যুদ্ধকালীন ধর্ষিতারা যখন হয়রানির শিকার! by রিফাত আহমাদ
মানবাধিকার
সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে রোহিঙ্গা মুসলিম
নারী ও বালিকাদের ধর্ষিত হওয়ার খবর নিশ্চিত করে গত মাসে একটি প্রতিবেদন
প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়, সেনাবাহিনী এসব ধর্ষণকে জাতি নিধনের জন্য একটি
অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। এ মাসে ওই প্রতিবেদনের সঙ্গে সাদৃশ্যমূলক একটি
প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় বার্তা সংস্থা এপি-তে। সেখানেও একইরকম তথ্য উল্লেখ
করা বলা হয়- মিয়ানমারে ধর্ষণকে সুদূরপ্রসারিত ও পদ্ধতিগত অস্ত্র হিসেবে
ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রতিবেদনগুলোতে ওঠে এসেছে লোমহর্ষক কাহিনী- কিভাবে
পরিবারের সামনে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে কোনো নারী, জনসম্মুখে উলঙ্গ হতে
বাধ্য করা হয়েছে কাউকে, যন্ত্রণাদায়ক নির্যাতন আর যৌন দাসত্বের শিকার হয়েছে
অনেকে! এরকম যুদ্ধকালীন ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনা ইতিহাসে আরো ঘটেছে। ১৯৭১
সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদারদের পাশবিকতার শিকার হয়েছিল
অজস্র বাংলাদেশি নারী-বালিকারা।
একইরকম ঘটনা ঘটেছে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায়ও।
বসনিয়ার ১৯৯২-৯৫ সালের যুদ্ধে আনুমানিক ২০ থেকে ৫০ হাজার নারী বিভিন্ন ‘রেপ ক্যামপ’এর ভেতরে ও বাইরে নির্মম যৌন সহিংসতার শিকার হয়। ধর্ষিতাদের বেশিরভাগই ছিলেন মুসলিম। সাংস্কৃতিক নিধনের স্বার্থে ‘সিস্টেমেটিক্যালি’ ব্যবহার করা হয়েছিল ধর্ষণ। সার্বিয়ার সেনাবাহিনী, পুলিশ, আধা-সামরিক বাহিনীর নৃশংস , অমানবিক ধর্ষণে অনিচ্ছাকৃত গর্ভধারণে বাধ্য হয়েছিলেন হাজার হাজার বসনিয়ান মুসলিম নারী। বসনিয়ার যুদ্ধ শেষ হয়েছে প্রায় দু’দশক আগে। কিন্তু সেসময়কার যৌন নির্যাতনের প্রভাব আজও সেখানে জ্যান্ত ক্ষতর বিদ্যমান। যেসব রোহিঙ্গা নারী ওইসব বসনীয় নারীদের মতো গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন, তাদের ভাগ্যও একই মোড় নিতে পারে। এখন হয়তো তাদের অসহায়ত্ব আর নিপীড়ন নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হচ্ছে, তবে পরে তারাও অবহেলা আর অগ্রাহ্যতার শিকার হতে পারে। তাদের বিষয়ে নীরব হয়ে যেতে পারে বিশ্ব। তাদের সঙ্গে থেকে যেতে পারে শুধু মানসিক আঘাত।
বসনিয়ার ক্ষেত্রেও প্রথমদিকে সবাই এ বিষয়টি নিয়ে চুপ ছিল না। তৎকালীন সময়ে আহমেদ মেসিক নামের একজন বসনিয়ান ধর্মতত্ত্ববিদ, ইসলামিক আইনজ্ঞ আহমেদ নুরুদ্দিন ছদ্মনাম ব্যবহার করে ‘মেসেজ টু রেপড ওইমেন’ নামে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন। তার উদ্দেশ্য ছিল- ধর্ষিতাদের ধর্মতত্ত্বীয় ব্যাখ্যা ও আধ্যাত্মিক সান্ত্ব্তনা-সমর্থন দেয়া। তার প্রবন্ধে মেসিক ধর্ষিতাদের ‘বিশ্বাসের শহীদ’ বলে ঘোষণা দেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, তাদের দেখাশোনা করা, সম্মান দেয়া, সমর্থন করা বসনিয়া সমপ্রদায়ের দায়িত্ব- বিশেষ করে পুরুষদের দায়িত্ব। মেসিক, ধর্ষিতাদের প্রতি পর্যাপ্ত সুসংগঠিত ও প্রাতিষ্ঠানিক সমর্থনের অভাবের সমালোচনা করেন। স্বাস্থ্যকর্মী, ধর্মীয় নেতা ও ধর্ষিতারা মেসিকের ওই বার্তা সাদরে গ্রহণ করেন। কিন্তু তার কথায় সরকার