পাকিস্তান, শান্তি ও আফগানিস্তান ত্রিভূজ by জাভেদ ফালাক
আফগানিস্তানের
সাথে সম্পর্ককে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে পাকিস্তান – এ কথা প্রমানিত সত্য।
আর বাস্তবতা হলো, আফগানিস্তানের শান্তি ও স্থিতিশীলতার ওপর নির্ভর করছে
পাকিস্তানের শান্তি। অস্বীকার করার উপায় নেই যে ইসলামি প্রজাতন্ত্র দুটির
মধ্যে কেবল ২৬ শ’ কিলোমিটার দীর্ঘ সরন্ধ্র সীমান্তই নেই, সেইসাথে একই
মতাদর্শ ও ধর্মীয় বিশ্বাসের অধিকারী। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দুই দেশের
মধ্যে উত্তেজনা ও বিপদ কেবল বাড়ছেই।
তবে এটা সত্য যে দুই দেশের মধ্যে আস্থার ঘাটতি রয়েছে। কিন্তু তারপরও নির্দ্বিধায় বলা যায়, পাকিস্তান সবসময় যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের ব্যাপারে ইতিবাচক ও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু আফগানিস্তান সবসময় পাকিস্তানকে দেখেছে সন্দেহের চোখে।
দুই দেশের সম্পর্ক কেন এমন পর্যায়ে নেমে এসেছে, সেটিও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। ব্রিটিশদের কাছ থেকে পাকিস্তান যে ডুরান্ট লাইন উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে, তা আফগানিস্তানের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ঘায়ের ওপর নুনের ছিটার মতো আফগানিস্তান সবসময় তালেবানকে পৃষ্ঠপোষকতা করার জন্য পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে। অথচ সন্ত্রাসবাদের কারণে পাকিস্তানের ৭০ হাজার জীবনের ক্ষতি হয়েছে, দরিদ্রপীড়িত দেশটিতে ইতোমধ্যেই ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে।
অধিকন্তু, পাকিস্তানকে অস্থিতিশীল করার জন্য পাকিস্তানের চির-প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও ইউএসএসআরের সাথে গাটছড়া বেঁধেছিল আফগানিস্তান। ফলে ইতিহাসজুড়ে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান ছিল সবসময় বিপরীত অবস্থানে।
৯/১১-এর পর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক যুদ্ধ শুরু হলে আফগানিস্তানে অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতার সূচনা ঘটে। আর এর প্রভাব সহজেই পাকিস্তানে অনুভূত হয়। এটা সুস্পষ্ট বিষয় যে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে শান্তি আনার জন্য সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব হলো মূল ভিত্তি।
সম্প্রতি মস্কোতে তালেবান ও আফগানিস্তানের মধ্যে মতবিনিময় হয়। এতে রাশিয়া মধ্যস্ততাকারীর ভূমিকা পালন করায় শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে কিছুটা আশাবাদের সঞ্চার হয়। তবে আমরা একটু খতিয়ে দেখলে বুঝতে পারব যে চলমান আফগান-নেতৃত্বাধীন, আফগান মালিকানাধীন শান্তিপ্রক্রিয়ায় পাকিস্তান সবসময়ই সৌহার্দ্যমূলক ভূমিকা পালন করছে, অগ্রসর অবস্থানে থেকেছে। শান্তিপ্রক্রিয়ায় পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সাম্প্রতিক সময়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সহায়তা করাটা স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দিচ্ছে যে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান একে অপরের জন্য অপরিহার্য। পাকিস্তানের সম্পৃক্ততা ছাড়া কোনো পরিকল্পনাই কাজ করতে পারে না।
সন্দেহ নেই যে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানকে ওই অবস্থা থেকে বের করে আনা হবে বিশেষভাবে পাকিস্তানের জন্য ও সাধারণভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ। তবে ইতোমধ্যেই কঠিন পরিস্থিতি থেকে মু্ক্তি পাওয়ার কিছুটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে।
এই প্রেক্ষাপটে আফগানিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের উচিত হবে পাকিস্তানের প্রতি দোষারোপ বন্ধ করা। এছাড়া প্রতিবেশী দেশের সাথে থাকা আস্থার ঘাটতি অবসান নিয়েও পাকিস্তানের সুস্পষ্ট অবস্থান প্রকাশ করা উচিত। অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে আফগানিস্তানের রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ভূগোল। এ কারণে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে অবশ্যই নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে এসবের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সব নিকট প্রতিবেশীর উচিত হবে আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ বন্ধ করা। মনে রাখতে হবে যে আমরা বিশ্বায়নের বিশ্বে বসবাস করছি। এ কারণে আমাদের প্রয়োজন হবে পরিস্থিতির দিকে নগর রাখা এবং চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের ওপর বড় দায়িত্ব রয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে উন্নয়নের প্রক্রিয়া শুরু করা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্র ২০১১ সালে নিউ সিল্ক রোড প্রকল্প, রাশিয়া ইউরো এশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়ন পরিকল্পনা ও চীন ২০১৪ সালে বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ সামনে এনেছে।
চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর এগিয়ে নিতে পাকিস্তান ও চীন অনেক অগ্রগতি হাসিল করেছে। এসব প্রকল্প জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদ প্রস্তাব ২৩৪৪-এ রয়েছে। এ কারণে আফগানিস্তানের সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য এসব প্রকল্পের মধ্যে সমন্বয় সাধন প্রয়োজন।
