পাটিগণিতের নতুন সূত্র উদ্ভাবক সাজ্জাদ by নাদিম মজিদ
সূত্র
উদ্ভাবন সম্পর্কে গণিত পরিক্রমার সম্পাদক শামসুর রহমান বলেন, 'সাজ্জাদ আলম
অনুপাত-সমানুপাতের সব অঙ্ক করার জন্য আরও ১৪টি সূত্র উদ্ভাবন করেছে। আমি
আশা করছি, সাজ্জাদ ভবিষ্যতে গণিতের জন্য আরও বেশি পরিশ্রম করবে। দেশের তরুণ
সমাজ তাকে দেখে গবেষণায় আকৃষ্ট হবে।' বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার
সময় সাজ্জাদ আলম সময়ের গুরুত্ব ভালোভাবে টের পান। অল্প সময়ে অনেক প্রশ্নের
উত্তর লিখতে হয়। সময়ের অভাবে সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যায় না। আবার
তাড়াহুড়ার কারণে অনেক সময় ভুল উত্তর দিয়ে আসতে হয়। কোনো কোনো
বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে নেগেটিভ মার্কিং। উত্তর ভুল হলে কাটা যাবে নম্বর। এসব
সমস্যার মুখোমুখি হয়ে তার মনে হলো, ইস! যদি কম সময়ে নির্ভুলভাবে বেশি উত্তর
করা যেত! এমন ভাবনা থেকে একসময় উদ্ভাবন করেন পাটিগণিতের অনুপাত-সমানুপাত
বিষয়ে ১৪টি সূত্র। সূত্রগুলোর অপরিহার্যতা এবং মৌলিকত্ব নিশ্চিত হওয়ার পর
বাংলাদেশ গণিত সমিতির পক্ষ থেকে প্রকাশিত 'গণিত পরিক্রমা'র ২১শ' খণ্ডে
এগুলো প্রকাশ করা হয়।
সাজ্জাদ আলম তার কাজ সম্পর্কে বলেন, 'ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সময় আমি সময়স্বল্পতা বুঝতে পারি। তাই কম সময়ে কাজ করার জন্য পদ্ধতি বের করতে মনোযোগী হই। পাটিগণিতের অনুপাত-সমানুপাত অধ্যায়ের অঙ্কগুলোর ক্ষেত্রে আমাদের পাঠ্যবইয়ে তিনটি সূত্র প্রচলিত আছে। সূত্রগুলো লিখেছেন গণিত সম্রাট যাদব। এ সূত্রগুলো দিয়ে অনুপাত-সমানুপাতের সব অঙ্ক করা যায় না। এ সীমাবদ্ধতা কাটাতে আমি কাজ শুরু করি। ২০১১ সালে আমি এ অধ্যায়ের জন্য প্রয়োজনীয় আরও ১৪টি সূত্র উদ্ভাবন করি। আগের তিনটি সূত্রের সঙ্গে এ ১৪টি সূত্র যোগ করে অনুপাত-সমানুপাতের সব অঙ্ক সমাধান করা যায়।' বর্তমান সময় তথ্যপ্রযুক্তির। এখন মানুষ হাতে লেখার চেয়ে কম্পিউটারে লেখে বেশি। তাই সূত্র উদ্ভাবন করে বসে থাকেননি সাজ্জাদ। এ সূত্রগুলোকে এমএস এক্সেলে ব্যবহারের উপযোগী কি-না তাও পরীক্ষা করে দেখেছেন। প্রচলিত তিনটি সূত্র এমএস এক্সেলে ব্যবহারের উপযোগী না হলেও তার সূত্রগুলো ব্যবহারের উপযোগী।
সাজ্জাদ সূত্র উদ্ভাবন করে বসে থাকেননি। বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে তিনি বাংলাদেশ গণিত সমিতি থেকে স্বীকৃতি পান। তিনি বলেন, আমি সূত্র উদ্ভাবন করে আমাদের করিমগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. মুখতার হোসেনকে দেখাই। স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য তিনি আমাকে সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ধানমণ্ডির সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে গেলে তারা সূত্রগুলোর স্বীকৃতি দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। তারপর আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে যাই। সেখানে অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম স্যার আমার সূত্রগুলো দেখেন। তিনি আমার কাছ থেকে সূত্রগুলোর এক কপি রাখেন এবং আমাকে সূত্রগুলো বাংলাদেশ গণিত সমিতিতে জমা দিতে বলেন। ২০১১ সালে সমিতিতে জমা দেওয়ার পর ২০১২ সালে সমিতির পত্রিকা 'গণিত পরিক্রমা'র সম্পাদক শামসুর রহমান স্যার আমাকে সূত্রগুলো গ্রহণ করার কথা বলেন। ২০১৩ সালের আগস্ট মাসে 'গণিত পরিক্রমা'র ২১শ' খণ্ডে তা প্রকাশ করা হয়।'
