হতাশ নির্বাচন কমিশনের কর্তারাও! by মানসুরা হোসাইন
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে সব কর্মকর্তার
কক্ষেই ছিল টেলিভিশন। স্বাভাবিকভাবেই গণমাধ্যমে প্রচারিত খবর দেখাসহ
নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা ছিল তাঁদের। অথচ প্রায় সব কর্মকর্তাই
নিজেদের রুমে বসে আজ থেকে শুরু হওয়া বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তানের প্রথম
টেস্টের প্রথম দিনের খেলা দেখেছেন। এমন অবস্থা কেন?—এ প্রশ্নের জবাবে
প্রায় সব কর্মকর্তাই হতাশা প্রকাশ করলেন এ নির্বাচন নিয়ে। নাম প্রকাশ না
করে একাধিক কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশনার কথা বলেছেন প্রথম আলোর এই
প্রতিবেদকের সঙ্গে।
একজন কর্মকর্তা জানালেন, একটা সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে হয় সে জন্য তাঁরা অমানুষিক পরিশ্রম করেছেন। কিন্তু সকাল থেকে গণমাধ্যমসহ পরিচিতজনদের কাছ থেকে তাঁরা কোনো ভালো খবর পাননি। সবখানেই খারাপ খবর। একটাই খবর—নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে না।
এক কর্মকর্তা উদাহরণ দিয়ে বললেন, কোনো মা যখন দশ মাস গর্ভে সন্তান ধারণ করে সুস্থ বাচ্চা প্রসব করেন, তখন তিনি তাঁর সব কষ্ট ভুলে যান। কিন্তু যখন কোনো মা দেখেন, তাঁর সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানের মধ্যে কোনো ত্রুটি আছে, কষ্টটা আরও বেড়ে যায়। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে যাঁরা আমরা কাজ করেছি আমাদের মধ্যে সে মায়ের মতো কষ্টটা বেড়ে গেছে। কিন্তু আমাদের কিছু করার নাই।’
আপনারা তো বলেন যে কমিশন স্বাধীন—প্রতিবেদকের এমন কথায় ওই কর্মকর্তা হেসে বলেন, ‘সরকারের চাইতে তো আর স্বাধীন না। কোনো সরকারই চায় না যে কমিশন সরকারের চাইতে স্বাধীন হোক।’
অন্য আর এক কর্মকর্তা বললেন, ‘ছোট বাচ্চারা হাঁড়ি-পাতিল নিয়ে খেলে, অনেক রান্না করে সারা দিন। কিন্তু দিন শেষে সব ফেলে দিয়ে আসতে হয়। কোনো খাবারই মুখে দেওয়া যায় না। আমরা নির্বাচন কমিশনে যাঁরা কাজ করলাম এত দিন, আমাদের অবস্থাটাও হয়েছে সেরকম।’ তিনি বলেন, ‘পুলিশ প্রধান বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যেভাবে বলছেন যে নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে, সেখানে আমাদের কিছুই বলার নেই। আমরা শুধু দেখছি।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন নির্বাচন কমিশনার বললেন, ‘এই যে এত এত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োগ দেওয়া হলো, তাঁরা মাঠে কোনো দায়িত্ব পালন করছে না। এখন মাঠে যে বিশৃঙ্খলা বা মারামারি হচ্ছে, সেটা বিএনপি আর আওয়ামী লীগ এর মধ্যে না। সেটা আওয়ামী লীগই করছে। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যেই গন্ডগোলটি হচ্ছে।’
ক্ষোভ আর হতাশা কাজ করছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের প্রায় সবার মধ্যেই। নির্বাচনের প্রসঙ্গে কথা বললেই হাসছেন সবাই। বলছেন, সবইতো দেখছেন কী হলো। এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনে কয়টা অভিযোগ এসেছে আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশন থেকে তা জানানো হয়নি। তবে কমিশনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ১৫ থেকে ১৬টি অভিযোগ কমিশনে জমা পড়েছে।
নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ সকালের দিকে ১৫ থেকে ১৬টি কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ঘুরে এসে তিনি জানালেন, সুরিটোলা কেন্দ্রে তিনি যাওয়ার আগে থেকেই উত্তেজনা চলছিল। ব্যালট ছিনতাইসহ বিভিন্ন অভিযোগ ছিল। তবে তিনি চলে আসার পর উত্তেজনার মাত্রাটা আরও বেড়েছে বলে তিনি জানালেন। কোনো কোনো গণমাধ্যমে তাঁর গাড়িতে জুতা নিক্ষেপ ও ভাঙচুর হয়েছে বলে যে খবর প্রচারিত হয়েছে সেটাকে তিনি ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন ঘুরে এই প্রতিবেদকের মনে হয়েছে, এ যেন নির্বাচন নয়, হাসির খোরাক। কমিশন কর্মকর্তারা হাসছেন হতাশা থেকে, হাসাহাসি হচ্ছে কমিশনে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যেও। একেকজন বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র ঘুরে এসে অভিজ্ঞতার কথা বলছেন আর সবাই হাসছেন। কমিশনের অবস্থা দেখে এটা যে গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু তা বোঝার কোনো উপায়ই নেই।
