বিনাদোষে কারাগারে ৩৬ বছর
বিনা দোষে তিন যুগ কারাভোগের পর মুক্তি পেলেন ক্যালিফোর্নিয়ার মাইকেল রে হ্যানলাইন (৬৮)। সোমবার তাকে মুক্তি দেয়া হয়। এ খবর দিয়েছে এলএ টাইমস। ক্যালিফোর্নিয়ার ভেঞ্চুরা কাউন্টির সুপিরিয়র কোর্টের বিচারক ডোনাল্ড ডি কোলম্যান হ্যানলাইনের মুক্তির আদেশ দেন। তবে তাকে পরে থাকতে হবে জিপিএস মনিটরিং ডিভাইস। আদালতের দলিল অনুযায়ী, অপরাধ সংঘটনের এলাকায় প্রাপ্ত ডিএনএ নমুনা হ্যানলাইন বা তার কথিত সহযোগী কারও সঙ্গেই মেলেনি। এছাড়া মামলার একজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী যখন হ্যানলাইনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন সে সময় তিনি মাদকাসক্ত ছিলেন বলে জানা গেছে। ক্যালিফোর্নিয়ার ইতিহাসে বিনাদোষে সব থেকে বেশি দিন কারাভোগ করা নাগরিক হ্যানলাইন। সোমবার কারাগার থেকে মুক্তির পর তিনি বলেন, এটা বিশ্বাস করাও কঠিন। কেমন অনুভব করছেন এ প্রশ্নের জবাবে তিনি সহধর্মিণীর হাত ধরে হ্যানলাইন বলেন, আমি শুধু বাড়ি যেতে চাই। আর তার সঙ্গে সময় কাটাতে চাই। স্ত্রীকে তার শক্তির স্থান বলে অভিহিত করেন হ্যানলাইন। ভেঞ্চুরা নিবাসী জে.টি. ম্যাকগ্যারিকে গুলি করে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করে কোন প্রকার প্যারোলে মুক্তির সম্ভাবনা ছাড়াই হ্যানলাইনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয় ১৯৮০ সালে। হ্যানলাইনের তৎকালীন বান্ধবী মেরি বিশপকে দায়মুক্তি দিয়ে বিচারকালীন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। দু’সপ্তাহ আগে আদালতে দাখিলকৃত তথ্য-প্রমাণে প্রসিকিউটররা বলেছেন, কয়েক মাস ধরে একাধিক ব্যক্তির সাক্ষাৎকারে ইঙ্গিত মেলে যে, অন্য ব্যক্তিদের ম্যাকগ্যারিকে হত্যা করার উদ্দেশ্য এবং সামর্থ্য ছিল। এসব সাক্ষাৎকারে এও উঠে এসেছে যে, সাক্ষীদের হুমকি-ধমকি দেয়া হয়েছে আর প্রসিকিউটরদের সহায়তা করার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। ১৯৭৮ সালের ১০ই নভেম্বর নিখোঁজ হয়ে যায় ম্যাকগ্যারি। দু’দিন পর .৩৮ ক্যালিবারের দু’টি গুলির ক্ষতচিহ্নসহ তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। মেরি আদালতে সাক্ষ্য দেন, হ্যানলাইন তাকে বলেছিল ম্যাকগ্যারিকে মারার কন্ট্রাক্ট ছাড়া হয়েছে আর সে তার মাথার খুলি উড়িয়ে দেবে। সে আরও সাক্ষ্য দেয় হ্যানলাইন ঘটনার রাতে .৩৮ ক্যালিবারের বন্দুক নিয়ে বাসা থেকে বের হয় আর যখন ফিরে আসে তখন তার গায়ে কাদামাটি ছিল। হ্যানলাইন বলেছিলেন, তিনি সারা রাত মোটরসাইকেলের কাজ করছিলেন, আর বের হয়েছিলেন শুধুমাত্র বিয়ার কিনতে। মেরি আরও বলেছিল যে, সেই রাতে সে পিসিপি মিশ্রিত গাঁজা আর কোকেন সেবন করেছিল। বিচারকালে সময়ে তার ওপর যে মাদকের কড়া প্রভাব ছিল তা স্পষ্ট। ২০১০ সালে একজন কেন্দ্রীয় বিচারক হ্যানলাইনের দণ্ড স্থগিত রেখে পুনর্বিচারের পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু অপর এক মার্কিন ডিস্ট্রিক্ট বিচারক ওই পরামর্শে অস্বীকৃতি জানান।
No comments