পাপের প্রায়শ্চিত্তেই পিতার মৃত্যু
‘কাঁদছেন কেন, আপনার পাপের কারণেই আপনার পিতা মারা গেছেন।’ চাপাতি শাকিলকে এমন কথা শোনালেন মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতের ম্যাজিট্ট্রেট এরফান উল্লাহ।
আজ দুপুরে বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর তাজুল ইসলাম চাপাতি শাকিলকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আবেদনে বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিশ্বজিতকে কোপানোর কথা স্বীকার করেছে শাকিল। এখন কার নির্দেশে নৃশংসতা চালিয়েছে, কে কে ছিল তার সঙ্গে- এসব তথ্য জানার জন্য আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার। এসময় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে শাকিল ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে থাকে। বিচারক জানতে চান, তার কিছু বলার আছে কিনা। জবাবে দুই দিকে মাথা নেড়ে না বলে শাকিল। তখন বিচারক এরফান উল্লাহ বলেন, কাঁদছেন কেন? আপনার পাপের প্রায়শ্চিত্তেই আপনার বাবা মারা গেছেন। শনিবার শাকিলের গ্রেপ্তার খবর শুনে অসুস্থ হয়ে পড়েন তার পিতা আনসার আলী। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, চাপাতি হাতে বিশ্বজিত দাসের ওপর বর্বর হামলা চালিয়েছে শাকিল। বরিশাল ও বরগুনা পুলিশের সহায়তায় শনিবার সকালে বরগুনার বেতাগী থেকে শাকিলকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর তাকে সঙ্গে নিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেইটের উল্টো দিকের একটি ছোট দোকানের পাশে রাখা বাক্স থেকে উদ্ধার করা হয় বিশ্বজিতের ওপর হামলায় ব্যবহৃত চাপাতি। শাকিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। বিশ্বজিত হত্যাকাণ্ডের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপ তাকে বহিষ্কার করে। গত ৯ই ডিসেম্বর বিরোধী দলের অবরোধের মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় দর্জি দোকানি বিশ্বজিতকে। বিশ্বজিত হত্যাকাণ্ডের দিন পুলিশ বাদি হয়ে একটি মামলা করে। এতে নাম উলেখ না করে অজ্ঞাত পরিচয়ের ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় এ পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
No comments