ভূমি জটিলতাঃ কুড়িগ্রামে ডায়াবেটিক হাসপাতালের নির্মাণ কাজ বন্ধ
কুড়িগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতালের জন্য সরকার ১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও জমি সংক্রান্ত জটিলতায় ৫ বছর ধরে আটকে আছে এর উন্নয়ন কাজ।
ফলে জেলার প্রায় ১৫ হাজার ডায়াবেটিক রোগী সু_চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।সংশ্লিষ্ট
সূত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রাম ডায়াবেটিক সমিতির আওতায় ১০০ শয্যার হাসপাতালের
পূর্ণাঙ্গ নির্মাণ কাজ না হওয়ায় সেখানে শুধু বহির্বিভাগ চিকিৎসা সুবিধা
আছে, আন্তঃবিভাগ নেই। ফলে যথাযথ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জেলার প্রায় ১৫
হাজার ডায়াবেটিক রোগী। ডায়াবেটিক হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রেজাউল
করিম রেজা জানান, হাসপাতালে নিবন্ধনকৃত রোগীর সংখ্যা ৬ হাজার ৭০০ জন।
নিবন্ধন ছাড়াও ৭-৮ হাজার রোগীর প্রাথমিক তথ্য আছে। এ রোগীদের মধ্যে গড়ে
প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ জনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তি করে
চিকিৎসা সুবিধা দেয়া গেলে রোগীর সংখ্যা আরও বাড়বে। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক
সমিতির এফিলিয়েশন প্রাপ্ত কুড়িগ্রাম ডায়াবেটিক সমিতির যুগ্ম মহাসচিব মো.
কাজিউল ইসলাম জানান, পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা জেলা পরিষদের এক একর ৩৫
শতাংশ জমি ২০০৫ সালে একসনা লিজ নেয়া হয়। এর পর সমিতির কর্মকর্তারা
স্থানীয়ভাবে প্রায় ২ কোটি টাকা তহবিল সংগ্রহ করে জমির একাংশে ভবন নির্মাণ
এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনে ২০০৬ সালের মার্চ থেকে বহির্বিভাগে চিকিৎসা শুরু
করেন। বিগত ২০০৬-০৭ অর্থ বছরে সমাজসেবা মন্ত্রণালয় ১৩ কোটি ৮৭ লাখ ২০ হাজার
টাকা ব্যয়ে সমিতির আওতায় ১০০ শয্যার একটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল নির্মাণের
জন্য একটি প্রকল্প প্রণয়ন করেন এবং ২০০৬ সালের ৮ অক্টোবর একনেকে তা
অনুমোদিত হয়। কিন্তু হাসপাতাল নির্মাণের জন্য নির্ধারিত জমি জেলা পরিষদ
দীর্ঘমেয়াদে লিজ না দেয়ায় জটিলতা সৃষ্টি হয় এবং নির্মাণ কাজ আটকে যায়। ২০১০
সালের ২০ জুন অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়
সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ২২তম বৈঠকে জনস্বার্থে হাসপাতাল নির্মাণের
জন্য জেলা পরিষদের জমি বিনামূল্যে কিংবা প্রতীকী মূল্যে সমিতিকে
দীর্ঘমেয়াদি লিজ দেয়ার জন্য সুপারিশ করে। এর পরেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের
সিদ্ধান্ত না পাওয়ায় এখন পর্যন্ত লিজ দেয়ার বিষয়টির সুরাহা হয়নি। অথচ এই
অর্থবছরে টাকাটা খরচ করতে না পারলে তা ফেরত যাবে। কুড়িগ্রামের ভারপ্রাপ্ত
সিভিল সার্জন ডা. লোকমান হাকিম বলেন, উপজেলা হাসপাতালগুলোতে গুরুতর অসুস্থ
ডায়াবেটিক রোগীদের দীর্ঘদিন ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা নেই। এ
কারণে ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এসব রোগীদের কল্যাণে
ডায়াবেটিক হাসপাতালটি জরুরিভাবে নির্মাণ করা প্রয়োজন।
No comments