যৌন নিপীড়ন: দায়মুক্ত পাপ! by মরিয়ম চম্পা
লালমাটিয়া
কলেজের এক শিক্ষার্থী। তিনি লেখাপড়ার পাশাপাশি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে
চাকরি করেন। কাজ শেষে হোস্টেলে ফিরতে প্রায়ই রাত ১০টা বেজে যায়। রাতে ফেরার
পথে নানা অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের মুখোমুখি হতে হয় তাকে। কখনো অশ্লীল বাক্য।
কখনো বা বাজে স্পর্শ। এভাবে সারা দেশে প্রতিদিনই প্রকাশ্যে এ ধরনের যৌন
হয়রানির ঘটনা ঘটছে। কিন্তু আইনি দুর্বলতার কারণে এ ধরনের ঘটনার বিচার হচ্ছে
না। এ যেন পরিণত হয়েছে দায়মুক্ত পাপে।
ব্র্যাকের সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে গণপরিবহনে যাতায়াত করার সময় ৯৪ শতাংশ নারী বিভিন্ন সময় মৌখিক, শারীরিক বা অন্য কোনোভাবে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ৪১ থেকে ৬০ বছর বয়সী পুরুষের মাধ্যমে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বেশি। ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে জুন- এই তিন মাস গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। প্রায় ৪১৫ জন নারীর অংশগ্রহণে এই গবেষণায় তুলে ধরা হয়েছে নারীদের সড়ক ও গণপরিবহন ব্যবহারের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতা।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি দাবি করেছে, গণপরিবহনে গত ১৩ মাসে ২১ নারী ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এরমধ্যে গণধর্ষণের ঘটনা ৯টি, ধর্ষণের ঘটনা ৮টি, শ্লীলতাহানির ৪টি ঘটনা ঘটেছে। এইসব ঘটনায় ৫৫ আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। পর্যবেক্ষণ মতে, ২০১৭ সালের ২১শে জানুয়ারি রাজধানীর দারুসসালামে চলন্ত বাসে যৌন হয়রানির অভিযোগে গাবতলী-নবীনগর রুটের বাসচালক ও হেলপারের বিরুদ্ধে দারুসসালাম থানায় মামলা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। একই বছরের ১৩ই মার্চ ইজিবাইকে করে চুয়াডাঙ্গা শহর থেকে আলমডাঙ্গায় ফিরছিলেন এক স্কুলছাত্রী। ইজিবাইকের ভাড়া মেটাতে না পারার কারণে চালক তাকে ফাঁদে ফেলে আরো তিনজন সহ গণধর্ষণ করে। একই বছরের ৮ই আগস্ট রাজধানীর বনানীতে এক তরুণীকে প্রাইভেট কারে তুলে নিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালিয়েছে ইমরান হোসেন নামের এক ব্যক্তি। এই ঘটনায় ইমরানকে গ্রেপ্তার ও গাড়িটি জব্দ করেছে পুলিশ।
মানবাধিকার আইনজীবী সালমা আলী এসব প্রসঙ্গে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা দেখে আসছি দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা বিভিন্নভাবে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। নানা সময়ে তারা আমাদের কাছে আসতেন। হয়রানি ও ভোগান্তির অনুভূতি ভাগাভাগি করতেন। শিক্ষার্থী ছাড়াও চিকিৎসক, আইনজীবী, সাংবাদিকসহ কর্মক্ষেত্রের নারীরাও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে যৌন হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। কেউ কেউ সাহস করে অভিযোগ নিয়ে তারা আমাদের কাছে আসলেও আদালত পর্যন্ত যেতে না চাওয়ায় আমরা বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত সক্রিয় থাকা সত্ত্বেও কিছুই করতে পারি না। এছাড়া সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে ভুক্তভোগীরা পুলিশের শরণাপন্ন হতে ভয় পান। ঘটনা নিয়ে সামনে আসতে চান না। একই সঙ্গে নারীদের হয়রানি করা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অপরাধের ধরন অনুযায়ী শাস্তির বিধান থাকলেও নেই আইনের সঠিক প্রয়োগ। এক্ষেত্রে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বন্ধ করতে হলে