ইহুদি বসতি নির্মাণ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র এখন উভয় সঙ্কটে by আহমেদ জামিল
সম্প্রসারণবাদী ইহুদিবাদী ইসরাইল এখন ফিলিস্তিনি অধ্যুষিত এলাকায় ইহুদি বসতি নির্মাণ ও সম্প্রসারণের প্রশ্নে প্রবল আন্তর্জাতিক চাপের সম্মুখীন।
স্বয়ং ইসরাইলের অভ্যন্তরে শান্তিকামী ও মানবতাবাদী বিভিন্ন ইসরাইলি সংগঠন যারা স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাসী, তারাও ইহুদি বসতি সম্প্রসারণের জোর বিরোধিতা করছে।
তাদের বক্তব্য, ইসরাইল সরকারের এ উদ্যোগ ইসরাইল-ফিলিস্তিন শান্তি প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করছে। অন্যদিকে স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থনও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিঃসন্দেহে এসব ঘটনাপ্রবাহ প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতা নিয়াহু এবং তার সরকারের জন্য অস্বস্তিকর ও বিব্রতকর।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ইসরাইলের অন্যতম কট্টরপন্থী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পরিচিত। চরম ইহুদিবাদী লিকুদ দলের টিকিটে আরেক মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হওয়ার পর বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু কোনো রাখঢাক না করে ঘোষণা দিয়েছিলেন, পশ্চিমতীর, গাজা উপত্যকার অধিকৃত ভূ-খণ্ড এবং পূর্বজেরুজালেমে ২০০৫ সাল থেকে শুরু করা ইহুদি বসতি কখনই সরানো যাবে না। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু মন্ত্রিসভার বৈঠকের সময় বলেছিলেন, পূর্বজেরুজালেমে ইহুদিদের বসবাসের অধিকার থাকবে না বা সেখানে তারা কোনো বাড়ি বানাতে পারবে না, সেটা আমরা মেনে নিতে পারি না। এছাড়া নেতানিয়াহু এ কথাও বলেছেন যে, পশ্চিমতীরে ইহুদি বসতি নির্মাণ বন্ধের চাপ দেয়া অন্যায়।
সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, ইসরাইল সরকার এখন আরও বেশিসংখ্যক ইহুদি বসতি নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ফিলিস্তিন এলাকায়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ইসরাইল সফরের সময় সে দেশের সরকারের পক্ষ থেকে পূর্বজেরুজালেমের পশ্চিমতীরে ১ হাজার ৬০০ নতুন ইহুদি বসতি নির্মাণের কথা ঘোষণা করা হয়। বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন, ইসরাইল সরকারের এই ঘোষণা আন্তর্জাতিক আইন এবং ওয়াশিংটনের উদ্যোগে ইসরাইল-ফিলিস্তিন শান্তি প্রক্রিয়া প্রয়াসের শুধু পরিপন্থীই
নয়, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অপমানজনকও বটে। যে কারণে ওয়াশিংটন ও তেলআবিবের সম্পর্ক এখন বেশ শীতল হয়ে পড়েছে।
পূর্বজেরুজালেমে বহু ফিলিস্তিনি পরিবার উচ্ছেদ করে সেখানে ইহুদি বসতি এবং বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের কাজ জোরেশোরে শুরু করেছে ইসরাইল। ইসরাইলের এই অপপরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। জাতিসংঘ মহাসচিব বানকিমুন থেকে শুরু করে ইসরাইলের মুরুব্বি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং মদতদাতা ইউরোপীয় ইউনিয়ন সবাই ফিলিস্তিনি এলাকায় ইহুদি বসতি নির্মাণের তীব্র বিরোধিতা করছে। শুধু তাই নয়, ১৯ মার্চ রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমন্বয়ে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য গঠিত চার পক্ষীয় শীর্ষ কূটনীতিকদের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনায় পূর্বজেরুজালেমে নতুন ইহুদি বসতি নির্মাণের তীব্র নিন্দা জানানো হয়।
