অশীতিপর ‘শুটার দাদি’
মানুষ
যেখানে শেষ করে ‘দাদি’ সেখান থেকে শুরু করেছেন। ভারতের উত্তর প্রদেশের
পারকাশি টোমার ৬০ বছর বয়সে প্রথমে বন্দুক হাতে নেন। বর্তমানে তার বয়স ৮০
বছর। সবাই তাকে ‘শুটার দাদি’ হিসেবে চেনেন। তিনি এখন যৌতুকবিরোধী ভূমিকায়
নেমেছেন। ভারতের উত্তর প্রদেশে যৌতুকের দাবিতে নারীদের হত্যার ঘটনা
হরহামেশাই ঘটে। কিন্তু দাদি যে গ্রামে বসবাস করেন সেখানে পরিস্থিতি
ভিন্নরকম। সে গ্রামে কোনো মেয়ের বিয়ের সময় যৌতুক চাওয়া হয় না। লোকে বলে,
যৌতুক চাইলে দাদি গুলি করে মারবে। ‘শুটার দাদি’ কখনও স্কুলে যাননি। তার
কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। তিনি গৃহস্থালি এবং কৃষিকাজ করতেন। কিন্তু
তিনি নিজে তার একটি আলাদা পরিচিতি তৈরি করতে চেয়েছিলেন। সেজন্য ৬০ বছর বয়সে
তিনি শুটিংয়ের প্রতি আগ্রহী হয়েছিলেন। একদিন তিনি তার নাতনিদের সঙ্গে
শুটিং রেঞ্জে গিয়েছিলেন।
সেখানে গিয়েই তার আগ্রহ জন্মে। এরপর টানা কয়েক দিন
তিনি সেখানে যান এবং শুটারদের কৌশল দেখেন। একদিন সেখানকার প্রশিক্ষকরা
তাকে বন্দুক চালাতে বলেন। কয়েকটি লক্ষ্যবস্তু স্থির করে সেখানে নিশানা করতে
বলেন প্রশিক্ষকরা। তার বন্দুক চালানো দেখে প্রশিক্ষকরা বলেন যে, তিনি খুব
ভালো করবেন। প্রশিক্ষকরা তাকে উৎসাহিত করেন। এরপর তিনি গোপনে তার শুটিং
প্রশিক্ষণ চালিয়ে যান। হাতের ব্যালেন্স ধরে রাখার জন্য তিনি একটি পানির
পাত্র একটানা হাতে ধরে রাখতেন। মানুষজন তার দিকে তাকিয়ে হাসত। কিন্তু এখন
তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত শুটার। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি অনেক পদক
লাভ করেছেন। বিভিন্ন টেলিভিশনে তাকে নিয়ে অনুষ্ঠানও তৈরি হয়েছে। ‘শুটার
দাদির’ সাফল্য দেখে অনেক নারী অনুপ্রাণিত হয়েছে। একজন নারী শুটার বলেন,
দাদিকে দেখে আমি অনুপ্র্রাণিত হই। আমার মনে হয়, তিনি যদি পারেন তাহলে আমিও
পারব। শুটার দাদির লক্ষ্য তার গ্রামে একটি আন্তর্জাতিকমানের শুটিং
প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা। বিবিসি।
No comments