কোচিং বাণিজ্যে জড়িত ৫২২ শিক্ষক ব্যবস্থা নিতে দ্বিধায় মন্ত্রণালয় by নূর মোহাম্মদ
দুর্নীতি
দমন কমিশনের সুপারিশের পরও আটকে আছে কোচিং বাণিজ্যে জড়িত ৫২২ শিক্ষকের
বদলি। এসব শিক্ষক বছরের পর বছর রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলে কোচিং বাণিজ্য করে
আসছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। এর পরই দুদক এসব শিক্ষককে ঢাকার
বাইরে বদলি করার সুপারিশ করে। কিন্তু দুই মাসে তাদের বদলির কোনো লক্ষণ নেই।
বদলির আদেশ হওয়ার আগেই শাস্তি ঠেকাতে নানা তৎপরতা শুরু করেছেন তারা।
দুর্নীতি দমন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রায় তিন মাস
আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চিঠি
দিয়েছিল। এতে বলা হয়, রাজধানীর ২৪টি সরকারি হাইস্কুলের ৫২২ জন শিক্ষক একই
কর্মস্থলে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে কর্মরত। দীর্ঘ সময় ধরে একই স্কুলে কর্মরত
থাকায় বেশির ভাগ শিক্ষক ক্লাস ফাঁকি দিয়ে অবৈধ কোচিং বাণিজ্যে জড়িয়ে
পড়েছেন। এ ছাড়া সাতজন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাতটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক
হিসেবে কর্মরত। তারা জেলা শিক্ষা অফিসের দায়িত্ব পালন না করায়
শিক্ষাক্ষেত্রে প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। চিঠিতে সরকারি স্কুলের
শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থার
মানোন্নয়নে তিন দফা সুপারিশ করা হয়। এগুলো হলো- শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষক
বদলির নীতিমালার আলোকে বদলি করা। যারা একই কর্মস্থলে দীর্ঘদিন ধরে বহাল
থেকে কোচিং বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অনৈতিক আয় ভোগ করায় অবারিত সুযোগ
সৃষ্টি হয়েছে। তেমনি বুদ্ধিবৃত্তিমূলক শ্রম সৃষ্টিধর্মী প্রয়াসের পরিবর্তে
অবৈধ অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। যারা অনৈতিক আয় করছেন
তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের স্ব স্ব
পদে পদায়ন করা।
এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-১) চৌধুরী মুফাদ আহমেদ বলেন, দুদকের সুপারিশটি আমরা পর্যালোচনা করেছি। কোচিং-এ জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। সে কারণে ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। তবে যারা বছরের পর বছর একই স্কুলে চাকরি করছেন তাদের অবশ্যই বদলি করা হবে। তবে এক সঙ্গে বদলি করা হলে ডিজাস্টার হতে পারে। আমরা ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেবো। খুবই দ্রুত তাদের বদলির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এখানে টেকনিক্যাল কিছু সমস্যা থাকার কারণে বদলির কার্যক্রম হাতে নিতে একটু দেরি হচ্ছে। দুদকের তথ্য অনুসারে, রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ২৫ জন শিক্ষক ১০ থেকে ২৬ বছর একই স্কুলে চাকরি করছেন। এ চিত্র রাজধানীর ২৪টি সরকারি হাইস্কুলের ৫২২ জন শিক্ষকের। চাকরি বিধি অনুযায়ী একই প্রতিষ্ঠানে তিন বছরের বেশি কেউ চাকরি করতে পারেন না। অথচ যুগের পর যুগ একই স্কুলে একই পদে বহাল আছেন। দীর্ঘদিন একই স্কুলে চাকরি করায় স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গেও একটা সখ্য গড়ে উঠেছে। ফলে কাউকেই পাত্তা দিচ্ছেন না। শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের চেয়ে কোচিং বাণিজ্যে আগ্রহ বেশি বলে অনেক অভিভাবক অভিযোগ করেছেন। জানা গেছে, বহু বছর ধরে তেজগাঁও সরকারি হাইস্কুলে
