ডিজেল ও ইউরিয়া সারের দাম বৃদ্ধিঃ বোরোর আবাদে উত্তরাঞ্চলের কৃষককে বাড়তি গুনতে হবে ১৫৪ কোটি টাকা by এম আর রকি
কয়েক দফায় বৃদ্ধি হওয়া ডিজেল ও ইউরিয়া সারের দামের কারণে এবার রাজশাহীর ৮ জেলার কৃষকে বাড়তি ১৫৪ কোটি টাকা গুনতে হবে। ধানের
দাম কম কিন্তু সে ধান উৎপাদনে বাড়তি অর্থ যোগাতে গিয়ে কৃষক হতাশায় পড়েছে।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে এখন লিটার করা হয়েছে ৬৮ টাকা ২৫ পয়সা । এর আগে
গত বছর বিদ্যুৎ ও সারের দাম বাড়ানো হয়। নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার আমাইর
ইউনিয়নের মৃধাপাড়া গ্রামের কৃষক আবুল কালাম জানান, আমন কাটা মাড়াইয়ের পর
ডিসেম্বরের শেষ থেকে বোরো আবাদের কাজ শুরু করেন। কিন্তু বার বার ডিজেলের
দাম বাড়ায় তার মতো অনেক কৃষক হতাশ। তিনি জানান, ধানের উৎপাদন ব্যয় বাড়লেও
ধানের দাম বাড়ছে না বরং কমে যাচ্ছে ।
২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে
প্রতিলিটার ডিজেলের মূল্য ছিল ৪২ টাকা ২৫ পয়সা, ২০১২ সালে এর মূল্য বৃদ্ধি
করে প্রতিলিটার ৬১ টাকা ২৫ পয়সা করা হয়। সব শেষ চলতি বছর জানুয়ারি মাসের
প্রথম সপ্তাহে ৬৮ টাকা ২৫ পয়সা করা হয়। এতে গত দু'বছরে ডিজেলের মূল্য ২৬
টাকা লিটারে বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া গত বছর জুনে ৫০ কেজি ওজনের প্রতিবস্তা
ইউরিয়া সারের দাম ৬০০ থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার টাকা করা হয়েছে। একই সময়ে
বিদ্যুৎচালিত সেচযন্ত্রে ব্যয় বেড়েছে ২১ ভাগ।
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার উত্তর গ্রাম ইউনিয়নের দোকানদারপাড়া গ্রামের কৃষক হামিদুর রহমান জানান, আমন ধান কাটা মাড়াইয়ের পর ডিসেম্বরের শেষ থেকে বোরো আবাদের কাজ শুরু করেছেন, কিন্তু বার বার ডিজেলের দাম বাড়ায় পোষাতে পারছে না। তিনি আরও জানান, সবশেষ গত জানুয়ারি মাসে ডিজেলের দাম বাড়ায় সেচযন্ত্র ব্যবহারে কৃষকদের প্রতিহেক্টর বোরোতে দু'বছরে ব্যয় বেড়েছে ৩ হাজার ৬৪০ টাকা বোরো আবাদে এ অতিরিক্ত ব্যয় বহনের সামর্থ্য অনেক কৃষককের নেই। জয়পুরহাট জেলার জামাল পুর ইউনিয়নের নারায়ণপাড়া গ্রামের কৃষক আবদুল সাত্তার, কালাই সদর উপজেলার জব্বার আলী জানান, গত বছর ৪ বিঘায় বোরো আবাদ করলেও এবার তারা ব্যয় বাড়ার কারণে দু'বিঘা পরিমাণ আবাদ করবেন।