তার সূত্র উদ্ভাবন সম্পর্কে গণিত পরিক্রমার সম্পাদক শামসুর রহমান বলেন, 'সাজ্জাদ আলম অনুপাত-সমানুপাতের সব অঙ্ক করার জন্য আরও ১৪টি সূত্র উদ্ভাবন করেছে। আমি আশা করছি, সাজ্জাদ ভবিষ্যতে গণিতের জন্য আরও বেশি পরিশ্রম করবে। দেশের তরুণ সমাজ তাকে দেখে গবেষণায় আকৃষ্ট হবে।' সাজ্জাদ আলম ১৯৯০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার ভাটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৪ সালে ভাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। তার বাবা বাংলাদেশ রেলওয়ের নিরাপত্তা প্রহরী। আর্থিক সমস্যার কারণে তার পড়াশোনা চলছে থেমে থেমে। ২০০৮ সালে এইচএসসি উত্তীর্ণ হন। পরিবারের ওপর চাপ কমাতে পড়াশোনার পাশাপাশি করেন টিউশনি। তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে তাল মেলাতে ২০১০ সালে যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণকেন্দ্র থেকে করেছেন কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন কোর্স। বর্তমানে তিনি ঈশা খাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ প্রথম সেমিস্টারে পড়ছেন। গণিত সম্রাট যাদবের উত্তরসূরি সাজ্জাদ আলম তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বলেন, 'আমি একটি মানসিক হাসপাতাল করতে চাই, যেখানে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা পাওয়া যাবে। আমি অনেক মেধাবী ছাত্রছাত্রী দেখেছি, যারা মানসিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর আর সুস্থ হয়নি। দারিদ্র্যের কারণে তাদের পরিবারের সুচিকিৎসা দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না। হয়তো তারা সুস্থ হলে দেশ তথা বিশ্বের জন্য কল্যাণকর কিছু করতে পারত। আমি নিজেও এসএসসি পাস করার পর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। আল্লাহ যদি সুস্থ না করতেন, তাহলে সূত্র উদ্ভাবন করতে পারতাম না। যতদিন বেঁচে থাকি ততদিন পৃথিবীর জন্য কল্যাণকর কিছু করতে চেষ্টা করে যাব। সেক্ষেত্রে মানুষের জন্য কল্যাণকর কিছু করার জন্য সফটওয়্যার তৈরির পরিকল্পনা আছে।'
তরুণ প্রজন্মের কাছে সাজ্জাদের কাজ হতে পারে একটি দৃষ্টান্ত। গবেষণা ও উদ্ভাবনে তরুণরা নিজেদের নিয়োজিত রাখলে সুফল পাবে বাংলাদেশ। সেটা হতে পারে গণিতের নতুন সূত্র অথবা কল্যাণকর যে কোনো আবিষ্কার
সাজ্জাদ আলম তার কাজ সম্পর্কে বলেন, 'ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সময় আমি সময়স্বল্পতা বুঝতে পারি। তাই কম সময়ে কাজ করার জন্য পদ্ধতি বের করতে মনোযোগী হই। পাটিগণিতের অনুপাত-সমানুপাত অধ্যায়ের অঙ্কগুলোর ক্ষেত্রে আমাদের পাঠ্যবইয়ে তিনটি সূত্র প্রচলিত আছে। সূত্রগুলো লিখেছেন গণিত সম্রাট যাদব। এ সূত্রগুলো দিয়ে অনুপাত-সমানুপাতের সব অঙ্ক করা যায় না। এ সীমাবদ্ধতা কাটাতে আমি কাজ শুরু করি। ২০১১ সালে আমি এ অধ্যায়ের জন্য প্রয়োজনীয় আরও ১৪টি সূত্র উদ্ভাবন করি। আগের তিনটি সূত্রের সঙ্গে এ ১৪টি সূত্র যোগ করে অনুপাত-সমানুপাতের সব অঙ্ক সমাধান করা যায়।' বর্তমান সময় তথ্যপ্রযুক্তির। এখন মানুষ হাতে লেখার চেয়ে কম্পিউটারে লেখে বেশি। তাই সূত্র উদ্ভাবন করে বসে থাকেননি সাজ্জাদ। এ সূত্রগুলোকে এমএস এক্সেলে ব্যবহারের উপযোগী কি-না তাও পরীক্ষা করে দেখেছেন। প্রচলিত তিনটি সূত্র এমএস এক্সেলে ব্যবহারের উপযোগী না হলেও তার সূত্রগুলো ব্যবহারের উপযোগী।
