বাচনে যাব না। তারপর মাঝরাতে এরশাদের সঙ্গে আঁতাত করে নির্বাচনে গেল আওয়ামী লীগ। জামায়াতের সঙ্গে কথা বলে তাদের নিয়ে গেল। নিরপেক্ষ সরকারের দাবিটা আওয়ামী লীগ এবং জামায়াতের। সে জন্য তখন আওয়ামী লীগ অনেক নাশকতা করেছে। আওয়ামী লীগ এখনও জামায়াতের সঙ্গে সেই যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে। বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের এ জোট সম্পূর্ণভাবে কৌশলগত।'
বিদেশিদের হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া বলেন, 'বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ। এ দেশের মানুষই সিদ্ধান্ত নেবে। বিদেশিরা আমাদের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে সহযোগিতা করে। তারা বিভিন্ন বিষয়ে কথাবার্তা বলতে পারে। কিন্তু তারা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপ করলে মানুষ তা সহ্য করবে না।'
সাম্প্রতিক সময়ে অচলাবস্থা, হত্যা, নাশকতা, ভাংচুর, অগি্নসংযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, 'এ সবকিছুর দায় বর্তায় সরকারের ওপর। এজন্য সরকার দায়ী। সরকার দলীয় লোকজনই এসব ঘটনা ঘটিয়েছে। সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর তারা পোড়াচ্ছে। অতীতেও তারা হিন্দুদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করেছে। সংখ্যালঘুদের সঙ্গে সব সময় তারা খারাপ আচরণ করেছে। তিনি বলেন, পুলিশের চোখের সামনে এগুলো ঘটলেও তারা কিছু বলছে না। কারণ তাদের নির্দেশনা দেওয়া আছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিষয়ে তিনি বলেন, গণতন্ত্র, জনগণের অধিকার, মানবাধিকার, স্বাধীন দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কারও হস্তক্ষেপ নয় এটাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। এগুলো আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিএনপি চেয়াপারসন অভিযোগ করেন, 'দেশের পরিস্থিতি এখন অত্যন্ত ভয়াবহ। সারা জীবন ক্ষমতায় থাকার জন্য হত্যা, গুম করছে আওয়ামী লীগ। যারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে তাদের বিরুদ্ধেই নির্যাতন চালানো হচ্ছে।' জেলখানাগুলো বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কর্মীদের দিয়ে ভরে ফেলা হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
No comments