র্যাবের নৈতিক স্খলন নিয়ে ডিজি’র উদ্বেগঃ জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সচেষ্ট হোন
র্যাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ডিজি হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেছেন, সংস্থার কারও কারও নৈতিক স্খলন ও অবক্ষয় ঘটেছে। কিছু র্যাব সদস্য দুর্নীতিতেও জড়িয়ে পড়েছে। তবে এদের সংখ্যা সীমিত। সতর্ক করতে গিয়ে ডিজি বলেছেন, গুটিকয়েক সদস্যের কারণে র্যাবের মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ক্রসফায়ার নিয়ে দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনের সমালোচনা এবং আদালতের অসন্তোষের উল্লেখ করে ডিজি বলেছেন, কিন্তু তারপরও র্যাবের ওপর জনগণের এবং সরকারের আস্থা রয়েছে। মাদক ও জঙ্গি দমনে সাফল্য অর্জনের পাশাপাশি চলচ্চিত্রে সুবাতাস বইয়ে দেয়ার কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু আলোচনায় বেশি গুরুত্ব পেয়েছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও রাজনৈতিক নিপীড়নে র্যাবের ভূমিকা। এ দুটি বিষয়ে র্যাবের ডিজি কিন্তু সত্য এড়িয়ে গেছেন। কারণ, গত এক বছরে শুধু বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডই ঘটেছে ২২৯টি, যেগুলোর জন্য প্রধানত র্যাবকে দায়ী করা হয়েছে। অন্যদিকে সমালোচনা সত্ত্বেও সরকার ও জনগণের আস্থা রয়েছে বলে ঘোষণা দেয়ার মাধ্যমে র্যাবের ডিজি সম্ভবত বুঝিয়ে দিয়েছেন, ক্রসফায়ারসহ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ হবে না। এমন ব্যাখ্যা সত্য হলে তা হবে ভীতিকর। উদ্বেগের দ্বিতীয় কারণ হলো, রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর দমন-নির্যাতন চালানোর কাজেও আজকাল র্যাব ভূমিকা পালন করছে। অনেককে বেআইনিভাবে রিমান্ডে নিয়েও নির্যাতন করছে র্যাব।
এসবকিছুর জন্য অবশ্য র্যাবের ডিজির লজ্জিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। কেননা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সূচনা হয়েছিল স্বাধীনতাপরবর্তী প্রথম আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। ওই সরকার সর্বহারা পার্টির নেতা সিরাজ সিকদার এবং তার আগে-পরে ৩৭ হাজারেরও বেশি রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে বিচার ছাড়া হত্যা করেছিল। সে সরকারের সুযোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারও যে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রাখবে সেটা ধরেই নেয়া হয়েছে। কিন্তু আপত্তি উঠেছে এই হত্যাকাণ্ডে র্যাবকে ব্যবহার করায়। রাজনৈতিক নিপীড়নে ব্যবহার করার ফলেও র্যাবের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে। র্যাবের তত্ত্বাবধানে শিবির নেতার বক্তব্যসহ টিভিতে প্রচারিত দৃশ্য জরুরি সরকারের দিনগুলোর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। মানুষ বন্দি শিবির নেতার কোনো কথা বিশ্বাস তো করেইনি, শুনে ও দেখে বরং ভীত ও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। কারণ, এতদিন সরকারের পক্ষে এ ধরনের সব কাজ শুধু পুলিশই করত। এবার দেখা গেল, র্যাবকে দিয়েও সরকার তার হুকুম তামিল করিয়ে ছেড়েছে। র্যাবের ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার কারণ হলো, চারদলীয় জোট সরকারের উদ্যোগে গড়ে ওঠা র্যাব সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মনে সেদিন পর্যন্তও যথেষ্ট সমীহ ছিল। র্যাবের অভিযানে একদিকে হত্যা-সন্ত্রাস-অপরাধ অনেক কমে গিয়েছিল, অন্যদিকে র্যাবের পদক্ষেপগুলো ছিল দলনিরপেক্ষ। সেজন্যই জনগণের মধ্যে র্যাবের ভাবমর্যাদা ছিল অনেক উঁচুতে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের নির্দেশে মঞ্চায়িত একটিমাত্র নাটকেই র্যাবের এতদিনকার ভাবমর্যাদা মাটিতে মিশে গেছে। কারণ, দেশের শীর্ষ আইনজীবী ও আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, রিমান্ডের আসামিকে মিডিয়ার সামনে উপস্থিত করে স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্য দেয়ানো বেআইনি ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এ ধরনের মিডিয়া ট্রায়ালের আইনগত ভিত্তি নেই। অর্থাত্ র্যাবকে দিয়ে সরকার বেআইনি, মানবাধিকারবিরোধী ও সংবিধানপরিপন্থী কাজও করাচ্ছে। ফলে জনগণের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই র্যাবের ভাবমর্যাদা নষ্ট হচ্ছে। র্যাবের ডিজিকেও কথাটা কিছুটা ঘুরিয়ে স্বীকার করতে হয়েছে।
একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী হিসেবে র্যাবের অবশ্য করার কিছু নেই। কারণ র্যাবকে সরকারের নির্দেশ পালন করতে হয়। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, র্যাবের মতো সেদিন পর্যন্ত জনপ্রিয় একটি বাহিনীকেও সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যার ও রাজনৈতিক নিপীড়নের মতো বেআইনি কাজে ব্যবহার করে চলেছে। এজন্যই আমরা র্যাবের ডিজির সত্য এড়ানোর চেষ্টায় বিস্মিত হইনি। তাই বলে ডিজি কিন্তু র্যাব সদস্যদের দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও ছিনতাই-ডাকাতির মতো অপরাধগুলোর দায়-দায়িত্ব পাশ কাটাতে পারেন না। এসবের প্রতিকারে শুধু সতর্ক করা ও কঠোর শাস্তির ভয় দেখানোই যথেষ্ট নয়। ডিজিকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার উদাহরণও তৈরি করতে হবে। না হলে র্যাব সদস্যরা যেমন অনিয়ন্ত্রিত হয়ে ওঠার সুযোগ পাবে, জনমনেও তেমনি ভীতির সঙ্গে র্যাবের ব্যাপারে অসম্মান ও অনাস্থা বাড়তে থাকবে। এ কথা অবশ্যই বুঝতে হবে যে, বেআইনি কর্মকাণ্ড বন্ধ করার মধ্যেই র্যাবের জন্য মঙ্গল নিহিত রয়েছে। আমরা আশা করতে চাই, সব মিলিয়েই ডিজি তার বাহিনী র্যাবকে দিয়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করার ব্যাপারে সচেষ্ট হবেন, যে প্রত্যাশা পূরণ করাই তাদের উদ্দেশ্য বলে একাধিকবার বলেছেন তিনি।
এসবকিছুর জন্য অবশ্য র্যাবের ডিজির লজ্জিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। কেননা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সূচনা হয়েছিল স্বাধীনতাপরবর্তী প্রথম আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। ওই সরকার সর্বহারা পার্টির নেতা সিরাজ সিকদার এবং তার আগে-পরে ৩৭ হাজারেরও বেশি রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে বিচার ছাড়া হত্যা করেছিল। সে সরকারের সুযোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারও যে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রাখবে সেটা ধরেই নেয়া হয়েছে। কিন্তু আপত্তি উঠেছে এই হত্যাকাণ্ডে র্যাবকে ব্যবহার করায়। রাজনৈতিক নিপীড়নে ব্যবহার করার ফলেও র্যাবের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে। র্যাবের তত্ত্বাবধানে শিবির নেতার বক্তব্যসহ টিভিতে প্রচারিত দৃশ্য জরুরি সরকারের দিনগুলোর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। মানুষ বন্দি শিবির নেতার কোনো কথা বিশ্বাস তো করেইনি, শুনে ও দেখে বরং ভীত ও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। কারণ, এতদিন সরকারের পক্ষে এ ধরনের সব কাজ শুধু পুলিশই করত। এবার দেখা গেল, র্যাবকে দিয়েও সরকার তার হুকুম তামিল করিয়ে ছেড়েছে। র্যাবের ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার কারণ হলো, চারদলীয় জোট সরকারের উদ্যোগে গড়ে ওঠা র্যাব সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মনে সেদিন পর্যন্তও যথেষ্ট সমীহ ছিল। র্যাবের অভিযানে একদিকে হত্যা-সন্ত্রাস-অপরাধ অনেক কমে গিয়েছিল, অন্যদিকে র্যাবের পদক্ষেপগুলো ছিল দলনিরপেক্ষ। সেজন্যই জনগণের মধ্যে র্যাবের ভাবমর্যাদা ছিল অনেক উঁচুতে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের নির্দেশে মঞ্চায়িত একটিমাত্র নাটকেই র্যাবের এতদিনকার ভাবমর্যাদা মাটিতে মিশে গেছে। কারণ, দেশের শীর্ষ আইনজীবী ও আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, রিমান্ডের আসামিকে মিডিয়ার সামনে উপস্থিত করে স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্য দেয়ানো বেআইনি ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এ ধরনের মিডিয়া ট্রায়ালের আইনগত ভিত্তি নেই। অর্থাত্ র্যাবকে দিয়ে সরকার বেআইনি, মানবাধিকারবিরোধী ও সংবিধানপরিপন্থী কাজও করাচ্ছে। ফলে জনগণের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই র্যাবের ভাবমর্যাদা নষ্ট হচ্ছে। র্যাবের ডিজিকেও কথাটা কিছুটা ঘুরিয়ে স্বীকার করতে হয়েছে।
একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী হিসেবে র্যাবের অবশ্য করার কিছু নেই। কারণ র্যাবকে সরকারের নির্দেশ পালন করতে হয়। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, র্যাবের মতো সেদিন পর্যন্ত জনপ্রিয় একটি বাহিনীকেও সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যার ও রাজনৈতিক নিপীড়নের মতো বেআইনি কাজে ব্যবহার করে চলেছে। এজন্যই আমরা র্যাবের ডিজির সত্য এড়ানোর চেষ্টায় বিস্মিত হইনি। তাই বলে ডিজি কিন্তু র্যাব সদস্যদের দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও ছিনতাই-ডাকাতির মতো অপরাধগুলোর দায়-দায়িত্ব পাশ কাটাতে পারেন না। এসবের প্রতিকারে শুধু সতর্ক করা ও কঠোর শাস্তির ভয় দেখানোই যথেষ্ট নয়। ডিজিকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার উদাহরণও তৈরি করতে হবে। না হলে র্যাব সদস্যরা যেমন অনিয়ন্ত্রিত হয়ে ওঠার সুযোগ পাবে, জনমনেও তেমনি ভীতির সঙ্গে র্যাবের ব্যাপারে অসম্মান ও অনাস্থা বাড়তে থাকবে। এ কথা অবশ্যই বুঝতে হবে যে, বেআইনি কর্মকাণ্ড বন্ধ করার মধ্যেই র্যাবের জন্য মঙ্গল নিহিত রয়েছে। আমরা আশা করতে চাই, সব মিলিয়েই ডিজি তার বাহিনী র্যাবকে দিয়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করার ব্যাপারে সচেষ্ট হবেন, যে প্রত্যাশা পূরণ করাই তাদের উদ্দেশ্য বলে একাধিকবার বলেছেন তিনি।
No comments