দেশ চায় সুষ্ঠু নির্বাচন -স্মরণসভায় মিলনের মা
শহীদ ডা. মিলন দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে ডা. মিলনের মা সেলিনা খাতুন সাবেক স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদের শাস্তি দাবি করে বলেছেন, যারা এই খুনি শাসককে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, তাদের এর ফল ভোগ করতে হবে। দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো দলীয়করণে স্বকীয়তা হারিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ আজও চেয়ে আছে দেশে সব দলের আলোচনার মাধ্যমে যেন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। গতকাল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। সেলিনা খাতুন বলেন, শুধু মিলনকে নয়, ’৮২ সাল থেকে ’৯০-এর ৪ঠা ডিসেম্বর এরশাদ ক্ষমতা ছাড়ার আগ পর্যন্ত বিভিন্ন মিছিল-সমাবেশে গুলি করে হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। এসব হত্যার নেপথ্যে ছিলেন এরশাদ। এসব হত্যা ঘটনায় তার বিচার না হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করে ৯০’র স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত ডা. শামছুল আলম খান মিলনের মা বলেন, সমাজে আজ সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, স্বজনপ্রীতি আস্তানা গেড়েছে। চলছে দুর্নীতি, ঘুষ, হত্যা, সহিংসতার রাজনীতি। দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো- নির্বাচন কমিশন, আইন বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশনে চলছে দলীয়করণ। প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের স্বকীয়তা হারিয়েছে। ২৪ বছরে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আজও চেয়ে আছে জনগণ। দেশের জনগণ চায় সকল রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে দেশের স্বার্থে সকলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন। তিনি বলেন- আমি মনে করি এখনও সময় আছে ভবিষ্যতে একটি সুন্দর নির্বাচন আয়োজনের। ৯০-এর পরবর্তী গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে সেলিনা খাতুন বলেন, স্বাধীন দেশে আপনারা ঘাতক এরশাদের বিচার করতে ব্যর্থ হলেন কেন এবং কার স্বার্থে? তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আমরা দেখি ঘাতক অত্যাচারী সরকারপ্রধানরা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন অথবা তাদেরকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝোলানো হয়েছে। এ হত্যার বিচারের ব্যর্থতার জন্য তিনি বিএমএকেও দায়ী করেন তিনি। এরশাদের বিচার সম্ভব ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, কে সেদিন গুলি করেছিল তা চিহ্নিত করা না গেলেও যিনি হুকুম দিয়েছিলেন কেন তার বিচার হবে না? শুনে ব্যথিত হই, যখন তিনি বলেন- মানুষকে ভালবেসে রাজনীতি করেন। কি বিচিত্র এই দেশ! সত্যিই সেলুকাস! ছেলের স্মৃতিচারণ করে এই জননী বলেন, আমার ছেলে ছিল সচ্চরিত্র, সত্যবাদী। বাহুল্য সে পছন্দ করতো না। ডা. মিলন ছোটবেলা থেকেই ডায়েরি লিখতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, যখন সে ৭ম শ্রেণীতে পড়তো তখন সে ডায়েরির একটি পাতায় লিখেছিল- কার স্বাধীনতা? আমাদের আবার কিসের স্বাধীনতা? আমরা বাঙালিরা তো পাকিস্তানিদের দ্বারা নির্যাতিত, শোষিত। তখন থেকেই তার চরিত্রে ধীরে ধীরে বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনার উন্মেষ ঘটে। স্মরণসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, বছর বছর ক্ষোভের সঙ্গে এই দিনে হত্যাকারীদের বিচার চাইতে হয়। তিনি বলেন- এখানে উপস্থিত মন্ত্রীসহ সকলেই জানেন সেদিন কে গুলি চালিয়েছিল। ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, ’৭১-এ হত্যার হুকুমের আসামি হিসেবে যদি নিজামী, গোলাম আযমের ফাঁসি হয় তবে কেন সেদিনের হত্যাকাণ্ডের ফাঁসির আসামি হিসেবে এরশাদের বিচার হবে না? তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ডা. মিলন ছাত্রজীবন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তার নীতিতে অটল ছিলেন। তিনি গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করতেন। একই সঙ্গে তিনি পেশাজীবীদের অধিকার আদায়ে আন্দোলন করে গেছেন। ৮০’র দশকে প্রকৌশল, কৃষিবিদ ও চিকিৎসাবিদদের সমন্বয়ে যে বিরাট আন্দোলন হয়েছিল তার পুরোধা ছিলেন তিনি। ইনু বলেন, সামরিক শাসন ও সামপ্রদায়িকতার জঞ্জাল সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি বরং গণতন্ত্রের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সামরিক ও সামপ্রদায়িক শক্তি তাদের অবস্থান সুদৃঢ় করেছে। তিনি বিএনপির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, গজিয়ে ওঠা জঙ্গিবাদ এবং রাজাকারদের আশ্রয়স্থল খালেদা জিয়া ও বিএনপি। তারা সাংবিধানিক হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। যদি ডা. মিলনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে হয় তাহলে এই সাংবিধানিক হুমকি থেকে রক্ষা করতে অতীতের মতো ওদের পরাজিত করে হটিয়ে দিতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, শুনেছি ’৯২ সালে যখন বিচার শুরু হয় তখন সাক্ষীদের বৈরী ঘোষণা করা হয়েছিল। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, আইনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে বিচারটি পুনরায় চালুর ব্যাপারে কথা বলবো। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যারও বিচার এক সময় অলীক ছিল সেটাও দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। একাত্তরের ঘাতকদের বিচার দুঃস্বপ্নের মতো ছিল কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব চাপ উপেক্ষা করে সে বিচার করছেন। তিনি সমাজতন্ত্রের সমালোচনা করে বলেন, গণতন্ত্রের বিকল্প গণতন্ত্র। ভাল কাজের সমালোচনা হবেই উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন বিপ্লবীরা অনেক কথাই বলতে পারেন। তিনি বিচারের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, দণ্ড দেয় আদালত কিন্তু দায়ী করা হয় সরকারকে।
বিএমএ’র সভাপতি ডা. মাহমুদ হাসান সভাপতির বক্তব্যে বলেন, বিএমএ’র তৎকালীন যুগ্ম সম্পাদক ডা. মিলনের সংগ্রাম ছিল গণবিরোধী স্বাস্থ্যনীতি এবং গণমুখী স্বাস্থ্যনীতির পক্ষে। স্মরণসভা ছাড়াও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করেছে শহীদ ডা. মিলনের পরিবার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, বছর বছর ক্ষোভের সঙ্গে এই দিনে হত্যাকারীদের বিচার চাইতে হয়। তিনি বলেন- এখানে উপস্থিত মন্ত্রীসহ সকলেই জানেন সেদিন কে গুলি চালিয়েছিল। ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, ’৭১-এ হত্যার হুকুমের আসামি হিসেবে যদি নিজামী, গোলাম আযমের ফাঁসি হয় তবে কেন সেদিনের হত্যাকাণ্ডের ফাঁসির আসামি হিসেবে এরশাদের বিচার হবে না? তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ডা. মিলন ছাত্রজীবন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তার নীতিতে অটল ছিলেন। তিনি গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করতেন। একই সঙ্গে তিনি পেশাজীবীদের অধিকার আদায়ে আন্দোলন করে গেছেন। ৮০’র দশকে প্রকৌশল, কৃষিবিদ ও চিকিৎসাবিদদের সমন্বয়ে যে বিরাট আন্দোলন হয়েছিল তার পুরোধা ছিলেন তিনি। ইনু বলেন, সামরিক শাসন ও সামপ্রদায়িকতার জঞ্জাল সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি বরং গণতন্ত্রের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সামরিক ও সামপ্রদায়িক শক্তি তাদের অবস্থান সুদৃঢ় করেছে। তিনি বিএনপির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, গজিয়ে ওঠা জঙ্গিবাদ এবং রাজাকারদের আশ্রয়স্থল খালেদা জিয়া ও বিএনপি। তারা সাংবিধানিক হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। যদি ডা. মিলনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে হয় তাহলে এই সাংবিধানিক হুমকি থেকে রক্ষা করতে অতীতের মতো ওদের পরাজিত করে হটিয়ে দিতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, শুনেছি ’৯২ সালে যখন বিচার শুরু হয় তখন সাক্ষীদের বৈরী ঘোষণা করা হয়েছিল। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, আইনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে বিচারটি পুনরায় চালুর ব্যাপারে কথা বলবো। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যারও বিচার এক সময় অলীক ছিল সেটাও দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। একাত্তরের ঘাতকদের বিচার দুঃস্বপ্নের মতো ছিল কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব চাপ উপেক্ষা করে সে বিচার করছেন। তিনি সমাজতন্ত্রের সমালোচনা করে বলেন, গণতন্ত্রের বিকল্প গণতন্ত্র। ভাল কাজের সমালোচনা হবেই উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন বিপ্লবীরা অনেক কথাই বলতে পারেন। তিনি বিচারের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, দণ্ড দেয় আদালত কিন্তু দায়ী করা হয় সরকারকে।
বিএমএ’র সভাপতি ডা. মাহমুদ হাসান সভাপতির বক্তব্যে বলেন, বিএমএ’র তৎকালীন যুগ্ম সম্পাদক ডা. মিলনের সংগ্রাম ছিল গণবিরোধী স্বাস্থ্যনীতি এবং গণমুখী স্বাস্থ্যনীতির পক্ষে। স্মরণসভা ছাড়াও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করেছে শহীদ ডা. মিলনের পরিবার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
No comments