বড়ালসহ অসংখ্য নদী আজ মরা গাং- ঢাক পেটানো উদ্যোগে কাজ হচ্ছে না
একে একে শুকিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের নদী। নাব্য হারাচ্ছে এক সময়ের খরস্রোতা স্রোতস্বিনী। প্রতি বছর মরা নদীর তালিকায় যোগ হচ্ছে নতুন কোনো নদীর নাম। বহু নদীর পানি এখন পান করা দূরের কথা, সরবরাহ করারও অযোগ্য। এমনকি পশুপাখির পানের যোগ্যতা হারিয়েছে অনেক নদীর পানি।
দেশের বড় বড় নদীর অনেকগুলোর বুক জুড়েই চলছে চাষাবাদ, তৈরি হয়েছে পায়েহাঁটা পথ। ঢেউয়ের বদলে নদীর তলদেশে উড়ছে ধূলি, চলছে বালুবাহী ট্রাক। মরণফাঁদ ফারাক্কাসহ উজানের দেশ ভারতে বাঁধ দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণের ফলে বাংলাদেশের ছোট-বড় নদীর প্রবাহ ক্রমেই ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়ে পরিণত হচ্ছে বালুকা প্রান্তরে। ফলে মরুপ্রবণ হয়ে উঠছে বিভিন্ন অঞ্চল। সেচের অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে ফসলের মাঠ। নদীই এখন চাষাবাদের ক্ষেত্র। মরা নদীর সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি যে সব নদী কার্যত দূষণে দখলে মৃতপ্রায়, তারই একটি নাটোরের বড়াল। প্রমত্তা বড়াল এখন নাব্য হারিয়ে আক্ষরিক অর্থেই পরিণত হয়েছে শীর্ণ খাল ও ফসলের মাঠে। নদীর বুকজুড়ে চাষ করা হচ্ছে ধান, সরিষা ও রসুন-পেঁয়াজ। অথচ কয়েক বছর আগেও এই নদী মিটিয়েছে তীরবর্তী মানুষের পানির চাহিদা, জমিতে সেচের পর্যাপ্ত পানি। সেই পানির প্রবাহে এখন বসেছে পানি তোলার অগভীর নলকূপ শ্যালো মেশিন। এককথায় বড়াল আর নদী নেই। কোনো কোনো স্থানে তা নদী নামের ভাগাড়। কোথাও সবুজ-শ্যামল ফসলের মাঠ।
বস্তুত নদীশাসনের নামে এদেশে নদী শোষণ চলেছে যুগযুগ ধরে। উজানে একের পর এক বাঁধ দিয়ে নদীর প্রাকৃতিক প্রবাহকে রুদ্ধ করা হয়েছে। স্রোতের অভাবে বয়ে আসা বালু জমে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য চর। কিন্তু সময়মতো ড্রেজিং না করে বরং নদীর উত্সমুখসহ বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ সেতুসহ যাতায়াতের রাস্তা বানিয়ে নদীর নদীত্ব কেড়ে নেয়া হয়েছে। এর ওপর আবার নিরন্তর চলছে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। সরকারি নজরদারি না থাকায় ভূমিদস্যুরা অন্যান্য নদীর মতো বড়াল নদীর দু’পাড়ে মাটি ভরাট করে জবরদখল করেছে। বড়াল নদী মাছসহ জীববৈচিত্র্য হারানোর ফলে নদীনির্ভর জীবিকাসন্ধানী জেলে সম্প্রদায় এখন বাধ্য হয়ে বেছে নিচ্ছে অন্য পেশা। নদী মাছশূন্য কাজেই বড়াল তীরবর্তী জেলেপল্লীও এখন জেলেশূন্য।
জানা গেছে, ১৯৮১-৮২ অর্থবছরে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রথম বড়ালের স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দেয় রাজশাহীর চারঘাটে এর উত্সমুখে বাঁধ দিয়ে। পরে বড়াইগ্রাম উপজেলার দু’টি বক্স কালভার্ট, চাটমোহরে স্লুইসগেট এমনকি নদীর বুক চিরে রাস্তা নির্মাণ করায় বড়াল নদী নালায় পরিণত হয়। এই নদীকে অবলম্বন করে নদীপথ বলে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। সব মিলিয়ে নদীটি এখন ধুঁকে ধুঁকে এগিয়ে যাচ্ছে মৃত্যুর দিকে। বর্তমানে দখলবাজদের উত্খাত করে ড্রেজিং করা ছাড়া বড়ালের নদীত্ব রক্ষায় বিকল্প কোনো পথ নেই।
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। কিন্তু যে হারে নদী মরে যাচ্ছে, শীর্ণ হতে হতে পরিণত হচ্ছে শীর্ণ খাল-নালায়, নদীর বুকে গড়ে উঠছে হাজার হাজার কাঁচা-পাকা স্থাপনা, ভরাট করে চলছে চাষাবাদ এবং শিল্পকারখানার বর্জ্যাধার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে তাতে নদীর এই মাতৃরূপী ভূমিকা যে অচিরেই উপাখ্যানে পরিণত হবে, তার আলামত দেখা দিয়েছে। বিশেষত বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ক্রমাগত নদীর জমি জবরদখলের মহোত্সব শুরু হয়েছে। বর্তমানে নদীর জমি বেচাকেনাও চলছে। উজানে বাঁধ দিয়ে ভারত বাংলাদেশের প্রাণপ্রবাহ যেমন রুদ্ধ করার উপক্রম করেছে তেমনি রাষ্ট্রযন্ত্রও নদী সুরক্ষায় কোনো ফলপ্রসূ ব্যবস্থা নেয়নি। দেখা গেছে, নদী