ভোজ্যতেলের দাম কমার সুফল পাচ্ছেন না ভোক্তারা
আন্তর্জাতিক
বাজারে দাম কমার প্রভাব দেশের ভোজ্যতেলের পাইকারি বাজারে পড়লেও এর সুফল
পাচ্ছেন না সাধারণ ভোক্তারা। পাইকারি বাজারে প্রতি মণে গত এক মাসে ৮শ’ টাকা
পর্যন্ত দাম কমলেও খুচরায় এর কোনো প্রভাবই পড়েনি। দু’সপ্তাহের ব্যবধানে
খাতুনগঞ্জে প্রায় ৭শ’ টাকা কমেছে সয়াবিন তেলের দাম। এক সপ্তাহ আগে প্রতি মণ
বিক্রি হয়েছিল প্রায় ৩ হাজার ২শ’ টাকা।
এর আগের সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল
প্রতি মণ ৩ হাজার ৬শ’ টাকা পর্যন্ত। চলতি সপ্তাহে প্রতি মণ ২ হাজার ৮শ’
টাকায় বিক্রি হচ্ছে পণ্যটি। অন্যদিকে পাম অয়েলের দামও কমেছে ৩শ’ টাকা।
প্রতি মণ পাম ২ হাজার ৮শ’ টাকা থেকে কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫শ’
টাকায়। পাইকারি বাজারে এভাবে ভোজ্যতেলের দাম কমলেও খুচরা বাজারে এর কোনো
প্রভাব নেই। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ভোজ্যতেল। পাইকারি দর হিসাবে সয়াবিন
প্রতি কেজি ৭৫ টাকায় বিক্রি হলেও খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা। ভোজ্যতেল
বেচাকেনার প্রচলিত পদ্ধতি অনুযায়ী ভোজ্যতেল পরিশোধন কারখানার মালিকরা ‘ডিও’
বা ‘এসও’ (ডেলিভারি অর্ডার বা সরবরাহ আদেশ) ছেড়ে বাজারে পাম তেল ও সয়াবিন
বিক্রি করেন। এই ‘ডিও’ কয়েক দফা হাতবদল হয় খাতুনগঞ্জের বাজারে। শেষ ধাপে এই
ডিও নিয়ে কারখানা থেকে তেল সংগ্রহ করে নেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। পরে খুচরা
ব্যবসায়ীদের হাত ঘুরে ভোক্তার কাছে পৌঁছায় খোলা সয়াবিন ও পাম তেল। যদিও এই
ডিও প্রথা বাতিল করা হয়েছে বলে ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন দাবি করে। কিন্তু
বাস্তবে কয়েকটি পণ্যে এখনও ওই প্রথায় বাজার কারসাজি হয় খাতুনগঞ্জে। জানা
গেছে, দেশের প্রধান পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে ভোজ্যতেলের সরবরাহ আদেশ
কেনাবেচায় দর কমেছে। পাইকারিতেও একই হারে দাম কমেছে। চলতি সপ্তাহে প্রতি মণ
খোলা সয়াবিন তেলের সরবরাহ আদেশে ২ হাজার ৮০০ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে, যা
দু’সপ্তাহ আগে ছিল ৩ হাজার ৫০০ টাকা আর এক মাস আগেও ছিল তিন হাজার ৬০০
টাকা। এ হিসাবে প্রতি মণে কমেছে ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকা পর্যন্ত। এখন প্রতি মণ
খোলা পাম তেল বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৫০০ টাকা, যা এক মাস আগেও দুই হাজার
৮০০ টাকা ছিল।
সুপার পাম তেল মণে ১০০ টাকা কমে দুই হাজার ৭৬০ টাকায় বিক্রি
হচ্ছে। পাইকারিতে একই হারে কমে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ৭৫ টাকায় কেনাবেচা
হয়েছে। পাম তেল ৬৫ টাকা ও সুপার পাম তেল ৬৯ টাকায় বিক্রি হয়। কিন্তু
বোতলজাত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেল পাইকারিতে কেনাবেচা হয় ৯২ থেকে ৯৯
টাকায়। বোতলজাত তেলের দামে কোনো পরিবর্তন হয়নি। এখনও খুচরা ব্যবসায়ীদের
প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন কিনতে হচ্ছে ১০০ থেকে ১০১ টাকায়, যা ভোক্তা
পর্যায়ে উঠে যাচ্ছে ১০৫-১০৬ টাকা পর্যন্ত। অর্থাৎ বাজার নিন্মমুখী হলেও
ভোক্তাদের কাছ থেকে প্রতি লিটারে ২০-২৫ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা আদায় করছে
কোম্পানিগুলো। নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা
গেছে, বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ১০০ থেকে ১০৬ টাকা।
সয়াবিন তেলের পাইকারি বাজারের সঙ্গে খুচরা বাজারে দামের ব্যবধান ৭ থেকে ৮
টাকা। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৭৬ টাকায়। পাইকারি দরের চেয়ে লিটারে ১১
থেকে ১৫ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
No comments