এছাড়া সরকারিভাবে রাজশাহীর ৮ জেলায় এবার প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর জমি আবাদ কমিয়ে ফেলা হয়েছে। কৃষি সমপ্রসারণ অধিদফতর জানায়, রাজশাহী অঞ্চলের ৮ জেলায় গত বছর ৭ লাখ ৮২ হাজার ৬৩০ হেক্টর থাকলে এবার তা কমিয়ে ৭ লাখ ৫৫ হাজার ২৬৬ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বোরো ক্ষেতে সেচ দিতে ডিজেল চালিত সেচযন্ত্র রয়েছে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৯৪৬টি। কৃষি সমপ্রসারণ অধিদফতর জানায়, রাজশাহী অঞ্চলের ৮ জেলায় গত বোরো মৌসুমে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৭ লাখ ৮১ হাজার ৫৮৯ হেক্টরে থাকলেও এবার তা কমিয়ে ৭ লাখ ৬৬ হাজার ৩৩৬ হেক্টর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এ অঞ্চলে ডিজেলচালিত সেচযন্ত্র রয়েছে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৪৪২টি। গত বছরে এসব যন্ত্র দিয়ে সেচ দেয়া হয়েছিল ৬ লাখ ৬৮ হাজার ৫৬০ হেক্টর বোরো ক্ষেতে। কৃষি বিভাগের মতে প্রতিহেক্টর বোরো ক্ষেতে পুরো মৌসুম সেচ দিতে প্রয়োজন ১৪০ হেক্টর ডিজেল। লিটারপ্রতি ২৬ টাকায় প্রতিহেক্টরে সেচ দিতে আগের দু'বছরের তুলনায় এবার ডিজেল কিনতে অতিরিক্ত ব্যয় হবে ৩ হাজার ৬৪০ টাকা। এ হিসাবে রাজশাহী কৃষি অঞ্চলে ডিজেলচালিত সেচযন্ত্র দিয়ে সমপরিমাণ ক্ষেতে সেচ দিতে কিনতে হবে এবারে অতিরিক্ত ১ কোটি ৭৩ লাখ ৫২ হাজার ৫৫০ টাকার। অন্যদিকে বোরো আবাদে প্রতিহেক্টরে ২৫০ কেজি (৫ বস্তা) ইউরিয়া লাগে। এ হিসাবে প্রতিহেক্টরে ইউরিয়া প্রয়োগে ব্যয় বেড়েছে ২ হাজার টাকা। ফলে এ অঞ্চলের কৃষকদের ইউরিয়ার জন্য গত দু'বছরের চেয়ে এবার অতিরিক্ত ব্যয় হবে প্রায় ১৫২ কোটি ৭ লাখ ৩২ হাজার টাকা। অর্থাৎ এবার বোরো আবাদে ডিজেল ও সারের জন্য গত দু'বছরের চেয়ে ব্যয় করতে হবে ১৫৩ কোটি ৮০ লাখ ৬৯ হাজার ৩৯৮ টাকা। কিন্তু প্রতিনিয়ত ধানের দাম কমছে। ফলে আমন ধান বিক্রিও টাকায় বোরো আবাদ সংকুলান হচ্ছে না। অথচ গত দু'বছর আগে ২০১১ সালে এ সময়ে আমন ধানের মণ ছিল ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা। এরই মধ্যে চালের দাম কিছুটা বেড়ে গেছে। তবে এতকিছুর মাঝে বোরো আবাদে তেমন প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন নওগাঁ কৃষি সমপ্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক এস এম নুরুজ্জামান ম-ল। তিনি আরও জানান, কৃষকরা এখন আগের চেয়ে অনেক সচেতন তাছাড়া ব্যয় সাশ্রয়ী পদ্ধতিতে কৃষক এবার বোরো চাষ করবে।
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার উত্তর গ্রাম ইউনিয়নের দোকানদারপাড়া গ্রামের কৃষক হামিদুর রহমান জানান, আমন ধান কাটা মাড়াইয়ের পর ডিসেম্বরের শেষ থেকে বোরো আবাদের কাজ শুরু করেছেন, কিন্তু বার বার ডিজেলের দাম বাড়ায় পোষাতে পারছে না। তিনি আরও জানান, সবশেষ গত জানুয়ারি মাসে ডিজেলের দাম বাড়ায় সেচযন্ত্র ব্যবহারে কৃষকদের প্রতিহেক্টর বোরোতে দু'বছরে ব্যয় বেড়েছে ৩ হাজার ৬৪০ টাকা বোরো আবাদে এ অতিরিক্ত ব্যয় বহনের সামর্থ্য অনেক কৃষককের নেই। জয়পুরহাট জেলার জামাল পুর ইউনিয়নের নারায়ণপাড়া গ্রামের কৃষক আবদুল সাত্তার, কালাই সদর উপজেলার জব্বার আলী জানান, গত বছর ৪ বিঘায় বোরো আবাদ করলেও এবার তারা ব্যয় বাড়ার কারণে দু'বিঘা পরিমাণ আবাদ করবেন।