সরকারকে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র আইন বা বিচারের মাধ্যমে এটা বন্ধ করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে অপরাধের ধরন অনুযায়ী অভিযুক্তদের কাউকে ধমক দিয়ে, কাউকে মোবাইল কোর্টের আওতায় এনে অর্থাৎ যে যতটা অপরাধ করবে তাকে সেই পরিমাণ শাস্তি দেয়া হবে। এখানে আমি বলবো, আইন হবে, এর প্রয়োগও থাকবে। তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে থাকতে হবে আমাদের সামাজিক মূল্যবোধ, চারিত্রিক নৈতিকতা। কেউ যেন সুযোগ সন্ধানী না হয়, আবার আইনের অপব্যবহার না করে, সমাজের প্রতিটি ব্যক্তি তা আশা করবে।
আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী এলিনা খান বলেন, সর্বপ্রথম যে কাজটি করতে হবে তা হলো সঠিক আইন প্রণয়ন। পেনাল কোডের ৩৫৪ ধারায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ১ বছর থেকে শুরু করে দুই থেকে তিন বছরের শাস্তির বিধান রয়েছে। আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার কারণে আইনের সঠিক প্রয়োগ হচ্ছে না। ভুক্তভোগীরা আত্মসম্মানের ভয়ে আদালতের মুখোমুখি হতে চান না। এছাড়া অভিযোগ করার পর বিভিন্ন কারণে বিচার কার্যক্রম দীর্ঘমেয়াদি হওয়ায় বিচারের ফলাফলের প্রতি আস্থা হারিয়ে নতুন করে আদালতমুখো হতে চায় না ভুক্তভোগী নারীরা।
একশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, ২০১৫ সালের পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বর্ষবরণে উপস্থিত কয়েকজন নারী যৌন হয়রানির শিকার হন। এ ঘটনার মামলায় আট আসামিকে শনাক্ত করেছিল পুলিশ। পরে শনাক্তকৃত আট আসামির মধ্যে একজন আটক হলে তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মামলাটি পুনঃতদন্তের আবেদন করা হয়। শুধুমাত্র পহেলা বৈশাখের এ ঘটনাটিই নয় গণপরিসরে নারীদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে বাংলাদেশে কোনো সুনির্দিষ্ট আইন না থাকায় কোনো ঘটনার বিচার সুষ্ঠুভাবে হয় না। তবে বিদ্যমান আইনে কিছু বিধান থাকলেও নেই তার প্রয়োগ। দীর্ঘ সময় পার হলেও এসব যৌন হয়রানির মামলাগুলোর বিচার ঝুলে থাকে বছরের পর বছর। অভাব আছে সচেতনতারও। ফলে গণপরিসরে নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হলে আইনিভাবে তার প্রতিকার খুবই কম পান তারা।
ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, অন্যদিকে দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারায় কথা বা আচরণের মাধ্যমে যৌন হয়রানির সাজার বিধান দেয়া হয়েছে। ১৮৬০ সালে প্রণিত এই আইনে গত ১৫৭ বছরে মাত্র একটি মামলা হওয়ার কথা জানা যায়। অথচ এমন যৌন হয়রানির ঘটনা হরহামেশা ঘটছে এবং এর মাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে বেশি। আবার দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ধারা-৫৯০ কে মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯ এর শিডিউলে যোগ করা হয়েছে। এই বিচারিক পদ্ধতিতে অভিযুক্ত ব্যক্তির জন্য কোনো আইনজীবী নিয়োগের এবং নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার কোনো সুযোগ নেই। যা অভিযুক্ত ব্যক্তির অধিকার লঙ্ঘন করে। ‘সংবিধানের ২৮, ২৯, ৩২, ৩৬ ধারায় নারীর চিন্তা, কাজ, চলাফেরায় স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের আইনগুলো সেই সুরক্ষা দেয়নি। এটি আমাদের পিতৃতান্ত্রিক ব্যবস্থার খারাপ পরিস্থিতি।
জাতীয় আইন কমিশনের কর্মকর্তা ফারজানা হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের নারীদের সহিষ্ণুতার মাত্রা অনেক। যুগোপযোগী আইন না থাকায় নারীরা খারাপ পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন। এখন এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে জনপরিসরে সহিংসতা ঠেকাতে সুনির্দিষ্ট আইনের দরকার। দরকার সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞার। ‘আইন প্রয়োগের বিষয়টি আমাদের দেশে এখনো প্রশ্নবিদ্ধ। এজন্য সরকারের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করতে হবে।
