অদৃশ্য আবরণ পৃথিবীকে বাঁচিয়ে রেখেছে
মহাশূন্যে ভাসমান ‘ঘাতক ইলেকট্রন’। এর গতি আলোর গতির কাছাকাছি। যদি এই ইলেক্ট্রন একবার পৃথিবীকে আঘাত করতে পারে তাহলে সব স্যাটেলাইন ও মহাশূন্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে। দ্রুত পরিবর্তন হবে পৃথিবীর জলবায়ু। দ্রুত গতিতে বাড়বে ক্যানসার। কিন্তু এমন সব ভয়াবহ ঘাতক ইলেক্ট্রনের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করছে অদৃশ্য এক আবরণ। একে রক্ষাকবচ হিসেবে বিবেচনা করছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে অনেকটা উপরে আমাদের ঘিরে রয়েছে এমন এক আবরণ। এর ফলে ঘাতক ইলেকট্রন প্রবেশ করতে পারছে না পৃথিবীতে। তাই পৃথিবীতে পরিবর্তন হচ্ছে খুব মন্থর গতিতে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই অদৃশ্য আবরণ পৃথিবী থেকে ৭২০০ মাইল উপরে। বোমার মতো চরিত্র নিয়ে যে সব ঘাতক ইলেক্ট্রন আমাদের পৃথিবীর দিকে ছুটে আসছে তাকে প্রতিরোধ করছে এই আবরণ। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই ঘাতক ইলেক্ট্রন জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জন্যও এক রকম হুমকি। এখন পর্যন্ত এমন আবরণের অস্তিত্ব বিজ্ঞানীরা শনাক্ত করতে পারলেও তা কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে, আসলে কিভাবে কাজ করে সে বিষয়ে তারা হতবুদ্ধি। তারা এ সম্পর্কে কিছুই বলতে পারছেন না। ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডো বুলডার-এর প্রফেসর ডানিয়েল বেকার বলেছেন, এমন আবরণ তৈরি করা হয়েছিল ‘স্টার ট্রেক’ ছবিতে। ওই ছবিতে ওই আবরণ অন্য গ্রহের আগন্তুকদের অস্ত্রকে প্রতিহত করতে ব্যবহার করা হয়েছে। আসলেই ঠিক সেই রকম অদৃশ্য আবরণ তৈরি হয়ে আছে আমাদের পৃথিবীর ওপরে। এ আবরণ ঘাতক ইলেকট্রনকে প্রতিরোধ করছে। এই আবরণটি আবিষ্কার করা হয়েছে ভ্যান অ্যালেন তেজস্ক্রিয় বেল্টে। দু’টি বলয়ের পৃথিবীর উপরে রিংয়ের মতো সৃষ্টি করেছে। এতে রয়েছে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ইলেকট্রন ও প্রোটন। নির্দিষ্ট অবস্থানে এগুলো অবস্থান করছে পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র দ্বারা। সূর্যের আলো প্রাপ্তির ওপর নির্ভর করে এই বেল্টের আয়তন বাড়ে বা কমে। এই রিং আবিষ্কার করা হয়েছিল ১৯৫৮ সালে। এতে রয়েছে অভ্যন্তরীণ ও বহির্দেশীয় দু’টি বলয়। গত বছর প্রফেসর বেকার একটি টিমের নেতৃত্ব দেন। তারা এ নিয়ে গবেষণা করেন।
No comments