তবে ইসরাইলের ইহুদি বসতি নির্মাণের ইস্যুতে সবার চোখ এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি। প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক হোসেন ওবামার উদ্যোগে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া শুরুর আগেই ইসরাইল সরকার ফিলিস্তিন ভূ-খণ্ডে নতুন ইহুদি বসতি নির্মাণের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক হোসেন ওবামা এ সত্য উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছেন যে, মধ্যপ্রাচ্য বিশেষ করে ইসরাইল-ফিলিস্তিন শান্তি প্রক্রিয়ার পথে প্রধান অন্তরায় সৃষ্টি করে আছে ফিলিস্তিনি এলাকায় অবৈধ ইহুদি বসতি নির্মাণ এবং সম্প্রসারণ। এখন স্বভাবতই এ প্রশ্ন জাগে যে, বারাক ওবামার প্রশাসন হঠাত্ নতুন করে ইসরাইল-ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনা শুরুর অন্যতম শর্ত ইহুদি বসতি নির্মাণ ও সম্প্রসারণ বন্ধের জন্য ইসরাইল সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে কেন।
এর প্রধান কারণ হলো মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইমেজ বা ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করা। প্রেসিডেন্ট ওবামা তার পূর্বসূরি জর্জ ডব্লিউ বুশের জামানায় আরব তথা মুসলিম জাহানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হৃত্ ইমেজ পুনরুদ্ধার করতে চাইছেন। ওবামা প্রশাসন এখন বুঝতে পারছে যে, অতি ইসরাইলঘেঁষা নীতির কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরব এবং বেশিরভাগ মুসলিম বিশ্বে তার গ্রহণ এবং বিশ্বাসযোগ্যতা প্রায় সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে ফেলেছে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগাতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্রের জানি দুশমন ইরান। মধ্যপ্রাচ্য তথা আরব জাহানে ইরানের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বৃদ্ধিতে স্বভাবতই উদ্বিগ্ন ওয়াশিংটন ও পেন্টাগন। এজন্য আরব দেশগুলোকে নিয়ে ওয়াশিংটন ইরান বিরোধী একটা জোট গঠন করতে চাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সৌদি আরবসহ কয়েকটি উপসাগরীয় রাজতান্ত্রিক দেশের তরফ থেকে আশাপ্রদ সাড়া মিলেছে।
কিন্তু মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া বজায় না থাকলে ওয়াশিংটনের এ ধরনের উদ্যোগ ভেস্তে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ওবামা প্রশাসন। যে কারণে ওবামা প্রশাসন চাইছে মধ্যপ্রাচ্য সঙ্কটের দ্রুত সমাধান। এরই অংশ হিসেবে ইসরাইল-ফিলিস্তিনি শান্তি প্রক্রিয়া নতুন করে শুরু করতে উদ্যোগী হয়েছে ওবামা প্রশাসন। ইতোমধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক হোসেন ওবামা ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এবং ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু ফিলিস্তিন অধ্যুষিত এলাকায় ইহুদি বসতি নির্মাণ ও সম্প্রসারণের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর অনমনীয়তা এবং পূর্বজেরুজালেমকে ইসরাইলের ভবিষ্যত্ রাজধানী করার ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থানের কারণেই সে আলোচনা ব্যর্থ হয়।
ফিলিস্তিনিরা জেরুজালেমকে ভবিষ্যত্ স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী বলে মনে করে। অর্থাত্ ভূ-খণ্ডগত ছাড় না দেয়ার প্রশ্নে নেতানিয়াহু সরকারের অনমনীয়তার কারণে ইসরাইল-ফিলিস্তিন শান্তি প্রক্রিয়া থমকে আছে। ওবামা প্রশাসনের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, ইসরাইলের ওপর চাপ প্রয়োগ কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে সংশয় থাকলেও, শান্তি প্রক্রিয়ার ব্যাপারে নিষ্ক্রিয় থাকলে মধ্যপ্রাচ্য তথা ইসরাইল ফিলিস্তিন সঙ্কট আরও তীব্র হয়ে উঠতে পারে।
