এই আরিফই কি সেই আরিফ? by চৌধুরী মুমতাজ আহমদ
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা ঘটনায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর আসলেই কোন প্রকার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা তা নিয়ে রহস্য কাটছেই না। এ ঘটনায় এতদিন পর্যন্ত তার সংশ্লিষ্টতা নিয়ে কোন আলোচনা না থাকলেও হঠাৎ করেই এ মামলার সঙ্গে জড়িয়ে গেছেন তিনি। চার্জশিট পর্যালোচনায় এমন প্রশ্নও দেখা দিয়েছে যে, মামলায় অভিযুক্ত আরিফই সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী কিনা। তদন্ত কর্মকর্তাও তা প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছেন। এ নিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা নিজেই যে বিভ্রান্ত তার প্রমাণ মিলেছে আরিফের নামের বানানে। আরিফের নামের পূর্ণ রূপটি ব্যাপক পরিচিত হলেও অভিযোগপত্রে তদন্ত কর্মকর্তা আরিফুল হক চৌধুরী নয় নাম উল্লেখ করেছেন আরিফুল ইসলাম চৌধুরী হিসেবে। অবশ্য ঠিকানা উল্লেখ করেছেন আরিফুল হক চৌধুরীরই।
কিবরিয়া হত্যা মামলার সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি সিলেট অঞ্চলের সিনিয়র এএসপি মেহেরুন্নেসা পারুল চার্জশিটে সিটি মেয়র আরিফের নাম সংযুক্ত করলেও কোন শক্ত ভিত্তি দাঁড় করাতে পারেননি। আরিফের সঙ্গে চার্জশিটে নতুন করে সংযুক্ত আরও একটি নাম হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র গোলাম কিবরিয়া জিকে গউছ। দু’জনকেই মাত্র একটি স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে অভিযুক্ত করা হয়েছে। যে স্বীকারোক্তিটি নেয়া হয়েছিল অন্য এক মামলায়। কিবরিয়া হত্যা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত মুফতি হান্নান ২০১১ সালের ৭ই এপ্রিল ঢাকার মতিঝিল থানার মামলায় (নং ৯৭(০৮)২০০৪) যে স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন সে স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে আরিফ-গউছকে জড়ানো হয়েছে কিবরিয়া হত্যা মামলায়। তবে মুফতি হান্নান একই বছরের ২৭শে সেপ্টেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ১-এ তার এ স্বীকারোক্তিটি প্রত্যাহারের আবেদনও করেছেন।
তদন্ত কর্মকর্তা যে মামলায় স্বীকারোক্তির বিষয়টি উল্লেখ করেন সেটি ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরণ আইনে দায়ের করা মামলায়, কিবরিয়া হত্যা মামলায় নয়। ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে মুফতি হান্নানের একটি জবানবন্দি রয়েছে ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির নির্মিত তথ্যচিত্র ‘জিহাদের প্রতিকৃতি’তে। তদন্ত কর্মকর্তা চার্জশিটে যে বৈঠকটির কথা বলেছেন এর উল্লেখও আছে সে জবানবন্দিতে। তবে মুফতি হান্নান সে জবানবন্দিতে আরিফুল হক চৌধুরী ও জিকে গউছের নাম উল্লেখ করেননি তবে জনৈক আরিফুল ইসলাম আরিফের নাম উল্লেখ করেন। তদন্ত কর্মকর্তাও মামলার চার্জশিটে আরিফুল ইসলাম উল্লেখ করেছেন কিন্তু কৌশলে চিহ্নিত করেছেন আরিফুল হককেই। তদন্ত কর্মকর্তার বর্ণনামতেই এ বৈঠকটি হয়েছিল কিবরিয়া হত্যার এক বছরেরও আগে। এত পেছনের একটি সাক্ষাতের সূত্র ধরে কিবরিয়া হত্যা ঘটনায় আরিফ-গউছকে জড়ানো যৌক্তিক হয়নি বলেই অনেকের মন্তব্য। চার্জশিটে মুফতি হান্নানের পুরনো একটি স্বীকারোক্তির বাইরে আরিফ-গউছের বিরুদ্ধে আর কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ দিতে পারেননি তদন্ত কর্মকর্তা।
