যমুনায় তীব্র ভাঙন, শাহজাদপুরে ২শ' ঘরবাড়ি বিলীন
বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে যমুনা নদীতে তীব্র ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। এতে দু' শতাধিক ঘর-বাড়ি বিলীন হয়েছে। জানা গেছে, উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের হাটপাচিল গ্রামের দুই শতাধিক ঘরবাড়ি, অর্ধ শতাধিক গাছপালা, ৩০০ বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এতে ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে দেড় শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশু নতুন করে গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। তারা হারিয়েছে মাথা গোঁজার ঠাঁই। এছাড়া পৌর এলাকার রূপপুর গ্রাম, পোতাজিয়া ইউনিয়নের অনেক এলাকায় তলিয়ে গেছে পানির নিচে। এসব এলাকায় সরকারি ত্রাণ সহায়তার কোনও খবর পাওয়া যায়নি। গ্রামবাসী জানান, ভাঙন প্রতিরোধে সরকার দ্রুত কোনো ব্যবস্থা না নিলে সম্পূর্ণ গ্রামটি বিলিন হয়ে যেতে পারে। ভাঙন কবলিত এলাকায় তেমনভাবে সরকারি কোনো ত্রাণ সহযোগিতা মেলেনি বলে জানান তারা।
এমনকি ক্ষতিগ্রস্তদের তেমন কোনো খোঁজ-খবরও নেয়া হয়নি। ফলে তারা সর্বস্ব হারিয়ে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছে। সোমবার সকালে হাটপাচিল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, যমুনা নদীগর্ভে বিলিন হওয়া বাড়ির ভিটার এক কোণে কয়েকজন নারী, শিশু ও বৃদ্ধ ক্ষুধার্থ অবস্থায় সরকারি সাহায্যের অপেক্ষায় বসে আছেন। তাদের অসহায়ত্ব দেখে দুপুরে একটি পরিবার সামান্য ভাত-তরকারি দিলে তা কয়েকজন মিলে ভাগাভাগি করে খাচ্ছেন। এদিকে আজ দুপুরে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলীমুন রাজীব ও কৈজুরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে ক্ষুধার্থ নারী, পুরুষ ও শিশুরা তাদের ঘিরে ধরেন। এসময় তারা তাৎক্ষণিকভাবে প্রতি পরিবারকে নগদ ২০০ টাকা করে সাহায্য প্রদান করেন। এছাড়া বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের ৫ হাজার বিঘা গো-চারণ ভূমি ও শতাধিক গরুর বাথান বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। ফলে গো-খামারীরা তাদের শত শত গবাদি পশু বাথান এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়েছেন। এসব গরু এখন খামারীদের বাড়ির আঙ্গিনা ও গোয়াল ঘরে বন্দিদশায় রয়েছে। অপরদিকে পৌর এলাকার রূপপুর গ্রামের অর্ধ শতাধিক হতদরিদ্র মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। উপজেলার অন্যান্য গ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।
No comments