পাঁচ দিন পর বাজারে আবার দরপতন



টানা পাঁচ দিন ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর গতকাল মঙ্গলবার দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দরপতন ঘটেছে। তবে লেনদেনের পরিমাণ আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে।
বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ বাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে। এ কারণে কয়েক দিন ধরেই দেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীরা নতুনভাবে সক্রিয় হতে শুরু করেন। এতে মূল্যসূচক ও লেনদেনের পরিমাণও বাড়তে থাকে।
তবে গতকাল বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে শেয়ারবাজারের কারসাজি খতিয়ে দেখতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বাজার কারসাজিতে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে এমন কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করা হয়।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অনেকে মনে করেন, এটি বিনিয়োগকারীদের অনেককেই অস্বস্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তাই তাঁদের অনেকেই গতকাল বাজারে খুব একটা সক্রিয় ছিলেন না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাঁরা শেয়ার বিক্রি করেছেন বলেও জানা গেছে। মূলত এসব কারণেই গতকাল বাজারে সূচক কমেছে।
অবশ্য কারও কারও মতে, টানা পাঁচ দিন অব্যাহতভাবে দর বাড়ার ফলে অনেকে মুনাফা তুলে নেওয়ার জন্য শেয়ার বিক্রি করেছেন, যা বাজারে বিক্রির চাপ বাড়িয়ে দরপতন ঘটাতে ভূমিকা রেখেছে।
বাজারসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে গতকালের লেনদেন শুরু হয়। তবে পাঁচ মিনিটের মাথায় সূচক নিম্নমুখী হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে সূচক আবার ৩০ পয়েন্টের বেশি বেড়ে যায়। বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের পর সূচক আবার নিম্নগামী হয়। এরপর একাধিকবার ওঠানামা করে সূচক। দিনশেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক ৮০ পয়েন্ট কমে ছয় হাজার ৪৫৬ পয়েন্টে দাঁড়ায়।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচক ৫৮ পয়েন্ট কমে ১৮ হাজার ৪২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। স্টক এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২০৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৬২টির, কমেছে ১৩৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে সাতটি প্রতিষ্ঠানের। সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১১০ কোটি টাকার শেয়ার।
ডিএসইতে গতকাল ২৬১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার হাতবদল হয়। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৯৪টির, কমেছে ১৫৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে আটটি প্রতিষ্ঠানের। স্টক এক্সচেঞ্জটিতে গতকাল মোট এক হাজার ১৪৮ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, যা গতকালের চেয়ে ৮৮ কোটি টাকা বেশি।
ডিএসইতে গতকাল লেনদেনে শীর্ষে থাকা ১০টি প্রতিষ্ঠান হলো আফতাব অটোমোবাইলস, কনফিডেন্স সিমেন্ট, বেক্সিমকো, বেক্সটেক্স, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, বে লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, গোল্ডেন সন, তিতাস গ্যাস ও বিডি ফিন্যান্স।
দাম বাড়ার শীর্ষে ছিল সেন্ট্রাল ইনস্যুরেন্স, প্রগতি ইনস্যুরেন্স, এমবি ফার্মা, জুট স্পিনার্স, ফার্মা এইড, রহিম টেক্সটাইল, বঙ্গজ, জেমিনি সি ফুড, সোনারবাংলা ইনস্যুরেন্স ও ঢাকা ইনস্যুরেন্স।
সবচেয়ে বেশি কমেছে ইউনিয়ন ক্যাপিটালের শেয়ারের দাম। এ ছাড়া রিলায়েন্স ইনস্যুরেন্স, ট্রাস্ট ব্যাংক, লিগ্যাসি ফুটওয়ার, সমতা লেদার, সমরিতা হাসপাতাল, মুন্নু জুটেক্স, যমুনা অয়েল, ইসলামিক ফিন্যান্স ও ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট দাম কমে যাওয়ার শীর্ষ ১০-এর তালিকায় রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.