অনেকেরই সন্দেহ, তদন্ত কর্মকর্তা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বা কারও ইশারায় আরিফুল হক চৌধুরীর নাম মামলায় জড়িয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, চার্জশিটের পরতে পরতে বিভ্রান্তির ছোঁয়া রেখে দিয়েছেন সিআইডির এ কর্মকর্তা। আরিফুল হকের নামের বানান ভুল রেখেছেন, আর ঠিকানা ভুল রেখেছেন জিকে গউছের। পাশাপাশি চার্জশিটে আরিফুল হক চৌধুরী ও জিকে গউছকে পলাতক দেখিয়েও বিভ্রান্তির জাল আরও মজবুত করেছেন। অথচ আরিফুল হক ও জিকে গউছ দু’জনেই জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিবরিয়া হত্যা ঘটনার অনেক পরে নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ী হয়ে আরিফুল হক চৌধুরী সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে এবং জিকে গউছ হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করছেন। এমনকি সিটি মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর স্বাভাবিক কার্যক্রমের পাশাপাশি আরিফুল হক বেশ ক’বার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে সাক্ষাৎও করেছেন। সরকারি সফরে দেশের বাইরেও ঘুরে এসেছেন। জিকে গউছও হবিগঞ্জে মেয়র হিসেবে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। তাদেরকে কিসের ভিত্তিতে তদন্ত কর্মকর্তা পলাতক চিহ্নিত করলেন তার কোন ব্যাখ্যা নেই চার্জশিটে।
২০০৫ সালের ২৭শে জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে ঈদ-পরবর্তী জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলার শিকার হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া। গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেয়ার পর মারা যান তিনি। গ্রেনেড হামলায় আরও পাঁচজন নিহত ও শতাধিক আহত হন। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মজিদ খান বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দু’টি মামলা করেন। ২০০৫ সালের ১৯শে মার্চ এ মামলায় তদন্ত শেষে প্রথম চার্জশিট দিয়েছিলেন সিআইডির (সিটি জোন, উত্তর, ঢাকা) এএসপি মুন্সী আতিক। চার্জশিটে ১০ জনকে অভিযুক্ত করেন তিনি। বাদীপক্ষ তাতে আপত্তি জানালে নতুন করে তদন্ত শুরু হয় এ মামলার। অধিকতর তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ২০শে জুন দ্বিতীয় দফা চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হবিগঞ্জ জোন) মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি নতুন ১৪ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে আগের অভিযুক্তদের অব্যাহতি প্রার্থনা করেন চার্জশিটে। চার্জশিটে সন্তুষ্ট না হওয়ায় আবারও আপত্তি জানান কিবরিয়া পরিবার। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে নতুন করে মামলার তদন্তভার দেয়া হয় সিলেট অঞ্চলের সিনিয়র এএসপি মেহেরুন্নেসা পারুলের ওপর। গত ১২ই নভেম্বর সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডির এ কর্মকর্তা। আগের দুই চার্জশিটে অভিযুক্তদের সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সাবেক একান্ত সচিব হারিছ চৌধুরী, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জের সাবেক মেয়র গোলাম কিবরিয়া গউছসহ নতুন আরও ১১ জনকে যুক্ত করেন তিনি। অব্যাহতি চান তিনজনের।
দু’দফা আপত্তির পর এ চার্জশিটকে মেনে নিয়েছেন শাহ এএমএস কিবরিয়ার স্ত্রী আসমা কিবরিয়া। এক বিবৃতিতে চার্জশিটকে কিবরিয়া-পত্নী ‘মোটামুটি গ্রহণযোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করে বলেছেন, ‘প্রকৃত হত্যাকরী ও মদতদাতাকারী, সহায়তাকারীদের নাম মোটামুটি চলে এসেছে।’ তবে হবিগঞ্জের সে সময়কার জেলা প্রশাসক মো. এমদাদুল হকের নাম না আসায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। বিবৃতিতে দ্বিতীয় চার্জশিট প্রদানকারী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের প্রতিও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, রফিকুল ইসলাম প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতে চেয়েছিলেন। এমনকি মামলার বাদী এডভোকেট আবদুল মজিদ খানের প্রতিও অপরাধীদের আড়াল করার একই অভিযোগ উত্থাপন করেন আসমা কিবরিয়া। অভিযুক্ত করেন বর্তমান পিপি আকবর হুসেনকেও। তিনি তিনজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে তদন্ত করার আহ্বানও জানান।
