বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী, চিকিৎসকসহ তিন জনের মৃত্যু by ফরিদ উদ্দিন আহমেদ
রাজধানীতে
বেড়েই চলছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। ঘণ্টায় তিনজনের বেশি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত
হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৩ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে
রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন। আর চলতি জুলাই মাসে গড়ে প্রতিদিন
প্রায় ৮৪ জন করে ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছেন জুন মাসে
১৬৯৯ জন ডেঙ্গু জ্বরের রোগী চিহ্নিত হয়েছেন। এবছর চিকিৎসকসহ এই পর্যন্ত তিন
জন মারা গেছেন। আর ২ হাজার ২২৭ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। এখনও
হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২৬২ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ হাজার ১৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে, গতকাল রাজধানীতে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ডা. নিগার নাহিদ দিপু নামে এক নারী চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। স্কয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ৩২ ব্যাচের ছাত্রী ছিলেন ডা. নিগার। সর্বশেষ তিনি কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন বলে জানা গেছে। স্কয়ার হাসপাতালের কাস্টমার কেয়ারের এক কর্মকর্তা জানান, সকালে জরুরি বিভাগ থেকে আইসিইউতে ভর্তি হন ডা. নিগার। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সাড়ে ১০টায় তার মৃত্যু হয়। এই বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তান ডা. নিগারের মৃত্যুর নিশ্চিত করেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এবার আগেই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী আসছেন হাসপাতালে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, চলতি বছর হঠাৎ হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় ডেঙ্গু বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জুন, জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গুর মশার উপদ্রব বাড়ে। কিন্তু এবার যেহেতু আগেই বৃষ্টি হয়েছে তাই মশা উপদ্রব আগ থেকেই দেখা গেছে। থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকে। জমে থাকা বৃষ্টির পানি থাকলে মশার প্রজনন বাড়ে। তাই বাড়ি বা বাড়ির আঙিনার কোথাও যেন পরিষ্কার পানি জমে না থাকে সে ব্যাপারে সচেতনও সতর্ক দৃষ্টি রাখার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ডেঙ্গু আক্রান্তদের সম্পূর্ণ ভালো না হওয়া পর্যন্ত বিশ্রামে থাকতে হবে। এ ছাড়া যথেষ্ট পরিমাণে পানি, শরবত ও অন্যান্য তরল খাবার খেতে হবে। জ্বর কমানোর জন্য শুধু প্যারাসিটামল জাতীয় ব্যথার ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। অ্যাসপিরিন বা ডাইক্লোফেনাক জাতীয় ব্যথার ওষুধ খাওয়া যাবে না। এতে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। ৪ থেকে ৫ দিন জ্বর থাকলে ঘরে বসে না থেকে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে বিশেষ করে বেসরকারি হাসপাতালে প্রচুর ডেঙ্গু রোগী আসছেন। রাজধানীর ধানমন্ডি সেন্টাল হাসপাতালে ৫২ জন, ইবনে সিনা হাসপাতালে ১৯ জন, বাংলাদেশ মেডিকেল হাসপাতালে ১১ জন, স্কয়ার হাসপাতালে ২০ জন, পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৪ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭৪ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ২৮ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ১৯ জন, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ২৫ জন, বিজিবি হাসপাতালে ২৭ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
কন্ট্রোল রুম সূত্র জানা গেছে, জানুয়ারিতে ৩৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ফের্রুয়ারিতে এই সংখ্যা ছিল ১৮ জন, মার্চে ১৭ জন, এপ্রিলে ৫৮ জন, মে মাসে ১৯৩ জন, জুন মাসে ১৬৯৯ জন এবং জুলাই মাসে এ পর্যন্ত ২৫৪ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে ২৬২ জন ছাড়া অন্য রোগীরা সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডেঙ্গু অথবা চিকুনগুনিয়া জ্বরই হোক তা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে মশার বিস্তার কমাতে হবে। এডিস মশার দুইটি প্রজাতি এডিস ইজিপ্টাই ও এডিস অ্যালবুপিকপকটাসের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ছড়াচ্ছেন আবার মানুষ থেকে মশার মাধ্যমে আসছে। পরে মশা থেকে আবার মানুষকে সংক্রমিত করছে। একবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে বার বার ডেঙ্গু হওয়ার আশঙ্কা থাকে। অন্যান্য মশা ময়লা নোংরা পানিতে বংশ বিস্তার করলেও এডিস মশা এর ব্যতিক্রম, পরিষ্কার পানিতে ডিম ছাড়ে। সহজে চোখে পড়ে না এমন জায়গার পরিষ্কার পানিতে এ মশারা ডিম ছাড়ে। ফলে শহরে বিশেষ করে অভিজাত এলাকায় এডিস মশা বেশি দেখা যায়।