সাজ্জাদ সূত্র উদ্ভাবন করে বসে থাকেননি। বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে তিনি বাংলাদেশ গণিত সমিতি থেকে স্বীকৃতি পান। তিনি বলেন, আমি সূত্র উদ্ভাবন করে আমাদের করিমগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. মুখতার হোসেনকে দেখাই। স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য তিনি আমাকে সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ধানমণ্ডির সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে গেলে তারা সূত্রগুলোর স্বীকৃতি দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। তারপর আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে যাই। সেখানে অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম স্যার আমার সূত্রগুলো দেখেন। তিনি আমার কাছ থেকে সূত্রগুলোর এক কপি রাখেন এবং আমাকে সূত্রগুলো বাংলাদেশ গণিত সমিতিতে জমা দিতে বলেন। ২০১১ সালে সমিতিতে জমা দেওয়ার পর ২০১২ সালে সমিতির পত্রিকা 'গণিত পরিক্রমা'র সম্পাদক শামসুর রহমান স্যার আমাকে সূত্রগুলো গ্রহণ করার কথা বলেন। ২০১৩ সালের আগস্ট মাসে 'গণিত পরিক্রমা'র ২১শ' খণ্ডে তা প্রকাশ করা হয়।'
তার সূত্র উদ্ভাবন সম্পর্কে গণিত পরিক্রমার সম্পাদক শামসুর রহমান বলেন, 'সাজ্জাদ আলম অনুপাত-সমানুপাতের সব অঙ্ক করার জন্য আরও ১৪টি সূত্র উদ্ভাবন করেছে। আমি আশা করছি, সাজ্জাদ ভবিষ্যতে গণিতের জন্য আরও বেশি পরিশ্রম করবে। দেশের তরুণ সমাজ তাকে দেখে গবেষণায় আকৃষ্ট হবে।' সাজ্জাদ আলম ১৯৯০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার ভাটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৪ সালে ভাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। তার বাবা বাংলাদেশ রেলওয়ের নিরাপত্তা প্রহরী। আর্থিক সমস্যার কারণে তার পড়াশোনা চলছে থেমে থেমে। ২০০৮ সালে এইচএসসি উত্তীর্ণ হন। পরিবারের ওপর চাপ কমাতে পড়াশোনার পাশাপাশি করেন টিউশনি। তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে তাল মেলাতে ২০১০ সালে যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণকেন্দ্র থেকে করেছেন কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন কোর্স। বর্তমানে তিনি ঈশা খাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ প্রথম সেমিস্টারে পড়ছেন। গণিত সম্রাট যাদবের উত্তরসূরি সাজ্জাদ আলম তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বলেন, 'আমি একটি মানসিক হাসপাতাল করতে চাই, যেখানে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা পাওয়া যাবে। আমি অনেক মেধাবী ছাত্রছাত্রী দেখেছি, যারা মানসিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর আর সুস্থ হয়নি। দারিদ্র্যের কারণে তাদের পরিবারের সুচিকিৎসা দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না। হয়তো তারা সুস্থ হলে দেশ তথা বিশ্বের জন্য কল্যাণকর কিছু করতে পারত। আমি নিজেও এসএসসি পাস করার পর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। আল্লাহ যদি সুস্থ না করতেন, তাহলে সূত্র উদ্ভাবন করতে পারতাম না। যতদিন বেঁচে থাকি ততদিন পৃথিবীর জন্য কল্যাণকর কিছু করতে চেষ্টা করে যাব। সেক্ষেত্রে মানুষের জন্য কল্যাণকর কিছু করার জন্য সফটওয়্যার তৈরির পরিকল্পনা আছে।'
তরুণ প্রজন্মের কাছে সাজ্জাদের কাজ হতে পারে একটি দৃষ্টান্ত। গবেষণা ও উদ্ভাবনে তরুণরা নিজেদের নিয়োজিত রাখলে সুফল পাবে বাংলাদেশ। সেটা হতে পারে গণিতের নতুন সূত্র অথবা কল্যাণকর যে কোনো আবিষ্কার
No comments