পাকিস্তানে মিনি সাইক্লোন
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে প্রচণ্ড ঝড় ও বৃষ্টির কারণে ৪৪ জন নিহত ও দুই শতাধিক লোক আহত হয়েছে। এছাড়া ধসে পড়েছে বেশ কয়েকটি ভবন। ঝড়টিকে ‘মিনি সাইক্লোন’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। সোমবার কর্মকর্তারা এ কথা জানান। রোববার দিনের শেষে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ার ও এর পার্শ্ববর্তী জেলায় প্রবল বর্ষণ ও শক্তিশালী ঝড়ে বহু গাছপালা ও ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ে। ঘটনাস্থল থেকে এএফপির এক প্রতিবেদক জানান, এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া প্রবল বর্ষণের ফলে নগরীর কোথাও কোথাও প্রায় তিন ফুট পর্যন্ত পানি জমে গেছে। কর্মকর্তারা জানান, আহতদের মধ্যে প্রায় ১শ’ শিশু রয়েছে। এদিকে ঝড় ও বর্ষণে কৃষকদের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রাদেশিক তথ্যমন্ত্রী মোস্তাক ঘানি এএফপিকে বলেন, ‘এ দুর্যোগে কমপক্ষে ৪৪ জন নিহত ও ২০২ জন আহত হয়েছে। এছাড়া প্রচণ্ড ঝড় ও প্রবল বর্ষণে বিভিন্ন ফসল ও ফলের বাগানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।’ ঘানি আরও বলেন, কর্তৃপক্ষ ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনের চেষ্টা করছে।
ঝড় ও বৃষ্টিতে শত শত গবাদিপশু মারা গেছে বলে আশংকা প্রকাশ করা হচ্ছে। পেশোয়ার এবং এর পার্শ্ববর্তী নওশেরা ও চারসাদ্দা এলাকার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ঘানি বলেন, এ দুর্যোগে পেশোয়ারে ২৯, চরসাদ্দায় ১০ ও নওশেরায় ৫ জন নিহত হয়েছে। প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সিনিয়র কর্মকর্তা আমির আফাক হতাহতের এ সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য, আশ্রয় ও জরুরি হাসপাতাল সেবা দেয়ার প্রচেষ্টা চলছে। প্রাদেশিক আবহাওয়া বিভাগের পরিচালক মোস্তাক আলী শাহ এ ঝড়কে একটি ‘মিনি সাইক্লোনের’ সঙ্গে তুলনা করেছেন। ঝড়টি ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, ঝড়টি দুর্বল হয়ে পড়লেও আগামী তিন থেকে চার ঘণ্টা প্রদেশের উত্তরাঞ্চলে প্রবল বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ জানমালের ক্ষয়ক্ষতিতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি তিনি শোক ও সমবেদনা জানান এবং প্রাদেশিক সরকার ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে উদ্ধার প্রচেষ্টা জোরদারের নির্দেশ দেন। উল্লেখ্য, পরমাণু শক্তিধর কিন্তু অর্থনীতিতে অনুন্নত পাকিস্তানে গত বছর মৌসুমি বর্ষণে ছাদ ধসে দুশ’রও বেশি লোকের প্রাণহানি ঘটে।
No comments