পাকিস্তানকে অস্থিতিশীল করার জন্য ভারতের আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করা এবং সেইসাথে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যকার সম্প্রীতিমূলক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভারতের গুরুত্বপূর্ণ বাধা হিসেবে আত্মপ্রকাশ খুবই অবাক করা ও বাজে কাজ।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানকে অবশ্যই একসাথে বসতে হবে তাদের ভবিষ্যতের প্রজন্মগুলার স্বার্থে অবিশ্বাসের সব মেঘ দূর করার জন্য।
তবে এটা সত্য যে দুই দেশের মধ্যে আস্থার ঘাটতি রয়েছে। কিন্তু তারপরও নির্দ্বিধায় বলা যায়, পাকিস্তান সবসময় যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের ব্যাপারে ইতিবাচক ও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু আফগানিস্তান সবসময় পাকিস্তানকে দেখেছে সন্দেহের চোখে।
দুই দেশের সম্পর্ক কেন এমন পর্যায়ে নেমে এসেছে, সেটিও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। ব্রিটিশদের কাছ থেকে পাকিস্তান যে ডুরান্ট লাইন উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে, তা আফগানিস্তানের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ঘায়ের ওপর নুনের ছিটার মতো আফগানিস্তান সবসময় তালেবানকে পৃষ্ঠপোষকতা করার জন্য পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে। অথচ সন্ত্রাসবাদের কারণে পাকিস্তানের ৭০ হাজার জীবনের ক্ষতি হয়েছে, দরিদ্রপীড়িত দেশটিতে ইতোমধ্যেই ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে।
অধিকন্তু, পাকিস্তানকে অস্থিতিশীল করার জন্য পাকিস্তানের চির-প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও ইউএসএসআরের সাথে গাটছড়া বেঁধেছিল আফগানিস্তান। ফলে ইতিহাসজুড়ে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান ছিল সবসময় বিপরীত অবস্থানে।
৯/১১-এর পর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক যুদ্ধ শুরু হলে আফগানিস্তানে অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতার সূচনা ঘটে। আর এর প্রভাব সহজেই পাকিস্তানে অনুভূত হয়। এটা সুস্পষ্ট বিষয় যে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে শান্তি আনার জন্য সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব হলো মূল ভিত্তি।
সম্প্রতি মস্কোতে তালেবান ও আফগানিস্তানের মধ্যে মতবিনিময় হয়। এতে রাশিয়া মধ্যস্ততাকারীর ভূমিকা পালন করায় শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে কিছুটা আশাবাদের সঞ্চার হয়। তবে আমরা একটু খতিয়ে দেখলে বুঝতে পারব যে চলমান আফগান-নেতৃত্বাধীন, আফগান মালিকানাধীন শান্তিপ্রক্রিয়ায় পাকিস্তান সবসময়ই সৌহার্দ্যমূলক ভূমিকা পালন করছে, অগ্রসর অবস্থানে থেকেছে। শান্তিপ্রক্রিয়ায় পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সাম্প্রতিক সময়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সহায়তা করাটা স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দিচ্ছে যে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান একে অপরের জন্য অপরিহার্য। পাকিস্তানের সম্পৃক্ততা ছাড়া কোনো পরিকল্পনাই কাজ করতে পারে না।
সন্দেহ নেই যে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানকে ওই অবস্থা থেকে বের করে আনা হবে বিশেষভাবে পাকিস্তানের জন্য ও সাধারণভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ। তবে ইতোমধ্যেই কঠিন পরিস্থিতি থেকে মু্ক্তি পাওয়ার কিছুটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে।
এই প্রেক্ষাপটে আফগানিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের উচিত হবে পাকিস্তানের প্রতি দোষারোপ বন্ধ করা। এছাড়া প্রতিবেশী দেশের সাথে থাকা আস্থার ঘাটতি অবসান নিয়েও পাকিস্তানের সুস্পষ্ট অবস্থান প্রকাশ করা উচিত। অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে আফগানিস্তানের রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ভূগোল। এ কারণে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে অবশ্যই নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে এসবের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সব নিকট প্রতিবেশীর উচিত হবে আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ বন্ধ করা। মনে রাখতে হবে যে আমরা বিশ্বায়নের বিশ্বে বসবাস করছি। এ কারণে আমাদের প্রয়োজন হবে পরিস্থিতির দিকে নগর রাখা এবং চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের ওপর বড় দায়িত্ব রয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে উন্নয়নের প্রক্রিয়া শুরু করা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্র ২০১১ সালে নিউ সিল্ক রোড প্রকল্প, রাশিয়া ইউরো এশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়ন পরিকল্পনা ও চীন ২০১৪ সালে বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ সামনে এনেছে।
চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর এগিয়ে নিতে পাকিস্তান ও চীন অনেক অগ্রগতি হাসিল করেছে। এসব প্রকল্প জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদ প্রস্তাব ২৩৪৪-এ রয়েছে। এ কারণে আফগানিস্তানের সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য এসব প্রকল্পের মধ্যে সমন্বয় সাধন প্রয়োজন।
পাকিস্তানকে অস্থিতিশীল করার জন্য ভারতের আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করা এবং সেইসাথে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যকার সম্প্রীতিমূলক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভারতের গুরুত্বপূর্ণ বাধা হিসেবে আত্মপ্রকাশ খুবই অবাক করা ও বাজে কাজ।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানকে অবশ্যই একসাথে বসতে হবে তাদের ভবিষ্যতের প্রজন্মগুলার স্বার্থে অবিশ্বাসের সব মেঘ দূর করার জন্য।
No comments