২৮ মার্চ ১১ মামলায় খালেদার অভিযোগ গঠন
আগামী
২৮ মার্চ রাষ্ট্রদ্রোহসহ ১১ মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার
বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে। মঙ্গলবার
ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লার আদালত এ দিন ধার্য করেন।
মামলাগুলো হলো- রাষ্ট্রদ্রোহের একটি, যাত্রাবাড়ী থানার বিস্ফোরক আইনের
মামলা এবং মিরপুরের দারুসসালাম থানায় নাশকতার আট মামলা। আজ এই ১১ মামলার
অভিযোগ গঠনের শুনানির ধার্য দিন ছিল। কিন্তু হঠাৎ বিএনপি চেয়ারপারসন অসুস্থ
হয়ে পড়েছেন এজন্য তিনি আদালতে উপস্থিত হতে পারছেন না জানিয়ে সময়ের আবেদন
করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে অভিযোগ গঠনের
শুনানির জন্য ২৮ মার্চ পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন। একই সঙ্গে ওই দিন খালেদা
জিয়াকে আদালতে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ
মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সকালে তিনি যুগান্তরকে বলেন, বিএনপি
চেয়ারপারসন আদালতে উপস্থিত হবার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ তার শারীরিক
অসুস্থতার কারণে তিনি আজ আসতে পারছেন না। তাই তার পক্ষে আমরা আদালতে সময়ের
আবেদন জানাবো। এর আগে সোমবার খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া এসব
মামলার শুনানিতে বিএনপি চেয়ারপারসন আজ আদালতে হাজির হবেন বলে নিশ্চিত
করেছিলেন। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, গত বছরের ২৫ জানুয়ারি
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ড. মোমতাজ উদ্দিন আহমদ
মেহেদী বাদী হয়ে ঢাকা মহানগর হাকিম রাশেদ তালুকদারের আদালতে মামলাটি করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স
ইনস্টিটিউশনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপির
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, ‘আজকে বলা হয় এত লক্ষ শহীদ হয়েছে, এটা নিয়েও
অনেক বিতর্ক আছে।’ ওই দিন খালেদা জিয়া আরো বলেন, ‘তিনি (বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমান) বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি। তিনি পাকিস্তানের
প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন।
জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে
মুক্তিযুদ্ধ হতো না।’ এই মামলায় ২০১৬ সালের ৫ এপ্রিল খালেদা জিয়া আদালতে
হাজির হয়ে জামিন নেন। এছাড়া ২০১৫ সালে মিরপুরের দারুসসালাম থানা এলাকায়
নাশকতার অভিযোগে আটটি মামলা করে পুলিশ। এসব মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন
খালেদা জিয়াকে আসামি করা হয়। অপরদিকে ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী
থানায় খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করেন
যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কে এম নুরুজ্জামান। মামলার সংক্ষিপ্ত
বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি রাতে যাত্রাবাড়ীর কাঠেরপুল
এলাকায় গ্লোরী পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাসে পেট্রলবোমা হামলা হয়। এতে
বাসের ২৯ যাত্রী দগ্ধ হন। পরে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা
হলে ১ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নূর আলম (৬০) নামের এক
যাত্রী। এই মামলায় খালেদা জিয়া ছাড়াও উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- বিএনপির
স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী,
যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ
আমান, বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন, শওকত
মাহমুদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল,
চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস। গত বছর এই ১১টি
মামলায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
অভিযোগপত্র দেয়ার পর খালেদা জিয়া এসব মামলায় আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেন।
No comments