এর ফলে ওয়াশিংটন ও তেলআবিবের মধ্যে সম্পর্কের কিছুটা হলেও অবনতি ঘটেছে। তবে এর অর্থ এই নয় যে, এজন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে ত্যাগ করবে কিংবা তার বিরুদ্ধে কঠোর কোনো পদক্ষেপ নেবে। বরং দিন যতই অতিবাহিত হচ্ছে ততই এ কথাটি স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে, ইহুদি লবির চাপের কাছে ওবামা প্রশাসন ক্রমেই নতি স্বীকার করছে। ইসরাইলের এই একগুঁয়েমিপনার পরও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ঘোষণা করেন, যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল সম্পর্কে কোনো সঙ্কট নেই। আর একথা সত্য যে, ইসরাইলকে নিবৃত্ত না করতে পারলে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে না। আর অশান্ত মধ্যপ্রাচ্য শুধু আরব বা ফিলিস্তিনি নয়, ইসরাইল ও তার মুরুব্বি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার প্রতিও হুমকি হয়ে থাকবে।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ইসরাইলের অন্যতম কট্টরপন্থী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পরিচিত। চরম ইহুদিবাদী লিকুদ দলের টিকিটে আরেক মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হওয়ার পর বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু কোনো রাখঢাক না করে ঘোষণা দিয়েছিলেন, পশ্চিমতীর, গাজা উপত্যকার অধিকৃত ভূ-খণ্ড এবং পূর্বজেরুজালেমে ২০০৫ সাল থেকে শুরু করা ইহুদি বসতি কখনই সরানো যাবে না। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু মন্ত্রিসভার বৈঠকের সময় বলেছিলেন, পূর্বজেরুজালেমে ইহুদিদের বসবাসের অধিকার থাকবে না বা সেখানে তারা কোনো বাড়ি বানাতে পারবে না, সেটা আমরা মেনে নিতে পারি না। এছাড়া নেতানিয়াহু এ কথাও বলেছেন যে, পশ্চিমতীরে ইহুদি বসতি নির্মাণ বন্ধের চাপ দেয়া অন্যায়।
সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, ইসরাইল সরকার এখন আরও বেশিসংখ্যক ইহুদি বসতি নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ফিলিস্তিন এলাকায়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ইসরাইল সফরের সময় সে দেশের সরকারের পক্ষ থেকে পূর্বজেরুজালেমের পশ্চিমতীরে ১ হাজার ৬০০ নতুন ইহুদি বসতি নির্মাণের কথা ঘোষণা করা হয়। বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন, ইসরাইল সরকারের এই ঘোষণা আন্তর্জাতিক আইন এবং ওয়াশিংটনের উদ্যোগে ইসরাইল-ফিলিস্তিন শান্তি প্রক্রিয়া প্রয়াসের শুধু পরিপন্থীই
নয়, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অপমানজনকও বটে। যে কারণে ওয়াশিংটন ও তেলআবিবের সম্পর্ক এখন বেশ শীতল হয়ে পড়েছে।
পূর্বজেরুজালেমে বহু ফিলিস্তিনি পরিবার উচ্ছেদ করে সেখানে ইহুদি বসতি এবং বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের কাজ জোরেশোরে শুরু করেছে ইসরাইল। ইসরাইলের এই অপপরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। জাতিসংঘ মহাসচিব বানকিমুন থেকে শুরু করে ইসরাইলের মুরুব্বি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং মদতদাতা ইউরোপীয় ইউনিয়ন সবাই ফিলিস্তিনি এলাকায় ইহুদি বসতি নির্মাণের তীব্র বিরোধিতা করছে। শুধু তাই নয়, ১৯ মার্চ রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমন্বয়ে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য গঠিত চার পক্ষীয় শীর্ষ কূটনীতিকদের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনায় পূর্বজেরুজালেমে নতুন ইহুদি বসতি নির্মাণের তীব্র নিন্দা জানানো হয়।
তবে ইসরাইলের ইহুদি বসতি নির্মাণের ইস্যুতে সবার চোখ এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি। প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক হোসেন ওবামার উদ্যোগে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া শুরুর আগেই ইসরাইল সরকার ফিলিস্তিন ভূ-খণ্ডে নতুন ইহুদি বসতি নির্মাণের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক হোসেন ওবামা এ সত্য উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছেন যে, মধ্যপ্রাচ্য বিশেষ করে ইসরাইল-ফিলিস্তিন শান্তি প্রক্রিয়ার পথে প্রধান অন্তরায় সৃষ্টি করে আছে ফিলিস্তিনি এলাকায় অবৈধ ইহুদি বসতি নির্মাণ এবং সম্প্রসারণ। এখন স্বভাবতই এ প্রশ্ন জাগে যে, বারাক ওবামার প্রশাসন হঠাত্ নতুন করে ইসরাইল-ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনা শুরুর অন্যতম শর্ত ইহুদি বসতি নির্মাণ ও সম্প্রসারণ বন্ধের জন্য ইসরাইল সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে কেন।
