বায়োগ্যাসে বাঁচবে পরিবেশ, হবে সাশ্রয়
বরগুনা সদর উপজেলার দক্ষিণ খাজুরতলা গ্রামের কাজী মাসুম বিল্লাহর পরিবারে সদস্য ১২ জন। ১৭ বছর ধরে পুরো পরিবারের তিনবেলা রান্না হচ্ছে বায়োগ্যাসের সাহায্যে। এতে যেমন জ্বালানি সাশ্রয় হচ্ছে, তেমনি জৈব সারও মিলছে। তাঁদের মতো একই এলাকার আবদুল খবির মিয়াও বায়োগ্যাস ব্যবহারে সফলতা দেখিয়েছেন। সফল উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত কাজী মাসুম ১৯৯৮ সালে ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ে তিন ঘনফুট ক্ষমতাসম্পন্ন বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট করেন। এটাই ছিল বরগুনার প্রথম বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট। সে সময় তিনি মুরগির খামারের বর্জ্য দিয়ে গ্যাস তৈরি করতেন। কিন্তু মুরগির খাবারে পাথর মেশানো থাকায় পাথরের কণা জমে ট্যাংক ভরে যেত। পরে গাভি পালন শুরু করার পর গাভির বর্জ্য ব্যবহার করছেন। এখন চার থেকে পাঁচ বছরেও ট্যাংক পরিষ্কার করা লাগে না। আগে ঘরে আলোও জ্বালাতেন এই গ্যাসে। এখন বিদ্যুৎ আসায় শুধু রান্না করেন। এর পরও যে গ্যাস উদ্বৃত্ত থাকে, তা দিয়ে আরও তিনটি পরিবারের রান্না অনায়াসে চলতে পারে বলে জানান মাসুম।
বায়োগ্যাস প্ল্যান্টের সুবিধার দিকগুলো তুলে ধরে তাঁর স্ত্রী নাসরিন জাহান জানান, বায়োগ্যাসে রান্না করায় প্রতি মাসে তাঁদের প্রায় চার হাজার টাকার জ্বালানি সাশ্রয় হচ্ছে। আরেকটি বাড়তি সুবিধা হলো এটা একটি লাভজনক প্রকল্প। কারণ, গাভি বা হাঁস-মুরগি পালন করে বিনা মূল্যে রান্নার জ্বালানির সংস্থান করা সম্ভব। পাশাপাশি অবশিষ্ট বর্জ্য দিয়ে প্রতি মাসে জৈব সার তৈরি করে বাজারে বিক্রি করছেন। সেখান থেকে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা বাড়তি আয় হচ্ছে।
২০০৪ সালে মাসুম সফল উদ্যোক্তা হিসেবে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দেওয়া জাতীয় পুরস্কারও পান।
একই এলাকার আবদুল খবির মিয়া ছোট পরিসরে দেশি জাতের ছয়টি গাভি পালন করে গড়ে তুলেছেন বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট। তাঁর ছেলে আমিনুর রহমান বলেন, ছয়টি দেশি জাতের গাভি থেকে প্রাপ্ত বর্জ্য দিয়ে তৈরি বায়োগ্যাস ব্যবহারের কারণে প্রতি মাসে কমপক্ষে দুই হাজার টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। সংগ্রাম ও গ্রামীণ শক্তির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বরগুনা জেলায় তাঁদের সহায়তায় করা ৬৪টি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট রয়েছে।
২০০৮ সালে বরগুনার স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা সংগ্রাম, বেসরকারি সংস্থা ইটকলের সহায়তায় ৪৭টি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপন করে; যাদের অধিকাংশ এখনো চালু আছে। সংগ্রামের ওই প্রকল্পের সমন্বয়কারী স্বপন বাড়ৈ জানান, ২৪ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৪৭ হাজার টাকায় এসব প্ল্যান্ট স্থাপন করে দেন তাঁরা। একইভাবে গ্রামীণ শক্তি জেলায় ২০টি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট নির্মাণে কারিগরি সহায়তা দিয়েছে বলে জানান সংস্থাটির বরগুনা শাখার ব্যবস্থাপক ইমাম হোসেন।
গ্রামীণ শক্তির ব্যবস্থাপক ইমাম হোসেন জানান, প্রচারণার অভাবে বায়োগ্যাস প্ল্যান্টের প্রসার হচ্ছে না। গরু ও মুরগির খামার ছাড়াও দৈনন্দিন জীবনে আমাদের প্রচুর বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। এসব বর্জ্য বিকল্প জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতে পারলে পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্য সুফল বয়ে আনা সম্ভব।
তৈরির পদ্ধতি: তিন ঘনমিটার গ্যাস উৎপাদনে সক্ষম একটি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট নির্মাণের জন্য প্রথমে ২৫০ সেন্টিমিটার ব্যাস ও ২২০ সেন্টিমিটার গভীর একটি গোলাকার কূপ খনন করতে হবে। এরপর কুয়ার তলদেশ চাড়ির তলার আকৃতিতে খনন হবে। দুরমুজ দিয়ে ঘনভাবে সেটি বিন্যস্ত করে নিতে হবে। পরে তলদেশে ৭ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার পুরু ইট বিছিয়ে তার ওপর পাঁচ সেন্টিমিটার পুরু ঢালাই দিতে হবে। ঢালাইয়ের ওপর আবার ২১০ সেন্টিমিটার ব্যাস রেখে গোলাকৃতি ১২ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার ইটের দেয়াল করতে হবে।