মানবজমিনের কথা হয় বাদীপক্ষের আইনজীবী আলমগীর ভূঁইয়া বাবুলের সঙ্গে। তিনি নিশ্চিত করেন চার্জশিটে আর কোন আপত্তি না দেয়ার সিদ্ধান্তই হয়েছে। সিনিয়র এ আইনজীবী বলেন, সর্বশেষ চার্জশিটে প্রত্যাশার অনেকাংশই প্রতিফলিত হওয়ায়ই নারাজি দিয়ে আর মামলাকে দীর্ঘায়িত করতে চাইছেন না শাহ এএমএস কিবরিয়ার পরিবার। তাকে মামলা এগিয়ে নেয়ারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
কিবরিয়া হত্যা মামলার সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি সিলেট অঞ্চলের সিনিয়র এএসপি মেহেরুন্নেসা পারুল চার্জশিটে সিটি মেয়র আরিফের নাম সংযুক্ত করলেও কোন শক্ত ভিত্তি দাঁড় করাতে পারেননি। আরিফের সঙ্গে চার্জশিটে নতুন করে সংযুক্ত আরও একটি নাম হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র গোলাম কিবরিয়া জিকে গউছ। দু’জনকেই মাত্র একটি স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে অভিযুক্ত করা হয়েছে। যে স্বীকারোক্তিটি নেয়া হয়েছিল অন্য এক মামলায়। কিবরিয়া হত্যা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত মুফতি হান্নান ২০১১ সালের ৭ই এপ্রিল ঢাকার মতিঝিল থানার মামলায় (নং ৯৭(০৮)২০০৪) যে স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন সে স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে আরিফ-গউছকে জড়ানো হয়েছে কিবরিয়া হত্যা মামলায়। তবে মুফতি হান্নান একই বছরের ২৭শে সেপ্টেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ১-এ তার এ স্বীকারোক্তিটি প্রত্যাহারের আবেদনও করেছেন।
তদন্ত কর্মকর্তা যে মামলায় স্বীকারোক্তির বিষয়টি উল্লেখ করেন সেটি ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরণ আইনে দায়ের করা মামলায়, কিবরিয়া হত্যা মামলায় নয়। ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে মুফতি হান্নানের একটি জবানবন্দি রয়েছে ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির নির্মিত তথ্যচিত্র ‘জিহাদের প্রতিকৃতি’তে। তদন্ত কর্মকর্তা চার্জশিটে যে বৈঠকটির কথা বলেছেন এর উল্লেখও আছে সে জবানবন্দিতে। তবে মুফতি হান্নান সে জবানবন্দিতে আরিফুল হক চৌধুরী ও জিকে গউছের নাম উল্লেখ করেননি তবে জনৈক আরিফুল ইসলাম আরিফের নাম উল্লেখ করেন। তদন্ত কর্মকর্তাও মামলার চার্জশিটে আরিফুল ইসলাম উল্লেখ করেছেন কিন্তু কৌশলে চিহ্নিত করেছেন আরিফুল হককেই। তদন্ত কর্মকর্তার বর্ণনামতেই এ বৈঠকটি হয়েছিল কিবরিয়া হত্যার এক বছরেরও আগে। এত পেছনের একটি সাক্ষাতের সূত্র ধরে কিবরিয়া হত্যা ঘটনায় আরিফ-গউছকে জড়ানো যৌক্তিক হয়নি বলেই অনেকের মন্তব্য। চার্জশিটে মুফতি হান্নানের পুরনো একটি স্বীকারোক্তির বাইরে আরিফ-গউছের বিরুদ্ধে আর কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ দিতে পারেননি তদন্ত কর্মকর্তা।
অনেকেরই সন্দেহ, তদন্ত কর্মকর্তা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বা কারও ইশারায় আরিফুল হক চৌধুরীর নাম মামলায় জড়িয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, চার্জশিটের পরতে পরতে বিভ্রান্তির ছোঁয়া রেখে দিয়েছেন সিআইডির এ কর্মকর্তা। আরিফুল হকের নামের বানান ভুল রেখেছেন, আর ঠিকানা ভুল রেখেছেন জিকে গউছের। পাশাপাশি চার্জশিটে আরিফুল হক চৌধুরী ও জিকে গউছকে পলাতক দেখিয়েও বিভ্রান্তির জাল আরও মজবুত করেছেন। অথচ আরিফুল হক ও জিকে গউছ দু’জনেই জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিবরিয়া হত্যা ঘটনার অনেক পরে নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ী হয়ে আরিফুল হক চৌধুরী সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে এবং জিকে গউছ হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করছেন। এমনকি সিটি মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর স্বাভাবিক কার্যক্রমের পাশাপাশি আরিফুল হক বেশ ক’বার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে সাক্ষাৎও করেছেন। সরকারি সফরে দেশের বাইরেও ঘুরে এসেছেন। জিকে গউছও হবিগঞ্জে মেয়র হিসেবে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। তাদেরকে কিসের ভিত্তিতে তদন্ত কর্মকর্তা পলাতক চিহ্নিত করলেন তার কোন ব্যাখ্যা নেই চার্জশিটে।
