ফেঁসে যাচ্ছেন এমপি রানা!
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ফারুক আহমেদ হত্যাকাণ্ডে আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান (রানা) ফেঁসে যেতে পারেন। এই হত্যাকাণ্ডে তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে। এমপি রানা ও তার ভাই মেয়র সহিদুর রহমান খানকে (মুক্তি) পুলিশ খুঁজছে। ইতিমধ্যে তারা টাঙ্গাইল ছেড়ে পালিয়েছেন। তাদের খোঁজে ঢাকার ন্যাম ভবনে পুলিশ হানা দিয়েছে বলেও সূত্রে জানা গেছে। এই হত্যাকাণ্ডে রানার আরো দুই ভাইয়ের সম্পৃক্ততা পেয়েছে পুলিশ। ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল শহরের কলেজপাড়া এলাকায় নিজ বাসার কাছ থেকে ফারুকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। ২১ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। তদন্তের একপর্যায়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গত আগস্টে আনিসুল ইসলাম (রাজা) ও মোহাম্মদ আলী নামের দুজনকে গ্রেফতার করে। তারা এমপি রানার ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত। গত ২৭ আগস্ট আনিসুল ইসলাম ও ৫ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদ আলী টাঙ্গাইলের বিচারিক হাকিম আদালতে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেন। এই জবানবন্দিতে সাংসদসহ চার ভাইয়ের জড়িত থাকার বিষটি উঠে আসে। জবানবন্দীর পরপরই আত্মগোপনে চলে যান জাহিদুর ও সানিয়াত।১৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে আমানুর, জাহিদুর ও বাপ্পা এবং তাদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছানোয়ার হোসেনের পক্ষে একটি রিট আবেদন করা হয়। আদালত রিটের শুনানি না হওয়া পর্যন্ত এই চারজনকে গ্রেফতারে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। তবে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ১৯ নভেম্বর আপিল বিভাগে আবেদন করলে হাইকোর্টের আদেশটি স্থগিত করা হয়। জানা যায়, ফারুক হত্যা মামলার গ্রেফতারের বিধিনিষেধ-সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে এমপি রানা আর টাঙ্গাইলে যাননি। এ সময়টা তিনি ঢাকাতেই অবস্থান করছেন। টাঙ্গাইল পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ফারুক হত্যা মামলার দুই আসামির জবানবন্দীতে এমপি রানাসহ চার ভাইয়ের নাম এসেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি চলছে। এমপি রানাকে আটক করতে পারলে হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হবে। আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানিয়েছে, নিহত ফারুক আহমেদের স্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তার স্বামীর হত্যাকারীদের বিচার চেয়েছেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশ তদন্ত করে এই হত্যাকাণ্ডে রানাসহ তার ভাইদের সম্পৃক্ততা পেয়েছে। এই হত্যায় রানার জড়িত থাকা প্রমাণ হলে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার হতে পারে; এক্ষেত্রে হারাতে পারেন সংসদ সদস্য পদও।
No comments