সহকারী শিক্ষক পদে চাকরিরত এক শিক্ষকের স্বামী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব। একই স্কুলের আরেক শিক্ষিকার স্বামী বঙ্গভবনের একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তা। আরেক শিক্ষিকার স্বামী পিডিবি’র উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা। অভিযুক্ত শিক্ষকদের অনেকের প্রভাবশালী স্বজন সরকারের উচ্চ পর্যায়ে রয়েছেন। তাদের চাপে শিক্ষা মন্ত্রণালয় চুপসে গেছে। রাজধানীর একটি নামকরা সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমার স্কুলে কর্মরত শিক্ষকরা ঠিকমতো ক্লাস নেন না। স্কুলে আসলেও আড্ডা দিয়ে সময় কাটান। তাদের আত্মীয়রা প্রভাবশালী হওয়ায় নির্দেশ দিলেও পাত্তা দেন না। উল্টো আমাকে ঢাকার বাইরে বদলি করে দেয়ার হুমকি দেন। এই সিন্ডিকেট ভেঙে না দিলে গুণগত শিক্ষা অর্জিত হবে না।
এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-১) চৌধুরী মুফাদ আহমেদ বলেন, দুদকের সুপারিশটি আমরা পর্যালোচনা করেছি। কোচিং-এ জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। সে কারণে ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। তবে যারা বছরের পর বছর একই স্কুলে চাকরি করছেন তাদের অবশ্যই বদলি করা হবে। তবে এক সঙ্গে বদলি করা হলে ডিজাস্টার হতে পারে। আমরা ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেবো। খুবই দ্রুত তাদের বদলির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এখানে টেকনিক্যাল কিছু সমস্যা থাকার কারণে বদলির কার্যক্রম হাতে নিতে একটু দেরি হচ্ছে। দুদকের তথ্য অনুসারে, রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ২৫ জন শিক্ষক ১০ থেকে ২৬ বছর একই স্কুলে চাকরি করছেন। এ চিত্র রাজধানীর ২৪টি সরকারি হাইস্কুলের ৫২২ জন শিক্ষকের। চাকরি বিধি অনুযায়ী একই প্রতিষ্ঠানে তিন বছরের বেশি কেউ চাকরি করতে পারেন না। অথচ যুগের পর যুগ একই স্কুলে একই পদে বহাল আছেন। দীর্ঘদিন একই স্কুলে চাকরি করায় স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গেও একটা সখ্য গড়ে উঠেছে। ফলে কাউকেই পাত্তা দিচ্ছেন না। শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের চেয়ে কোচিং বাণিজ্যে আগ্রহ বেশি বলে অনেক অভিভাবক অভিযোগ করেছেন। জানা গেছে, বহু বছর ধরে তেজগাঁও সরকারি হাইস্কুলে
সহকারী শিক্ষক পদে চাকরিরত এক শিক্ষকের স্বামী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব। একই স্কুলের আরেক শিক্ষিকার স্বামী বঙ্গভবনের একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তা। আরেক শিক্ষিকার স্বামী পিডিবি’র উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা। অভিযুক্ত শিক্ষকদের অনেকের প্রভাবশালী স্বজন সরকারের উচ্চ পর্যায়ে রয়েছেন। তাদের চাপে শিক্ষা মন্ত্রণালয় চুপসে গেছে। রাজধানীর একটি নামকরা সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমার স্কুলে কর্মরত শিক্ষকরা ঠিকমতো ক্লাস নেন না। স্কুলে আসলেও আড্ডা দিয়ে সময় কাটান। তাদের আত্মীয়রা প্রভাবশালী হওয়ায় নির্দেশ দিলেও পাত্তা দেন না। উল্টো আমাকে ঢাকার বাইরে বদলি করে দেয়ার হুমকি দেন। এই সিন্ডিকেট ভেঙে না দিলে গুণগত শিক্ষা অর্জিত হবে না।
No comments