ভারতেও কমছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্লান্ট
বিশ্বব্যাপী
সুপরিচিত তিনটি পরিবেশবাদী গোষ্ঠীর এক যৌথ সমীক্ষায় বলা হয়েছে,
বিশ্বব্যাপী গত এক বছরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ ও নির্মাণের
পরিকল্পনা নাটকীয়ভাবে কমেছে। গ্রিনপিস, দ্যা সিয়েরা ক্লাব ও কোল সোয়ারম-
এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের চালানো সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ভারত ও চীনে নতুন
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কমে যাওয়ার কারণেই ২০১৬ সালে মূলত
এই অবস্থা তৈরি হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ
কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা গত এক বছরে কমেছে ৪৮ শতাংশ, আর আগের এক বছরের
তুলনায় এ ধরণের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ কমেছে অন্তত ৬২ শতাংশ। আবার
ইউরোপ ও আমেরিকায় পুরনো বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর বন্ধ করে দেয়ার পরিমাণও
উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে বলে সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে। সমীক্ষাটি এমন
সময় প্রকাশিত হলো যখন বাংলাদেশেও সাম্প্রতিক কালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ
কেন্দ্র নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক হচ্ছে। পরিবেশবাদীদের দাবি রামপালে
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে সেটি সুন্দরবনের জন্য ব্যাপক ক্ষতির কারণ
হবে। তবে সরকার এসব সমালোচনা নাকচ করে বলেছে, আধুনিক প্রযুক্তির কারণে
কেন্দ্রটি সুন্দরবন ও পরিবেশের জন্য ক্ষতির কারণ হবে না।
সুন্দরবনের
জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে ইউনেস্কো গ্রিনপিস,
দ্যা সিয়েরা ক্লাব ও কোল সোয়ারম-এর সমীক্ষায় বলা হয়েছে, সরকারের নীতি
পরিবর্তন ও অর্থনৈতিক বিবেচনার কারণেই ভারত ও চীনে কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ
কেন্দ্র নাটকীয়ভাবে কমছে। গত দশ বছরে বিশ্বের ৮৫ শতাংশ কয়লাভিত্তিক
বিদ্যুৎ কেন্দ্র হয়েছে ভারত ও চীনে। কিন্তু এভাবে কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ
কেন্দ্র নির্মাণের হিড়িক পড়ার দিন সম্ভবত শেষ হয়ে গেছে। বরং গত এক বছরে
কয়লা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার প্রবণতাই ব্যাপকভাবে বেড়েছে। চীনে
কেন্দ্রীয় সরকার কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে, ফলে অন্তত ৬০০ কয়লা-ভিত্তিক
বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির কাজ সেখানে কমপক্ষে ২০২০ সাল পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।
আর ভারতে এ ধরণের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ স্লথ হয়ে পড়ার মূল কারণ হলো
ব্যাংকগুলো আর এখানে বিনিয়োগ করতে খুব একটা আগ্রহী নয়। ইউরোপ ও
আমেরিকায় গত দুই বছরে অনেকগুলো কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করা
হয়েছে। এসব দেশে অন্তত ১২০টি বড় ধরনের কয়লাভিত্তিক ইউনিটকে উৎপাদন থেকে
বিরত রাখা হয়েছে। তবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে এ ধরনের
রিপোর্টকে বিভ্রান্তিকর বলছে ওয়ার্ল্ড কোল অ্যাসোসিয়েশন। তাদের মতে,
বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ব্যবহার ছাড়া এশিয়ার দেশগুলোর হাতে বিকল্প খুব
কমই রয়েছে।
সূত্র : বিবিসি
সূত্র : বিবিসি
No comments