ব্র্যাকের সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে গণপরিবহনে যাতায়াত করার সময় ৯৪ শতাংশ নারী বিভিন্ন সময় মৌখিক, শারীরিক বা অন্য কোনোভাবে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ৪১ থেকে ৬০ বছর বয়সী পুরুষের মাধ্যমে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বেশি। ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে জুন- এই তিন মাস গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। প্রায় ৪১৫ জন নারীর অংশগ্রহণে এই গবেষণায় তুলে ধরা হয়েছে নারীদের সড়ক ও গণপরিবহন ব্যবহারের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতা।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি দাবি করেছে, গণপরিবহনে গত ১৩ মাসে ২১ নারী ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এরমধ্যে গণধর্ষণের ঘটনা ৯টি, ধর্ষণের ঘটনা ৮টি, শ্লীলতাহানির ৪টি ঘটনা ঘটেছে। এইসব ঘটনায় ৫৫ আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। পর্যবেক্ষণ মতে, ২০১৭ সালের ২১শে জানুয়ারি রাজধানীর দারুসসালামে চলন্ত বাসে যৌন হয়রানির অভিযোগে গাবতলী-নবীনগর রুটের বাসচালক ও হেলপারের বিরুদ্ধে দারুসসালাম থানায় মামলা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। একই বছরের ১৩ই মার্চ ইজিবাইকে করে চুয়াডাঙ্গা শহর থেকে আলমডাঙ্গায় ফিরছিলেন এক স্কুলছাত্রী। ইজিবাইকের ভাড়া মেটাতে না পারার কারণে চালক তাকে ফাঁদে ফেলে আরো তিনজন সহ গণধর্ষণ করে। একই বছরের ৮ই আগস্ট রাজধানীর বনানীতে এক তরুণীকে প্রাইভেট কারে তুলে নিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালিয়েছে ইমরান হোসেন নামের এক ব্যক্তি। এই ঘটনায় ইমরানকে গ্রেপ্তার ও গাড়িটি জব্দ করেছে পুলিশ।
মানবাধিকার আইনজীবী সালমা আলী এসব প্রসঙ্গে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা দেখে আসছি দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা বিভিন্নভাবে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। নানা সময়ে তারা আমাদের কাছে আসতেন। হয়রানি ও ভোগান্তির অনুভূতি ভাগাভাগি করতেন। শিক্ষার্থী ছাড়াও চিকিৎসক, আইনজীবী, সাংবাদিকসহ কর্মক্ষেত্রের নারীরাও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে যৌন হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। কেউ কেউ সাহস করে অভিযোগ নিয়ে তারা আমাদের কাছে আসলেও আদালত পর্যন্ত যেতে না চাওয়ায় আমরা বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত সক্রিয় থাকা সত্ত্বেও কিছুই করতে পারি না। এছাড়া সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে ভুক্তভোগীরা পুলিশের শরণাপন্ন হতে ভয় পান। ঘটনা নিয়ে সামনে আসতে চান না। একই সঙ্গে নারীদের হয়রানি করা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অপরাধের ধরন অনুযায়ী শাস্তির বিধান থাকলেও নেই আইনের সঠিক প্রয়োগ। এক্ষেত্রে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বন্ধ করতে হলে সরকারকে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র আইন বা বিচারের মাধ্যমে এটা বন্ধ করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে অপরাধের ধরন অনুযায়ী অভিযুক্তদের কাউকে ধমক দিয়ে, কাউকে মোবাইল কোর্টের আওতায় এনে অর্থাৎ যে যতটা অপরাধ করবে তাকে সেই পরিমাণ শাস্তি দেয়া হবে। এখানে আমি বলবো, আইন হবে, এর প্রয়োগও থাকবে। তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে থাকতে হবে আমাদের সামাজিক মূল্যবোধ, চারিত্রিক নৈতিকতা। কেউ যেন সুযোগ সন্ধানী না হয়, আবার আইনের অপব্যবহার না করে, সমাজের প্রতিটি ব্যক্তি তা আশা করবে।
আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী এলিনা খান বলেন, সর্বপ্রথম যে কাজটি করতে হবে তা হলো সঠিক আইন প্রণয়ন। পেনাল কোডের ৩৫৪ ধারায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ১ বছর থেকে শুরু করে দুই থেকে তিন বছরের শাস্তির বিধান রয়েছে। আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার কারণে আইনের সঠিক প্রয়োগ হচ্ছে না। ভুক্তভোগীরা আত্মসম্মানের ভয়ে আদালতের মুখোমুখি হতে চান না। এছাড়া অভিযোগ করার পর বিভিন্ন কারণে বিচার কার্যক্রম দীর্ঘমেয়াদি হওয়ায় বিচারের ফলাফলের প্রতি আস্থা হারিয়ে নতুন করে আদালতমুখো হতে চায় না ভুক্তভোগী নারীরা।
একশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, ২০১৫ সালের পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বর্ষবরণে উপস্থিত কয়েকজন নারী যৌন হয়রানির শিকার হন। এ ঘটনার মামলায় আট আসামিকে শনাক্ত করেছিল পুলিশ। পরে শনাক্তকৃত আট আসামির মধ্যে একজন আটক হলে তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মামলাটি পুনঃতদন্তের আবেদন করা হয়। শুধুমাত্র পহেলা বৈশাখের এ ঘটনাটিই নয় গণপরিসরে নারীদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে বাংলাদেশে কোনো সুনির্দিষ্ট আইন না থাকায় কোনো ঘটনার বিচার সুষ্ঠুভাবে হয় না। তবে বিদ্যমান আইনে কিছু বিধান থাকলেও নেই তার প্রয়োগ। দীর্ঘ সময় পার হলেও এসব যৌন হয়রানির মামলাগুলোর বিচার ঝুলে থাকে বছরের পর বছর। অভাব আছে সচেতনতারও। ফলে গণপরিসরে নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হলে আইনিভাবে তার প্রতিকার খুবই কম পান তারা।
ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, অন্যদিকে দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারায় কথা বা আচরণের মাধ্যমে যৌন হয়রানির সাজার বিধান দেয়া হয়েছে। ১৮৬০ সালে প্রণিত এই আইনে গত ১৫৭ বছরে মাত্র একটি মামলা হওয়ার কথা জানা যায়। অথচ এমন যৌন হয়রানির ঘটনা হরহামেশা ঘটছে এবং এর মাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে বেশি। আবার দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ধারা-৫৯০ কে মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯ এর শিডিউলে যোগ করা হয়েছে। এই বিচারিক পদ্ধতিতে অভিযুক্ত ব্যক্তির জন্য কোনো আইনজীবী নিয়োগের এবং নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার কোনো সুযোগ নেই। যা অভিযুক্ত ব্যক্তির অধিকার লঙ্ঘন করে। ‘সংবিধানের ২৮, ২৯, ৩২, ৩৬ ধারায় নারীর চিন্তা, কাজ, চলাফেরায় স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের আইনগুলো সেই সুরক্ষা দেয়নি। এটি আমাদের পিতৃতান্ত্রিক ব্যবস্থার খারাপ পরিস্থিতি।
জাতীয় আইন কমিশনের কর্মকর্তা ফারজানা হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের নারীদের সহিষ্ণুতার মাত্রা অনেক। যুগোপযোগী আইন না থাকায় নারীরা খারাপ পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন। এখন এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে জনপরিসরে সহিংসতা ঠেকাতে সুনির্দিষ্ট আইনের দরকার। দরকার সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞার। ‘আইন প্রয়োগের বিষয়টি আমাদের দেশে এখনো প্রশ্নবিদ্ধ। এজন্য সরকারের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করতে হবে।
No comments