সংগ্রামী আমেনা by সাইফুর রহমান
পেপারত মোর ছবি দিয়া কী কইরবেন, মোর কোনো উপকারে কইরবের পান না তোমরা’- এমনই বললেন সংগ্রামী আমেনা বেগম। দিন যায় রাত হয় তার অভিরাম চলা শেষ হয় না। রাত পোহালেই তাকে দেখা যায় এগ্রামে ওগ্রামে ভ্যানগাড়িতে কিছু মালপত্র নিয়ে ছুটে চলতে। আমেনা বেগম জীবন সংগ্রামী এক নারী (৫০)। ঘরবাড়ি নেই বললেই চলে। তিনি থাকেন নাগেশ্বরী পৌরসভার সাতানীপাড়া গ্রামের অন্যের জায়গায় ঝুপড়ি ঘরে। ঝুপড়িতে তিনি সন্তান-সন্ততি নিয়ে থাকেন। স্বামী আবদুুর রহমান মারা যাওয়ার পর তিনি বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতেন। কিন্তু পরের বাড়িতে কাজ করার চেয়ে নিজে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার মনোভাব নিয়ে তিনি স্থানীয় গ্রামীণ ব্যাংক থেকে কিছু টাকা ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। কাঠের তৈরি ছোট্ট একটি ভ্যানগাড়িতে বিস্কুট, চানাচুর, মসলা, আচার, তেল, মরিচগুঁড়া, হলুদগুঁড়া, বিভিন্ন প্রকার ডাল, সাবান ইত্যাদি মালামাল বিক্রি করেন। তিনি বলেন, ভ্যানগাড়িতে এসব ক্ষুদ্র মালামাল নিয়ে প্রতিদিন এগ্রাম ওগ্রাম ছুটে বেড়াই কিন্তু তেমন বেচাকেনা হয় না। এখন প্রতিটি পাড়াগাঁয়ে রাস্তার মোড়ে কিংবা লোকালয়ে ছোট-বড় দোকান গড়ে উঠেছে। তাছাড়া গ্রামের ধনী পরিবারগুলো আমার কাছ থেকে জিনিস কেনে না। সারাদিন গ্রাম ঘুরে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার মালা মাল বিক্রি করি এতে সামান্য কিছু লাভ হয়। আসল মূলধন ঠিক রেখে লাভের অংশের টাকা দিয়ে সংসার চালাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, অন্যের বাড়িতে কাজ করে খাওয়া আর ভিক্ষাবৃত্তির চেয়ে ব্যবসায় সম্পৃক্ত হয়ে অভাবের সঙ্গে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকা অনেক ভালো।
No comments