ঈদযাত্রায় ১৭৬ দুর্ঘটনায় নিহত ২২৩

এবারের ঈদযাত্রায় সারাদেশে ১৭৬টি দুর্ঘটনায় ২২৩ জন নিহত ও ৬৭০ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। গত ৬ আগস্ট থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত ১২ দিনে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
এরমধ্যে ১৪৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন ১৯৭ জন৷ আহত হয়েছেন ৬২৭ জন।
সোমবার (১৯ আগস্ট) রোড সেফটি ফাউন্ডেশন থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা, নিউজ পোর্টাল এবং টেলিভিশনের সংবাদের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনা
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সড়কে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৪৬টি। এতে নিহত হন ১৯৭ জন৷ এরমধ্যে ১৫৯ জন পুরুষ ও ৩৮ জন নারী। আর আহত হয়েছেন ৬২৭ জন। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বেশি ঘটেছে। ৫৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৬৯ জন।
নৌপথে দুর্ঘটনা
নৌপথের ২১টি দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩২ জন। ৬৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
রেলপথ দুর্ঘটনা
রেলপথে ৯টি দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত ও ১১ জন আহত হয়েছেন।
সড়ক দুর্ঘটনায় যানবাহনের ধরন ও সংখ্যা
সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল-৫৩, বাস-২৭, ট্রাক-১৮, পিকআপ-২৩, লরি-১, ট্রাক্টর-২, প্রাইভেটকার-১২, মাইক্রোবাস-৮, পুলিশ ভ্যান-১, ভটভটি-১১, নসিমন-৯, অটোরিকশা-৪৩, মাহিন্দ্র-৩ ও টমটম-১টি। মোট-২১২টি।
পর্যবেক্ষণ
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মহাসড়কের চেয়ে আঞ্চলিক সড়কে দুর্ঘটনার মাত্রা বেশি ছিল। মহাসড়কে ৬৫ ও আঞ্চলিক সড়কে ৮১টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঈদপূর্ব যাত্রায় ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গ রুটে ভয়াবহ যানজটে ঘরমুখী মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হন। পথে পথে পশুবাহী যানবাহনে রাজনৈতিক ও বিভিন্ন সংগঠনের নামে চাঁদাবাজি হয়েছে। ঢাকা শহরের ফিটনেসবিহীন লোকাল বাসগুলো বিভিন্ন মহাসড়কে যাত্রীবহনের কারণে যানজট বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের সব রুটে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হয়েছে। স্বল্পগতির যানবাহন সড়ক-মহাসড়কে বেপরোয়াভাবে চলাচল করেছে। প্রথম দিন থেকেই ট্রেনের ভয়াবহ শিডিউল বিপর্যয়ে যাত্রীদের অসহনীয় ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। নৌপথে অব্যবস্থাপনা বরাবরের মতোই বিদ্যমান ছিল। প্রতিশ্রুতি থাকলেও সড়ক, নৌ ও রেলপথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তেমন কোনও কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থা দৃশ্যমান ছিল না।
দুর্ঘটনার কারণ
ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও অদক্ষ চালক; অতিরিক্ত গতি ও ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেক করার প্রবণতা; বিশ্রামহীনভাবে যানবাহন চালানো; সড়ক-মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহনের বেপরোয়া চলাচল এবং যাত্রী ও পথচারীদের অসচেতনতা।
সুপারিশ
গণপরিবহনকেন্দ্রিক অসুস্থ সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজি–দুর্নীতি বন্ধ করে টেকসই পরিবহন কৌশল গ্রহণ করতে হবে। পর্যাপ্ত দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। নিরাপদ যাতায়াতের জন্য আধুনিক সড়ক নির্মাণের পাশাপাশি রেল ও নৌপথকে বিস্তৃত ও মানসম্পন্ন করতে হবে। রাজধানী ঢাকার প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের বিষয়টিও ভাবতে হবে। জনবান্ধব গণপরিবহন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন বলে মনে করে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
গত ১৫ আগস্ট ফেনীতে পিকনিকের বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ৭ জন নিহত হন

No comments

Powered by Blogger.