ইসরাইল সীমান্তের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সিরিয়া-ইরান সমর্থিত সেনাদল
ইসরাইল
ও লেবাননের সীমান্তের কাছে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকায়
বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত শেষ ছিটমহলটির দিকে অগ্রসর হচ্ছে সিরিয়ার
সেনাবাহিনী ও ইরান সমর্থিত শিয়া বেসামরিক বাহিনী। এই সামরিক পদক্ষেপের
মাধ্যমে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার ওপর তেহরানের প্রভাব আরো বিস্তৃত হবে বলে
মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা। খবর রয়টার্সের। বিদ্রোহীরা জানিয়েছে, দুই মাস আগে
তাদের নিয়ন্ত্রিত বেইত জিন ঘাঁটিটি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে ব্যাপক বোমাবর্ষণ
ও গোলা নিক্ষেপ শুরু করেছিল প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ অনুগত সরকারি
বাহিনী। এখন সেনাবাহিনী ও শিয়া বাহিনীগুলো পূর্ব ও দক্ষিণ দিক থেকে বেইত
জিনের দিকে এগিয়ে আসছে। সিরিয়ার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তীব্র লড়াইয়ের মধ্য
দিয়েই সেনারা বেইত জিনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যাওয়ার পথে তারা হেরমন পর্বতের
পাদদেশে মুগর আল মীর গ্রাম ঘিরে ফেলেছে। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের
দক্ষিণ-পশ্চিমে পশ্চিম গৌতা নামে পরিচিত এলাকাটির মধ্যস্থলে অবস্থিত বেইত
জিনই বিদ্রোহীদের দখলে থাকা শেষ ঘাঁটি। একসময় পশ্চিম গৌতা এলাকা
বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও কয়েক বছর ধরে এলাকাটি অবরোধ করে রেখেছিল
সরকারি বাহিনী। শেষ দিকে বেসামরিক এলাকাগুলোতে কয়েক মাস ধরে ব্যাপক
বোমাবর্ষণ করে তারা। তাদের এই কৌশলে ফল দেয়, বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ করতে
বাধ্য হয়, কিন্তু বেইত জিন তখনো বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থেকে যায়।
পশ্চিমা
একটি গোয়েন্দা সংস্থার এক সূত্র জানিয়েছে, চলমান লড়াইয়ে ইরানসমর্থিত
বেসামরিক বাহিনী যাদের মধ্যে লেবাননের শক্তিশালী শিয়া গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর
গেরিলারাও রয়েছে, একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এলাকাটিতে তৎপর
সিরীয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী লিওয়া আল ফোরকানের কর্মকর্তা সুহায়িব আল রুহায়িল
বলেছেন, ইরানসমর্থিত বেসামরিক বাহিনীগুলো দামেস্কের দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে
ইসরাইল সীমান্ত পর্যন্ত তাদের প্রভাব বলয় সুসংহত করার চেষ্টা করছে। পশ্চিমা
কূটনৈতিক সূত্রগুলোর মতে, ওই এলাকায় বিদ্রোহীদের উপস্থিতি গুঁড়িয়ে দেয়ার
মাধ্যমে দক্ষিণ লেবানন থেকে সিরিয়ায় নিরাপদে অস্ত্র আনার আরেকটি সরবরাহ পথ
খোলার সুযোগ পেয়ে যেতে পারে হিজবুল্লাহ। সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর
থেকে দেশটিতে ইরানের উপস্থিতি বাড়ছে। তারা সিরিয়ার প্রধান ধারার
বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য হাজার হাজার শিয়া যোদ্ধাকে দেশটিতে
মোতায়েন করেছে। ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পতনের পর সিরিয়ায় ইরানের প্রভাব
বৃদ্ধিতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছে ইসরাইল। দেশটি গত কয়েক সপ্তাহে সিরিয়ার ভেতরে
ইরানি লক্ষ্যবস্তুগুলোতে হামলার মাত্রাও বৃদ্ধি করেছে। চলতি মাসের
প্রথমদিকে দামেস্কের দক্ষিণে কিসওয়াহর কাছে একটি ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছিল
ইসরাইল। পশ্চিমা গোয়েন্দা সূত্রগুলোর বক্তব্য অনুযায়ী, ওই ঘাঁটিটি ইরানি
সামরিক কম্পাউন্ড বলে তাদের ধারণা। ইরান, হিজবুল্লাহ ও সিরিয়ার শিয়া
বেসামরিক বাহিনীগুলোকে গোলান মালভূমি থেকে দূরে রাখতে চায় ইসরাইল, কিন্তু
সুন্নি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বাশার আল আসাদকে সহায়তা দেয়ার মাধ্যমে সিরিয়ার
বিভিন্ন এলাকা এসব বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আসছে। এতে উদ্বিগ্ন ইসরাইল।
No comments