এভাবে সিমেন্ট, ইট, বালু দিয়ে ঢাকনাসহ কক্ষ (চেম্বার) তৈরির পর এতে গ্যাস উৎপাদনের জন্য গোবর অথবা হাঁস-মুরগির বর্জ্যের সঙ্গে পানি মিশিয়ে কমপক্ষে ১৫ দিন জমা করতে হবে। তারপর ওই চেম্বারের সঙ্গে পাইপ সংযোগ দিয়ে তার মাথায় মিটার এবং ছাঁকনি বসিয়ে দিতে হবে। যেখানে সংযোগ যাবে প্লাস্টিকের পাইপের সাহায্যে সেখান লাইন টেনে নিতে হবে। মিটারে গ্যাস জমা হওয়ার সংকেত পাওয়ার পর চুলা জ্বালাতে হবে। রান্না শেষে অবশ্যই গ্যাস সরবরাহ পাইপের মুখে বসানো চাবি ঘুরিয়ে বন্ধ করে রাখতে হবে।
বায়োগ্যাস প্ল্যান্টের সুবিধার দিকগুলো তুলে ধরে তাঁর স্ত্রী নাসরিন জাহান জানান, বায়োগ্যাসে রান্না করায় প্রতি মাসে তাঁদের প্রায় চার হাজার টাকার জ্বালানি সাশ্রয় হচ্ছে। আরেকটি বাড়তি সুবিধা হলো এটা একটি লাভজনক প্রকল্প। কারণ, গাভি বা হাঁস-মুরগি পালন করে বিনা মূল্যে রান্নার জ্বালানির সংস্থান করা সম্ভব। পাশাপাশি অবশিষ্ট বর্জ্য দিয়ে প্রতি মাসে জৈব সার তৈরি করে বাজারে বিক্রি করছেন। সেখান থেকে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা বাড়তি আয় হচ্ছে।
২০০৪ সালে মাসুম সফল উদ্যোক্তা হিসেবে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দেওয়া জাতীয় পুরস্কারও পান।
একই এলাকার আবদুল খবির মিয়া ছোট পরিসরে দেশি জাতের ছয়টি গাভি পালন করে গড়ে তুলেছেন বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট। তাঁর ছেলে আমিনুর রহমান বলেন, ছয়টি দেশি জাতের গাভি থেকে প্রাপ্ত বর্জ্য দিয়ে তৈরি বায়োগ্যাস ব্যবহারের কারণে প্রতি মাসে কমপক্ষে দুই হাজার টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। সংগ্রাম ও গ্রামীণ শক্তির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বরগুনা জেলায় তাঁদের সহায়তায় করা ৬৪টি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট রয়েছে।
২০০৮ সালে বরগুনার স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা সংগ্রাম, বেসরকারি সংস্থা ইটকলের সহায়তায় ৪৭টি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপন করে; যাদের অধিকাংশ এখনো চালু আছে। সংগ্রামের ওই প্রকল্পের সমন্বয়কারী স্বপন বাড়ৈ জানান, ২৪ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৪৭ হাজার টাকায় এসব প্ল্যান্ট স্থাপন করে দেন তাঁরা। একইভাবে গ্রামীণ শক্তি জেলায় ২০টি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট নির্মাণে কারিগরি সহায়তা দিয়েছে বলে জানান সংস্থাটির বরগুনা শাখার ব্যবস্থাপক ইমাম হোসেন।
গ্রামীণ শক্তির ব্যবস্থাপক ইমাম হোসেন জানান, প্রচারণার অভাবে বায়োগ্যাস প্ল্যান্টের প্রসার হচ্ছে না। গরু ও মুরগির খামার ছাড়াও দৈনন্দিন জীবনে আমাদের প্রচুর বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। এসব বর্জ্য বিকল্প জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতে পারলে পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্য সুফল বয়ে আনা সম্ভব।
তৈরির পদ্ধতি: তিন ঘনমিটার গ্যাস উৎপাদনে সক্ষম একটি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট নির্মাণের জন্য প্রথমে ২৫০ সেন্টিমিটার ব্যাস ও ২২০ সেন্টিমিটার গভীর একটি গোলাকার কূপ খনন করতে হবে। এরপর কুয়ার তলদেশ চাড়ির তলার আকৃতিতে খনন হবে। দুরমুজ দিয়ে ঘনভাবে সেটি বিন্যস্ত করে নিতে হবে। পরে তলদেশে ৭ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার পুরু ইট বিছিয়ে তার ওপর পাঁচ সেন্টিমিটার পুরু ঢালাই দিতে হবে। ঢালাইয়ের ওপর আবার ২১০ সেন্টিমিটার ব্যাস রেখে গোলাকৃতি ১২ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার ইটের দেয়াল করতে হবে।
এভাবে সিমেন্ট, ইট, বালু দিয়ে ঢাকনাসহ কক্ষ (চেম্বার) তৈরির পর এতে গ্যাস উৎপাদনের জন্য গোবর অথবা হাঁস-মুরগির বর্জ্যের সঙ্গে পানি মিশিয়ে কমপক্ষে ১৫ দিন জমা করতে হবে। তারপর ওই চেম্বারের সঙ্গে পাইপ সংযোগ দিয়ে তার মাথায় মিটার এবং ছাঁকনি বসিয়ে দিতে হবে। যেখানে সংযোগ যাবে প্লাস্টিকের পাইপের সাহায্যে সেখান লাইন টেনে নিতে হবে। মিটারে গ্যাস জমা হওয়ার সংকেত পাওয়ার পর চুলা জ্বালাতে হবে। রান্না শেষে অবশ্যই গ্যাস সরবরাহ পাইপের মুখে বসানো চাবি ঘুরিয়ে বন্ধ করে রাখতে হবে।
No comments