এর প্রধান কারণ হলো মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইমেজ বা ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করা। প্রেসিডেন্ট ওবামা তার পূর্বসূরি জর্জ ডব্লিউ বুশের জামানায় আরব তথা মুসলিম জাহানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হৃত্ ইমেজ পুনরুদ্ধার করতে চাইছেন। ওবামা প্রশাসন এখন বুঝতে পারছে যে, অতি ইসরাইলঘেঁষা নীতির কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরব এবং বেশিরভাগ মুসলিম বিশ্বে তার গ্রহণ এবং বিশ্বাসযোগ্যতা প্রায় সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে ফেলেছে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগাতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্রের জানি দুশমন ইরান। মধ্যপ্রাচ্য তথা আরব জাহানে ইরানের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বৃদ্ধিতে স্বভাবতই উদ্বিগ্ন ওয়াশিংটন ও পেন্টাগন। এজন্য আরব দেশগুলোকে নিয়ে ওয়াশিংটন ইরান বিরোধী একটা জোট গঠন করতে চাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সৌদি আরবসহ কয়েকটি উপসাগরীয় রাজতান্ত্রিক দেশের তরফ থেকে আশাপ্রদ সাড়া মিলেছে।
কিন্তু মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া বজায় না থাকলে ওয়াশিংটনের এ ধরনের উদ্যোগ ভেস্তে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ওবামা প্রশাসন। যে কারণে ওবামা প্রশাসন চাইছে মধ্যপ্রাচ্য সঙ্কটের দ্রুত সমাধান। এরই অংশ হিসেবে ইসরাইল-ফিলিস্তিনি শান্তি প্রক্রিয়া নতুন করে শুরু করতে উদ্যোগী হয়েছে ওবামা প্রশাসন। ইতোমধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক হোসেন ওবামা ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এবং ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু ফিলিস্তিন অধ্যুষিত এলাকায় ইহুদি বসতি নির্মাণ ও সম্প্রসারণের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর অনমনীয়তা এবং পূর্বজেরুজালেমকে ইসরাইলের ভবিষ্যত্ রাজধানী করার ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থানের কারণেই সে আলোচনা ব্যর্থ হয়।
ফিলিস্তিনিরা জেরুজালেমকে ভবিষ্যত্ স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী বলে মনে করে। অর্থাত্ ভূ-খণ্ডগত ছাড় না দেয়ার প্রশ্নে নেতানিয়াহু সরকারের অনমনীয়তার কারণে ইসরাইল-ফিলিস্তিন শান্তি প্রক্রিয়া থমকে আছে। ওবামা প্রশাসনের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, ইসরাইলের ওপর চাপ প্রয়োগ কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে সংশয় থাকলেও, শান্তি প্রক্রিয়ার ব্যাপারে নিষ্ক্রিয় থাকলে মধ্যপ্রাচ্য তথা ইসরাইল ফিলিস্তিন সঙ্কট আরও তীব্র হয়ে উঠতে পারে।
এর ফলে ওয়াশিংটন ও তেলআবিবের মধ্যে সম্পর্কের কিছুটা হলেও অবনতি ঘটেছে। তবে এর অর্থ এই নয় যে, এজন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে ত্যাগ করবে কিংবা তার বিরুদ্ধে কঠোর কোনো পদক্ষেপ নেবে। বরং দিন যতই অতিবাহিত হচ্ছে ততই এ কথাটি স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে, ইহুদি লবির চাপের কাছে ওবামা প্রশাসন ক্রমেই নতি স্বীকার করছে। ইসরাইলের এই একগুঁয়েমিপনার পরও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ঘোষণা করেন, যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল সম্পর্কে কোনো সঙ্কট নেই। আর একথা সত্য যে, ইসরাইলকে নিবৃত্ত না করতে পারলে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে না। আর অশান্ত মধ্যপ্রাচ্য শুধু আরব বা ফিলিস্তিনি নয়, ইসরাইল ও তার মুরুব্বি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার প্রতিও হুমকি হয়ে থাকবে।
No comments