আরাফাতকে বিয়ে করা ছিল বড় ভুল
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সাবেক প্রেসিডেন্ট
ইয়াসির আরাফাতকে বিয়ে করাটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল। আমি জানি অনেক
মেয়ে আরাফাতকে বিয়ে করার জন্য প্রস্তুত ছিল।
কিন্তু তিনি
শুধুই আমাকে চেয়েছেন। এটা আমার সৌভাগ্য ছিল। আমিও তাকে অনেক ভালোবাসতাম।
তবে তাকে বিয়ে করাটা ছিল বড় ভুল। এজন্য আমি অনুতপ্ত। নিজের সাবেক স্বামী
সম্পর্কে গতকাল এসব কথা বলেছেন, ইয়াসির আরাফাতের বিধবা স্ত্রী সুহা আরাফাত।
তুরস্কের পত্রিকা ‘সাবাহ’কে সুহা বলেন, তাদের ১৪ বছরের দাম্পত্য জীবনে
কমপক্ষে ১০০ বার আরাফাতকে ডিভোর্স দিতে চেয়েছেন।
কিন্তু আরাফাত প্রতিবারই তাকে ডিভোর্স দেয়া থেকে বিরত করেছেন। সুহা বলেন, আরাফাতকে বিয়ে করার খেসারত আগে জানতে পারলে কখনও তাকে বিয়ে করতাম না। আরাফাত-সুহা দম্পতি ১৯৯০ সালে গোপনে তিউনিশিয়ায় বিয়ে করেন। তখন সুহার বয়স ছিল ২৭ বছর, আরাফাতের বিয়ের ৫ বছর পর তাদের একমাত্র কন্যা জাহওয়ার জন্ম হয়। গালফ নিউজের খবরে বলা হয়, সুহা বলেছেন, তার মা তাদের বিয়ের বিরোধী ছিলেন। পরে অবশ্য মায়ের বিরোধিতার কারণ তিনি উপলব্ধি করতে সক্ষম হন। তিনি বলেন, আমিই কেবল জানি আমাকে কেমন ধকল সইতে হয়েছে। যা বুঝতে পারলে কখনোই বিয়েটি করতাম না। সত্যি কথা হচ্ছে আরাফাত একজন মহান নেতা ছিলেন, কিন্তু আমি ছিলাম সম্পূর্ণ একাকিত্বে ভোগা নারী। সুহা বলেন, শতবার ছেড়ে যেতে চাইলেও আরাফাত আমাকে যেতে দেয়নি। সবাই জানে (বিশেষ করে তার ভৃত্যরা) কিভাবে আরাফাত তাকে ডিভোর্স করার অনুমতি আমাকে দেননি। তখনকার অবস্থা ভৃত্যরা ভালোভাবে দেখেছে। খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম হয়ে আরাফাতকে বিয়ে করা সুহা বলেছেন, নিরাপত্তার কারণে তিনি সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন। এমনকি তার ফোনকল পর্যন্ত পর্যবেক্ষণে থাকতো। সব সময় এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থান বদলের মধ্যে থাকতে হতো তাদের। এতে নিজের অস্তিত্ব সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গেছে বলে দাবি করেন সুহা। তিনি অবশ্য স্বীকার করেছেন যে, আরাফাতের সঙ্গে জীবন কঠিন থাকলেও তাকে ছাড়া বাঁচাও তার পক্ষে অনেক কঠিন ছিল। সুহা বলেন, আরাফাতের মৃত্যুর পর তার কাছে অনেক বিয়ের প্রস্তাব এসেছে তবে তিনি সব প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে মেয়ে জাহওয়াকে নিয়ে মাল্টায় বসবাস করেন সুহা। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ আরাফাতের পেনশন বাবদ তাদেরকে মাসে ৪৯ হাজার দিরহাম করে দিয়ে আসছে। আরাফাতকে বিয়ের পর নিজের উচ্চাবিলাসী জীবন নিয়ে ফিলিস্তিনিদের অনেক সন্দেহের মুখে পড়েন সুহা। আরাফাতের কাছ থেকে অজস্র ডলার হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। আছে ফিলিস্তিনি নেতাকে হত্যার জন্য ইসরাইলি এজেন্ট হয়ে বিষাক্ত পোলোনিয়াস-২০১ প্রয়োগের অভিযোগও। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন তিনি। তার দাবি আরাফাতের নিকটজনেরাই তার অর্থের বিষয়ে ভালো জানেন। তিনি অস্বীকার করলেও তার কাছে থাকা আরাফাতের টুথব্রাশ ও অন্তর্বাসে বিষাক্ত পোলোনিয়াসের উপস্থিতি খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
No comments