কান দেয়নি। এমনকি এখন পর্যন্ত বসনিয়ার যুদ্ধকালীন ধর্ষিতারা শুধু করুণা আর অবহেলার শিকারই হননি, পাশাপাশি সামজিকভাবে মর্যাদাহানিও করা হয়েছে তাদের। ২০১৫ সালে জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের করা এক গবেষণা অনুযায়ী, ওইসব ধর্ষিতার দুই-তৃতীয়াংশ জানিয়েছে, তাদের ধর্ষণের খবর জানার পর থেকেই তারা প্রতিনিয়ত পরিবারের সদস্য, বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীদের অপমান, নিন্দা ও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছে। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির লিঙ্গ, রাজনীতি ও ধর্মবিষয়ক সহকারী অধ্যাপক ও বসনিয়ান গবেষক জিলকা সপাহিক-সিলজাক বলেন, এই নারীদের কথা মনে রাখা হয়নি। কারণ, তাদের দেখলে ওই রাষ্ট্রের লজ্জা ও পরাজয়ের কথা মনে পড়ে যায়।
রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে, আমরা এখনো কোনরকমের ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতেই ব্যর্থ। মিয়ানমার সরকার তাদের বিরুদ্ধে আনীত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে যাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ ভুগছে অনিশ্চয়তায়। সামপ্রতিক সহিংসতায় ধর্ষণের শিকার হওয়া রোহিঙ্গা নারীদের ভাগ্যও ওই বসনীয় ধর্ষীতাদের মতই মোড় নেয়ার ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে। এপি’র প্রতিবেদনে, একজন ধর্ষিতার কাহিনীর বর্ণনায় বলা হয়- তার স্বামী যখন শুনলো যে মিয়ানমার সেনাবাহিনী তার গর্ভবতী স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছে, তখন তার প্রতিক্রিয়া ছিল, ‘আমার স্ত্রী কেন ওইসময় পালিয়ে যায়নি?’ এমনকি ওই ব্যক্তি ধর্ষিত হওয়ার কারণে তার স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ করার হুমকিও দেন।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা বহু ধর্ষিত রোহিঙ্গা নারী সামাজিক-অবমাননার ভয়ে ধর্ষণ-পরবর্তী চিকিৎসা নেয়ার চেষ্টাও করছেনা। সপাহিক-সিলজাক বলেন, বসনিয়ান ও অন্যান্য যুদ্ধকালীন ধর্ষিতাদের প্রয়োজন তাদের নিজ গল্প বলার একটি জায়গা ও উপায়। এতে করে তারা শুধু ধর্ষণের শিকার থাকবে না, তারা লরাই করে বেঁচে যাওয়াদের একজন হবে। কিন্তু বর্তমান সমাজে এমন পরিবেশ তৈরি করা বেশ কঠিন কাজ।
মেসিক, তার প্রবন্ধে চরম পর্যায়ের নৃশংসতার শিকার হওয়া এসব নারীদের জন্য যে বার্তা রেখে গেছিলেন তার প্রয়োজন আজও রয়ে গেছে। তবে দুর্ভাগ্যজনকক্রমে, তার সেই বার্তাই অনেকে ভুলে গেছে। মেসিক বলেছিলেন, যুদ্ধকালীন ধর্ষিতাদের প্রতি সম্মান দেখাতে। একজন ইসলামিক পণ্ডিত হিসেবে, তিনি তার পাঠকদের ইসলামিক শিক্ষার মাধ্যমে মনে করিয়ে দিতে চেয়েছিলেন যে- ধর্ষিতাদের ওপর নির্যাতন চালানো ওই অপরাধীদের শাস্তি দেয়া হবে আর ধর্ষিতারা সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে বিশেষভাবে পুরস্কৃত হবে। সৃষ্টিকর্তা নিপীড়িতদের পাশেই থাকবে। বহু রোহিঙ্গা নারী বর্তমানে এমনটাই অনুভব করেন। গণধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হওয়া এক রোহিঙ্গা নারী এপিকে বলেন, ‘তারা (সেনাবাহিনী) আমাদের পৃথিবী থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল। তারা অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু আল্লাহ আমাদের বাঁচিয়েছেন।’ বসনিয়ার অনেক ধর্ষিতাও এমনটা অনুভব করেন। কিন্তু আফসোস, আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের কোন সদস্য তাদের নিজ সমপ্রদায়ের লোকদের পাশে ছিল না। অন্তত যথেষ্ট পরিমাণে না। বসনিয়ায় ধর্ষিতারা যেই লাঞ্ছনা, সামাজিক-অবমাননার শিকার হয়েছে, রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটা উচিত নয়। এই গণহত্যা বন্ধ করতে হবে। যৌন নির্যাতনের শিকারদের সমর্থন দিতে হবে। তাদেরকে প্রাপ্য অধিকার ও সম্মান ফিরিয়ে দিতে হবে।
(নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত, রিয়াদা আসিমভিক আকিওল লিখিত নিবন্ধের আলোকে)
একইরকম ঘটনা ঘটেছে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায়ও।
বসনিয়ার ১৯৯২-৯৫ সালের যুদ্ধে আনুমানিক ২০ থেকে ৫০ হাজার নারী বিভিন্ন ‘রেপ ক্যামপ’এর ভেতরে ও বাইরে নির্মম যৌন সহিংসতার শিকার হয়। ধর্ষিতাদের বেশিরভাগই ছিলেন মুসলিম। সাংস্কৃতিক নিধনের স্বার্থে ‘সিস্টেমেটিক্যালি’ ব্যবহার করা হয়েছিল ধর্ষণ। সার্বিয়ার সেনাবাহিনী, পুলিশ, আধা-সামরিক বাহিনীর নৃশংস , অমানবিক ধর্ষণে অনিচ্ছাকৃত গর্ভধারণে বাধ্য হয়েছিলেন হাজার হাজার বসনিয়ান মুসলিম নারী। বসনিয়ার যুদ্ধ শেষ হয়েছে প্রায় দু’দশক আগে। কিন্তু সেসময়কার যৌন নির্যাতনের প্রভাব আজও সেখানে জ্যান্ত ক্ষতর বিদ্যমান। যেসব রোহিঙ্গা নারী ওইসব বসনীয় নারীদের মতো গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন, তাদের ভাগ্যও একই মোড় নিতে পারে। এখন হয়তো তাদের অসহায়ত্ব আর নিপীড়ন নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হচ্ছে, তবে পরে তারাও অবহেলা আর অগ্রাহ্যতার শিকার হতে পারে। তাদের বিষয়ে নীরব হয়ে যেতে পারে বিশ্ব। তাদের সঙ্গে থেকে যেতে পারে শুধু মানসিক আঘাত।
বসনিয়ার ক্ষেত্রেও প্রথমদিকে সবাই এ বিষয়টি নিয়ে চুপ ছিল না। তৎকালীন সময়ে আহমেদ মেসিক নামের একজন বসনিয়ান ধর্মতত্ত্ববিদ, ইসলামিক আইনজ্ঞ আহমেদ নুরুদ্দিন ছদ্মনাম ব্যবহার করে ‘মেসেজ টু রেপড ওইমেন’ নামে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন। তার উদ্দেশ্য ছিল- ধর্ষিতাদের ধর্মতত্ত্বীয় ব্যাখ্যা ও আধ্যাত্মিক সান্ত্ব্তনা-সমর্থন দেয়া। তার প্রবন্ধে মেসিক ধর্ষিতাদের ‘বিশ্বাসের শহীদ’ বলে ঘোষণা দেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, তাদের দেখাশোনা করা, সম্মান দেয়া, সমর্থন করা বসনিয়া সমপ্রদায়ের দায়িত্ব- বিশেষ করে পুরুষদের দায়িত্ব। মেসিক, ধর্ষিতাদের প্রতি পর্যাপ্ত সুসংগঠিত ও প্রাতিষ্ঠানিক সমর্থনের অভাবের সমালোচনা করেন। স্বাস্থ্যকর্মী, ধর্মীয় নেতা ও ধর্ষিতারা মেসিকের ওই বার্তা সাদরে গ্রহণ করেন। কিন্তু তার কথায় সরকার কান দেয়নি। এমনকি এখন পর্যন্ত বসনিয়ার যুদ্ধকালীন ধর্ষিতারা শুধু করুণা আর অবহেলার শিকারই হননি, পাশাপাশি সামজিকভাবে মর্যাদাহানিও করা হয়েছে তাদের। ২০১৫ সালে জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের করা এক গবেষণা অনুযায়ী, ওইসব ধর্ষিতার দুই-তৃতীয়াংশ জানিয়েছে, তাদের ধর্ষণের খবর জানার পর থেকেই তারা প্রতিনিয়ত পরিবারের সদস্য, বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীদের অপমান, নিন্দা ও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছে। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির লিঙ্গ, রাজনীতি ও ধর্মবিষয়ক সহকারী অধ্যাপক ও বসনিয়ান গবেষক জিলকা সপাহিক-সিলজাক বলেন, এই নারীদের কথা মনে রাখা হয়নি। কারণ, তাদের দেখলে ওই রাষ্ট্রের লজ্জা ও পরাজয়ের কথা মনে পড়ে যায়।
রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে, আমরা এখনো কোনরকমের ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতেই ব্যর্থ। মিয়ানমার সরকার তাদের বিরুদ্ধে আনীত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে যাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ ভুগছে অনিশ্চয়তায়। সামপ্রতিক সহিংসতায় ধর্ষণের শিকার হওয়া রোহিঙ্গা নারীদের ভাগ্যও ওই বসনীয় ধর্ষীতাদের মতই মোড় নেয়ার ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে। এপি’র প্রতিবেদনে, একজন ধর্ষিতার কাহিনীর বর্ণনায় বলা হয়- তার স্বামী যখন শুনলো যে মিয়ানমার সেনাবাহিনী তার গর্ভবতী স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছে, তখন তার প্রতিক্রিয়া ছিল, ‘আমার স্ত্রী কেন ওইসময় পালিয়ে যায়নি?’ এমনকি ওই ব্যক্তি ধর্ষিত হওয়ার কারণে তার স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ করার হুমকিও দেন।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা বহু ধর্ষিত রোহিঙ্গা নারী সামাজিক-অবমাননার ভয়ে ধর্ষণ-পরবর্তী চিকিৎসা নেয়ার চেষ্টাও করছেনা। সপাহিক-সিলজাক বলেন, বসনিয়ান ও অন্যান্য যুদ্ধকালীন ধর্ষিতাদের প্রয়োজন তাদের নিজ গল্প বলার একটি জায়গা ও উপায়। এতে করে তারা শুধু ধর্ষণের শিকার থাকবে না, তারা লরাই করে বেঁচে যাওয়াদের একজন হবে। কিন্তু বর্তমান সমাজে এমন পরিবেশ তৈরি করা বেশ কঠিন কাজ।
মেসিক, তার প্রবন্ধে চরম পর্যায়ের নৃশংসতার শিকার হওয়া এসব নারীদের জন্য যে বার্তা রেখে গেছিলেন তার প্রয়োজন আজও রয়ে গেছে। তবে দুর্ভাগ্যজনকক্রমে, তার সেই বার্তাই অনেকে ভুলে গেছে। মেসিক বলেছিলেন, যুদ্ধকালীন ধর্ষিতাদের প্রতি সম্মান দেখাতে। একজন ইসলামিক পণ্ডিত হিসেবে, তিনি তার পাঠকদের ইসলামিক শিক্ষার মাধ্যমে মনে করিয়ে দিতে চেয়েছিলেন যে- ধর্ষিতাদের ওপর নির্যাতন চালানো ওই অপরাধীদের শাস্তি দেয়া হবে আর ধর্ষিতারা সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে বিশেষভাবে পুরস্কৃত হবে। সৃষ্টিকর্তা নিপীড়িতদের পাশেই থাকবে। বহু রোহিঙ্গা নারী বর্তমানে এমনটাই অনুভব করেন। গণধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হওয়া এক রোহিঙ্গা নারী এপিকে বলেন, ‘তারা (সেনাবাহিনী) আমাদের পৃথিবী থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল। তারা অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু আল্লাহ আমাদের বাঁচিয়েছেন।’ বসনিয়ার অনেক ধর্ষিতাও এমনটা অনুভব করেন। কিন্তু আফসোস, আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের কোন সদস্য তাদের নিজ সমপ্রদায়ের লোকদের পাশে ছিল না। অন্তত যথেষ্ট পরিমাণে না। বসনিয়ায় ধর্ষিতারা যেই লাঞ্ছনা, সামাজিক-অবমাননার শিকার হয়েছে, রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটা উচিত নয়। এই গণহত্যা বন্ধ করতে হবে। যৌন নির্যাতনের শিকারদের সমর্থন দিতে হবে। তাদেরকে প্রাপ্য অধিকার ও সম্মান ফিরিয়ে দিতে হবে।
(নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত, রিয়াদা আসিমভিক আকিওল লিখিত নিবন্ধের আলোকে)
No comments