২০০৫ সালের ২৭শে জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে ঈদ-পরবর্তী জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলার শিকার হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া। গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেয়ার পর মারা যান তিনি। গ্রেনেড হামলায় আরও পাঁচজন নিহত ও শতাধিক আহত হন। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মজিদ খান বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দু’টি মামলা করেন। ২০০৫ সালের ১৯শে মার্চ এ মামলায় তদন্ত শেষে প্রথম চার্জশিট দিয়েছিলেন সিআইডির (সিটি জোন, উত্তর, ঢাকা) এএসপি মুন্সী আতিক। চার্জশিটে ১০ জনকে অভিযুক্ত করেন তিনি। বাদীপক্ষ তাতে আপত্তি জানালে নতুন করে তদন্ত শুরু হয় এ মামলার। অধিকতর তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ২০শে জুন দ্বিতীয় দফা চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হবিগঞ্জ জোন) মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি নতুন ১৪ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে আগের অভিযুক্তদের অব্যাহতি প্রার্থনা করেন চার্জশিটে। চার্জশিটে সন্তুষ্ট না হওয়ায় আবারও আপত্তি জানান কিবরিয়া পরিবার। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে নতুন করে মামলার তদন্তভার দেয়া হয় সিলেট অঞ্চলের সিনিয়র এএসপি মেহেরুন্নেসা পারুলের ওপর। গত ১২ই নভেম্বর সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডির এ কর্মকর্তা। আগের দুই চার্জশিটে অভিযুক্তদের সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সাবেক একান্ত সচিব হারিছ চৌধুরী, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জের সাবেক মেয়র গোলাম কিবরিয়া গউছসহ নতুন আরও ১১ জনকে যুক্ত করেন তিনি। অব্যাহতি চান তিনজনের।
দু’দফা আপত্তির পর এ চার্জশিটকে মেনে নিয়েছেন শাহ এএমএস কিবরিয়ার স্ত্রী আসমা কিবরিয়া। এক বিবৃতিতে চার্জশিটকে কিবরিয়া-পত্নী ‘মোটামুটি গ্রহণযোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করে বলেছেন, ‘প্রকৃত হত্যাকরী ও মদতদাতাকারী, সহায়তাকারীদের নাম মোটামুটি চলে এসেছে।’ তবে হবিগঞ্জের সে সময়কার জেলা প্রশাসক মো. এমদাদুল হকের নাম না আসায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। বিবৃতিতে দ্বিতীয় চার্জশিট প্রদানকারী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের প্রতিও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, রফিকুল ইসলাম প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতে চেয়েছিলেন। এমনকি মামলার বাদী এডভোকেট আবদুল মজিদ খানের প্রতিও অপরাধীদের আড়াল করার একই অভিযোগ উত্থাপন করেন আসমা কিবরিয়া। অভিযুক্ত করেন বর্তমান পিপি আকবর হুসেনকেও। তিনি তিনজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে তদন্ত করার আহ্বানও জানান।
মানবজমিনের কথা হয় বাদীপক্ষের আইনজীবী আলমগীর ভূঁইয়া বাবুলের সঙ্গে। তিনি নিশ্চিত করেন চার্জশিটে আর কোন আপত্তি না দেয়ার সিদ্ধান্তই হয়েছে। সিনিয়র এ আইনজীবী বলেন, সর্বশেষ চার্জশিটে প্রত্যাশার অনেকাংশই প্রতিফলিত হওয়ায়ই নারাজি দিয়ে আর মামলাকে দীর্ঘায়িত করতে চাইছেন না শাহ এএমএস কিবরিয়ার পরিবার। তাকে মামলা এগিয়ে নেয়ারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
No comments