খননের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে মাঝপথে, জবরদখল বন্ধ করার উদ্যোগ স্থগিত হয়ে গেছে সরকার বদলের পরপরই। বর্তমান সরকারের আমলে প্রায় যুদ্ধ তত্পরতার মতো আয়োজন করে ঢাকার চারপাশের ছয়টি নদীতে পানিপ্রবাহ বাড়ানো এবং তা দূষণমুক্ত করায় ঢাকঢোল পিটিয়ে কর্মযজ্ঞ শুরু করা হয়েছে। সেই আওয়াজও ক্রমেই ক্ষীণতর হচ্ছে। ঢাকার চারপাশে বৃত্তাকার নৌপথ নির্মাণের যে কথা বলা হচ্ছিল, সেই মহাপরিকল্পনাও এখন দৃশ্যত ফাইলবন্দি। এ অবস্থায় সহজেই আঁচ করা যায়, দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ক্ষেত্রেও একথা প্রযোজ্য। তাই বাঁচার স্বার্থে এখন দরকার কার্যকর উদ্যোগ। নদীকে দখল ও দূষণমুক্ত করে, নদী খনন করে বড়ালসহ সব নদীকে ফিরিয়ে দিতে হবে তার নিজস্ব জমি এবং নির্বিঘ্ন প্রবাহ।
বস্তুত নদীশাসনের নামে এদেশে নদী শোষণ চলেছে যুগযুগ ধরে। উজানে একের পর এক বাঁধ দিয়ে নদীর প্রাকৃতিক প্রবাহকে রুদ্ধ করা হয়েছে। স্রোতের অভাবে বয়ে আসা বালু জমে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য চর। কিন্তু সময়মতো ড্রেজিং না করে বরং নদীর উত্সমুখসহ বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ সেতুসহ যাতায়াতের রাস্তা বানিয়ে নদীর নদীত্ব কেড়ে নেয়া হয়েছে। এর ওপর আবার নিরন্তর চলছে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। সরকারি নজরদারি না থাকায় ভূমিদস্যুরা অন্যান্য নদীর মতো বড়াল নদীর দু’পাড়ে মাটি ভরাট করে জবরদখল করেছে। বড়াল নদী মাছসহ জীববৈচিত্র্য হারানোর ফলে নদীনির্ভর জীবিকাসন্ধানী জেলে সম্প্রদায় এখন বাধ্য হয়ে বেছে নিচ্ছে অন্য পেশা। নদী মাছশূন্য কাজেই বড়াল তীরবর্তী জেলেপল্লীও এখন জেলেশূন্য।
জানা গেছে, ১৯৮১-৮২ অর্থবছরে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রথম বড়ালের স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দেয় রাজশাহীর চারঘাটে এর উত্সমুখে বাঁধ দিয়ে। পরে বড়াইগ্রাম উপজেলার দু’টি বক্স কালভার্ট, চাটমোহরে স্লুইসগেট এমনকি নদীর বুক চিরে রাস্তা নির্মাণ করায় বড়াল নদী নালায় পরিণত হয়। এই নদীকে অবলম্বন করে নদীপথ বলে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। সব মিলিয়ে নদীটি এখন ধুঁকে ধুঁকে এগিয়ে যাচ্ছে মৃত্যুর দিকে। বর্তমানে দখলবাজদের উত্খাত করে ড্রেজিং করা ছাড়া বড়ালের নদীত্ব রক্ষায় বিকল্প কোনো পথ নেই।
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। কিন্তু যে হারে নদী মরে যাচ্ছে, শীর্ণ হতে হতে পরিণত হচ্ছে শীর্ণ খাল-নালায়, নদীর বুকে গড়ে উঠছে হাজার হাজার কাঁচা-পাকা স্থাপনা, ভরাট করে চলছে চাষাবাদ এবং শিল্পকারখানার বর্জ্যাধার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে তাতে নদীর এই মাতৃরূপী ভূমিকা যে অচিরেই উপাখ্যানে পরিণত হবে, তার আলামত দেখা দিয়েছে। বিশেষত বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ক্রমাগত নদীর জমি জবরদখলের মহোত্সব শুরু হয়েছে। বর্তমানে নদীর জমি বেচাকেনাও চলছে। উজানে বাঁধ দিয়ে ভারত বাংলাদেশের প্রাণপ্রবাহ যেমন রুদ্ধ করার উপক্রম করেছে তেমনি রাষ্ট্রযন্ত্রও নদী সুরক্ষায় কোনো ফলপ্রসূ ব্যবস্থা নেয়নি। দেখা গেছে, নদী খননের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে মাঝপথে, জবরদখল বন্ধ করার উদ্যোগ স্থগিত হয়ে গেছে সরকার বদলের পরপরই। বর্তমান সরকারের আমলে প্রায় যুদ্ধ তত্পরতার মতো আয়োজন করে ঢাকার চারপাশের ছয়টি নদীতে পানিপ্রবাহ বাড়ানো এবং তা দূষণমুক্ত করায় ঢাকঢোল পিটিয়ে কর্মযজ্ঞ শুরু করা হয়েছে। সেই আওয়াজও ক্রমেই ক্ষীণতর হচ্ছে। ঢাকার চারপাশে বৃত্তাকার নৌপথ নির্মাণের যে কথা বলা হচ্ছিল, সেই মহাপরিকল্পনাও এখন দৃশ্যত ফাইলবন্দি। এ অবস্থায় সহজেই আঁচ করা যায়, দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ক্ষেত্রেও একথা প্রযোজ্য। তাই বাঁচার স্বার্থে এখন দরকার কার্যকর উদ্যোগ। নদীকে দখল ও দূষণমুক্ত করে, নদী খনন করে বড়ালসহ সব নদীকে ফিরিয়ে দিতে হবে তার নিজস্ব জমি এবং নির্বিঘ্ন প্রবাহ।
No comments