একজন কর্মকর্তা জানালেন, একটা সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে হয় সে জন্য তাঁরা অমানুষিক পরিশ্রম করেছেন। কিন্তু সকাল থেকে গণমাধ্যমসহ পরিচিতজনদের কাছ থেকে তাঁরা কোনো ভালো খবর পাননি। সবখানেই খারাপ খবর। একটাই খবর—নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে না।
এক কর্মকর্তা উদাহরণ দিয়ে বললেন, কোনো মা যখন দশ মাস গর্ভে সন্তান ধারণ করে সুস্থ বাচ্চা প্রসব করেন, তখন তিনি তাঁর সব কষ্ট ভুলে যান। কিন্তু যখন কোনো মা দেখেন, তাঁর সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানের মধ্যে কোনো ত্রুটি আছে, কষ্টটা আরও বেড়ে যায়। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে যাঁরা আমরা কাজ করেছি আমাদের মধ্যে সে মায়ের মতো কষ্টটা বেড়ে গেছে। কিন্তু আমাদের কিছু করার নাই।’
আপনারা তো বলেন যে কমিশন স্বাধীন—প্রতিবেদকের এমন কথায় ওই কর্মকর্তা হেসে বলেন, ‘সরকারের চাইতে তো আর স্বাধীন না। কোনো সরকারই চায় না যে কমিশন সরকারের চাইতে স্বাধীন হোক।’
অন্য আর এক কর্মকর্তা বললেন, ‘ছোট বাচ্চারা হাঁড়ি-পাতিল নিয়ে খেলে, অনেক রান্না করে সারা দিন। কিন্তু দিন শেষে সব ফেলে দিয়ে আসতে হয়। কোনো খাবারই মুখে দেওয়া যায় না। আমরা নির্বাচন কমিশনে যাঁরা কাজ করলাম এত দিন, আমাদের অবস্থাটাও হয়েছে সেরকম।’ তিনি বলেন, ‘পুলিশ প্রধান বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যেভাবে বলছেন যে নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে, সেখানে আমাদের কিছুই বলার নেই। আমরা শুধু দেখছি।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন নির্বাচন কমিশনার বললেন, ‘এই যে এত এত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োগ দেওয়া হলো, তাঁরা মাঠে কোনো দায়িত্ব পালন করছে না। এখন মাঠে যে বিশৃঙ্খলা বা মারামারি হচ্ছে, সেটা বিএনপি আর আওয়ামী লীগ এর মধ্যে না। সেটা আওয়ামী লীগই করছে। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যেই গন্ডগোলটি হচ্ছে।’
ক্ষোভ আর হতাশা কাজ করছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের প্রায় সবার মধ্যেই। নির্বাচনের প্রসঙ্গে কথা বললেই হাসছেন সবাই। বলছেন, সবইতো দেখছেন কী হলো। এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনে কয়টা অভিযোগ এসেছে আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশন থেকে তা জানানো হয়নি। তবে কমিশনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ১৫ থেকে ১৬টি অভিযোগ কমিশনে জমা পড়েছে।
নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ সকালের দিকে ১৫ থেকে ১৬টি কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ঘুরে এসে তিনি জানালেন, সুরিটোলা কেন্দ্রে তিনি যাওয়ার আগে থেকেই উত্তেজনা চলছিল। ব্যালট ছিনতাইসহ বিভিন্ন অভিযোগ ছিল। তবে তিনি চলে আসার পর উত্তেজনার মাত্রাটা আরও বেড়েছে বলে তিনি জানালেন। কোনো কোনো গণমাধ্যমে তাঁর গাড়িতে জুতা নিক্ষেপ ও ভাঙচুর হয়েছে বলে যে খবর প্রচারিত হয়েছে সেটাকে তিনি ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন ঘুরে এই প্রতিবেদকের মনে হয়েছে, এ যেন নির্বাচন নয়, হাসির খোরাক। কমিশন কর্মকর্তারা হাসছেন হতাশা থেকে, হাসাহাসি হচ্ছে কমিশনে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যেও। একেকজন বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র ঘুরে এসে অভিজ্ঞতার কথা বলছেন আর সবাই হাসছেন। কমিশনের অবস্থা দেখে এটা যে গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু তা বোঝার কোনো উপায়ই নেই।
No comments