যেকারণে যাত্রীবাহী বিমানকে ভূপাতিত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন পুতিন
রাশিয়ার
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যাত্রীবাহী একটি বিমানকে গুলি করে মাটিতে
নামিয়ে আনার আদেশ দিয়েছিলেন। কারণ তাকে জানানো হয়েছিলো যে বিমানটির
ভেতরে বোমা আছে। শুধু তাই নয়, বিমানটিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সোচির
শীতকালীন অলিম্পিকসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দিকে। লক্ষ্য বিমানটি দিয়ে
সেখানো হামলা চালানো। এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে প্রেসিডেন্ট পুতিনের নিজের
মুখ থেকে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে তৈরি করা নতুন একটি সিনেমাতে তিনি
এসব কথা বলেছেন। দুই ঘণ্টার এই সিনেমাটি অনলাইনে পোস্ট করার পর থেকে তা
নিয়ে প্রচুর কথাবার্তা হচ্ছে। রাশিয়ায় নির্বাচন হবে ১৮ই মার্চ।
প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলেও ধারণা করা হচ্ছে,
নির্বাচনে তিনিই জয়ী হবেন। সবচেয়ে জনপ্রিয় বিরোধী নেতা আলেক্সেই
নাভালনিকে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অনুমতি দেয়নি কর্তৃপক্ষ। মি. পুতিন
জানান, তাকে বলা হয়েছিলো বিমানটি ইউক্রেন থেকে তুরস্কের দিকে যাচ্ছিলো।
অলিম্পিক শুরুর ঠিক আগেভাগে বিমানটিকে ছিনতাই করা হয়। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে
দেখা যায়, মি. পুতিনকে দেয়া এসব তথ্য সত্য নয়। তাই বিমানটিকে আর
ভূপাতিত করা হয়নি। নতুন সিনেমায় পুতিন বলেন, ‘আমাকে বলা হয় ইউক্রেন থেকে
ইস্তাম্বুল যাচ্ছে এরকম একটি বিমান ছিনতাই হয়েছে। ছিনতাইকারীরা দাবি করছে
বিমানটিকে সোচিতে অবতরণ করানোর জন্যে।’ তুর্কী পেগাসাস বোয়িং
এয়ারলাইন্সের বিমানটি ১১০ জন যাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করে ইউক্রেনের
খারকিভ থেকে। মি. পুতিনকে জানানো হয় একজন যাত্রীর কাছে একটি বোমা আছে। সে
পাইলটকে বলেছে বিমানটিকে সোচির দিকে নিয়ে যেতে।
মি. পুতিন বলেন, নিরাপত্তা
কর্মকর্তারা তখন তাকে বলেন যে, এরকম জরুরী পরিস্থিতিতে প্রথম কাজ হলো
বিমানটিকে মাটিতে নামানো। ‘আমি তাদেরকে বলি- পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করুন,’
বলেন মি. পুতিন। এই আদেশ দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই তিনি আরেকটি টেলিফোন কল
পান। তখন তাকে বলা হয় এর আগে বিমানটি সম্পর্কে যেসব তথ্য দেওয়া হয়েছে
সেগুলো সঠিক নয়। এসব ছিলো ‘ফলস এলার্ম’। এর কিছুক্ষণ পরই মি. পুতিন
অলিম্পিকের কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে সোচিতে অলিম্পিকের ভেন্যুতে গিয়ে
পৌঁছান। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ক্রেমলিনের একজন মুখপাত্র দিমিত্রি
পেসকভও মি. পুতিনের এসব বক্তব্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ছবিতে মি.
পুতিনের একটি সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী তার কাছে জানতে
চান ক্রাইমিয়া অঞ্চলকে আবার ইউক্রেনের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার কোন সম্ভাবনা
আছে কিনা? প্রেসিডেন্ট পুতিন তখন স্পষ্ট বলে দেন, ‘আপনি এসব কি বলছেন? এরকম
কোনো পরিস্থিতি বিরাজ করছে না এবং এরকম কখনও হবে না।’ রাশিয়া ২০১৪ সালে
ইউক্রেন থেকে এই অঞ্চলটি দখল করে নিয়েছে। সিনেমাতে প্রেসিডেন্ট পুতিন
বলেন, তিনি ‘কিছু কিছু বিষয়’ ক্ষমা করতে পারেন কিন্তু ‘সবকিছু’ তিনি ক্ষমা
করতে পারেন না। তিনি কী ক্ষমা করতে পারেন না জানতে চাইলে মি. পুতিন স্পষ্ট
ভাষায় বলেন ‘বেইমানি’। এই সিনেমাতে রুশ প্রেসিডেন্ট আরো জানিয়েছেন যে
তার দাদা স্পিরিডন পুতিন সাবেক রুশ নেতা ভ্লাদিমির লেনিন এবং জোসেফ
স্তালিনের জন্যে রান্না করতেন।
সূত্র: বিবিসি
সূত্র: বিবিসি
No comments