‘আংশিক’ ব্যর্থতা স্বীকার পুলিশের
চট্টগ্রামের
কর্ণফুলী উপজেলায় এক বাড়িতে চার নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা নেওয়ার বিষয়ে
পুলিশের গাফিলতি ছিল বলে স্বীকার করেছেন চট্টগ্রামের সিএমপি (বন্দর)
উপপুলিশ কমিশনার হারুন-উর-রশিদ হাযারী। তিনি বলেন, বিষয়টি আরও গুরুত্ব দিয়ে
দেখা উচিত ছিল। আজ সোমবার এ ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ। সেখানে
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। ১২ ডিসেম্বর রাতে কর্ণফুলী
উপজেলায় এক বাড়ির চার নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। সেদিন বাড়িতে কোনো পুরুষ
সদস্য ছিলেন না। ধর্ষণের শিকার চার নারীর তিনজন জা। অন্য নারী তাঁদের
আত্মীয়। তিনি বেড়াতে এসেছিলেন। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, জানালার গ্রিল
কেটে সেদিন চার ডাকাত বাড়িতে ঢুকেছিল। ধর্ষণের পর ডাকাতেরা টাকা,
স্বর্ণালংকারও নিয়ে গেছে। ঘটনার পাঁচ দিন পর ১৭ ডিসেম্বর কর্ণফুলী থানায়
মামলা হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হয় পরের দিন। এ নিয়ে মামলা করতে গেলে পুলিশ
গড়িমসি করে। তাদের প্রথমে পটিয়া পাঠানো হয়। এরপর আবার কর্ণফুলী থানায় মামলা
নেওয়া হয়। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজকের সংবাদ সম্মেলনে
হারুন-উর-রশিদ হাযারী বলেন, এ ঘটনায় (মামলা নিয়ে) পুলিশের আংশিক ব্যর্থতা
ছিল, এটা খুবই স্পর্শকাতর বিষয়।
এটা আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত ছিল। তিনি
বলেন, এ ব্যাপারে কারও ত্রুটি পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া
হবে। মামলা নিতে পুলিশের গড়িমসির বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, এ ব্যাপারে
সিএমপির পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সম্মেলনে
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ঘটনার দু-তিন দিন পর এক ব্যক্তি এসে ওসির কাছে শুধু
ডাকাতির ঘটনা মৌখিকভাবে জানান। তিনি তাঁর গ্রামের নাম যেটি বলেন, তা পটিয়া
থানাধীন হওয়ায় তাঁকে পটিয়া থানায় যেতে অনুরোধ করা হয়। পরে ১৬ ডিসেম্বর রাত
সাড়ে ১০টায় ওই ব্যক্তি পুনরায় কর্ণফুলী থানায় এসে তাঁদের গ্রামের নাম
আরেকটি বলেন। ১৭ ডিসেম্বর সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ওই দিন
সন্ধ্যায় লিখিত অভিযোগে বাদী ঘটনার সময় তাঁর ভাবিদের ও বোনকে ধর্ষণ করা
হয়েছে বলে মামলা দায়ের করেন। লিখিত বক্তব্যে উপপুলিশ কমিশনার (বন্দর)
হারুন-উর-রশিদ বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা
হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামি আবুলকে ভিকটিম পরিবারের লোকজন কর্তৃক শনাক্ত হওয়ার
যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। বিধায় তাঁকে আদালতে প্রেরণ করে টিআইপ্যারেডের জন্য
আবেদন করা হয়েছে। ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে
প্রয়োজনীয় সব ধরনের আলামত জব্দ করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত
ছিলেন সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আরিফিন সুমন ও কর্ণফুলী
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দুল মোস্তাফা।
No comments