এছাড়া সরকারিভাবে রাজশাহীর ৮ জেলায় এবার প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর জমি আবাদ কমিয়ে ফেলা হয়েছে। কৃষি সমপ্রসারণ অধিদফতর জানায়, রাজশাহী অঞ্চলের ৮ জেলায় গত বছর ৭ লাখ ৮২ হাজার ৬৩০ হেক্টর থাকলে এবার তা কমিয়ে ৭ লাখ ৫৫ হাজার ২৬৬ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বোরো ক্ষেতে সেচ দিতে ডিজেল চালিত সেচযন্ত্র রয়েছে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৯৪৬টি। কৃষি সমপ্রসারণ অধিদফতর জানায়, রাজশাহী অঞ্চলের ৮ জেলায় গত বোরো মৌসুমে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৭ লাখ ৮১ হাজার ৫৮৯ হেক্টরে থাকলেও এবার তা কমিয়ে ৭ লাখ ৬৬ হাজার ৩৩৬ হেক্টর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এ অঞ্চলে ডিজেলচালিত সেচযন্ত্র রয়েছে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৪৪২টি। গত বছরে এসব যন্ত্র দিয়ে সেচ দেয়া হয়েছিল ৬ লাখ ৬৮ হাজার ৫৬০ হেক্টর বোরো ক্ষেতে। কৃষি বিভাগের মতে প্রতিহেক্টর বোরো ক্ষেতে পুরো মৌসুম সেচ দিতে প্রয়োজন ১৪০ হেক্টর ডিজেল। লিটারপ্রতি ২৬ টাকায় প্রতিহেক্টরে সেচ দিতে আগের দু'বছরের তুলনায় এবার ডিজেল কিনতে অতিরিক্ত ব্যয় হবে ৩ হাজার ৬৪০ টাকা। এ হিসাবে রাজশাহী কৃষি অঞ্চলে ডিজেলচালিত সেচযন্ত্র দিয়ে সমপরিমাণ ক্ষেতে সেচ দিতে কিনতে হবে এবারে অতিরিক্ত ১ কোটি ৭৩ লাখ ৫২ হাজার ৫৫০ টাকার। অন্যদিকে বোরো আবাদে প্রতিহেক্টরে ২৫০ কেজি (৫ বস্তা) ইউরিয়া লাগে। এ হিসাবে প্রতিহেক্টরে ইউরিয়া প্রয়োগে ব্যয় বেড়েছে ২ হাজার টাকা। ফলে এ অঞ্চলের কৃষকদের ইউরিয়ার জন্য গত দু'বছরের চেয়ে এবার অতিরিক্ত ব্যয় হবে প্রায় ১৫২ কোটি ৭ লাখ ৩২ হাজার টাকা। অর্থাৎ এবার বোরো আবাদে ডিজেল ও সারের জন্য গত দু'বছরের চেয়ে ব্যয় করতে হবে ১৫৩ কোটি ৮০ লাখ ৬৯ হাজার ৩৯৮ টাকা। কিন্তু প্রতিনিয়ত ধানের দাম কমছে। ফলে আমন ধান বিক্রিও টাকায় বোরো আবাদ সংকুলান হচ্ছে না। অথচ গত দু'বছর আগে ২০১১ সালে এ সময়ে আমন ধানের মণ ছিল ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা। এরই মধ্যে চালের দাম কিছুটা বেড়ে গেছে। তবে এতকিছুর মাঝে বোরো আবাদে তেমন প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন নওগাঁ কৃষি সমপ্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক এস এম নুরুজ্জামান ম-ল। তিনি আরও জানান, কৃষকরা এখন আগের চেয়ে অনেক সচেতন তাছাড়া ব্যয় সাশ্রয়ী পদ্ধতিতে কৃষক এবার বোরো চাষ করবে।
No comments