বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামনিকে ঢামেকে ভর্তি
বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার শিশু মুক্তামনিকে মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। তার চিকিৎসায় আট সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করার কথা রয়েছে। সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুর রহমান জানান, ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ডা. সামন্ত লাল সেনের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা শুরু হয়েছে। এজন্য আট সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ডও গঠন করা হচ্ছে। শিশু মুক্তামনির বাবা সাতক্ষীরার সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামের মুদি দোকানি ইব্রাহীম হোসেন জানান, মঙ্গলবার সকালে তিনি তার মেয়েকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এসেছেন। সকাল ৯টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে সে ৬০৮ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন। জন্মের দেড় বছর পর ১২ বছরের শিশু মুক্তামনির দেহে একটি ছোট মার্বেলের মতো গোটা দেখা দেয়। এরপর থেকে সেটি বাড়তে থাকে। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়েও তার কোনো চিকিৎসা হয়নি। তার আক্রান্ত ডানহাত এখন ছোট আকারের গাছের গুড়ির রুপ নিয়ে প্রচণ্ড ভারী হয়ে উঠেছে।
এতে পঁচনও ধরেছে। পোকাও জন্মেছে। দিন রাত চুলকানি ও যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে থাকে মুক্তামনি। আক্রান্ত স্থান থেকে বিকট গন্ধ ছুটছে। এ রোগ তার দেহের সর্বত্র ছড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ডাক্তাররা। এসব কারণে তাদের বাড়িতে আত্মীয় স্বজন ও পড়শিদের যাতায়াতও এক রকম বন্ধ হয়ে গেছে। সম্প্রতি মুক্তামনির এই বিরল রোগ নিয়ে দৈনিক যুগান্তরসহ দেশের কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরই তাকে ঢাকায় পাঠিয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসার উদ্যোগ নেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ঢাকায় অবস্থানরত শিশু মুক্তার মা আয়েশা খাতুন ও তার বাবা ইব্রাহীম হোসেন যুগান্তরকে মোবাবাইল ফোনে বলেন, ‘ডা. সামন্তলাল তাদের মেয়ের চিকিৎসার সব দায়িত্ব নিয়েছেন। বর্তমানে তার রক্তশূন্য দেহে রক্ত দেয়া হচ্ছে। এছাড়া উন্নত মানের খাবার খাইয়ে তাকে সুস্থ করে তুলবার পর মূল চিকিৎসা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। ঢামেক বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসক ডা. শামন্ত লাল সেন জানান, তিনি এবং বার্ন ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ প্রাথমিকভাবে তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন। বুধবার মুক্তা মনির চিকিৎসার বিষয়ে একটি বোর্ড গঠন করে তার চিকিৎসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
No comments