ডেঙ্গুর চিকিৎসা সম্বন্ধে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, ডেঙ্গুজ্বর হলে প্রচুর পানি পান করতে হবে ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। জ্বর বাড়লে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ অথবা আরো বেশি জ্বর হলে তা কমিয়ে রাখার জন্য সাপোজিটরি ব্যবহার করতে হবে। ডেঙ্গুর চিকিৎসা বাড়িতে রেখেও হতে পারে। বেশি দুর্বল বা শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়লে, নাক ও দাঁত দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকলে হাসপাতালে নেয়াই ভালো। ডেঙ্গুজ্বর সাধারণত ১০ দিনের মধ্যে সেরে যায়। কিন্তু দুর্বলতা আরো কিছু দিন থেকে যেতে পারে। ভাইরাসজনিত জ্বর বলে এর কোনো চিকিৎসা নেই। কেবল লক্ষ্মণ বুঝেই চিকিৎসা দিতে হবে।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুলাহ বলেন, মে জুন থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বর হয়ে থাকে। শীতের সময়ে কমে আসবে। তিনি বলেন, এই সময়ে জ্বর বা গায়ে ব্যথা হলে ডেঙ্গুর কথা মাথায় রাখতে হবে। সাধারণ ডেঙ্গু জ্বর তেমন মারাত্মক রোগ নয়। ডেঙ্গু জ্বরের রোগীর যখন বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের প্রমাণ মেলে (যেমন মাড়ি বা নাক থেকে রক্তক্ষরণ, মলের সঙ্গে রক্তক্ষরণ ইত্যাদি) তখন একে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বলা হয়। অধিক রক্তক্ষরণের ফলে শরীরের জলীয় উপাদান কমে যায়। ডেঙ্গু জ্বর হলে প্রচুর পানি পান করতে হবে ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। জ্বর বাড়লে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ অথবা আরো বেশি জ্বর হলে তা কমিয়ে রাখার জন্য সাপোজিটরি ব্যবহার করতে হবে।
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও করণীয়: জ্বর ১০৪ থেকে ১০৫ ডিগ্রি ফা., মাথা ব্যথা, চোখের পিছনে ও হাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা, চামড়ায় লালচে ছোয়া (র্যাশ) থাকে। হেমোরেজিক ডেঙ্গু জ্বর ও ডেঙ্গু শক্সিনড্রোম হলে দাঁতের মাড়ি, নাক, মুখ ও পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্তপাত হতে পারে। সেক্ষেত্রে রোগীকে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নিতে হবে।
প্রতিরোধ: মশার বিস্তার রোধে ফুলের টব, পরিত্যক্ত টায়ার, ডাবের খোসা, এসি ও ফ্রিজের তলায় ইত্যাদিতে পানি জমি থাকতে দেয়া যাবে না। বাড়ির আঙিনা, নির্মাণাধীন ভবনে পানির চৌবাচ্চা নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। দিনেও ঘুমানোর সময় মশারী ব্যবহার করতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে, গতকাল রাজধানীতে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ডা. নিগার নাহিদ দিপু নামে এক নারী চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। স্কয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ৩২ ব্যাচের ছাত্রী ছিলেন ডা. নিগার। সর্বশেষ তিনি কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন বলে জানা গেছে। স্কয়ার হাসপাতালের কাস্টমার কেয়ারের এক কর্মকর্তা জানান, সকালে জরুরি বিভাগ থেকে আইসিইউতে ভর্তি হন ডা. নিগার। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সাড়ে ১০টায় তার মৃত্যু হয়। এই বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তান ডা. নিগারের মৃত্যুর নিশ্চিত করেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এবার আগেই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী আসছেন হাসপাতালে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, চলতি বছর হঠাৎ হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় ডেঙ্গু বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জুন, জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গুর মশার উপদ্রব বাড়ে। কিন্তু এবার যেহেতু আগেই বৃষ্টি হয়েছে তাই মশা উপদ্রব আগ থেকেই দেখা গেছে। থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকে। জমে থাকা বৃষ্টির পানি থাকলে মশার প্রজনন বাড়ে। তাই বাড়ি বা বাড়ির আঙিনার কোথাও যেন পরিষ্কার পানি জমে না থাকে সে ব্যাপারে সচেতনও সতর্ক দৃষ্টি রাখার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ডেঙ্গু আক্রান্তদের সম্পূর্ণ ভালো না হওয়া পর্যন্ত বিশ্রামে থাকতে হবে। এ ছাড়া যথেষ্ট পরিমাণে পানি, শরবত ও অন্যান্য তরল খাবার খেতে হবে। জ্বর কমানোর জন্য শুধু প্যারাসিটামল জাতীয় ব্যথার ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। অ্যাসপিরিন বা ডাইক্লোফেনাক জাতীয় ব্যথার ওষুধ খাওয়া যাবে না। এতে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। ৪ থেকে ৫ দিন জ্বর থাকলে ঘরে বসে না থেকে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে বিশেষ করে বেসরকারি হাসপাতালে প্রচুর ডেঙ্গু রোগী আসছেন। রাজধানীর ধানমন্ডি সেন্টাল হাসপাতালে ৫২ জন, ইবনে সিনা হাসপাতালে ১৯ জন, বাংলাদেশ মেডিকেল হাসপাতালে ১১ জন, স্কয়ার হাসপাতালে ২০ জন, পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৪ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭৪ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ২৮ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ১৯ জন, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ২৫ জন, বিজিবি হাসপাতালে ২৭ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
কন্ট্রোল রুম সূত্র জানা গেছে, জানুয়ারিতে ৩৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ফের্রুয়ারিতে এই সংখ্যা ছিল ১৮ জন, মার্চে ১৭ জন, এপ্রিলে ৫৮ জন, মে মাসে ১৯৩ জন, জুন মাসে ১৬৯৯ জন এবং জুলাই মাসে এ পর্যন্ত ২৫৪ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে ২৬২ জন ছাড়া অন্য রোগীরা সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডেঙ্গু অথবা চিকুনগুনিয়া জ্বরই হোক তা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে মশার বিস্তার কমাতে হবে। এডিস মশার দুইটি প্রজাতি এডিস ইজিপ্টাই ও এডিস অ্যালবুপিকপকটাসের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ছড়াচ্ছেন আবার মানুষ থেকে মশার মাধ্যমে আসছে। পরে মশা থেকে আবার মানুষকে সংক্রমিত করছে। একবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে বার বার ডেঙ্গু হওয়ার আশঙ্কা থাকে। অন্যান্য মশা ময়লা নোংরা পানিতে বংশ বিস্তার করলেও এডিস মশা এর ব্যতিক্রম, পরিষ্কার পানিতে ডিম ছাড়ে। সহজে চোখে পড়ে না এমন জায়গার পরিষ্কার পানিতে এ মশারা ডিম ছাড়ে। ফলে শহরে বিশেষ করে অভিজাত এলাকায় এডিস মশা বেশি দেখা যায়।
ডেঙ্গুর চিকিৎসা সম্বন্ধে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, ডেঙ্গুজ্বর হলে প্রচুর পানি পান করতে হবে ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। জ্বর বাড়লে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ অথবা আরো বেশি জ্বর হলে তা কমিয়ে রাখার জন্য সাপোজিটরি ব্যবহার করতে হবে। ডেঙ্গুর চিকিৎসা বাড়িতে রেখেও হতে পারে। বেশি দুর্বল বা শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়লে, নাক ও দাঁত দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকলে হাসপাতালে নেয়াই ভালো। ডেঙ্গুজ্বর সাধারণত ১০ দিনের মধ্যে সেরে যায়। কিন্তু দুর্বলতা আরো কিছু দিন থেকে যেতে পারে। ভাইরাসজনিত জ্বর বলে এর কোনো চিকিৎসা নেই। কেবল লক্ষ্মণ বুঝেই চিকিৎসা দিতে হবে।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুলাহ বলেন, মে জুন থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বর হয়ে থাকে। শীতের সময়ে কমে আসবে। তিনি বলেন, এই সময়ে জ্বর বা গায়ে ব্যথা হলে ডেঙ্গুর কথা মাথায় রাখতে হবে। সাধারণ ডেঙ্গু জ্বর তেমন মারাত্মক রোগ নয়। ডেঙ্গু জ্বরের রোগীর যখন বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের প্রমাণ মেলে (যেমন মাড়ি বা নাক থেকে রক্তক্ষরণ, মলের সঙ্গে রক্তক্ষরণ ইত্যাদি) তখন একে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বলা হয়। অধিক রক্তক্ষরণের ফলে শরীরের জলীয় উপাদান কমে যায়। ডেঙ্গু জ্বর হলে প্রচুর পানি পান করতে হবে ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। জ্বর বাড়লে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ অথবা আরো বেশি জ্বর হলে তা কমিয়ে রাখার জন্য সাপোজিটরি ব্যবহার করতে হবে।
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও করণীয়: জ্বর ১০৪ থেকে ১০৫ ডিগ্রি ফা., মাথা ব্যথা, চোখের পিছনে ও হাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা, চামড়ায় লালচে ছোয়া (র্যাশ) থাকে। হেমোরেজিক ডেঙ্গু জ্বর ও ডেঙ্গু শক্সিনড্রোম হলে দাঁতের মাড়ি, নাক, মুখ ও পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্তপাত হতে পারে। সেক্ষেত্রে রোগীকে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নিতে হবে।
প্রতিরোধ: মশার বিস্তার রোধে ফুলের টব, পরিত্যক্ত টায়ার, ডাবের খোসা, এসি ও ফ্রিজের তলায় ইত্যাদিতে পানি জমি থাকতে দেয়া যাবে না। বাড়ির আঙিনা, নির্মাণাধীন ভবনে পানির চৌবাচ্চা নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। দিনেও ঘুমানোর সময় মশারী ব্যবহার করতে হবে।
No comments